![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সন্দেহ নেই, গল্পের চেয়ে সত্য অনেক মহান। সত্য ঘটনাকে গল্পে নিখুঁত চিত্রায়ণ প্রায় কখনোই সম্ভব হয় না। তবে গল্প লেখিয়েরা যদ্দূর সম্ভব সেটাই চেষ্টা করেন- গল্পটাকে সত্য কাহিনীর মতো আবেশ এনে দেওয়ার বাসনায়। সুতরাং গল্পকে কি সর্বৈব মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়া যায়?
অথবা লেখককে কি এই বলে বিব্রত করা যায়, এইসব ‘মিথ্যাকথা’ লিখে কী লাভ ? গল্পকে যদি মিথ্যা বলেন, তাহলে কবিতাকে কী বলবেন? মিথ্যার আকড়?
এটা তো প্রায় সবাই জানে যে, যে কোনো লেখকই তার লেখার উপাদান সংগ্রহ করেন তার চারপাশের পৃথিবী থেকে। সেখান থেকে তিনি ছেঁড়া ছেঁড়া যা কিছু জানতে পারেন, তার সঙ্গে মানুষের আচরণ নিরীক্ষা করে কল্পনায় সেসব জোড়াতালি দেবার চেষ্টা করেন। যার চেষ্টা যত বেশি সার্থক হয়, তিনিই হন সবচে’ ভালো লেখক।
অনেক সময়ই দেখা যায়, কোনো একটা ঘটনা বাহ্যিক বিচারে যা প্রকাশ করছে, লেখক সেখান থেকে আরো গভীর ও ভিন্ন কোনো ম্যাসেজ পাচ্ছেন। তাই তিনি অন্য কোনো ঘটনাকে তার সঙ্গে মিলিয়ে ম্যাসেজটা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এরা মানে কি তিনি মিথ্যা লিখেছেন ?
গল্প কেনো লেখা হয়? এটা আসলে কোনো প্রশ্নই না। জনৈক লেখককে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন- গল্প গরুদের জন্য নয়, মানুষের জন্যে লেখা হয়।
প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে, তিনি এই বিষয় নিয়ে কেনো লিখলেন? কবি আল মাহমুদের কাছে আমি জানতে চেয়েছিলাম, কোন বিষয় নিয়ে লেখা যায় এবং কোন বিষয়গুলি এড়িয়ে চলা উচিত? তিনি বেশ উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন, লেখার বিষয় ঠিক করবেন লেখক। তার জন্যে আপনি আমি কে? এটা তার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার।
হ্যাঁ, কথা এইটাই। লেখার বিষয় নির্ধারণের লেখকের ‘দায়দোষ’ বলতে গেলে এক পার্সেন্টও নেই। তিনি লিখবেন স্বাধীনভাবে। আমরা যা কিছু অনিষ্টকর ভাবি, দেখা যাবে আসলে সেটাই প্রকারন্তরে আমাদের জন্যে উপকারী। যেমন প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন- ‘যার নাম আনন্দ, তার নামই বেদনা।’ গল্পের ক্ষেত্রে এটাই সবচে’ বড় সত্য কথা।
হয়তো দেখা গেলো, খুবই কদর্য একটা বিষয় নিয়ে একটা গল্প আমরা পেলাম, অমনি লেখককে তুলোধূনো করতে লাগলাম, তিনি কেনো এটা লিখলেন? অথচ আমরা একবারও চারপাশে তাকিয়ে দেখি না, সমাজে এসব ঘটে কি না, কিংবা ঘটার সম্ভবানা আছে কি না; যেই ফাঁকটা তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন। সংশোধনের দায় তো লেখক হিসেবে তার নেই, সেটা সমাজপতিদের কাজ। কিংবা দায় আছে বলেই তো তিনি দেখিয়ে দিলেন।
বাকস্বাধীনতা, বাকসংযম, বাকদায়িত্বশীলতা- এসব গুরুভার সব সময় লেখকের মাথায় চাপিয়ে দিলে চলে না। তাহলে আর কোনো লেখক-গল্পকার থেকে কোনো গল্পই বেরিয়ে আসবে না। মনে রাখতে হবে, যদি কোনো লেখককে আইনগত কিংবা সামাজিক বিবেচনায় বয়কটও করা হয়, তবু তার থেকে পৃথিবীর শিক্ষার বহু কিছু রয়ে যায়।
মনে রাখতে হবে, যুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের মতোই কখনো কখনো অন্ধকারই আলোর চেয়ে বেশি শক্তিমান পথনির্দেশকের ভূমিকা পালন করে।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪
মনযূরুল হক বলেছেন: এই বাকদায়িত্বশীলতা কিংবা সংযমের বিষয়টি লেখার সময় লেখকের মনে থাকলেই ভালো হয়। ওটা বাছাই করা প্রকাশকের দায়িত্ব; লেখকের নয়। লেখককে নীতি দিয়ে আটকে দেয়াই তাকে হত্যা করার পক্ষে যথেষ্ট।
২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার লেখা
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০
মনযূরুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ...।
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪০
সুমন কর বলেছেন: হয়তো দেখা গেলো, খুবই কদর্য একটা বিষয় নিয়ে একটা গল্প আমরা পেলাম, অমনি লেখককে তুলোধূনো করতে লাগলাম, তিনি কেনো এটা লিখলেন? অথচ আমরা একবারও চারপাশে তাকিয়ে দেখি না, সমাজে এসব ঘটে কি না, কিংবা ঘটার সম্ভবানা আছে কি না; যেই ফাঁকটা তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন। সংশোধনের দায় তো লেখক হিসেবে তার নেই, সেটা সমাজপতিদের কাজ। কিংবা দায় আছে বলেই তো তিনি দেখিয়ে দিলেন। -- চমৎকার লিখেছেন।
ভালো লাগা রইলো।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:২৩
মনযূরুল হক বলেছেন: আপনার জন্যে রইলো শুভ কামনা...।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
লেখক অবশ্যই তার লেখায় স্বাধীন কিন্তু অবশ্যই বাকদায়িত্বশীলতা কিংবা সংযমের বাইরে গিয়ে নন। তবে লেখক স্বত্বাকে বন্দি করে রাখা যাবেনা এবং তাকে হত্যাও করা অনুচিত।