নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

মোঃ খুরশীদ আলম

মোঃ খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম

মোঃ খুরশীদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে দু’য়ার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত - পর্ব-০২

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৩৯

ইসলামে দু’য়ার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত পর্ব-০২


দু’আ করার উপযুক্ত সময়ক্ষণ :
দু’য়া করার জন্য সম্মানিত সময় বেছে নিতে হবে। কেননা বুদ্ধিমান মানুষ তার প্রয়োজন উপযুক্ত সময়ে সেরে নেয়ার অপেক্ষায় থাকে। সমযদার ব্যাক্তি সুযোগের সুবর্ণ মুহুর্তটুকু সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগায়। তাই দু’আর জন্যও সম্মানিত সময় বেছে নেয়া বুদ্ধিমান ঈমানদারের কাজ। সর্বোত্তম সময় হলো বছরের ভিতরে আরাফাতের দিন, মাসের ভিতরে রমযান মাস, সাপ্তাহের ভিতরে জুমায়ার দিন আর রাতের ভিতরে শেষ রাত। রাসুল স. বলেন, “ আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক রাত্রে দুনীয়ার আসমানে রাতের এক-তৃতীয়াংশ থাকতে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আমার নিকট প্রার্থনা করবে এবং আমি তার প্রার্থনা কবুল করব। কে আমার নিকট কিছু চাইবে এবং আমি তা তাকে দেব। কে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে এবং আমি তাকে ক্ষমা করব।

আল্লাহ পথের যাত্রীদের উচিত উপযুক্ত সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানো। আল্লাহর পথে জিহাদের কাতারে দাঁড়াবার ভীড়ের কালে, বৃষ্টিপাত কালে, ফরজ নামাযের একামাত কালে আসমানের দরজা সমূহ খুলে যায় মর্মে এবং এই সময় দু’আ করার জন্য হযরত আবু হোরায়রা রা. কর্তৃক বর্ণনা এসেছে। আযান ও একামাতের মধ্যবর্তী সময়ে দু’য়া ব্যর্থ ও বিফল হয় না, রোযাদারের দু’আ বিফল হয় না মর্মে রাসুল স. ইরশাদ করেছেন

কিবলামুখী হয়ে দু’আ চাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব এসেছে। রাসুল স. বলেন, “তোমাদের প্রভু লজ্জাশীল এবং সম্মানিত। কেউ হাত উঠালে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জানুভব করেন।” হযরত আনাস রা. বলেন যে, “ হুযুর স. দু’আর সময় দুহাত এতদূর উঠাতেন যে, তার হস্তদ্বয়ের শুভ্রাংশ দৃষ্টিগোচর হত। ” হযরত ওমর রা. বলেন- “হুযুর স. তার হস্তদ্বয় দু’আর জন্য দুহাত বাড়িয়ে তদ্বারা মুখমন্ডল না মুছা পর্যন্ত নামিয়ে আনতেন না।” হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন- “ হুযুর স. দু’আ চাইবার কালে তার হস্তদ্বয়ের অগ্রভাগ একত্র করে তার অভ্যন্তরীণ অংশ দ্বারা নিজের মুখ মুছতেন। তিনি আকাশের দিকে তার দৃষ্টি তুলতেন না।” হুযুর স. বলেন- “মানুষ যেন দু’আর সময় তাদের দৃষ্টি আসমানের দিকে না উঠায় বা চক্ষু মুদে না থাকে।”

দু’আর সময় কণ্ঠস্বর স্পষ্ট আওয়াজ এবং নিস্তব্ধতার মাঝামাঝি রাখতে হবে। দু’আর মধ্যে বাক্যালঙ্কার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রার্থনাকারীর জন্য যা উত্তম তিনি তাই প্রার্থনা করবেন। হুযুর স. বলেন, “ তোমরা দু’আর মধ্যে অংলকৃত বাক্য পরিত্যাগ করবে।”

দীনতা, হীনতা এবং আশা ও ভয়ের সাথে দু’আ করার শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি। সত্যিই তো, আমরা মানুষ কতো ছোট, কত হীন, কত দুর্বল! এই মনোভাব সামনে রেখে দু’আ করতে হয়। হযরত রাসূল স. বলেন-“ আল্লাহ যে বান্দাকে ভালবাসেন তার কাছ থেকে দীনতা না দেখা পর্যন্ত তাকে পরীক্ষা করেন।”

