নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসম-নাগাল্যাণ্ড সীমা-সমস্যা সমাধানে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক।

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯





(এম বি ফয়েজ)

গোয়াহাটী, অসম।। ২১শে আগষ্ট।। অসমের গোলাঘাট জেলার উরিয়ামঘাটে নিরস্ত্র প্রতিবাদী জনতার ওপর অসম আরক্ষীর বর্বর গুলি-চালনার প্রতিবাদ এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে রাজ্যের গৃহ-বিভাগের দায়িত্বে থাকা মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর পদত্যাগের দাবীতে আজ ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সর্বাত্মক অসম বন্ধ পালিত হয়েছে। ছাত্র-সংগঠন আশু, আটসা, AJYCP, এবং চা-জনজাতি উন্নয়ন সংস্থা সহ রাজ্যের সব ক’টি বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং বেশ কয়েকটি সমাজ-সেবী সংস্থার সমন্বয়ে আহোত এই বন্ধ দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্নভাবে শেষ হয়েছে।



অসম বন্ধ চলাকালে কাজিরাঙ্গার হাতিখুলিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তবে জেলা প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এদিকে, গোলাঘাট জেলার সামগ্রিক পরিস্থিতি সামাল দিতে গোটা জেলায় অনির্দ্দিষ্ট কালীন কারফিউ জারী করা হয়েছে। বোকাখাত মহকুমা এবং ধনশিরী মহকুমায় ও আজ কার্ফিউ জারী করা হয়েছে। গতকাল জেলার রঙ্গাজান থেকে গোলাঘাট পর্যন্ত সান্ধ্য আইন বলবৎ ছিল। বোকাখাত মহকুমার নুমালিগড়ের কাছে “তেলগরম” এলাকায় সান্ধ্য-আইন ভঙ্গ করে হাজার হাজার প্রতিবাদী জনতা বিভিন্ন ধরনের বেনার, ফেস্টুন বহন করে “তরুণ গগৈ মুর্দাবাদ” “আসাম পুলিশ হায় হায়” প্রভৃতি ধ্বনি দিয়ে নাগাল্যাণ্ডগামী ৪৩ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। আসাম পুলিসের শসস্ত্র আরক্ষী বাহিনী এস্থানে উপস্থিত হয়ে অতর্কিতে লাঠি-চার্জ করে জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত করতে চাইলে প্রতিবাদী জনতা এবং পুলিশের মধ্যে খণ্ড-যুদ্ধ বেধে যায়। উত্তেজিত জনতা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে এক আরক্ষী জোয়ান গুরুতর আহত হয়। প্রত্যোত্তরে পুলিশ গুলি চালালে রঞ্জিত বরা নামে এক প্রতিবাদী যুবক জখম হয়। তাঁর উরুতে গুলি লেগেছে।



উল্লেখ্য, গোটা রাজ্য জুড়ে অসম বন্ধ চলা-কালে স্বতঃস্ফূর্ত শত শত প্রতিবাদী সমদল রাস্তায় বেরিয়ে আসে। প্রতিটি শোভাযাত্রার শেষে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর প্রতিকৃতি দাহ করে তাদের প্রতিবাদ সাব্যস্ত করে। রাজ্যের রাজধানী শহর গোয়াহাটীর দিসপুরে রাজ্য-বিজেপি-র উদ্যোগে এক অভিনব পদ্ধতিতে মুখ্যমন্ত্রী “তরুণ গগৈর শব-যাত্রা” মিছিল বের করা হয়। শহরের প্রধান কিছু সড়ক পরিক্রমা করে তাঁরা মিজোরাম হাউসের সম্মুখে এসে বৈদিক শাস্ত্র মতে ঢোল-করতাল বাজিয়ে মন্ত্র-পাঠের মধ্য দিয়ে গগৈর চিতাগ্নি করতঃ অন্ত্যোষ্টিক্রীয়া সম্পন্ন করে। এছাড়া, পান-বাজার এলাকায় অসম গন-পরিষদ দলের কর্মীরা গগৈর প্রতিকৃতির গলায় রশি বেধে জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে টেনে টেনে এনে অগপ কার্যালয়ের সামনে দাহ করে। উল্লেখ্য, গোলাঘাট জেলার রঙ্গাজানে এভাবে গগৈর আরক্ষী বাহিনী বাড়ী বাড়ী থেকে নিরীহ প্রতিবাদকারীর ঘাড়ে ধরে টেনে বের করে রাস্তায় এনে বেদড়ক লাঠি-পেটা করেছিল।



এদিকে, আজ রাজধানী দিসপুরে মুখ্যমন্ত্রী গগৈ এবং নাগাল্যাণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি, আর, জেলিয়ানের মধ্যে “অসম-নাগাল্যাণ্ড সীমা সমস্যা” নিয়ে এক জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় ডোনার মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের রাজ্যিক মন্ত্রী (উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর দায়িত্ব প্রাপ্ত) মিঃ কিরেন রিজিজুর মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত এই সভায় অসম-নাগাল্যাণ্ড সীমা-সমস্যা থেকে সৃষ্ট অসমের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা জনিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ন পাঁচটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত মর্মেঃ

১। আসাম-নাগাল্যাণ্ড গামী ৩৯ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ সহ নাগাল্যাণ্ডের ওপর কোনরূপ অর্থ নৈতিক অবরোধ আরোপ করা যাবে না;

২) নাগা-জঙ্গী দ্বারা অপহৃত অসমের দুই ছাত্রকে শীঘ্রই মুক্ত করা;

৩) দুই রাজ্যের সীমা-সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা;

৪) নাগা-জংগীদের আক্রমনে ভিটে-মাটি হারা পরিবারগুলো স্বস্থানে ফিরে গিয়ে বাড়ী-ঘর নির্মান করে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া এবং

৫) সীমা-সংলগ্ন এলাকায় দুই রাজ্যের জনগনদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করা।



বৈঠক শেষে গগৈ সাংবাদিকদের জানান, “এয়া এক ভাল আরম্ভনী” অর্থাৎ Well begin is half done.



আর সীমান্ত এলাকায় নাগা-দুষ্ক্রিতিদের গুলিতে নিহত ১৮ জন অসমীয়া লোকের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অদ্যাবধি ১৫জন দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান নাগা-মুখ্যমন্ত্রী মিঃ জেলিয়ান। এ ব্যাপারে পরিস্থিতি অধিক ভয়াবহ করে না তোলার জন্য তিনি তৃতীয় পক্ষকে সতর্ক করে দেন।



এম বি ফয়েজ,

গোয়াহাটী, অসম, ভারত।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:১৪

সৌভিক ঘোষাল বলেছেন: আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটলে সেটা সবচেয়ে ভালো। এত বৈচিত্র্যময় দেশে একটা এমন আশ্চর্য শক্তিশালী গণতন্ত্র বিদ্যমান, সেটাই বড় কথা। কিছু ছোট সমস্যা না থাকাটাই আশ্চর্যের। বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে থাকলে একটা বড় বঙ্গপ্রদেশ হতো। পাকিস্থানে গিয়ে তো থাকা গেল না, সেই আলাদা হতে হল আবার। সীমান্তহীন ভারত বাংলাদেশ এর কথা ভাবা যায় না কি ?

২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:২৭

এম বি ফয়েজ বলেছেন: দেখেন ভাই, "গোড়ায় গলদ"--তা না হলে আজ অন্ততঃ ত্রিপুরা ও আসামের বরাক উপত্যকা (বাঙ্গালীদের নীড়) নিয়ে বঙ্গ প্রদেশ গড়া সম্ভব পর হ'ত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.