নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনন্দ-পঠন

লিখতে গিয়েই নিজেকে খুঁজে পাই

মেহেদী হাসান মঞ্জুর

লিখতে গিয়েই নিজেকে খুঁজে পাই।

মেহেদী হাসান মঞ্জুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের গ্রামের একটি কিশোরী মেয়ে যৌন নির্যাতনের(গনধর্ষনের) শিকার হয়েছে। (শেষ পর্ব)

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০১

বেকার যুবক ছেলেরা নদীর পাড়ের মহল্লায় গিয়ে মেয়েটির বাড়িতে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারের উপস্থিতি লক্ষ্য করে। মহল্লার নারী-পুরুষ ও ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের দল মেম্বার সাহেবকে ঘিরে জটলা পাকিয়েছে। মেম্বার সাহেব এই মাত্র জেলা সদর থেকে ফিরে এসে তাদের কাছে ঘটনার বিবরণ খুলে বলছে। এখানে এসে মেম্বার সাহেবকে দেখতে পাবে-এমনটি তারা ভাবেনি, তাকে দেখতে পেয়ে তাদের ক্রোধ সাথে সাথে ক্ষোভে পরিণত হয়ে বাহির থেকে বুকের ভেতর ঢুকে পড়ে পুঞ্জীভূত হয়ে যায়। তারা ঘটনাটির ব্যাপারে আরো তথ্য জানতে জটলার কাছে ভিড় করে দাঁড়ায়। হম্বিতম্বি করতে করতে এগিয়ে আসা যুবক ছেলেরা এগিয়ে গিয়ে জটলাটাকে বাড়িয়ে তোলা ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে সক্ষম হয় না। মেম্বার সাহেবের কাছ থেকে তারা সকলে শুনতে পায়- হাসপাতালে মেয়েটির সাথে কথা বলতে বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেল থেকে সাংবাদিক এসেছে। তারা মেয়েটির সাক্ষাৎকার নিয়েছে- আগামীকালকেই হয়তো ঘটনাটি সারাদেশেব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। শহরের মানুষ নারী নির্যাতনের ব্যাপারে এখন অনেক বেশী সচেতন, তারা দোষীদের শাস্তির দাবীতে দরকার হলে আন্দোলনে নামতেও পিছপা হবে না- এবং এধরনের ঘটনা নিয়ে তারা পূর্বেও বেশ কয়েকবার আন্দোলন করেছে। আগামীকালই মেয়েটির বাবা থানায় গিয়ে মামলা দাখিল করবে আসবে। নারী নির্যাতনের মামলায় খুব তাড়াতাড়ি ওয়ারেন্ট বের হয়। মামলা চলে যায় দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে- মামলা বছরের পর বছর ঝুলে না থেকে খুব দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যায়- এই ধরনের নারী নির্যাতনের মামলায় দোষীদের শাস্তি কেউ আটকাতে পারে না। জটলার মধ্যকার দুই-একজন কিছু মাত্রায় সচেতন লোক নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে থাকে, এধরনের মামলায় নাকি জামিন নাই। আসামীদের নাকি ফাঁসি আদেশও হয়ে যেতে পারে। মেম্বার সাহেব বলতে থাকে, আসামীপক্ষ থেকে কেউ যদি মেয়েটির বাব-মা বা আত্মীয়-স্বজনকে হুমকি দিতে আসে তাহলে তাদের নামেও মামলা হয়ে যেতে পারে। এই কথাগুলো শোনার পর- মেয়েটির বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিতে তীব্রবেগে ফুড়ে আসা যুবক ছেলেরা ভেতরে ভেতরে বেশ একটু দমে যায়। মেয়েটি ও মেয়েটির পরিবারের উপর তাদের ক্ষোভ কিন্তু একটুও না কমে বরঞ্চ বাঁধা পেয়ে তা যেন আরো বেড়ে উঠে তাদের বুকের ভেতরটা হয়ে থাকে বোমা ফেটে যাওয়ার আগের মুহূর্তের মত।



