নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতে ভাইরাল ডিজিটাল ভিক্ষার বানানো ভিডিও

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২১

ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে এক ভিখারিকে দেখা গেছে ডেবিট কার্ড সোয়াইপ করার মেশিন নিয়ে ভিক্ষা করতে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে 'নগদহীন অর্থনীতির' কথা বলছেন, দুটো নোট বাতিলের ঘোষণার পর, সেই অর্থনীতি কী তাহলে সত্যিই এসে গেল?
মি. মোদী গত সপ্তাহে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে ওই ভিডিওটির কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন যে ভারতীয়রা খুব দ্রুতই নিজেদের পরিবর্তন করে নিতে পারে।
তার স্বপ্নের অর্থনীতির সঙ্গে ভীষণভাবে মিলে যাওয়া যে ভিডিওটির কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন, সেটি অবশ্য তৈরি হয়েছিল ২০১৪ সালে - নোট বাতিলের ঘোষণার প্রায় আড়াই বছর আগে তো বটেই, এমনকি নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও আগে।
ভাইরাল ভিডিও
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে যাওয়া এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ট্র্যাফিক সিগন্যালে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারীর কাছে ভিক্ষা চাইছেন এক বৃদ্ধ। চালকের আসনে বসা ওই নারী বলছেন তার কাছ খুচরো পয়সা নেই। তাই চাইলেও ভিক্ষা দিতে পারছেন না তিনি।
কিন্তু ভিখারি তখন বলেন, তার কাছে ডেবিট কার্ড সোয়াইপ করার যন্ত্র আছে যা দিয়ে ওই নারী তাকে ভিক্ষা দিতে পারেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ভিডিওটির কথাই উল্লেখ করছিলেন দিন কয়েক আগে, উত্তরপ্রদেশে এক জনসভায়।
মি. মোদী বলেন, খুচরো পয়সা নেই এটা জানতে পেরে ওই ভিখারি কার্ড সোয়াইপ করার যন্ত্র বার করে বলেন যে ডেবিট কার্ড দিয়েও ভিক্ষা নিতে রাজি তিনি। যদিও তিনি বলেন, ওই ভিডিওর সত্যাসত্য সম্বন্ধে তিনি জানেন না, তবে ঘটনা এটা যে ভারতীয়রা খুব দ্রুত নিজেদের পরিবর্তন করে নিতে পারে। এবং ভারতে সেটা সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন।
নগদহীন অর্থনীতি
সত্যিই কি অর্থনীতি এত দ্রুত বদলে গিয়ে নগদহীন হয়ে গেছে, যেখানে ডেবিট কার্ডে এমন কি ভিক্ষা দেওয়াও সম্ভব?
ইউ টিউব খুঁজে দেখা গেল এই ভিডিওটি প্রথম আপলোড করা হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে - মি. মোদীর নোট বাতিল ঘোষণার প্রায় আড়াই বছর আগে।
তারপরে খুঁজে বার করি হায়দ্রাবাদ শহরের এক নারী সফটওয়্যার উদ্যোগী কুলপ্রীত কউরকে যিনি বানিয়েছিলেন এই ভিডিওটি।
বিবিসি বাংলাকে তিনি টেলিফোনে বলেন, "একদিন অফিসে আসার পথে এক ভিখারিকে খুচরো না থাকায় ভিক্ষা দিতে পারি নি। অফিসে গিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে একটা সমাধানের পথ মাথায় আসে। আমরা নিজেরা যদি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মতো প্লাস্টিক অর্থ ব্যবহার করতে পারি, তাহলে একজন ভিখারি কেন সেটা পারবেন না!"
তারপরেই এই ভিডিওটা তৈরি করেন সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে।
Image caption ভারতে সম্প্রতি হাজার রুপির নোট নিষিদ্ধ করা হয়
বানানো ভিডিও
একজন ভিক্ষুককে শিখিয়ে পড়িয়ে, এক বন্ধুর দোকান থেকে কার্ড সোয়াইপ করার মেশিন যোগাড় করে ভিডিওটি শ্যুট করেন মিসেস কউর এবং তার কয়েকজন সহকর্মী, ২০১৩ সালের নভেম্বরে।
তারপর ২০১৪ সালের জানুয়ারির গোড়ায় সেটি ইউ টিউবে আপলোড করা হয়। মিসেস কউর আরও বলেছেন, প্রায় তিন বছর আগে তারা যা কল্পনা করেছিলেন, সেটাই যে নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের অর্থনীতির সঙ্গে এভাবে মিলে যাবে, সেটা কখনই ভাবেন নি তারা।
মিসেস কউর বলেন, "যখন ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছিল, সেটা নোট বাতিলের ঘোষণার প্রায় তিন বছর আগে। তখন আমরা কল্পনাও করেন নি যে এরকম কিছু হতে পারে।"
তিনি জানান, মি. মোদী যে এই ভিডিওটির কথা উল্লেখ করেছেন, তাতে তিনি গর্বিত।
মোদীর স্বপ্ন কি বাস্তব?
"সত্যিই কি কেউ কখনও ভেবেছিল সব্জি বিক্রেতা বা ফলওয়ালা - ফুলওয়ালা - এরাও ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করবেন? মি. মোদী তো বলছেন যে প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত। আসলে উনি যে ভবিষ্যৎ ভারতের কথা ভাবছেন তার সঙ্গে এই ভিডিওতে দেওয়া বার্তাটা খুব মিলে গেছে," বলেন তিনি।
কলকাতায় অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, একটা কল্পিত ভিডিওর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার যে স্বপ্নের 'নগদহীন অর্থনীতির' কথা বলছেন, সেটা ভারতে বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব?
