নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুয়ারী

মেষ তাড়ুয়া

আমি এম আর জান্নাত স্বপন, বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাকে খুব ভালবাসি। ব্লগিং করা উপভোগ করি

মেষ তাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘জ্যান্ত মানুষেরই জায়গা নেই, লাশ রাখবো কোথায়?’

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৪৩

এখন কমেছে। কিন্ত গত কয়েক দিন আগেও শুধু লাশ মিলতো নাফ নদীর কিনারে। বনে-জঙ্গলে। হ্যাঁ বলছি, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কথা।

বিজিবি, পুলিশ আর স্থানীয় সরকারি কর্তৃপক্ষের হিসেবে গেলো ২০ দিনে কক্সবাজারের শাহপরী, টেকনাফ, উখিয়ার লম্বাবিল সীমান্তে পাওয়া গেছে ১০৯ জনের লাশ। বেশিরভাগই রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর। এর মধ্যে কোনো কোনো মৃতদেহ পাওয়া গেছে বস্তাবন্দি। জবাই করা।

হোহাইক্যং এলাকায় দেড় বছরের এক শিশুর গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া গেলে দিন সাতেক আগে। শিশুটির পরনে যে প্যান্ট ছিল তার পকেটে পাওয়া যায় বেশ কিছু টাকা আর কয়েকটি সোনার গহনা। মৃতদেহটি উদ্ধারের পর, স্থানীয়রা বলছিলেন হয়তো তার বাবা মা বুঝতে পেরেছিলেন যে তাদের মেরে ফেলা হবে। তাই শিশুটির পকেটে সবশেষ সম্বলগুলো দিয়ে দিয়েছিলেন তারা। যাতে ওইসব পেয়েও অন্তত কেউ শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্ত আদরের সেই সন্তানেরও জীবন গেছে।

টেকনাফ উখিয়ার রাস্তার পাশে এখন অনেক কাঁচা কবর। কোনোটা বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে। এসব কবরের পাশে প্রার্থনা করার কোনো মানুষ নেই। বলতে গেলে ওইসব সীমান্ত এলাকায় এখন কবর দেবার জায়গাও নেই। চার লাখেরও বেশি দেশান্তরী, বুভুক্ষ, নিঃস্ব মানুষের ঠিকানা এখন বলতে রাস্তা, নর্দমা, জঙ্গল আর ধানক্ষেত। তাদের কষ্ট পাওয়ার মতো মন নেই। মৃত স্বজন-প্রিয়জনের জন্য শোক করার মানসিকতা নেই।

যেমন, উখিয়ার বালুখালি পেরিয়ে পানবাজার রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ৩দিন আগে পালিয়ে আসা ষাটোর্ধ্ব আব্দুল আজিজ বলছিলেন, তার কষ্টের কথা। রাখাইন ভাষা থেকে যা বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘আমার ছেলে মরেছে। বউ মরেছে নাতি মরেছে। লুট হয়েছে গরু। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বাড়ি। কেবল আমিই পালিয়ে বেঁচে আসতে পেরেছি ওই ভিটেমাটি ছেড়ে।’

নিরন্ন এই আজিজের মতো অনেকেই এখন তীব্র আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকেন রাস্তার দিকে। তাদের মনে জীবন সংসার থেকে যা গেছে যাক। এখন নিজে বাঁচতে পারলেই হয়। তারপর না হয় ভাবা যাবে সবকিছু। ওই এলাকায় থাকা পুরনো রোহিঙ্গারাও বলছেন, নিজের জীবনেরই যখন কোনো আশা-ভরসা নেই। সেখানে মৃতদের নিয়ে ভেবে কি হবে। জ্যান্ত মানুষের ঠিকানাটাই তো এখনও অনিশ্চিত।
কেরামত উল্লাহ বিপ্লব, টেকনাফ থেকে ফিরে : দি প্রবাসী ডট কম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.