নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারপাশের সব অসাধারণ প্রতিভাবানদের ভিড়ে অতি সাধারন একজন। ভালোবাসি বৃষ্টিতে ভিজে বৃষ্টিকে অনুভব করতে, ভালোবাসি কোন এক জোছনা রাতে আঁধারে মিশে যেতে, ভালোবাসি বন্ধুত্ব, প্রান খোলা হাসি, গান, কবিতা আর আঁধারে হারিয়ে যাওয়া একাকী।

শূন্যভুবনের মেহেদী

অজস্র শব্দমালার বিবর্ণ এপিটাফের ছোট্ট এক বিন্দু

শূন্যভুবনের মেহেদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা সাহিত্যের \'\'অসামান্য\'\' কিংবদন্তি হুমায়ূন আহমেদের জন্য \'\'সামান্য\'\' একটা লেখনী ।

১৯ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৪৭



‘মরিলে কান্দিস না আমার দায়...’ তবুও কিংবদন্তির কথাশিল্পী ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের জন্য কেঁদেছিল বাংলাদেশ, এখনো কাঁদছে অসংখ্য পাঠক, দর্শক ও ভক্তানুরাগী। আমার মতো অনেকেরই হয়তো চোখে পানি নেই, কিন্তু অন্তর আপনার জন্য কেঁদে চলেছে সব সময় ।

সাহিত্যের অসীম জগতে প্রবেশ আপনার বই সাথে করে । খুব সম্ভবত ''বোতল ভূত'' দিয়ে উনার লেখা সাহিত্যকর্মগুলো পড়া শুরু করি। কেমন করে যেন মিশে গেলাম উনার লেখার সাথে। নেশাগ্রস্থ হয়ে উনার বইটা শেষ করি ! আজ উনার সব বই পড়া শেষ, কিন্তু সেই নেশাটা এখনো সেই প্রথম দিনের মতোই আছে। এ যেন আড়চোখে মিষ্টি বউয়ের লজ্জা মাখা চেহারাটা প্রথমবার দেখার অনুভূতি ! “একি কাণ্ড”, “সূর্যের দিন”, “বোতল ভুত” এর মত অসংখ্য সুন্দর কিছু উপন্যাস এর সাথে বন্ধুত্ব করে কেটেছে আমার কৈশোর। আর এরপর একদিন “ময়ূরাক্ষী” নামের একটা বই পড়ে হিমু নামক অদ্ভুত ছেলেটার প্রেমে পড়ে যাওয়া ! সেই প্রেম এখনও কাটেনি। আবার কখনও শুভ্রর সারল্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই, কখনও মিসির আলীর critical reasoning দেখে অবাক হয়ে যাই। কত ভিন্ন চরিত্রগুলো একটা আরেকটা থেকে অথচ প্রত্যেকেই কত জীবন্ত। আর প্রিয় উপন্যাসগুলোর নাম বলা শুরু করলে তো শেষই করতে পারব না। খুব সম্ভবত উনিই একজন লেখক যার প্রতিটা লেখাকেই ''প্রিয়'' বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে। আমি জোছনা দেখা শিখেছি হিমুর কাছ থেকে। ভালোবাসার মানুষকে পাশে না পেয়েও যে তাকে নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসা যায়, তা শিখেছি রূপার কাছ থেকে। নিজের অনেক অনেক খারাপ সময়েও এই মানুষটার একটা বই হাতে নিয়ে অসংখ্যবার অনায়াসে পার করে দিয়েছি সুন্দর কিছু সময়। উনার লেখাগুলো পড়ার সময় প্রায়ই প্রশ্নটা মাথায় আসে, “কিভাবে এত সুন্দর লিখে মানুষ?? একটা মানুষ কিভাবে নিজের চিন্তাকে এত সুন্দর করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে ??”

আপনার তৈরি চরিত্রগুলো আমার পাশে থেকেছে সবসময় । ছোটবেলা থেকে যখন নিজেকে বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই এরা আমার পাশে আছে। কেও আমাকে রাস্তায় উদাসীন ভাবে হাঁটতে শিখিয়েছে, কেও শিখিয়েছে রহস্যময়তার ভেতরের প্রান্তের রহস্যটুকু।কেও আমাকে ভালবাসতে শিখিয়েছে, কেও কাঁদতে শিখিয়েছে। রাতের বেলায় জোছনা দেখাও আমি এদের কাছে শিখেছি।

ভাবতেও কষ্ট লাগছে আমি আর কখনো হিমুর নতুন কিছু পাগলামি পাব না, মিসির আলি আর রহস্য ভেদ করবে না, শুভ্র কখনই চশমাটা হারিয়ে খুজবেনা। শুধুমাত্র আপনার মৃত্যু , সব গুলো চরিত্রের মৃত্যু ঘটিয়েছে।

আরেকজন হুমায়ুন জন্ম না নেয়া পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের লাখো লাখো পাঠক, নতুন কোন বাংলা উপন্যাস পড়বে না! কারণ আমার মত অনেকেই আছে, যারা হুমায়ুন পেলে পড়ে, না পেলে কিছুই পড়েনা !

রবীন্দ্র সঙ্গীত যেমন রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কেও সৃষ্টি করতে পারবে না, তেমনি হিমু, মিসির আলি, শুভ্র, একমাত্র হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্টি, ইনি ছাড়া আর কেও পারবেনা এই চরিত্রদের জাগিয়ে তুলতে।
হারিয়ে গিয়েও ভালো থাকিস তোরা। আমি কাদব, আবারো কাদব, বার বার কাদব , আমি হলুদ দেখে কাদব, জোছনা দেখে কাঁদব, প্রেমিকার ভালোবাসা দেখে কাঁদব, রাতের আকাশে তারাগুলো দেখে কাঁদব !

কখনও হিমু হয়ে, শুভ্র হয়ে, কখনওবা মিসির আলী হয়ে, কখনো হিমুর জন্য নীল শাড়ি পড়া রুপার অপেক্ষার প্রহর হয়ে, কখনোবা হিমুর বিভ্রমে আপনি থাকবেন আমাদের মাঝে, সব সময়, সারাক্ষণ ।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৫

বীরেশ রায় বলেছেন: স্বা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই বাংলার সাহিত্যের পাতায় তার সৃষ্ট মধ্য ও নিম্নবৃত্ত মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-ঠাট্টার কথামালা সত্যি অপূর্ব! যেমন ‘আজ রবিবার’ নাটকের ফুলি ও মতির ডায়লগ !!

২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৮

শূন্যভুবনের মেহেদী বলেছেন: ''স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই বাংলার সাহিত্যের পাতায় তার সৃষ্ট মধ্য ও নিম্নবৃত্ত মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-ঠাট্টার কথামালা সত্যি অপূর্ব'' - পারফেক্ট একটা কথা বলছেন ভাই :)

২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

ফুলফোটে বলেছেন: আমার ভাললাগার সাহিত্যিক...অনেক মিস করি...।

৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ ভোর ৫:০৫

ক্যাটম্যান বলেছেন: অনেক মিস করি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.