![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন যখন শুকায়ে যায়, করুণাধারায় এসো। জীবন শুকায়ে গেছে। কিন্তু করুণাধারা খুজে পাইতেছি না।
তুমি হ্যাকার হতে চাও তাইতো? সবাই আসলে হ্যাকার হতে চায়।
তুমি চাও, আমি চাই, পাশের বাসার চশমা পড়া সুন্দরী আপুটা চায়, এমনকি পাশের বাড়ির টাক মাথাওয়ালা বদরুল চাচাও হ্যাকার হতে চায়।
কোন এক জায়গায় দেখেছিলাম একজন বিশ্বখ্যাত হ্যাকার কৌতুক করে মন্তব্য করেছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অর্ধেক মানুষই আসলে হ্যাকার হতে চায়। আর চার ভাগের এক ভাগ মানুষ মনে করে তারা অলরেডি এক এক জন হার্ডকোর হ্যাকার।
মনে করো তুমি কম্পিউটার সায়েন্সে পড়।
তাহলে তোমাকে সবাই বলবে, আমার নষ্ট কম্পিউটারটা ঠিক করে দিতে পারবে?
তুমি বলবে,না পারব না।
আমিও পারবো না। হাই ফাইভ।
কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ার সাথে নষ্ট কম্পিউটার ঠিক করার কি সম্পর্ক থাকতে পারে এটা মনে হয় কোন রিসার্চের জন্য একটা ভালো বিষয়বস্তু হতে পারে।
হ্যাকিং পারো? আমার এক্স বয়ফ্রেন্ডের এফবি আইডি টা হ্যাক করে দিতে পারবে? প্লিইইইইইজ।
কিংবা,
হ্যাকিং পারো? আমার এক্স গার্লফ্রেন্ডের এফবি আইডি টা হ্যাক করে দিতে পারবে? প্লিইইইইইজ।
তুমি হয়ত কিছুক্ষন মাথা চুলকাবে। তারপর বলবে, 'ধরণী, দ্বিধা হও'।
আমিও হয়তো এরকমই কিছু একটা বলবো। আবারও হাই ফাইভ।
কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ার সাথে হ্যাকার হওয়ার কি সম্পর্ক থাকতে পারে এটা কোন রিসার্চের জন্য আরও একটা ভালো বিষয়বস্তু হতে পারে।
তখন তারা এমনভাবে তোমার দিকে তাকাবে যেন তুমি এই পৃথিবীর কেউ না। অন্য কোন গ্রহের। হাইপারডাইভ দিতে হিসেবে গন্ডগোল হওয়াতে ভুল করে এখানে চলে এসেছো।
তোমার কাছে তখন হয়তো মনে হবে এই পৃথিবীটা আসলে খুব নিষ্ঠুর একটা জায়গা। এখানে কেউ কাউকে ভালোবাসে না।
এইসব কথা ভাবতে ভাবতে আর চুইংগাম চাবাতে চাবাতে আনমনে ফুটপাত দিয়ে হাটবে। আর হাটতে হাটতে ধাম করে ল্যাম্পপোস্টের সাথে ধাক্কা খাবে।
জগতসংসারের নিষ্ঠুরতায় হতভম্ব তুমি নিশ্চয়ই তখন গরিলার মত আ আ আ আ করতে করতে বুকে চাপড় মেরে বলবে, খোদার কসম, হ্যাকার আমি হবোই।
এরপর তুমি কম্পিউটারের সামনে বসে হয়ত খুবই সিরিয়াস মুড নিয়ে গুগোল করবে 'How to be a hacker in 24 hours?'। কিংবা এইরকম কিছু একটা।
অনেকেই এই কাজগুলো করে। তুমিও করতেই পারো।
যেমন ধরো- 'Learn c in 21 days' অথবা 'Learn python in 24 hours'।
কোন একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের basic syntax গুলো হয়তো কয়েক ঘন্টাতেই শেখা যায়। কিন্তু সেটা কি করে পুরো একটা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শেখা হলো? তুমিই বলো।
আমি আসলে যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা হল সবারই হ্যাকিং নিয়ে অনেক আগ্রহ, তারা কম্পিউটার সম্পর্কে কিছু জানুক আর নাই জানুক। আরো ভালোভাবে বললে চুরিচামারি নিয়ে আগ্রহ। কোন কিছু নিয়ে আগ্রহ কিংবা সেটা নিয়ে ফ্যান্টাসি জিনিসটা হয়ত খারাপ না কিন্তু সেটা নিয়ে একটু ধারনা তো অন্তত থাকা উচিত। তাই বলে চুরিচামারি নিয়ে আগ্রহ কিন্তু ভালো না।
আমি কোনোভাবেই হ্যাকার না। কিংবা হওয়ার মতো মেধা নাই। যে পরিমান পরিশ্রম করা দরকার তা করা আমার জন্য অসম্ভব। যা জানা দরকার তার কিছুই আমি জানি না। কিন্তু এই জিনিসগুলো কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে একটা ধারনা আছে।