গ্রামাঞ্চলে আগেকার দিনে সমাজের ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য, সমাজের কথাই ছিল শেষ কথা, সমাজের প্রথা ও সংস্কার অনুযায়ী মাতাব্বররা যে সিদ্ধান্ত দিত সকলেই তা নত মুখে মেনে নিতে বাধ্য হত। আজকের দিনে সমাজের আধিপত্য থাকলেও ধীরে ধীরে রাষ্ট্র তার ডাল-পালা প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও মেলতে শুরু করেছে। এবং কিছু কিছু ব্যাপারে রাষ্ট্র তার একাধিপত্য অর্জন করে ফেলেছে, রাষ্ট্র যতক্ষন আছে ততক্ষন সেখানে সমাজের বড় ধরনের কোন প্রবেশাধিকার নেই। রাষ্ট্র সেখান থেকে চলে যাওয়া মাত্রই সমাজ সেখানে পুনরায় জাঁকিয়ে বসে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সাধারণত সমাজের প্রতিনিধিত্ব করলেও এখন সে রাষ্ট্রের দূত হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।



যুবক ছেলেগুলো বুঝতে পারে, মেয়েটির ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার কাজে সমাজের সমর্থন পেলেও রাষ্ট্রের সমর্থন তারা কখনই পাবেনা। এমন কাজ এই মুহুর্তে করলে রাষ্ট্র তাদের ছেড়ে দেবে বলে মনে হয় না। তবে তারা আশা করে থাকে, রাষ্ট্র যখন এই ব্যাপারে তার কাজ শেষ করে বা না করেই হাত গুটিয়ে চলে যাবে তখন তারা পুরো সমাজের সমর্থন নিয়ে আবার আগ্রাসী হবে। বুকের ভেতর প্রচন্ড ক্ষোভ নিয়ে যুবক ছেলেরা জটলা থেকে নতমুখে ধীরে ধীরে সরে আসে। একটা খোলা জায়গায় গিয়ে নিজেরা গোল হয়ে বসে বিরস মুখে নিজদের মধ্যে আলোচনা শুরু করে, এখন পরিস্থিতি খুব একটা ভাল নয়- মেয়েটির পরিবারকে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না, তাহলে তাদের নিজদেরও বিপদে পড়ে যাবার আশঙ্কা আছে। তাই তাদের এখন একটু ধৈর্য ধরে, বুঝে-শুনে কাজ করতে হবে। তবে তারা এই এই সিদ্ধান্তে অটল হয়ে রইল যে আজ-হোক কাল হোক মেয়েটির পরিবারকে তারা গ্রাম ছাড়া করবেই। এই মহল্লার অন্য মেয়েদের প্রতি তাদের ক্ষোভের কথা মনে পড়ে যাওয়াতে তারা মনস্থির করে ফেলল শুধু এই মেয়েটির পরিবারকে নয়- এই সুযোগে এই ধরনের ঘটনার জন্য এখানে বসবাসকারী সকলকে দায়ী করে পুরো মহল্লাটিকে পুড়িয়ে দিতে হবে। তারা সকলে গুঞ্জন করে উঠে, শধু মামলাটি আগে শেষ হোক। এই মহল্লাটির জন্যই গ্রামের এত বদনাম, গ্রামের মান-সন্মান সব ধুলোয় মিশে যেতে শুরু করেছে। এদের অপকর্ম অনেক সহ্য করা হয়েছে, আর সহ্য করা হবে না। পুলিশ এসে এদেরকে কতদিন পাহারা দিয়ে রাখতে পারবে!



