নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনন্দ-পঠন

লিখতে গিয়েই নিজেকে খুঁজে পাই

মেহেদী হাসান মঞ্জুর

লিখতে গিয়েই নিজেকে খুঁজে পাই।

মেহেদী হাসান মঞ্জুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাইপেশিয়া (আলেকজেন্দ্রিয়ার প্রথম ও শেষ নারী বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫



মূলঃ কার্ল সাগান





এটা হচ্ছে, আলেকজেন্দ্রিয়া লাইব্রেরীতে বসে কাজ করা একজন সর্বশেষ বৈজ্ঞানিকের গল্প। একজন গনিতবিদ, জ্যোতির্বিদ, পদার্থবিদ এবং আলেকজান্দ্রিয়াতে নিও প্লেটোনিক ফিলোসফি স্কুলের প্রধানতম ব্যাক্তি। যে কোন যুগে, যে কোন একক ব্যাক্তির জন্য এটা অনেক বড় মাপের একটা অর্জন। তার নাম ছিল হাইপেশিয়া। তার জন্ম আলেকজান্দ্রিয়াতে, খ্রিষ্টীয় ৩৭০ সালে।



তখন ছিল এমন একটা সময় যখন নারী মূলত কোন ধরনের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারত না। তারা ছিল অনেকটা যেন পুরুষের সম্পত্তির মত। তথাপিও, হাইপেশিয়া আত্ম-অসচেতনতার সাথে পুরুষের প্রভাববলয়ের ভেতর দিয়ে ঘুরে বেড়াতে সক্ষম ছিল। সকল দিক দিয়েই, সে ছিল অসাধারণ সুন্দর! এবং যদিও তার অনেক পাণি-প্রার্থী ছিল, তবুও বিয়ের প্রতি তার মধ্যে কোন ধরনের আগ্রহ কাজ করত না।

হাইপেশিয়ার সময়ে আলেকজেন্দ্রিয়া, দীর্ঘ দিন ধরে রোমানদের কর্তৃত্বে থাকার ফলে, ছিল ভয়ানকরকম সংঘাত কবলিত একটা নগর। পুরাতন সমাজ ব্যবস্থায় দাস-প্রথা ছিল অনেকটা ক্যান্সারের মত, যা সভ্যতার জীবনীশক্তিকে ধীরে ধীরে কমিয়ে নিয়ে আসত। বেড়ে উঠতে থাকা খ্রীস্টান ধর্মীয় গীর্জাগুলো ধীরে ধীরে ক্ষমতা সংহত করে আনে এবং প্যাগান ধর্মীয় প্রভাব ও সংস্কৃতিকে নির্মূল করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। হাইপেশিয়া দাঁড়িয়ে ছিল শক্তিশালী সামাজিক শক্তির একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে। ক্রিল, আলেকজেন্দ্রিয়ার বিশপ, হাইপেশিয়াকে ঘৃনা করত, এটার কারন রোমান গভর্নরের সাথে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব এবং সে ছিল জ্ঞানার্জন এবং বিজ্ঞানের প্রথিকৃৎ। যা বিশালভাবে প্যাগান ধর্মীয় গীর্জার দ্বারা অধিষ্ঠিত ছিল।



ব্যাক্তিগতভাবে ভয়ানক বিপদের মধ্যেও পড়েও হাইপেশিয়া তার শিক্ষাপ্রদান এবং জ্ঞানের প্রচার-কার্য চালিয়ে যায় খ্রিষ্টীয় ৪১৫ সালের সেই দিনটি পর্যন্ত যেদিন তার কাজে যাওয়ার সময় ক্রিলের অনুসারীদের একটা উন্মত্ত জনতার দল তার পথ রুদ্ধ করে দাঁড়ায়। প্রথমে, তারা তাকে তার ঘোড়ার গাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নামিয়ে আনে, তারপর তার পরনের কাপড়-চোপড় ছিড়ে টুকরো-টুকরো করে ফেলে এবং অবশেষে সামুদ্রিক প্রাণীর ধারালো খোলের সাহায্যে তার শরীর খাবলে সমস্ত মাংশ হাড় থেকে ছাড়িয়ে আনে। তার দেহাবশেষ পুড়িয়ে ফেলা হয়, তার সমস্ত কাজ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়, এমনকি তার নামটা পর্যন্ত সকলে ভুলে যায়। ক্রিল ভূষিত হয় সেইন্ট উপাধিতে।



হাইপেশিয়ার মৃত্যুর একবছরের মধ্যে আলেকজেন্দ্রিয়া লাইব্রেরীর অবশিষ্টাংশও পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এটা এমন একটা ব্যাপার যার মধ্য দিয়ে পুরো সভ্যতা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে গেছে, যেন নিজে থেকেই সংগঠিত হওয়া মস্তিষ্কে একধরনের অস্ত্রোপাচার, যাতে করে এটার সমস্ত স্মৃতি, সকল আবিষ্কার, ধারণা এবং আবেগ-অনুভূতি চুড়ান্তরূপে মুছে ফেলা যায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭

অদ্বিত বলেছেন: Cosmos এ বলছিল নাকি কার্ল স্যাগান ?

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩১

মেহেদী হাসান মঞ্জুর বলেছেন: হ্যাঁ, কসমসে বলেছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.