দু’আ কবুল হওয়ার ব্যাপারে মনে দৃঢ় আশা পোষণ করা দু’য়াকারীর জন্য কর্তব্য। আমরা এমন সত্বার কাছে চাই যার কাছে বস্তুগত এবং অবস্তুগত কোন সম্পদের অভাব নাই। আমাদের প্রয়োজন মিটাতে তাকে কারো দ্বারস্থ হতে হয়না। সুতরাং দু’আ কবুল হওয়ার বিষয়ে মনে দৃঢ় মনোভাব ও আশা পোষণ করতে হবে। মহান আল্লাহ একই সময় দুনীয়া ও তদস্থিত এবং এর বহিস্থ সকল মাখলুকের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। দু’য়ায় দৃঢ়তা প্রকাশ করার ব্যাপারে মুসলিম শরিফের দুয়া, তওবা ও যিকির অধ্যায়ে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, “ আনাস রা. হতে বর্ণিত- তিনি বলেন- রাসুল স. বলেন- যখন তোমাদের কেউ আল্লাহর কাছে দু’আ করে তখন দৃঢ়তা সহকারে দু’আ করা উচিত এবং একথা বলা উচিত নয় যে, “ হে আল্লাহ তুমি যদি ইচ্ছা কর তবে আমাকে দান কর” কেননা, মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য কোন বাধ্যবাধকতা নেই। ” এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। বান্দা পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে তাঁর মহান দরবারে কোন কিছু প্রার্থনা করলে তিনি তা আবশ্যই মঞ্জুর করেন। এতে বান্দার মনে কোন প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দের অবকাশ থাকা উচিত নয়। কোন কিছুই আল্লাহর জন্য অসম্ভব নয়।

দৃঢ়ভাবে তিন বার প্রার্থনা করা দু’য়াকারীর আকুতির গভীরতা প্রকাশ করে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, “ হুযুর স. যখন আল্লাহর দরবারে কোন দু’আ চাইতেন তা তিনি তিনবার চাইতেন। দু’আ কবুল হওয়ার জন্য কোন তাড়াহুড়া করার প্রয়োজন নাই।” হুযুর স. বলেন- “কোন দু’আর ফল তাড়াতাড়ি দেখতে না পেলেও ব্যস্ত হয়ো না। কেননা প্রার্থনা অনেক পরেও কবুল হতে পারে। কেউ কখনো এরূপ বলো না যে, দু’আ চেয়েছি কিন্তু তা এখনো কবুল হলো না। যখন তোমরা আল্লাহর নিকট কোন কিছু চাও তখন ধৈর্যের সাথে প্রার্থনা কর। ”

আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে দু’আ শুরু করা উত্তম পদ্ধতি। হযরত আবু সোলায়মান দারয়ানী রা. বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কোন প্রয়োজনে প্রার্থনা করতে ইচ্ছা করে, সে যেন হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর উপর দরূদ পাঠ করে তা শুরু করে। আবার দরূদ পাঠের মাধ্যমে তা সমাপ্ত করে। কেননা, আল্লাহ দরূদ পাঠকারীদের দু’আ কবুল করেন।” অপরদিকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন আল্লাহর নিকট কোন হাজতের উদ্দেশ্যে দু’আ চাও তা আমার উপর দরূদের মাধ্যমে আরম্ভ কর। কেননা মহান আল্লাহ দুটি হাজতের মধ্যে সম্মানিত একটি হাজত পূর্ণ করেন আর একটি অগ্রাহ্য করেন।”

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৩

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: কিছু কিছু মুন্সী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে দু’আ করে না আমি দেখে কষ্ট পায় তারপর হাদিস খুজে দেখি দু’আ করা সুন্নতের পর মুতহাব
অথচ মুন্সী বুঝে না নামাজের পর দু’আ বা মোনাজাত করা যাবে না পূর্বপুরুষগণ মানে দাদা নানা তারও মোনাজাত করতেন কিন্তু সেই মুন্সী হাদিস দেখাতে পারিনি যে নবী নামাজের পর দু’আ বা মোনাজাত করেননি-----কিছু কিছু সুন্সী জন্য আমরা সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে -----------