কারা এই ধরনের ঘটনাটা ঘটিয়েছে তা জানার জন্য এবার এরা উৎসুক হয়। এই মহল্লারই একজনকে ডাক দিয়ে নিয়ে এসে তারা শুনতে পেল- পাশের গ্রামের সেই ছেলেটির নেতৃত্বে আরো কয়েকটি গ্রামের কয়েকজন ছেলে মিলে নির্যাতনের ঘটনাটা ঘটিয়েছে। এই গ্রামেরই একটা ছেলে- মেয়েটির চাচাতো ভাই- তাদেরকে সহযোগীতা করছে। এবার যুবক ছেলেগুলো ঘটনাটির কারন আঁচ করতে পারে। মেয়েটির ভাড়া খাটতে যাওয়া সমন্ধে তারা যে ধারনা করেছিল সেটিও যায় ভেঙ্গে। মেয়েটির প্রতি ক্ষোভের সাথে সাথে এই ছেলেগুলোর উপরও তাদের নতুন একটি ক্ষোভ তৈরী হয়, এর মূল কারন হচ্ছে ছেলেগুলো পাশের গ্রামের-পাশের গ্রামের লোক তাদের গ্রামের কাউকে মারধোর করলে যেমন ক্ষোভ তৈরী হয় এ ক্ষোভটা তার চেয়েও অনেক ভয়ংকর। এই ঘটনাটি যার নেতৃত্বে ঘটেছে সেই ছেলেটির উপর এবং মেয়েটির চাচাতো ভাইয়ের প্রতি তাদের ক্ষোভ নতুন নয়-তবে এবার এই ঘটনার কারনে পুরাতন ক্ষোভটি ভয়ানক মাত্রায় বেড়ে উঠে। কয়েকমাস আগে থেকেই তাদের এই ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। এখন তারা বলতে শুরু করে ছেলেগুলো ধরা পড়ুক এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। এই কাজে তারা পুলিশ এবং আইন-আদালতকে যেকোন ধরনের সাহায্য করতেও প্রস্তুত। দরকার হলে তারা মানবাধিকার সংগঠনের কাছেও যাবে যাতে দোষীরা তাদের শাস্তি এড়াতে না পারে।



