নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসমে অশান্তির নেপথ্যে কংগ্রেসে বিদ্রোহীদের উস্কানিঃ গোয়েন্দা রিপোর্ট

২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪০

গোলাঘাট-কাণ্ড ও প্রিয়া হত্যা নিয়ে বিধান-সভায় কোণঠাসা সরকার



(এম বি ফয়েজ)

গোয়াহাটী ২৬শে আগষ্ট।। অসম-নাগাল্যাণ্ড সীমান্তে অশান্তির জেরে গোলাঘাট জেলার অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির নেপথ্যে চর্বিতচর্বণ রাজনীতির কুৎসিত মুখ ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে। সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লী ও দিসপুরের তৎপরতার মধ্যেই এই স্পর্শকাতর বিষয় ঘিরে কংগ্রেস ও বিজেপি-র মধ্যে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনীতির পাশাখেলা। গোলাঘাট-কাণ্ড এবং বিটিএডি-র রুনিখাতায় প্রিয়া বসুমাতারী হত্যা-কাণ্ড নিয়ে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধান-সভার ফ্লোরও। সন্মিলিত বিরোধী পক্ষের ক্ষোভ, প্রতিবাদে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়ে সরকার। দু’টি বিষয় নিয়ে আলোচনার দাবিতে বিধান-সভা গরম করে তোলেন বিরোধীরা। এ নিয়ে সরকারী বিবৃতি পেশ করতে এসেও বিরোধীদের প্রবল প্রতিরোধে এদিন ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ববাহী মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে। সদনের বাইরে এসে সাংবাদিকদের সামনে তিনি সরাসরি অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এবং বিজেপির নবনির্বাচিত প্রদেশ সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য্যের দিকে। বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জঘন্য রাজনীতি করছে বিজেপি।



তবে শুধু বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, গোলাঘাট-কাণ্ডের নেপথ্যে “ঘর-শত্রু বিভীষণের” ভূমিকা নিয়েও এদিন নতুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের হাতে পড়া গোয়ান্দা রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে গোলাঘাট-কাণ্ডের নেপথ্যে শাসকদলের ক্ষোভ-বিক্ষোভের রাজনীতিও ইন্ধন জুগিয়েছে বলে খবর চাউর হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। সংবাদ সূত্র মতে, কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী-বিরোধী শিবিরের উস্কানিতেই গোলাঘাটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল বলে উল্লেখ রয়েছে গোয়েন্দা রিপোর্টে। এই সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির উস্কানির কথাও। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিতর্কিত সীমান্তে একখণ্ড চাষের জমি নিয়েই সূত্রপাত হয় অশান্তির। এতে জড়িয়ে পড়ে আদিবাসী ন্যাশন্যাল লিবারেশন আর্মি (আনলা) এবং এনএসসিএন।



কিন্তু গত ১৮ই আগষ্ট গোলাঘাটের উরিয়ামঘাটে দুর্গত শরণার্থীদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে যে অভূতপূর্ব ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে, তাঁর নেপথ্যে দলেরই বিদ্রোহী শিবিরের উস্কানি ছিল বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে বিস্ফোরক উল্লেখ রয়েছে বলে প্রকাশ। বস্তুতঃ, এই রিপোর্ট ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এই রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া এ যাবত মেলেনি; যদিও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু ইতিপূর্বে এই ঘটনায় ‘তৃতীয় শক্তি’ জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।



শুধু গোলাঘাট-কাণ্ড নয়, চিরাং জেলার রুনিখাতায় এনডিএফবি (সংবিজিত গোষ্ঠী) জঙ্গীদের হাতে দশম শ্রেনীর ছাত্রী প্রিয়া বসুমাতারির নৃশংস হত্যাকাণ্ডও এদিন ঝড় তোলে বিধান-সভায়। পুলিশের চর সন্দেহে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রামবাসীদের সম্মুখে অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের গুলিতে প্রিয়ার শরীর ঝাঝরা করে দেয় জঙ্গিরা। এই তালিবানি নৃশংসতার নিন্দায় সোচ্চার হয়েছে গোটা রাজ্য। এদিন সভার শুরুতেই প্রসঙ্গটি তোলেন বিপিএফের বিধায়িকা প্রমিলারাণী ব্রহ্ম। তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রিয়া সত্যিই পুলিশের চর ছিল কি না, স্পষ্ট করুক সরকার। তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়ে প্রিয়া হত্যাকাণ্ড ও অশান্ত সীমান্ত নিয়ে সদনে আলোচনার দাবি তোলেন অগপর বিধায়ক পদ্ম হাজরিকা, ফণিভূষন চৌধুরী, এ আই ইউ ডি এফ-এর আব্দুর রহিম খান, রফিকুল ইসলাম এবং বিজেপি-র সদস্যরা। দাবী ওঠে, প্রশ্নোত্তরপর্ব বাতিল করে এ নিয়ে আলোচনার। দাবী ওঠে সরকারের পদত্যাগেরও। সে সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও।



মুখ্যমন্ত্রী জানান, আলোচনায় সম্মত আছে সরকার। তবে কোন বিধিমতে আলোচনা হবে তা নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয়। সদ্য পদত্যাগী রাজ্যের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি একটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। বিধি-নিয়মের প্রসঙ্গ তুলে সদনে এনিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবেনা। স্থির হয়, সভার শেষে বিবৃতি দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষ অবধি তাও হয়ে ওঠেনি। বিরোধীরা দাবী তোলেন, আগে হোক আলোচনা, তারপর বিবৃতি দিক সরকার।



সভার বাইরে এসে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, প্রিয়া বসুমাতারি পুলিশের চর ছিলনা। তবে ঐ ঘটনার পর পুলিশ দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌছানোয় যে সরকার অসন্তুষ্ট তাও তিনি জানিয়ে দেন। বলেন, এ নিয়ে তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে প্রিয়ার হত্যা-কাণ্ড নিয়ে সিবিআই তদন্ত ঘোষনা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এনডিএফবি-র (সংবিজিত গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু হবে। প্রিয়ার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।



এম বি ফয়েজ।

গোয়াহাটী, অসম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.