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: আপনি কোথাকার কথা বলছেন আমি জানিনা। তবে আমি যতো জায়গায় নামায পড়েছি সকল ইমাম সাহেবেকে দেখেছি ফরজ নামাযের পরে হাত তুলে দু’য়া করতে । হ্যা, ফরজ নামাযের পরে সম্মিলিতভাবে দির্ঘক্ষণ দু’য়া অনেক ইমাম সাহেব করেন না । এটাতো ঠিকই আছে। ফরজ নামাযের পরে সম্মিলিত দু’য়া সংক্ষিপ্ত হয়। এছাড়া ফজরের নামাযের পরের দু’য়া, এশার নামাযের কিংবা আসরের পরের সম্মিলিত দু’য়া কিছুটা বেশী সময় নিয়ে হুজুররা করে থাকেন। এখন আপনি এর ব্যতিক্রম কোথায় দেখেছেন আমি জানিনা ভাই। তবে হ্যা, সম্মিলিতভাবে দু’য়া করা যেহেতু ফরজ নয় সেহেতু বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়িও উচিত নয়।
আমার পোষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের যে কোন প্রয়োজনে আমারা যেন মহান আল্লাহর কাছে দু’য়া করি ও তার পথ পদ্ধতি সহব্লগারদের সাথে শেয়ার করা- আর কিছু নয়। ভাল থাকবেন। দু’য়ার দরখাস্ত রইল।

২| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:০২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পোস্টের শিরোনামে পর্ব - ২ লিখে দিলে ভালো হত।

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৪২

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: ধন্যবাদ, এডিট করে দিলাম।

৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:১৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুব দরকারি পোস্ট দিয়েছেন। মানুষ হাজার সমস্যায় থাকে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সমাধানের জন্য দোয়া করতে হবে। কোনও বিপদে ধৈর্য ধারনের শক্তির জন্য দোয়া না করে সরাসরি সমাধানের জন্য দোয়া করা উচিত। কারণ আল্লাহ্‌ চাইলে পাহাড়সম সমস্যার সমাধান করে দিতে পারেন। তাই আল্লাহর কাছে চাওয়ার সময় সবচেয়ে ভালটা চাওয়া উচিত। বেহেশতের জন্য যখন দোয়া করব তখন ৮ টি বেহেশতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বেহেশত জান্নাতুল ফেরদাউস চাওয়া উচিত। কোনও ভালো কাজের অসিলায় দোয়া চাওয়া যায়। তবে কোনও মানুষের অসিলায় দোয়া চাওয়া যায় না। দোয়ার জন্য হাত তোলা উত্তম তবে তুলতেই হবে এমন না। মনে মনে বাংলাতে যেকোনো কিছু আল্লাহর কাছে চাওয়া যায় কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া যে কোনো সময়। আশা করি পরের পোস্টে আপনি কাদের দোয়া সহজে কবুল হয় সেটা নিয়ে লিখবেন।

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১৪

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: জ্বি জনাব সাড়ে ‍চুয়াত্তর পরের অংশে থাকছে ইনশাআল্লাহ।

৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: খুবই প্রয়োজনীয় পোস্ট ।

আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিকভাবে,সঠিক সময়ে দোয়া করার তওফিক দিন।

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১৫

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: আমিন। আল্লাহ পাক কবুল করুন।

৫| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি আমার জন্য একটু দোয়া করবেন প্লীজ?

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১৫

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: সবার জন্য দু’য়া রইল। আপনার-আমার-আমার সকল ব্লগার বন্ধুদের জন্য।

৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: দোয়া কোন উপকারে আসে না এটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় পরীক্ষিত।বিশেষ করে রোগ বালাই এর ক্ষেত্রে।

৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৩৭

নতুন বলেছেন: দোয়া করলে কাজ হবে এটা কি সম্ভব?

আমাদের দেশে সবাই কদরের রাতে দোয়া করে নামাজ পরে। তাদের ভাগ্য উন্নতি হয় না।

ইরাক যুদ্ধে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা দোয়া করেছিলো। কবুল হয় নাই।

ইস্রাইয়েলে, কাস্মিরে, উঘুরের জন্য প্রতিদিন দোয়া করছে মানুষ কোন দোয়া কবুল কেন হয় না?

৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:১৪

নতুন বলেছেন: আরেকটা কথা উপরে নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই বলেছেন।

দোয়া করলে রোগ ভালো হয়?

আসুন ব্যক্টেরিয়া বা ভাইরাস কালচার করে রেখে দিয়ে আপনাকে দিয়ে দেবো। আপনি দোয়া করে ঐ গুলি মেরে ফেলবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.