নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর সমস্ত মানুষ যুদ্ধে নেমেছে, আর এই যুদ্ধে তাদের বড় অস্ত্র হলো নিজের বিবেগ।\nহাফিজুল\n

মো: হাফিজুল ইসলাম হাফি

মো: হাফিজুল ইসলাম হাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিমার বিয়ে (সম্পূর্ন অংশ)

২৩ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৩৮

মোঃ হাফিজুল ইসলাম (বিদায়ের পথযাত্রী)
তানোর কলেজ, রাজশাহী
" " " "

.
মাহিমের সাথে আজ সিমার বিয়ে বিয়েতে দুজনেরি মত ছিল যদিও দুজনেই অপরিচিত ছিল। স্বাভাবিক ভাবে সিমার বাবা-মা আত্বীয় স্বজনরা বিদায় দিল। সিমা যদিও বিদায়ের সময় অনেক কেঁদেছিল তবে তার বাবা তাকে একটা কথা বলে সান্তনা দিয়েছিল যে, এটাই তো আর শেষ বিদায় না তুই তো আবার আসবি আমরাও যাব। আর একটা বই দিয়েছিল উপহার স্বরূপ 'পবিত্র কোরান' আর বলে দিয়েছিল এটি সারা জীবন আমল করে চলিস, হয়ত আল্লাহর অনুগ্রহে সুখে কাটাবি বাঁকিটা জীবন।
তারপর বিদায় পর্ব শেষ...........!
বাসর ঘরে বসে আছে সিমা মাহিম রুমে প্রবেশ করে সালাম দিল, সিমা সালামের উত্তর দিয়ে খাট থেকে উঠে এসে মাহিমের পা ছুঁয়ে সালাম করবে তখনি মাহিম তাকে উঠিয়ে নিল।
তারপর তারা ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করতে লাগল।
মাহিম প্রথমে শুরু করল, আমি জীবনে প্রথম একটা মেয়েকে প্রপোজ করেছিলাম তাও আবার আট বছর পর। মেয়েটি তখন আমায় একটা থাপ্পড় মেরেছিল। আর বলেছিল, জন্ম যেই পরিবারে নেন না কেন কর্মটা ভালো করার চেষ্টা করেন। তারপর থেকে আমি আর কোন মেয়ের দিকে ভালো করে তাকায় নি।
সিমা হেসে ফেল্ল তার কথা শুনে।
আরে হাসছ কেন?
বলেই সিমার মুখের দিকে তাকিয়ে চোখ আটকে যায়। মেয়েদের হাঁসি এত সুন্দর হয়! সিমা মাহিমের তাকিয়ে থাকা দেখে লজ্জা পেয়ে যায়, বলে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? আমার লজ্জা করেনা বুঝি!
তোমার লজ্জা মাখা মুখ দেখার জন্যই তো তাকিয়ে আছি।
অনেক রাত হয়েছে আমি ঘুমাব, খুব ঘুম পাচ্ছে আমার।
ওমা কি বল এসব বিয়ের রাতে কেউ ঘুমায় না কি? বিয়ে তো তুমি একাই কর নি আমিও করেছি কয় আমার তো ঘুম পাচ্ছে না।
তো কি করব আমি নাচব না কি?
নাচ..! নাচলে খারাপ হয় না, বিয়ের প্রথম রাতে বউয়ের নাচ দেখা অসম্ভব রকমের স্মৃতি হয়ে থাকবে।
আমি রিয়েলি বলছি।
মাহিম এবার ফ্যাকাসে মুখে বলল আচ্ছা তাহলে ঘুমাও তুমি।
তুমি মানে? আসুন আপনিও ঘুমাবেন আমার সাথে। সিমার সাথে মাহিমও শুয়ে পড়ল। শেষ রাতের দিকে মাহিম হঠাৎ শীত অনুভব করছিল তাই কাঁপছিল।
সিমা তা লক্ষ করে, তাকে না ডেকে নিজের শাড়ীর আঁচলটা দিয়ে তাকে ঢেকে দিল। আর তখনি মাহিম বলে উঠল, বউ তুমি এত ভালো কেন? মেয়েরা বুঝি এমন ভালো হয় না কি?
কি মেয়েরা..! কয়টা বিয়ে করেছেন এর আগে, বলেই শাড়ীটা টেনে নিল। মাহিম দেখল সিমার মুখ আবার লাল হয়ে গেছে,তবে এবার লজ্জায় নয় রাগে। তাই দেখে মাহিম সিমাকে জাড়িয়ে ধরে বলল আমার শীত করছে তো। এবার সিমা আরো রেগে গেছে, তুই আমাকে ছুঁবি না! তোর শীত করছে তো আমি কি করব, অন্য মেয়েদর কাছে যা।
ওমা...! সামান্য একটা কথাতেই প্যাচ ধরে, মেয়ের ভাষা পরিবর্তন। আমি তো মেয়েদের সন্মান বাড়িয়ে দিলাম। তবু এই মেয়ে অন্য মেয়েদের কথা শুনে রেগে আগুন। মনে হচ্ছে আমি শুধু তার, কারো হতে পারব না। এক রাতেই বউ আমার উপর কি অধিকার খাটাতে লেগেছে রে বাবা!
সবকিছু ভুলে তার রাগ ভাঙ্গানোর জন্য শেষ অবদি ধরলাম দুই কান। তারপর বল্লাম যে, তুমিই আমার প্রথম বউ গো এবং শেষ। বিশ্বাস না হয় মা কে বলে দেখ। এবার দেখি মনটা একটু নরম হয়েছে, তবে পুরপুরি নয়। তাই ভিন্ন প্রন্থা অবলম্বন করলাম। তাকে আবার যেই জড়িয়ে ধরতে গেছি, দেখি তখনি সে লাফ দিয়ে খাটের উপর উঠে মা! মা! বলে চিৎকার দিতে লাগল। চিৎকার শুনে মা ও চলে আসছে।

