নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাম মন্দির নির্মাণে নতুন পায়তারাঃ অযোধ্যায় পাথর এসে পৌঁছেছে রবিবার।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪২

ভারতের অযোধ্যায় বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকে সেখানে দু-ট্রাকভর্তি পাথর এসে পৌঁছেছে।
এই মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে যে ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে, তার প্রধান ওই শিলাখন্ডের পূজা সম্পন্ন করেছেন, এবং ঘোষণা করেছেন যে বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলেই এই মন্দির তৈরির কাজ শুরু হবে বলে তাদের বিশ্বাস।
অন্যদিকে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির সঙ্গে যুক্ত মুসলিম নেতারা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টকে এড়িয়ে এভাবে মন্দির বানানোর জিগির তোলাটা দেশে দাঙ্গা বাঁধানোর কৌশল ছাড়া কিছু নয়।
উত্তরপ্রদেশের সরকার অবশ্য অযোধ্যার পরিস্থিতিতে কড়া নজর রাখছে বলে জানিয়েছে।
তেইশ বছর আগে অযোধ্যার যে জায়গায় বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, ঠিক সেখানেই রাম মন্দির বানানোর দাবি নিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সারা দেশ থেকে শিলা সংগ্রহ করার ডাক দিয়েছিল মাস ছয়েক আগে।
সেই ডাকে সাড়া দিয়েই দু’ট্রাক ভর্তি শিলাখন্ড রবিবার অযোধ্যাতে এসে পৌঁছেছে – আর তারপর তা নামানো হয়েছে অযোধ্যাতে পরিষদের সম্পত্তি রামসেবক পুরমে।
অযোধ্যাতে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য বহু বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে যে ট্রাস্ট, তার অধ্যক্ষ ও প্রবীণ সাধু মহন্ত নিত্য গোপাল দাস সেই শিলা পূজা সম্পাদন করেছেন এবং জানিয়েছেন মন্দির নির্মাণের সময় ঘনিয়ে আসছে।
তিনি বলছেন, ‘এই শিলা পূজার তাৎপর্য হল মন্দির নির্মাণের সম্ভাবনা খুব নিকটে চলে এসেছে। আমাদের বহুদিনের আশা ছিল এমন এক সরকার ক্ষমতায় আসবে যারা আমাদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হবে। সৌভাগ্যক্রমে এখন বিজেপিরই সরকার এবং তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাও আছে – ফলে আমরা চাইব নরেন্দ্র মোদির আমলেই যেন রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়।’
গত নির্বাচনের আগে বিজেপি অবশ্য ক্ষমতায় আসলে রাম মন্দির বানানোর কোন স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি – তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে শুধু বলেছিল সাংবিধানিক কাঠামোর ভেতরে থেকে কীভাবে মন্দির বানানো সম্ভব, সেই সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হবে।
মন্দির বানানোর জন্য তাদেরই সহযোগী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এখন যে দেশজুড়ে পাথর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে, বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য তা থেকে নিজেদের দূরত্ব বজায় রাখারই চেষ্টা করছে।
দলের সিনিয়র নেতা বা সরকারের মন্ত্রীরাও কেউই এই আন্দোলনকে সমর্থন করে কোনও বিবৃতি দেননি।
পাশাপাশি বাবরি মসজিদ বনাম রামজন্মভূমি মামলায় মূল আবেদনকারীদের একজন হাশিম আনসারি এই শিলা পূজার তীব্র নিন্দা করেছেন।
মি আনসারি বলছেন, ‘যারা বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির বানানোর রাজনীতি করতে চাইছে, তারা নিজেদের ধর্ম নিয়েই তামাশা করছে। এই শিলাপূজা যারা করছে, তাদের কোনও ধর্ম নেই – এমন কী দেশের আইনকানুনকেও তারা পরোয়া করছে না। এটা পুরোটাই একটা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা। তবে আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার – এই মন্দির-মসজিদ বিরোধে সুপ্রিম কোর্ট ছাড়া আমরা অন্য কারও নির্দেশ মানব না।’
অযোধ্যা ভারতের যে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত – সেখানে ক্ষমতায় আছে সমাজবাদী পার্টির সরকার, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বও তাদের হাতে।
শিলাভর্তি ট্রাক অযোধ্যায় এনে যেভাবে তার পূজা সম্পাদন হয়েছে তাতে রাজ্য প্রশাসন স্পষ্টতই অস্বস্তিতে পড়েছে, এবং তারা জানিয়েছে যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন - তাই মন্দির বানানোর নাম করে কোনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না।
উত্তরপ্রদেশের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি দেবাশিস পাণ্ডা বলেছেন মন্দিরের জন্য নতুন করে আর কোনও পাথর অযোধ্যায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫১

প্রামানিক বলেছেন: চিন্তার বিষয় আবার না দাঙ্গা লাগে।

২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৪

এম বি ফয়েজ বলেছেন: মন্দির বানানোর পক্ষে সায় দেবায় আজ উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৮

