![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
****
মাহিমরা দুই ভাই। কোন বোন নায় তাদের তাই তার মা এ নিয়ে গর্ব করে অনেক....! পাড়া-পতিবেশি সকলের কাছে গর্ব করে কথা বলে বিশেষ করে যাদের দুইটা-তিনটা মেয়ে তাদের সাথে বৈকালে যখন গোল মিটিং বা গীবত মিটিং এ বসে তখন নিজের দুই ছেলের সুনামের কমতি রাখে না। তিনার কথায় মনে হয় যে, তিনার দুই সন্তানই শুধু এ গ্রামের একমাত্র রাজপুত্র, কোন ত্রুটি নেই তাদের মাঝে। যখন পতিবেশিরা বলে বুবু এতো অহংকার কইরো না ছেলেদের নিয়ে। আগে তাদের মানুষের মত মানুষ করো। তখন মাহিমের মা হেঁসে বলত অহংকার কি রে শেফালি? এটা তো আমার গর্ব! তোদের মত তো আর দু’চারটা মেয়ে না আমার যে, পরের বাড়িতে ভালো ঘরে দেওয়ার জন্য চিন্তা করতে হবে আমার ছেলে। দুইটা ছেলে সোনার টুকরো বুঝলি? পতিবেশিরা তখন আর বেশি তর্ক করত না তিনার সাথে।
ধীরে ধীরে তারা দুই ভাই বড় হতে লাগলো। এই দিকে দিন দিন মাহিমের মায়ের গর্বটা অহংকারে রূপ নিতে থাকলো। তাদের দুই ভাই এর মধ্যে মাহিম ছিল শান্ত-শিষ্ট, সহজ-সরল আর তার ছোট টা ফাহিম ছিল তার উল্টো। যেখানে মাহিম বড় হয়েও কখনো মা কে জোর গলায় কোনদিনও কথা বলেনি।
অথচ একদিন ফাহিম পুকুর ঘাটে গোসল করার সময় তার মা কে সকলের সামনে বলেছিল বেশি লেকচার ঝাড়িস না তো! তা না হলে কো-দিন কার মেয়েকে নিয়ে চলে যাব তখন তোকে আপছোস করতে হবে। এ শুনে সেখানে যে মহিলারা ছিল সকলে হাঁসা-হাঁসি শুর“ করে দিল। তার মা আর কিছু বলতে পারেনি। কষ্ট বুকের মাঝে চেপে নিয়ে বাড়ি চলে আসলো। আর সেদিন ই তিনি প্রথমবারের মত সে ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হলেন। আর রাতের বেলা শুয়েছে যখন ঘুমানোর জন্য তখন শুধু বার বার ঐ কথাটা মনে হলো। তিনি তখন বিছানায় শুয়ে না থেকে উঠে বারান্দায় এসে উযু করে র“মে গিয়ে নফল দুই রাকাত নামাজ পড়ে আলাহর কাছে বলেন আলাহ আমায় মা করে দাও। আমি না জানি তাদের মনে কত কষ্ট দিয়ে ফেলেছি না বুঝে। আমিও তো একটা মেয়ে। আর মেয়ে হয়ে মেয়ের প না নিয়ে যে ছেলেদের কথাই শুধু ভাবলাম আর আজ এই প্রতিদান পেলাম!
বিঃদ্রঃ একজন মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়েকে ছোট করে দেখার আগে তাদের নিজ মেয়ের মত করে ভালোবাসতে শিখুন।
©somewhere in net ltd.