![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অজস্র শব্দমালার বিবর্ণ এপিটাফের ছোট্ট এক বিন্দু
''Haldaa - হালদা'' - আমাদের দেশের সিনেমা, দেশের মানুষের সিনেমা, আমাদের সিনেমা !
পরিচালনায় আছেন অত্যন্ত গুণী একজন নির্মাতা যার নির্মাণে সব সময় উঠে আসে মাটি ও মানুষের কথা । এবারো তার ব্যতিক্রম হয় নি । তিনি আমাদের দেখিয়েছেন মানুষ আর নদীর ভালোবাসা । তিনি আর কেউ নন - আমাদের তৌকির আহমেদ ।
★ প্লটঃ শুধুমাত্র আমাদের দেশ না, পুরো এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী । একটি নদীর সাথে জড়িয়ে থাকে হাজারো মানুষের জীবন । এই সিনেমার গল্পটা এই 'হালদা' নদী আর 'হালদা'র দুই পাড়ের মানুষদের জীবন থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত । গল্পটা নদী পাড়ের খুব সাধারণ কিছু মানুষের অসাধারণ ভালোবাসার গল্প ।
সাদামাটা গল্প, তাই গল্প নিয়ে বেশী কিছু বলার নেই তবে গল্পের অসাধারণ উপস্থাপনা নিয়ে কিন্তু বলার শেষ নেই
★ অভিনয়ঃ এই সিনেমায় প্রধান চরিত্রগুলোতে এমন কিছু অভিনেতা আছেন 'অভিনয়' শব্দটা যাদের নামের সমার্থক শব্দ । মোশারফ করিম, ফজলুর রহমান বাবু, জাহিদ হাসান, তিশা - উনারা অভিনয়ের 'পাওয়ার হাউজ!' তাই অভিনয় নিয়ে আমার বলার কিছু নেই আর বলার সাহসও নেই ।
[sb]★ ভালো লাগার দিক ↓
➔ অভিনয়ঃ দুর্দান্ত ।
➔ গল্পের গভীরতাঃ সাধারণ গল্প কিন্তু অসাধারণ পরিবেশনা যদিও কয়েকটি জায়গায় খুবই আশাহত হয়েছি তবে সে কথায় পরে আসছি ।
গল্পের গভীরতা অনেক বেশী । প্রত্যেকটি প্রধান চরিত্রই আমাদের কাছেরই কোন না কোন মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে । প্রত্যেকটি প্রধান চরিত্রই আমাদের সমাজে বহুকাল ধরে চলে আসা কোন না কোন আত্মবদ্ধ বা সমাজবিরোধী কাজের ইংগিত দিয়েছে । গল্পের মধ্যে গভীর ভাবে চিন্তা করার মতো বার্তা আছে আমাদের জন্য ।
➔ চরিত্রের যথার্থতাঃ গল্পটা যেহেতু বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে রচিত তাই চরিত্রগুলোর মধ্যেও বাস্তবিকতার ছোঁয়া খুব দরকার ছিলো যেটা তৌকির আহমেদ খুব সুন্দরভাবে করে দেখিয়েছেন ।
নদীর উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা মানুষদের নদীর প্রতি একটা গভীর মমতা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক । সংলাপ দেওয়া ছাড়াও কিছু ছোট ছোট জিনিসের দ্বারা নদীর প্রতি গভীর মমতা দেখানো হয়েছে ।
যেমন - একটা দৃশ্যে ফজলুল করিম বাবু, মোশারফ করিম আর আরেকজন নৌকা দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলো । তখন সিগারেট খাওয়া শেষ করে বাবু সিগারেটটা নদীতে ফেলতে যেয়েও শেষে নদীতে না ফেলে নিজেদের নৌকাতেই ফেলে ।
মা মাছ মারার জন্য তিশা আর বাবুর যে কি হাহাকার দেখানো হল ! সবাই তখন মনে মনে বলতে বাধ্য - 'আহারে !'
নদীর প্রতি ভালোবাসা আছে সেটা বোঝার জন্য এই ২ টা দৃশ্যই যথেষ্টের চেয়ে বেশী ।
➔ সিনেমাটোগ্রাফিঃ অসাধারণ । কিছু কিছু দৃশ্য (বজ্রপাতের দৃশ্য, নদীর দৃশ্য, গ্রামীণ জীবন) এতো সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, ইচ্ছে হয়েছিলো হলের লোক ডেকে রিউয়াইন্ড করে আবারো 'দৃশ্য'টা দেখি ।
আবার কিছু কিছু দৃশ্য দেখে মনে হয়েছিলো সব ছেড়ে-ছুড়ে হালদা নদীর পাড়ের ছোট্ট ঘরটাতে যেয়ে থাকি ।
দৃশ্যগুলো অনুভূতির গভীরে চলে যায় । একজন দর্শকের অনুভূতির গভীরে যেয়ে সেখানে একটা স্থায়ী আঁচড় ফেলে আসা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না, কারো কারো পক্ষে সম্ভব - আর এই কেউ কেউ'র মধ্যে এখন থেকে স্থায়ী জায়গা করে নিলেন তৌকির আহমেদ (y)
➔ মিউজিকঃ জাস্ট মাইন্ডব্লোয়িং ! মিউজিক ডিরেক্টর পিন্টু ঘোষ আসলেই মন প্রাণ ঢেলে কাজ করেছেন বোঝাই যায় !