বুবলা বলেছেন: অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। বিতর্কিত জমির মালিকানা পেল রাম জন্মভূমি ন্যাস। কিন্তু, আপাতত বিতর্কিত ওই জমির তত্ত্বাবধানে থাকবে একটি ট্রাস্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রায়দানের সময় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) রিপোর্টের উপর। যারা প্রমাণ দেখিয়েছিল অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে দেবদেবীর অস্তিত্ব ছিল।
১৯৭৬-৭৭ সালে এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল বিবি লালের সঙ্গে প্রথমবার এই জমির খননে অংশ নিয়েছিলেন এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর কেকে মহম্মদ। সেই দলে একমাত্র মুসলিম সদস্য ছিলেন মহম্মদই। তিনিই জানান, এই জমিতে মন্দির ছিল, তা প্রমাণিত। এরপর ২০০৩ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চের নির্দেশে দ্বিতীয়বার খননকার্য হয়। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরবর্তীকালে সেই সময় রাডার (গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার) ব্যবহার করে চলে গবেষণা। সেখান থেকে আবিষ্কৃত সব জিনিসের ভিডিও করে রাখা হয়। প্রথম খননের মতো এবারও এই জমিতে মন্দিরের অস্তিত্ব প্রমাণ হয়ে যায়।
এই সংক্রান্ত মোট সাতটি প্রমাণ তুলে ধরেছেন কেকে মহম্মদ। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই সাতটি প্রমাণ।
১. স্তম্ভ, ভীত এবং কলসি:
আমরা ভিতরে ঢুকে দেখি মসজিদের ১২টি স্তম্ভ রয়েছে। সেগুলি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকেই তৈরি করা হয়েছিল। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতকের মন্দিরগুলির ভীতে পূর্ণ কলস বা কলসি দেখা যেত। এগুলি আসলে ‘ঘড়া’র স্থাপত্য। যেখান থেকে গাছপালা বেরিয়ে থাকত। হিন্দু মতে সেটি ছিল সম্বৃদ্ধির প্রতীক। এটি অষ্ট মঙ্গল চিহ্ন হিসেবেও পরিচিত ছিল। বাবরি মসজিদের ভিতরও এই ধরনের বস্তু দেখা গিয়েছিল। দেবদেবীর খুঁজে না পাওয়া গেলেও অষ্ট মঙ্গল চিহ্ন ছিল। অর্থাৎ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকেই যে স্তম্ভ তৈরি, তা প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়।
২. টেরাকোটা ভাস্কর্য:
একাধিক টেরাকোটা ভাস্কর্য সেখানে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। যদি এটি শুধুই মসজিদ হত, সেক্ষেত্রে কখনওই মানুষ বা জন্তুর বর্ণনা সেখানে থাকত না। কারণ ইসলাম মতে তা ‘হারাম’। অর্থাৎ সেখানে মন্দির ছিল। কিন্তু বিবি লাল এই বিষয়গুলিকে তুলে ধরেননি। কারণ আমাদের খননের লক্ষ্য ছিল সেই এলাকার সংস্কৃতিক ক্রম বোঝা।
৩. আরও স্তম্ভের সন্ধান:
দ্বিতীয় খননে পঞ্চাশটিরও বেশি স্তম্ভের ভীত পাওয়া গিয়েছিল। মোট ১৭টি সারিতে এই স্তম্ভ পাওয়া গিয়েছিল। এই কাঠামোই প্রমাণ করে দ্বাদশ শতকে বাবরি মসজিদের নিচে মন্দির ছিল।
৪. মন্দির প্রণালী:
মন্দির প্রণালীও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। দেবদেবীর স্নানের জন্য যে জল ব্যবহৃত হয় তা এই প্রণালীর মধ্যে দিয়েই বয়ে যায়। কুমিরের মুখের মতো এই প্রণালী মকর প্রণালী হিসেবেও পরিচিত। কুমির হল গঙ্গার প্রতীক। গর্ভ গৃহে প্রবেশের আগে একপ্রান্তে এক মহিলা কুমিরের উপর দাঁড়িয়ে থাকে এবং অন্যদিকে আরেক মহিলাকে কচ্ছপের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। অর্থাৎ গঙ্গা-যমুনা বা সরস্বতীতে স্নান করে তবেই ঈশ্বরের গৃহে আপনি প্রবেশ করেন। হিন্দু মতে এই স্নানেই পাপ ধুয়ে যায়। এই মকর প্রণালীও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
৫. মন্দির কলস ও শিখারা:
মন্দিরের উপর কলসের ঠিক নিচে যে স্থাপত্য থাকে, তা অমলকা নামে পরিচিত। উত্তর ভারতের মন্দিরে এর নিচে গ্রীবা ও শিখারার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই স্থান থেকেও তেমনই শিখারা খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।
৬. আরও টেরাকোটার জিনিস:
২৬৩টি টেরাকোটা দেবদেবীর পাশাপাশি পুরুষ ও মহিলার শরীরের কাঠামোও পাওয়া গিয়েছে। এটি শুধু মসজিদ হলে এসমস্ত বস্তু পাওয়া সম্ভব হত না।
৭. বিষ্ণু হরি শীলা ফলক:
এসব ছাড়াও বিষ্ণু হরি শীলা ফলক লিপিও জমির দুই জায়গা থেকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। মসজিদ ধ্বংসের পর খননকাজে তা উঠে আসে। এখান থেকে পাওয়া তথ্যদিতে প্রমাণিত এখানে ভগবান বিষ্ণুর মন্দির ছিল। যিনি বালিকে বধ করেছিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.