নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ জমি হস্তান্তর নিয়ে মোদির চাপে সুর বদল বিজেপির।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:১১

(এম বি ফয়েজ)

নতুন দিল্লী ১৭ আগষ্টঃ অসম প্রদেশ বিজেপি নেতৃত্বের চরম বিরোধীতা সত্ত্বেও ভারত-বাংলাদেশ জমি হস্তান্তর চুক্তি কার্যকর করতে তৎপর হয়ে উঠেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস। আর সেই সময়ই ঢাকার সঙ্গে বকেয়া দুটি চুক্তির মধ্যে অন্ততঃ একটিতে সই করতে উৎসাহী মোদি সরকার। সম্ভবতঃ তা জমি হস্তান্তর চুক্তি। দিল্লীতে বিজেপির জাতীয় পরিষদের সভায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং জমি ও ছিটমহল হস্তান্তর সহ চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন বিবদমান অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে।



বুধবার লোকসভায় তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের কাছে এ চুক্তির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৮ আগষ্ট সোমবার ফের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য অসম ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নেতৃত্বকে ডেকে পাঠিয়েছেন রাজনাথ। এ চুক্তি নিয়ে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের অ্যাজেণ্ডায় বিরোধীতা শব্দটি না থাকলেও প্রকাশ্যে সুষমা স্বরাজ, লালকৃষ্ণ আডবানী, রাজনাথ সিংহরা সে সময় বিরোধীতা করেছিলেন। এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইচ্ছায় তাঁরা সকলেই উল্টো পথে হাটতে চাইছেন। এতে সবচেয়ে বেশী ফুপরে পড়েছেন অসম প্রদেশ বিজেপির বিদায়ী সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। অসম বিরোধী এই জমি হস্তান্তর চুক্তির বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে গনআন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সনোয়ালরা। সঙ্গে পেয়েছিলেন অসম গনপরিষদ (অ গ প) এবং ছাত্র সংগঠন আশু সহ রাজ্যের অন্যান্য রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সংগঠনকে।



২০১১-র ৬ সেপ্টেম্বর ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ঢাকা সফরকালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুন গগৈকে পাশে বসিয়ে জমি হস্তান্তর চুক্তির প্রটোকলে স্বাক্ষর করেছিলেন। সেই থেকেই রাজ্য প্রদেশ বিজেপি এর বিরোধীতা করে আসছে। এই চুক্তি রূপায়িত হলে অসমের করিমগঞ্জ জেলার লাঠিটিলা, ডুমাবাড়ি, পাল্লাতল এবং ধুবুড়ি জেলার বরইবাড়ি বাংলাদেশের হাতে চলে যাবে। বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তাঁর প্রথম ঢাকা সফরে গিয়ে ঐ চুক্তি রূপায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সবুজ সংকেত দিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি সুষমা সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এও জানিয়ে এসেছেন যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি অগ্রাহ্য করে তড়িঘড়ি চিস্তা চুক্তি করতে চায় না মোদি সরকার। দেশে সবার সঙ্গে কথা বলে তবেই এ ব্যাপারে অগ্রসর হবেন। সেই সবার সঙ্গে কথা বলার কাজটি দেরি না করে শুরু করে দিতে চাইছে নতুন সরকার। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে আলোচনার জন্য ইতিমধ্যে দিল্লীতে হাজির হয়েছেন অসমের মুখ্য সচিব জিতেশ খোসলা এবং প্রধান সচিব জিষঞ্চু বরুয়া।



প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনী প্রচারে ‘অবৈধ বাংলাদেশী’ নিয়ে কঠোর অবস্থান দেখিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা-দিল্লী সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে কিছুটা হলেও সংশয় দেখা দেয়। তবে পরবর্তীকালে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা হবে বলেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন তিনি। এ বছরই শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফর। ঢাকার পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যে ২০১৪ সালের মধ্যেই বকেয়া চুক্তি দুটি সম্পন্ন হোক, এমনটাই মনেপ্রানে চাইছে ঢাকা। প্রধানমন্ত্রী মোদিও ঢাকা সফরে উৎসুক। কংগ্রেস দু-তিন বছর ধরে বিলটি পাস করার পক্ষে সওয়াল করে চলেছে। তাই বিজেপি যদি নিজেদের মধ্যের অভ্যন্তরীন মতবিরোধ মিটিয়ে ফেলতে পারে তা হলে রাজ্যসভায় ঝুলে থাকা এ বিলটি পাস করিয়ে নেওয়া সম্ভব বলেই মনে করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। চুক্তিটি পাস করানোর জন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্যমতের। আর ক্ষেত্রে মোদি সরকার যথেষ্ট তৎপর ও আশাবাদী। এর আগে ২০ ডিসেম্বর ২০১৩-এ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জমি ও ছিটমহল হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ১১৯তম সংবিধান সংশোধনী বিলটি সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে যাবার কয়েক মিনিট আগে রাজ্যসভায় পেশ করেন বিদেশমন্ত্রী সলমান খুরশিদ। এর আগে অধিবেশনে কেন্দ্র চেষ্টা করেও অগপ ও তৃণমূল সাংসদরা বিলের খসড়া বিদেশমন্ত্রীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। তাঁরা ছুটে যান অধ্যক্ষের মঞ্চের দিকে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অধিবেশন মুলতুবি রাখা হয়। বিজেপি অবশ্য সেদিন অগপ এবং তৃণমূল সাংসদদের সমর্থনে এগিয়ে যাননি। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী গগৈর বক্তব্য ছিল এ সবই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা ছাড়া কিছুই নহে। মোট ৬৬৫ একর ভূমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। জমি হস্তান্তর চুক্তি হলে বাংলাদেশের কাছ থেকে ৩৯৭.৫ একর জমি পাবে ভারত। অন্য দিকে বাংলাদেশ পাবে ২৬৭.৫ একর জমি। এছাড়া, মোট ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল রয়েছে বাংলাদেশে এবং ৫১টি বাংলাদেশের ছিটমহল রয়েছে ভারতীয় এলাকায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.