★ মন্দ লাগার দিক ↓
কোন মানুষ যেমন ১০০% নিখুঁত নয় ঠিক তেমনই মানুষের কাজও ১০০% নিখুঁত নয় । ভুল করতে করতেই কিন্তু আরও পারফেকশনের দিকে যাওয়া সম্ভব ।
➔ 'সিনেমাটা আসলে নদীকে নিয়ে নাকি নদীর পাড়ের কিছু মানুষকে নিয়ে ?' - এই প্রশ্নটা আমার মনে কয়েকবার জেগেছে । এক সময় দেখলাম নদীর খুব প্রাধান্য পাচ্ছে আবার এক সময় নদী ডি-ফোকাস হয়ে চরিত্রগুলো ফোকাসে চলে আসছে । ফোকাস শিফটিং এর এই সমস্যাটা কার কাছে কেমন লেগেছে জানি না, তবে আমার কাছে একটু দৃষ্টিকটু লেগেছে ।
➔ সিনেমার ডায়লগ এতো বেশী প্রেডিক্টেবল যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিনেতারা ডায়লগ বলার আগেই হলের মানুষ বলে দিচ্ছিলো !
➔ আমার মনে হয় গল্পটা আরেকটু পরিপূর্ণ হতে পারতো ।
➔ এছাড়া কয়েকটা জায়গায় মনে হলো ক্যামেরাম্যানের হাত / ক্যামেরা কেঁপে গিয়েছিলো ।
➔ ভাষা নিয়ে অনেকের সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু আমার নেই । গল্পে বাস্তবতার ছোঁয়া দেওয়ার জন্য এরচে ভালো অপশন মনে হয় না আর আছে !
★★★ সিনেমায় কিছু মন্দ লাগার দিক আছে যা সিনেমার মোহিনীশক্তি খুব সহজেই ভুলিয়ে দিতে সক্ষম । তাছাড়া তৌকির আহমেদের আগের সিনেমা (অজ্ঞাতনামা) দেখে উনার কাছ থেকে আমাদের এক্সপেকটেশন মনে হয় একটু বেশীই ছিলো । ফলাফলস্বরূপ আমরা অজ্ঞাতভাবেই এই সিনেমার সাথে 'অজ্ঞাতনামা'র তুলনা করে ফেলছি ! এই তুলনাটা যদি ছাড়তে পারি তাহলে আমরা যা পাবো সেটাও কিন্তু কোন অংশে কম না । মানুষ সব সময় এক রকম ভালো দিতে পারে না এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে ! ★★★
আমি আবারো বলছি - ''হালদা'' আমাদের দেশের সিনেমা, দেশের মানুষের সিনেমা, আমাদের সিনেমা !
২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: এই মুভিটা মানূষের মন কেড়ে নিবে। যদিও মুভিটা আমি দেখিনি এখনও।
৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭
রাতু০১ বলেছেন: গল্পটা আমার কাছে তেমন নতুন কিছু লাগেনি তবে যে উদ্দ্যেশ্য নিয়ে ছবিটি বানানো হয়েছে অর্থাৎ যে সামাজিক ম্যাসেজ ছবিটি দিতে চেয়েছে সেই দিক বিবেচনায় ছবিটি অবশ্যই ভাল একটি ছবি। অজ্ঞাতনামা যদি পায় ৯০ তবে হালদা পাবে ৫০।
৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৫
ডার্ক ম্যান বলেছেন: চট্টগ্রামে ভালো কোন সিনেমা হল নাই। যার কারণে হলে গিয়ে সিনেমা দেখা হয় না।
রিভিউ দেখে মনে হচ্ছে ভালো হবে সিনেমা ।
৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪
তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: মুক্তির প্রথম দিনেই মুভিটা দেখেছি । উপস্থাপন অসাধারন, লাইট আর ক্যমেরার কাজ ভাল। কিন্তু কাহিনী ক্লিশে, ঘটনার সিকুয়েন্স প্রেডিক্টেবল । আর আমারো মনে হয়েছে নদীর চেয়ে পারিবারিক কাহিনী হয়ে গেছে বেশি।
আরেকটা পয়েন্ট যেটা আমার কখনোই ভাল লাগে না , সেটা হলো নারী নির্যাতন দেখিয়েছে অতিমাত্রায়। এটা এই মুভির আমার সবচেয়ে মন্দ লাগার দিক।
আর তিশার অভনয় সবচেয়ে ভাল লেগেছে।
চমৎকার রিভিউ।
৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৪
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: রিভিউ পড়ে দেখবার ইচ্ছে'টা অনেক অনেক বেড়ে গেলো।
৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫
মঈনুদ্দিন অারিফ মিরসরায়ী বলেছেন: ভালো.।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৮
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর । রিভিউ। ফজলুর রহমান বাবু, মোশাররফ করিম দুজন দূর্দান্ত অভিনেতা ।সবসময় তারা তাদের নামের প্রতি সুবিচার করেন ।