মি. সরকার বলেছেন, "যেটা প্রথমেই মনে আসে তা হল প্রধানমন্ত্রী কী তাহলে জনসংযোগ হারিয়ে ফেলছেন? তিনি কি ভুলে যাচ্ছেন অধিকাংশ ভারতবাসী কীভাবে থাকেন?"
Image copyright You Tube Image caption ডেবিট কার্ড হাতে ভিখারি: ভিডিওটি থেকে নেওয়া
"যে দেশের বেশিরভাগটাই এখনও অসংগঠিত ক্ষেত্র, সেখানে তো নগদ ছাড়া আর কিছু চলে না! তাকে কারা পরামর্শ দিচ্ছেন জানি না, কিন্তু আমেরিকার মতো উন্নত দেশেও ৪৬% লেনদেন কিন্তু নগদেই হয়। সেখানেও নগদে লেনদেন পুরোপুরি বাদ দেওয়া যায় নি। তাই ভারতের মতো একটা দেশকে নগদহীন অর্থনীতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে একটা অলীক কল্পনা।," বলেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদী উল্লেখিত, কুলপ্রীত কউরের তৈরি ভিডিওটি যে এখনও একটা কল্পকাহিনী, সেটা বলছেন ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও।
কার্ড সোয়াইপ করার ওই যন্ত্র পেতে গেলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়, আর কী ধরনের লেনদেনের জন্য কার্ড সোয়াইপ করা হবে, সে ব্যাপারেও ব্যাঙ্কের কাছে সন্তোষজনক কারণ ব্যাখ্যা করতে হয়।
যদি কোন ভিক্ষুকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকেও, তার মাধ্যমে কার্ড সোয়াইপ যন্ত্র পাওয়া একপ্রকার অসম্ভব, কারণ ভারতে ভিক্ষা করাটাই বেআইনি।
বানানো ভিডিও
একজন ভিক্ষুককে শিখিয়ে পড়িয়ে, এক বন্ধুর দোকান থেকে কার্ড সোয়াইপ করার মেশিন যোগাড় করে ভিডিওটি শ্যুট করেন মিসেস কউর এবং তার কয়েকজন সহকর্মী, ২০১৩ সালের নভেম্বরে।
তারপর ২০১৪ সালের জানুয়ারির গোড়ায় সেটি ইউ টিউবে আপলোড করা হয়। মিসেস কউর আরও বলেছেন, প্রায় তিন বছর আগে তারা যা কল্পনা করেছিলেন, সেটাই যে নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের অর্থনীতির সঙ্গে এভাবে মিলে যাবে, সেটা কখনই ভাবেন নি তারা।
মিসেস কউর বলেন, "যখন ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছিল, সেটা নোট বাতিলের ঘোষণার প্রায় তিন বছর আগে। তখন আমরা কল্পনাও করেন নি যে এরকম কিছু হতে পারে।"
তিনি জানান, মি. মোদী যে এই ভিডিওটির কথা উল্লেখ করেছেন, তাতে তিনি গর্বিত।
মোদীর স্বপ্ন কি বাস্তব?
"সত্যিই কি কেউ কখনও ভেবেছিল সব্জি বিক্রেতা বা ফলওয়ালা - ফুলওয়ালা - এরাও ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করবেন? মি. মোদী তো বলছেন যে প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত। আসলে উনি যে ভবিষ্যৎ ভারতের কথা ভাবছেন তার সঙ্গে এই ভিডিওতে দেওয়া বার্তাটা খুব মিলে গেছে," বলেন তিনি।
কলকাতায় অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, একটা কল্পিত ভিডিওর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার যে স্বপ্নের 'নগদহীন অর্থনীতির' কথা বলছেন, সেটা ভারতে বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব?
মি. সরকার বলেছেন, "যেটা প্রথমেই মনে আসে তা হল প্রধানমন্ত্রী কী তাহলে জনসংযোগ হারিয়ে ফেলছেন? তিনি কি ভুলে যাচ্ছেন অধিকাংশ ভারতবাসী কীভাবে থাকেন?"
"যে দেশের বেশিরভাগটাই এখনও অসংগঠিত ক্ষেত্র, সেখানে তো নগদ ছাড়া আর কিছু চলে না! তাকে কারা পরামর্শ দিচ্ছেন জানি না, কিন্তু আমেরিকার মতো উন্নত দেশেও ৪৬% লেনদেন কিন্তু নগদেই হয়। সেখানেও নগদে লেনদেন পুরোপুরি বাদ দেওয়া যায় নি। তাই ভারতের মতো একটা দেশকে নগদহীন অর্থনীতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে একটা অলীক কল্পনা।," বলেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদী উল্লেখিত, কুলপ্রীত কউরের তৈরি ভিডিওটি যে এখনও একটা কল্পকাহিনী, সেটা বলছেন ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও।
কার্ড সোয়াইপ করার ওই যন্ত্র পেতে গেলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়, আর কী ধরনের লেনদেনের জন্য কার্ড সোয়াইপ করা হবে, সে ব্যাপারেও ব্যাঙ্কের কাছে সন্তোষজনক কারণ ব্যাখ্যা করতে হয়।
যদি কোন ভিক্ষুকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকেও, তার মাধ্যমে কার্ড সোয়াইপ যন্ত্র পাওয়া একপ্রকার অসম্ভব, কারণ ভারতে ভিক্ষা করাটাই বেআইনি।
তথ্যঃ বিবিসি, বাংলা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.