আশে-পাশের গ্রামের দোষী ছেলেদের প্রতি এই গ্রামের যুবক ছেলেগুলোর পুরাতন ক্ষোভের কথা বলতে হলে এই ঘটনার কয়েকমাস পূর্বে ফিরে যেতে হবেঃ সেই সময়ে গ্রামের যুবক ছেলেগুলো হঠাৎ করে একসময় লক্ষ্য করে পাশের গ্রামের মাতাব্বরের যুবক ছেলেটি নদীর পাড়ের চৌদ্দ বছরের একটি কিশোরী মেয়েকে প্রায় প্রত্যেকদিন অটোরিক্সাতে উঠিয়ে কোথায় যেন নিয়ে যায় আবার সন্ধার পর মহল্লাটির আশে-পাশে কোথাও নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। তারা ছেলে-মেয়ে দুজনকে একসাথে হাতে-নাতে ধরার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী অবিলম্বে শুরু হয়ে যায় কাজ- একদিন মেয়েটি বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে শোনার পর তারা সেদিন সন্ধ্যার সময় ভ্যান, রিক্সা, ও অটোরিক্সা চলাচলকারী রাস্তাটিতে টহল বসায়। তারা প্রত্যেকটা অটোরিক্সা থামিয়ে খুঁজে খুঁজে দেখে- ছেলেটিকে আর মেয়েটিকে একসাথে পাওয়া যায় কিনা। বেশ কয়েকটা অটোরিক্সা খুঁজে দেখার পর তারা যখন প্রায় নিরাশ হয়ে গেছে তখন দেখতে পেল, মেয়েটি হেঁটে হেঁটে রাস্তা ধরে এগিয়ে আসছে। এর পরবর্তীতে যে অটোরিক্সাটি আসে সেটাকে থামাতেই দেখা গেল, সেই নির্দিষ্ট ছেলেটি অটোরিক্সাতে বসে আছে। গ্রামের যুবক ছেলেগুলো সাথে সাথে ছেলেটিকে পাকড়াও করে মহল্লায় নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পারল-তাদের ধারণা পুরোপুরি সত্য, ছেলেটি প্রায়-প্রায়ই মেয়েটিকে কোন নির্জন জায়গাতে নিয়ে গিয়ে একান্তভাবে কিছু সময় কাটিয়ে মেয়েটিকে আবার মহল্লার কাছাকাছি কোন জায়গায় নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। ছেলেটাকে মারধোরের ভয় দেখিয়ে তারা সব সত্য বের করে নিয়ে আসে। ছেলেটি মেয়েটিকে নানা ধরনের উপহার সামগ্রী দিয়ে, ভালো ভালো হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে এবং বিয়ে করে ঘরের বউ বানাবার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বশে এনেছে। এর মধ্যেই গ্রামের মাতব্বর শ্রেনীর লোকদেরকে খবর দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। মাতাব্বররা মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য ছেলেটির উপর চাপ দিলে সে জানায়, সে বিবাহিত এবং একটি সন্তানও আছে এবং এ কথাটি সে গোপন রেখেছিল মেয়েটির কাছ থেকে । এই মেয়েটিকে সে কোনমতেই বিয়ে করতে পারবে না। ছেলেটির সাথে মেয়েটির একান্তে সময় কাটানোর কারনে মেয়েটি তার ইজ্জ্বত খুইয়েছে, এখন হয় মেয়েটিকে তার বিয়ে করতে হবে নইলে মেয়েটির হারানো ইজ্জ্বতের ক্ষতিপূরন স্বরূপ চল্লিশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ছেলেটি জরিমানা দিয়ে মেয়েটিকে বিয়ে করার হাত থেকে রেহাই পেতে খুব সহজেই রাজী হয়ে যাওয়ায় ছেলেটির বাবা-মাকে ঘটনার বিবরন ও জরিমানার কথা জানিয়ে ফোন দেওয়া হয়। ছেলের বাবা ধনী মানুষ, সে তৎক্ষণাৎ এসে চল্লিশ হাজার টাকার বিনিময়ে তার ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ছেলেটি গ্রামের একটি মেয়ের ইজ্জ্বত ও সাথে গ্রামের সন্মান নষ্ট করে মাত্র চল্লিশ হাজার টাকায় মাফ পেয়ে যাওয়াতে গ্রামের যুবক ছেলেগুলোর এই ছেলেটির প্রতি ক্ষোভ থেকেই যায়। আর মেয়েটির চাচাতো ভাইয়ের প্রতি তাদের ক্ষোভ এই কারনে যে, মেয়েটির সাথে তাদেরকে প্রেম করতে সহযোগীতা না করে সে সহযোগীতা করেছে পাশের গ্রামের একটি ছেলেকে। মেয়েটির চাচাতো ভাইয়ের সহযোগীতার কারন হল, এই ছেলেটির অটোরিক্সাটি সে ভাড়ায় চালায়। সহযোগীতা না করলে ছেলেটি হয়তো তার কাছ থেকে অটোরিক্সা কেড়ে নেবে, তখন অন্য একটি অটোরিক্সা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তাকে অর্থনৈতিকভাবে প্রচন্ডরকম সমস্যায় পড়তে হবে। এই ঘটনার কারনে অন্যকিছু মানুষের ক্ষোভ আবার মেয়েটি ও তার বাবার প্রতি। তাদের বক্তব্য এরকমঃ মেয়েটি নাকি তার বাবার ষড়যন্ত্রে বিভিন্ন ধনী মানুষের ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে জরিমানা আদায় করে-এটাই ওদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওদিকে অন্য কারো প্রতি নয় জরিমানা দেওয়া ছেলেটির ক্ষোভ জন্ম নিল তার কাছেই প্রতারণার শিকার হওয়া এই নির্বোধ মেয়েটার প্রতি- এই কারনে যে তার গ্রামের লোকজন তার কাছ থেকে জরিমানা আদায় করেছে, ছেলেটির ধারণা মেয়েটির উপর প্রতিশোধ নিতে পারলে তার পরিবার ও গ্রামের লোকজনের প্রতি প্রতিশোধ নেয়া হয়ে যাবে কারন এ ঘটনার কারনে মেয়েটির পরিবার ও তার গ্রামের মান-সন্মান নষ্ট হয়ে যাবে। ছেলেটি হয়তো তখনই পরিকল্পনা করে ফেলেছে- এই ঘটনার সে শোধ নেবে। মোক্ষম প্রতিশোধ নেবে সে। ছেলেটির ঐ প্রতিশোধ নেওয়ার তাড়না থেকেই মেয়েটির প্রতি এই নির্মম যৌন নির্যাতনের ঘটনাটির জন্ম।



ছেলেটি জরিমানা দেওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই মেয়েটির প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে এবং পরিকল্পনাটিকে বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করে দেয়। এর ঠিক তিনমাস পর সে সফল হয়। এই ঘটনাটিকে একটি কেস স্টাডি হিসেবে নিলে যৌন নির্যাতন সম্পর্কিত যে সত্যটি বের হয়ে আসে তা হল, শুধুমাত্র যৌনসুখ লাভের প্রত্যাশায় কোন পুরুষ কোন মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন চালায় না। প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধপরায়নতাই এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে। নারীর উপর নানা ধরনের যৌন নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা সুচারুরুপে পরীক্ষা করে দেখলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের কারনই খুঁজে পাওয়া যায়।