.
কি হয়েছে রে তোদের?
মা আপনার ছেলে এর আগে কি বিয়ে করেছে? ও মা..! এই মেয়ে দেখি এখনো আমায় বিশ্বাস করে নি।
না তো মা! কি বলছ এসব? সয়তান ছেলে আমার কি বলেছে লক্ষী বউমাটাকে।
কি বিয়ে করলাম আমি আর তোমার একাই বউমা হয়ে গেল! এ কথা বলাতে মা শুরু করল আদরের মাইর। মাহিমও রেগে গিয়ে, কি তুমি অন্য একটা মেয়ের কথায় আমাকে মারছ। যেই আমি তোমার মেয়ে নায় তবু মেয়ের অভাব বুঝতে দেয় নি। তোমার রান্নার কাজ করে দিছি, তোমার চুল বেঁধে দিছি, তোমার বাসন মেঝে দিছি, আর মা তুমিই আমার সাথে এমন করলে। থাক তোমার বউমা কে নিয়ে গেলাম আমি।
যাস না বাবা শোন সকালে না খেয়ে বেরুস না কোথাও।
কথা না শুনেই চলে গেল মাহিম...
মা আমার ছেলে কি বেশি খারাপ?
এই না মা এসব কি বলছেন তার মত তো স্বামীই হয় না।
তো তুমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে যে!
আমি একটু মজা করছিলাম, বুঝতে পারি নি সে এত রেগে যাবে।
আসলে মা আমার ছেলেটা না একটু বেশি রাগী। তার ভালোবাসার গভীরতাও অনেক বেশি!
আর এমন ভুল হবে না মা, প্লিজ আপনি তাকে ডেকে দিন না!
তুমিই ফোন কর মা.... ফোন তো এখানেই বাজছে। এখন কি হবে মা?
আমি দেখছি তুমি ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে নাও।
......
মাহিম এইদিকে এত রেগে বেরিয়ে এসেছে যে টাকাও নিতে ভুলে গেছে। তার পুরাতন একটা অভ্যাস আছে, একটু কষ্ট পেলে রফিক ভাই এর দোকানে সিগারেট টানা।
আজ বাঁকি নিতে হবে।
সিগারেট টানছে আর মনে মনে ভাবছে, এসব মেয়েদের কেউ বিয়ে করে না কি, যারা কথায় কথায় নিজের স্বামীকে সন্দেহ করে।
না ক্ষুধাও লাগছে দেখছি কিছু খেতে যেতে হবে সেই দুই কিঃমিঃ দূরে। আজ আর বাড়িতেই যাব না দোকানেই যায় হোক দূরে তবু বন্ধুর দোকান টাকাটা লাগবে না নি।
সারাদিন বাহিরে থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিল রাত বেড়েই চলেছে। কোন বন্ধুর বাড়িতে যেতে পারত। কিন্তু নতুন বিয়ে করেছে সবাই জানে তারা কি না কি ভাবে তখন। তাই বাড়ি চলে আসল,। রাত ১টা বাজে সব কিছু নিরব। খাবার ঘরে যেতেই লাইট জলে উঠল, মা বসে আছে।
কি রে সারাদিন কোথায় ছিলি? তোর কি এখনো বিবেক বুদ্ধি হবে না, বউমা সারাটা দিন না খেয়ে আছে!
তাকে খেতে তো আমি বারন করে যায় নি।
বেয়াদপ চুপ.. একদম চুপ!
তা কথায় আছে এখন সে?
জানি না খুজে দেখ?
মাহিম খুজতে খুজতে দেখতে পেল সিমা একা জানালার কাছে দাড়িয়ে আছে। ওহ..ম! ওহ...ম! সারাদিন না খেয়ে আছ কেন?
না কি ভাত মুখে তুলে খাওয়াতে হয়?
না আমি খেতে পারি। আপনি খেলেন? (ভাষা তাহলে ঠিক হয়েছে) চল এক সাথে খাব।
আসলে প্রথমেই আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম, তাই তখন আপনার মুখে অন্য মেয়ের কথা শুনে রেগে গিয়ে ঐ রকম ভাষা বলেছিলাম।
কি বলছ তুমি এসব..! সত্যি তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছ? (আনন্দিত ভাবে)
হ্যা গো হ্যা।
আমিও...
কি?
ভালোবাসি গো তোমাকে!
তো অল্পতেই রেগে যান কেন?
তুমি ও তো অল্পতেই আমাকে সন্দেহ কর তাই।
বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি গো তাই একটু বেশি সন্দেহ করি।
তাহলে চলো বাসর ঘর টা আজ আবার সাজায়।
আজ আবার কার বিয়ে হবে?
কেন সিমার বিয়ে হবে।
সিমা বিয়ের কথা শুনেই আবার লজ্জা পেয়ে গেল। মাহিমকে সে এবার নিজেই জড়িয়ে ধরল।
জড়িয়ে থাক তাদের ভালোবাসা এ ভাবেই আজীবন।
(সমাপ্ত)
বিঃদ্রঃ বানানের ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৫৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: জড়িয়ে থাক তাদের ভালোবাসা এ ভাবেই আজীবন। আমিন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.