নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর সমস্ত মানুষ যুদ্ধে নেমেছে, আর এই যুদ্ধে তাদের বড় অস্ত্র হলো নিজের বিবেগ।\nহাফিজুল\n

মো: হাফিজুল ইসলাম হাফি

মো: হাফিজুল ইসলাম হাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিবর্তন

০৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৯

কলেজে যেদিন প্রথম গেলাম, সেদিন বাড়ি থেকে গিয়েছিলাম। সকাল ১০:২৫ মিনিটে বড় হল রুমে কলেজের সকল প্রফেসর, প্রিন্সিপাল উপস্থিত সাথে আমরা ইন্টার ১ম বর্ষের অনেক ছাত্র-ছাত্রী। সকলে আসছে কি না আমি ঠিক জানি না, আবার মনে হচ্ছে পুরো কলেজের সবাই মনে হয় এখানে উপস্থিত। কেননা হাইস্কুলে আমরা মাত্র ৩০-৪০ জন ছিলাম, এখানে তো ২০০ প্লাস। প্রথমদিন পরিচয় পর্ব শুরু হলো আমি, শফিক, বাবু, মাহিম আর একজন চিনিনা তাকে, এক বেঞ্চে বসেছি, সামনে থেকে ৫ নম্বর বেঞ্চ।
ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার বল্ল, এই তুমি (সামনের বেঞ্চের এক ছেলে) সামনে থেকে নাম বলা শুরু করো। সে বল্ল, আমি রাকিব, বনকেশর ব্রীজঘাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি, ৩.১৭ পেয়ে।
একে একে বলছে সকলে কেউ কেউ ইংরেজিতে বলছে। আমার কাছে ধীরে ধীরে চলে আসছে আমার হাঁট বিট বেড়ে যাচ্ছে। আমি এমনিতেই অনেক লাজুক ছেলে।
অবশেষে আমার নাম বলার পালা আমি লজ্জায় উঠতেছিনা, কারো দিকে তাকাইতেছি না দেখে কোন স্যার জানি বল্ল, এই ছেলে তোমার নাম বলো এখানে অনেক স্টুডেন্ট দেখতেছো না, সবাই তো বলছে। তাড়াতাড়ি বলো আরো অনেকে আছে তো। স্যারের কথা শেষ না হতে আমি দাঁড়িয়ে আস্তে করে বলে দিয়ে বসে গেছি যে, আমার নাম সুজন। আমার পাশে বসে থাকা একজন বন্ধু সেটা জোরে করে বলে দিয়েছে তাই আমার পালা শেষ।
একটু পরে ঝামেলা বাঁধলো একটি মেয়ের কাছে গিয়ে সেও আমার মত আস্তে কথা বলতেছে এতটাই আস্তে যে, পাশের জনরাও শুনতে পায়নি। সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে অপরূপ সুন্দর একটি মেয়ে। আমি কতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম নিজেও জানি না। কেমন একটা বাচ্চা বাচ্চা স্বভাব মেয়েটার মধ্যে৷ সবাই মনে করেছে সে এতো ছোট মেয়ে কলেজে আসলো কিভাবে। কথাবার্তাও কেমন যেন ছোট ছোট।
পরে মেয়েটার নাম জানলাম বিথী। এখানকার স্থানীয় মডেল স্কুল থেকে পাশ করেছে।
তাকে আমার ধীরে ধীরে ভালো লাগতে লাগে। সে রোজ কলেজে এসে সবার থেকে আলাদা বসবে। কারো সাথে তেমন কথাও বলে না। মেয়েদের সাথেই তেমন কথা বলতে দেখি না আর ছেলেদের সাথে তো প্রশ্নই ওঠে না।
আমাদের কলেজে এখনো কোন নির্দিষ্ট কলেজ ড্রেস নির্ধারণ করা হয়নি। তবু মেয়েটা রোজ একটা ছেলেদের মত কলারওয়ালা জামা, দুই দিক দিয়ে জামায় ফিতা ভরার ডিজাইন ঠিক মেয়েদের হাইস্কুলের ড্রেসের মত জামাটা পরে আসে। এতো দিনে বুঝতে পারছি মেয়েটাকে এই ড্রেসে কোন পরীর দেশের বাচ্চা মেয়েদের মত লাগে।
ধীরে ধীরে দিন যায় আমার ছেলে বন্ধু বাড়তে থাকে, এতো দিনে একটাও মেয়ের সাথে তেমন পরিচিত হতে পারিনি। কোন মেয়ে বন্ধু ছাড়া কোন মেয়েকে ইমপ্রেস করা সোজা কথা নয়। ঐদিকে বিথীর সাথে অনেকে কথা বলতে শুরু করেছে। সেও তো মানুষ কথা না বলে থাকতে পারে কেউ নিজে থেকে এসে তার সাথে কথা বল্লে। কিন্তু আমি যে লাজুক যেতেই তো পারি না তার সামনে কথা বলা তো দূরের কথা৷ তাই বৃহস্পতিবারে বসে থেকে ভাবলাম এক সপ্তাহ কলেজ যাবো না। হোস্টেলে বসে থেকে তার সাথে কিভাবে কথা বলা যায়, কথা কি সরাসরি বলে দেব তোমাকে আমার ভালো লাগে জ্যোৎসনা রাতের চাঁদের মত। যেই ভাবা সেই কাজ।
পরের দিন শুক্রবার দিনটা কাটতেই চায়না ৭দিন কীভাবে কাটাবো? যেটাই করতে যাচ্ছি শুধু তার কথা মনে পড়ছে।
পরের দিন আমার হোস্টেলের বন্ধুকে বল্লাম মেয়েটার সম্পর্কে একটু জেনে আসিস তো, আজ আমি কলেজে যাবো না। সে চলে গেল জেনে আসবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে। এখনো আমি মেয়েটার সম্পর্কে ভালোভাবে জানি না তার আগেই ফিদা।
১:৩৬ মিনিটে সে রুমে আসলো এসেই বল্লো, দোস তুই ওর আশা ছেড়ে দে। আমি বল্লাম কেন রে?
-দুইটা কারন আছে ছেড়ে দিতে বলার প্রথম কারন ও আজ অনেক ছেলেদের সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে। দ্বিতীয় কারন সে হিন্দু মেয়ে তার জন্যই তো এতো সুন্দরী দেখতে। আমি কিছু না ভেবেই বল্লাম হোক হিন্দু তাতে কি আমার ভালো লেগেছে ওকে বলবোই আর আমি তো ওকে বিয়ে করে নিতেও রাজি।
-তুই পাগল হয়ে গেছিস তোর মত কতজন ওকে বিয়ে করতে রাজি। আর তুই ওর জন্য হিন্দু হবি না কি?
-হিন্দু হবো কেন ওকে মুসলমান করে নেব।
-আয়নায় নিজের চেহারা দেখছিস? তোর সাথে কথায় বলবে কি না, আবার মুসলমান করবি। তোর যায় ইচ্ছা কর আমাকে শুধু জড়াবি না।
শফিকের কথা শুনে আমি একটুও দূর্বল হয়নি, বরং আরো সাহস পেয়েছি। আমি কালোই কলেজে যাব গিয়ে সরাসরি বলে দেব।
১ম পর্ব...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.