নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিড়ম্বনার বেড়াজালে ঘেরা অসমে গগৈ সরকার; উত্তোরনের উপায়?

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:২৩

(এম বি ফয়েজ)

গোয়াহাটী, অসম, ২০শে আগষ্ট।। গত সোমবার উরিয়ামঘাটের আশ্রয় শিবির থেকে ব্যর্থ মনোরথ নিয়ে রাজধানী ফিরে এসে মুখ্যমন্ত্রী গগৈ বিগত ৪৮ ঘন্টা সময় ধরে মরিশালীর নিরবতা পালন করেন। জনসাধারনের উদ্দেশ্যে সংবাদ মাধ্যমে কোন বিবৃতিই দেননি তিনি। প্রচার মাধ্যমে তাঁর নীরবতা পালনের সংবাদ ফলাও করে প্রচারিত হলে আজ স্থানীয় সময় বারোটার দিকে তিনি সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করে গোলাঘাট জেলায় গতকালকের পুলিশ ফায়ারিং-এ কোন লোক হতাহত হয় নাই বলে আক্ষেপের সুরে সাফাই গান। গগৈর পরিভাষায়, “গুলিত মানুষ মরা নাই, খেদি পঠাবলৈ শূন্যলৈ গুলি চলোয়া হইছে।“ আর প্রতিবাদকারী এবং পথচারীদের ওপর রাং কুকুরের মত ঝাপিয়ে পড়ে আরক্ষীর বেদড়ক লাঠি-পেটার ভিডিও ফুটেজগুলো বানানো ও সাজানো বলে উড়িয়ে দেন গগৈ।



মুখ্যমন্ত্রীর সংবাদ সন্মেলন স্থানীয় এবং জাতীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় গোলাঘাট জেলায় আন্দোলনরত প্রতিবাদকারীদের মধ্যে এবং গগৈর মন্তব্যের পর আক্রান্ত এলাকায় কর্তব্যরত সশস্ত্র আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ান অধিক হিংস্র হয়ে পড়ে। নাগাল্যাণ্ডগামী ৩৯ নং জাতীয় সড়কের অবরোধ তুলে দিতে প্রতিবাদকারীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে গগৈর আরক্ষী বাহিনী। এরই মধ্যে রঙ্গাজান এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশে আটকে পড়া পন্যবাহী দুটি লরিতে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিবাদকারীরা। এর অব্যবহিত পরে পুরান বাংলা এলাকায় আরেকটি লরি সহ পুলিশের গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে গোটা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারন করে। কর্তব্যরত পুলিশ-কর্তা শিলাদিত্য চেতিয়ার নির্দেশে কোন আগাম সতর্ক-বার্তা না দিয়েই প্রতিবাদকারীর ওপর শুরু হয় সরাসরি ধারাসার গুলিচালনা। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তিনজন প্রতিবাদকারী; এদের একজনের গুলি লেগেছে মাথায়, আরেক জনের বুকে এবং একজনের তলপেটে এবং আহত হয় অন্ততঃ কুড়িজন। তন্মধ্যে ছয় জনের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এদেরকে ১০৮ নম্বর এম্বুল্যান্সে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।



গগৈর আরক্ষী বাহিনী গোলাঘাটের রাজপথ রক্তে-রাঙ্গা করে তুললে ক্রমে ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে এরাংগাপাড়ার পরিস্থিতি। হাজার হাজার জনতা হাতে দা, লাঠি, তলোয়ার, তীর-ধনুক ইত্যাদি নিয়ে সদর থানা ঘেরাও করার লক্ষ্যে সেদিকে অগ্রসর হয়। প্রতিবাদী জনতার অগ্রযাত্রা রোধ করতে সি আর পি এফ-কে এ স্থানে প্রথমে কয়েকটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে হয়। এরই মধ্যে উত্তেজিত জনতা সদর থানার উপ-পরিদর্শক নবকুমার ডেকাকে আক্রমন করে মারাত্মক জখম করে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।



এই ঘটনার পর তৎক্ষণাৎ জেলা প্রশাসন রঙ্গাজান থেকে গোলাঘাট পর্যন্ত অনির্দ্দষ্ট কালীন সান্ধ্য-আইন জারি করে শহরের পাব্লিসিটি মাইকে ঘোষনা দিতে থাকেন। এর পর পরই জনতার প্রতিবাদী কার্য্যসূচী ভিন্ন দিকে মোড় নেয়; ছড়িয়ে পড়ে আশ-পাশের জেলাগুলোতে। বিকেল পাঁচটের দিকে শিবসাগর, ডিব্রুগড়, মরিয়নি, শোনিতপুর, দরং, কামরূপ, গোয়াহাটী, নলবাড়ী, বড়পেটা প্রভৃতি জেলায় প্রতিবাদী জনতা সমদল বের করে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর কুশপুতুল দাহ করে। সর্বত্র তরুণ গগৈ মুর্দাবাদ ধ্বনিত হতে শুনা যায়।



আগামী কাল থেকে গোটা রাজ্যে প্রতিবাদী সমদল বের করার কার্য্যসূচী গ্রহন করেছে কৃষক মুক্তি মোর্চা, সারা আসাম ছাত্র সংস্থা, আসাম জাতীয়তাবাদী ছাত্র পরিষদ সহ অন্যান্য ১০টি সংস্থার যৌথ মঞ্চ। যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক তথা কৃষক মুক্তি মোর্চার সভাপতি অখিল গগৈ রাজ্যের আপামর জনতাকে আগামী কালকের প্রতিবাদী কার্য্যসূচীতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহনের আহ্বান জানিয়ে প্রচার মাধ্যমে বিবৃতি প্রচার করেছেন।



এদিকে, রাজ্যের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বুঝ নিতে কেন্দ্রীয় ডোনার মন্ত্রী ভি কে সিং আজ বিকেলে রাজধানী দিসপুর পৌছেছেন। কেন্দ্রীয় গৃহ-দপ্তরের রাজ্য-মন্ত্রী মিঃ রিজিজু ও আজ গোয়াহাটী এসেছেন। আগামীকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদ্বয় মুখ্যমন্ত্রী গগৈর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।



এছাড়া, নাগাল্যাণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়ান আজ গোয়াহাটী এসে এখানকার পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে সঙ্গে সঙ্গে যাত্রাপথ পরিবর্তন করে শিলং হয়ে রাজধানী কুহিমা চলে যান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.