![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আশা করি সকলে পুরো গল্পটি ধৈর্য নিয়ে পড়বেন।
**
(১)
এই ফেসবুকের সাথে জড়িত আমি ২০১৪ সাল থেকে। আর তখন থেকেই আমি এই ফেসবুককে ব্যাবহার করতাম আমার লেখা-লিখির প্লাট ফ্রম হিসেবে। তখন আমার বন্ধু-বান্ধব অনেক ছিলো তারা নিয়মিত আমার খোজ খবর নিতো। সময়ের স্রোতে তা এখন হারিয়ে গেছে। শুধু একটি সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৬ সালে একটা গল্প লিখছিলাম “বিয়ে” নিয়ে আর সেই গল্পের মূল চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলাম একজন বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা নিয়ে। আর সেই গল্পের মাধ্যমেই পরিচয় হয়েছিল রংপুরের এক বোনের সাথে। জন্ম থেকে আমার কোন বোন নাই। আর তিনি বলেছিলেন তিনার না কি ভাই নাই। এখানে আমি তিনাকে তিনি বলে সম্ভোধন করলাম কারন তিনি আমার কাছে একজন সম্মানিও একজন মানুষ। সেই পরিচয় থেকে গড়ে উঠেছিল তিনার সাথে আমার ভাই-বোনের সম্পর্ক। বোনেরা যে ভাইদের এতো দুঃখ-সুখের ভাগিদার হয় তিনার সাথে সম্পর্ক হওয়ার পরে আমি বাস্তবে তা জেনেছিলাম। তিনার সাথে নির্দিধায় সব কিছু সেয়ার করা যেত। কারন তিনি অত্যান্ত ভালো মনের একজন মানুষ। আর তাছাড়া পৃথিবীর সমস্ত ভাই-বোনের সম্পর্কগুলো এইরকম হওয়া উচিত। একে অপরকে বোঝা এবং সাপোর্ট দেওয়া। আমার এই ছোট মস্তিসকে আর বেশি কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনার সাথে আমার মাঝে মাঝে অনেক ঝগড়াও হতো...........
(২)
একদিন একটি রেডিওতে একটা ভাইয়ের জীবনের গল্প শুনে খুব খারাপ লেগেছিলো। কারন তারা শুধু মাত্র দুই ভাই বোন ছিল। বাবা-মা মারা গিয়েছিলো তাই ভাই বোনটিকে রেখে বিদেশ গিয়েছিল। তার একমাত্র সম্বল ছিলো তার বোন। আর তার চিন্তা করেই সে বিদেশ গিয়েছিল এবং সেখান থেকে সে মাসে মাসে টাকা পাঠাত বোনের কাছে। কিন্তু বোনটি সেই টাকা নিয়ে নিজের নামে একটি বাড়ি করেছিল এবং নিজের মন মত একজন কে বিয়েও করে ফেলেছিল। যা তার ভাই জানতো না। ৫ বছর শেষে তার ভাই যখন দেশে ফিরেছিল তখন তার বোনটি তাকে চিনেনি। তখন ভাইটি কেঁদে-কেঁদে রেডিওতে বলেছিল আমার কি অপরাধ ছিল যে বিধি তুমি আমাকে এমন শাস্তি দিলে। তবুও তার বোনকে কোন অভিশাপ দেয়নি। তার পর থেকে বোনদের প্রতি কেমন একটা জড়তা ও ঘৃনা কাজ করত। সেটা ছিল তার নিজের বোন আর এটা তো আমার ..... বোন তবুও তো আমার খোজ-খবর নেই এটাই অনেক। ঝগড়া হলেও তো পরে আবার কথা বলে ঐ বোনটির মত বলেনি তো কোনদিন যে, “চিনি না”! তবে এখন অনেক প্রশ্ন করলে সামান্য কিছু উত্তর দেন।
(৩)
আমার মার সাথে তিনি অনেক আগে কথা বলেছে। আর আমি এই প্রথম তিনার মার সাথে কথা বল্লাম। কথা বলার সুযোগটা হয়েছে ঈদুল ফিতর এর জন্য। এর আগে অনেকবার বলেছিলাম কিন্তু তিনি কখনো কথা বলাননি মার সাথে। তিনি না কি খুব ব্যাস্ত থাকেন তাই সময় নাই তিনার। যাই হোক আজ কথা বলার এক পর্যায়ে মা বল্লেন যে, তোমার মা নাই ঐখানে? আমি বল্লাম না। আমি তো বাহিরে, মা বাড়িতে আছে। তখন বল্ল, আচ্ছা বাবা তাহলে আমার নাম্বারটা নিও তোমার আপুর কাছে নিয়া ফোন করিও তোমার মার সাথে কথা বলব। এর আগে আমি আপুর থেকে নাম্বারটা চেয়েছিলাম কিন্তু দেয়নি। আজ মা যখন বলছে তখন আবার চাইলাম কিন্তু আজও একটা বাহানা করে কাটিয়ে দিল আপু। কোন প্রবলেম থাকলে তো বলতে পারে কিন্তু তাও বলে না। এতে আমার অনেক অভিমান হয় তিনার উপর তাই কি যে বলেছিলাম। তখন তিনি লম্বা একটা এসএমএস পাঠালেন। এসএমএসটি তুলে ধরলাম:
“আমি মার নাম্বার দিবোনা। কারন আমি যখন এসএসসি তে পড়ি তখন এক বান্ধবি ছিল নাম ফাহমিদা ওর সাথে রিলেশনটা অনেক ভালো ছিলো এমন কি দুজনার ফেমেলি ম্যামবার এর মত ছিলাম। সবাই সবার সঙ্গে কথা বলতাম। ফাহমিদার এক বড় ভাই ছিল নাম রানা। সেও আমায় বোনের মত দেখতো মা কে আম্মা আর আব্বুকে বাবা বলতো। এই রিলেশানটা আমার আনটি দেখতে পারেনি রানা ভাইয়ের সঙ্গে নানান কথা রটাই। আব্বু জানতো আনটি মিথ্যা বলছে কিছু না ভেবে আনটির জন্য তাদের সঙ্গে রিলেশান নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি তোর সাথে এমনটা হতে দেব না এবং মা এর নাম্বার দেব না। কথা বলার ইচ্ছা হলে কনফারেন্স এ কথা বলাবো”
এসএমএসটি পড়ার পর কেন জানি চোখে পানি চলে আসছে। কখনো এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েনি এর আগে তাই। কথাগুলো শুনার পর অনেক কথা মনে পরেছে তবে দুটি যুক্তিগত ১। যা ঘটে তা রটে। ২। ভাইয়া একদিন একটা কথা বলেছিলো আমি যদি না খেয়ে থাকি সমাজ আমাকে খেতে দেবে না। তাই কে কি বল্ল সেটা নিয়ে আমার কিছু যায় আসে না। কথাটি আমি ভালো করে ফলো করি। কিন্তু আপুটি মানুষের কথায় নিজেদের এতো সুন্দর একটি সর্ম্পক নষ্ট করে দিয়েছে যা আমার কাছে ঠিক মনে হয় নি। আর এখানে আরেকটি ভাবার বিষয় রানা ছিল বড় আর আমি তো ছোট সেটা তো তিনি ভাবতে পারতেন একবার।
(৪)
সকলের কাছে আজ একটা প্রশ্ন রইল। মানবতা আজ কোথায়? ভাই বোনের মত পবিত্র একটা সম্পর্ককে কিভাবে মানুষ কলঙ্কিত করতে পারে? তাই চায়না আমার বোনের গায়ে আবার কোন কলঙ্কের দাগ লাগুক। আমার জন্ম থেকে বোন নাই ঠিক। এইও সত্য যে আমার হাজারটা সম্পর্কিত বোন না একটি মাত্র ছিল। আমি দেখেছি পৃথিবীতে যত ভালো সম্পর্কগুলো গড়ে উঠে তার কোথাও না কোথাও একটা সাইড ইফেক্ট পড়ে। আর এটা খুবই খারাপ জিনিস। যা আমার ভাগ্যেও পড়ে গেল।
আমি এই রকম সম্পর্ক কখনো চায়নি। আমি ছোট থেকে আর দশটা ছেলের চেয়ে আলাদা। যে জিনিস আমার সেটা শুধু আমার হবে। আর যদি অন্য কারো হয় তাহলে সেটা আমার না। তাই আজ আমি চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম যে, সম্পর্কে প্রতিবন্ধকতার দেয়াল সে সম্পর্ক আমি চায়না। আমি চেয়েছিলাম একটা মাত্র বোন, যে আত্মায় মিশে রবে সারাক্ষন। যার পরিবার আমার পরিবার কোন ভেদাভেদ থাকবে না। কিন্তু আপুটি ফোন নাম্বারটি না দিয়ে যে কথাগুলো বলেছে তা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। আমি চায় সবাইকে আপন করে পেতে এবং সবার সাথে স্বাধীনভাবে মিশতে। তাই ভালো থাকুক তিনি তিনার মত করে। আর আমার মত যেন এই রকম কোন ভাই বোনের সম্পর্ক শেষ পথে এসে এই ভাবে শেষ না হয়ে যায়। কথায় আছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার।
(শেষ হয়েও শেষ হলনা।)
খোদা হফেজ!
©somewhere in net ltd.