এই মহল্লার অন্যান্য লোকের ধারণা, মেয়েটির চাচাতো ভাইয়ের সহায়তায় সেই ছেলেটি আবার মেয়েটির সাথে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করে দেয়। তার বউ আছে এই সত্য মেয়েটির কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়ায়, ছেলেটি তাকে বলে দরকার হলে ঘরের বউকে তালাক দিয়ে সে তাকে বিয়ে করবে। ছেলেটি আরো নানা ধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে, আবেগঘন প্রেমপূর্ণ কথাবার্তা বলে এবং নানা কিছুর লোভ দেখিয়ে এবারও সেই চৌদ্দ বচ্ছরের অপরিপক্ক বুদ্ধির ও প্রতিনয়ত ক্ষুধায় জর্জর মেয়েটিকে আবারো বশ করে ফেলে। তাকে বিয়ে করার কথা বলে নিয়ে যায়-জেলা সদরে। মেয়েটির জবানবন্দীতে উঠে আসে- সে রাস্তা দিয়ে হেঁটে তার বোনের বাড়িতে যাচ্ছিল, সেসময় ছেলেটি তার বন্ধু-বান্ধব সহ একটি অটোরিক্সা নিয়ে এসে খানিকটা নির্জন জায়গা পেয়ে তাকে টান দিয়ে অটোরিক্সাতে তুলে মুখে কাপড় বেঁধে জেলা সদরে নিয়ে যায়। ঘটনার দিন দুপুরে মেয়েটি তার বোনের শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ বাড়ি থেকে বের হয় এবং তারপর সন্ধ্যা রাত্রিতে তাকে পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।



এই ঘটনা উপলক্ষে সর্বদা ঝামেলা এড়িয়ে চলতে পছন্দ করা ও মেয়েটির ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া গ্রামের কিছু সহানুভূতিশীল লোকের মতামতটা এরকম- এই ধরনের ঘটনার পরে অন্যকোন ছেলে তো আর মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজী হবে না। ফলে নির্যাতনকারী ছেলেটিকে যদি বুঝিয়ে-সুজিয়ে মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি করানো যায় তাহলে, এই শর্তে মেয়েটির বাবার উচিত মামলা তুলে নিয়ে আপোষ করে ফেলা।

মেয়েটির শরীরে কিছু কিছু অংশ ও দুটি স্তন ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে, মেয়েটির যৌনাঙ্গে কয়েকটি সেলাই দিতে হয়েছে- এই খবরটি শুনতে পেয়ে আমাদের গ্রামের একটি যুবক ছেলে মন্তব্য করে, ছেড়ার জিনিস ছিড়েছে- খাওয়ার জিনিস খেয়েছে। এতে এত দুঃখ করার কি আছে। (সমাপ্ত)



বিঃ দ্রঃ এই লেখাটিতে আমি বিভিন্নজনের নানা ধরনের বক্তব্যকে আমার নিজের ভাষায় গুছিয়ে বলার চেষ্টা করেছি। কারন তাদের আঞ্চলিক ভাষায় বলা কথাগুলো অনেকেই ঠিকমত বুঝে উঠতে পারবেন না। আরেকটি বিষয় হল, তাদের বক্তব্যগুলোতে যৌন উদ্দীপনামূলক স্ল্যাং এর প্রচন্ড রকম ছড়াছড়ি। কোনমতেই স্ল্যাং গুলোকে আমি এই লেখায় ব্যাবহার করতে চাই নি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৩

মেহেদী হাসান মঞ্জুর বলেছেন: এখানে লেখাটির প্রথম পর্ব পাওয়া যাবে।

২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৪

মেহেদী হাসান মঞ্জুর বলেছেন: এখানে লেখাটির দ্বিতীয় পর্ব পাওয়া যাবে।

৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

নতুন বলেছেন: নস্ট মানুষের সমাজে এই ঘটনা সাভাবিক... :(

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩

মেহেদী হাসান মঞ্জুর বলেছেন: ঠিকই বলেছেন- নতুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.