কোন একজন মিলিটারি সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট একবার বলসিলেন, হ্যাকার হওয়ার জন্য যে পরিমান জ্ঞান অর্জন করা দরকার তা ৫-৬ টা পিএইচডি করলে যে জ্ঞান হয় তার সমান।
হ্যাকিং হচ্ছে সবথেকে সৃজনশীল জিনিসগুলার একটা। চুরিচামারি তো সৃজনশীল জিনিসই আসলে।
যেমন মনে করো তুমি আজ কারো ঘরে ঢুকলে চুরি করার জন্য। প্রথমবারেই সফলতা। কারন প্রথমবারে ঘরের সিকিউরিটি দূর্বল ছিলো।
এরপর ঘরের মালিক ঘরের চারদিকে সিকিউরিটি ক্যামেরা বসালো। এখনতো চুরি করতে গেলে তোমাকে আরও একটু সাবধান হওয়া লাগবে। এজন্য তোমাকে আরও ভাবতে হবে। ওই ঘরটার আর কি কি দূর্বল দিক আছে মানে কোথায় কোথায় ক্যামেরা নাই সেগুলো খুজে বের করতে হবে।
লক্ষ করো ব্যাপারটা অনেকটা এ্যান্টি ভাইরাস যারা বানায় আর যারা ভাইরাস বানায় তাদের মতো।
আজ যে এ্যান্টিভাইরাস সব ভাইরাস থেকে তোমাকে নিরাপদে রাখলো কাল যদি এরথেকেও স্মার্ট কোন ভাইরাস কেউ তৈরি করে ফেলে তাহলে এই এ্যান্টিভাইরাস টাকেও স্বাভাবিকভাবেই আরও স্মার্ট হতে হবে ওই
ভাইরাস থেকে তোমার কম্পিউটারকে রক্ষা করার জন্য। হ্যাকার আর নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এই লড়াইটা আসলেই ইন্টারেস্টিং।
কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান।
আমার এই উদাহরনের উদ্দেশ্য তোমাকে চুরি করতে উৎসাহিত করা নয় আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা হল সৃজনশীলতা ইন্টারনেটে সার্চ করার মতো জিনিস না।
এটা হয় তোমার ভিতরে আছে নয়তো নেই। জীবনানন্দ দাশ নিশ্চয়ই কবিতা লেখা শুরু করার আগে 'how to write a poem' লিখে গুগোল করেন নাই।
তাহলে আমরা কেন ১ দিনেই প্রোগ্রামার হতে চাইবো? আমরা কেন এক বছরেই হ্যাকার হতে চাইবো?
সবার এত তাড়াহুড়া কেনো?
যে ছেলেটা বা মেয়েটার শুধু ঠিকমত মাউস কন্ট্রোল করতেই এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, কনসোলে শুধু হ্যালো ওয়ার্ল্ড প্রিন্ট করতেই যে অনেকগুলো ভুল করেছে সেই হয়তো একদিন অনেক বড় প্রোগ্রামার হবে।
কিংবা যে বাচ্চাটা তার সব খেলনাগুলো ভেঙ্গে দেখে ভিতরে কি আছে, তার খেলনাগুলো কিভাবে কাজ করে, কম্পিউটারে শুধু গেমস খেলে সময় নষ্ট না করে মাত্র কয়েক লাইনের কোড দিয়ে কিভাবে যেকোন প্রোগ্রামকে কারো অজান্তেই অটোমেটিক রান করানো যায় তার কম্পিউটারে এই ব্যাপারটা ধরে ফেলেছে সেই হয়ত একসময় হ্যাকার হবে।
আজ যার একটা লাইন লিখতেই কয়েক ঘন্টা সময় লেগে যায়, সেও একদিন একটা উপন্যাস হয়তো ঠিকই লিখে ফেলতে পারবে।
যে উদভ্রান্ত প্রেমিক চিঠির পরে চিঠির পাঠায় তার প্রেমিকাকে। ভুল উপমা, ভুল বানানে ভরা সেই চিঠি হয়তো। একদিন সেও কোন স্বার্থক কবিতা হয়তো লিখতে পারবে।
তার জন্য দরকার সময়, ভুলের পর ভুল, আর চেষ্টা।
যাই হোক কোথায় ছিলাম আর কোথায় চলে গেছি। হ্যাকার থেকে উদভ্রান্ত প্রেমিক।
হলিউড অনেককিছুর ভুলভাল ব্যাখ্যার জন্য দায়ী। এরমধ্যে অন্যতম হল হ্যাকিং। হলিউডের সিনেমায় আমরা দেখি চশমা পড়া অদ্ভূত টাইপের একটা ছেলে অথবা মেয়ে(একটা বিষয়ে একটু বেশী জানলে কেন তাকে socially awkward হতেই হবে এটা আমি ঠিক বুঝি নাহ) ধুমধাম কিছু একটা টাইপ করছে। আর অমনি সে যেকোন জায়গার access পেয়ে যাচ্ছে। তাও আবার মাত্র কয়েক সেকেন্ডে!!!
বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যাপারগুলো এতো ইন্টারেস্টিং নাহ। এখানে হ্যাকাররা ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে এই কাজগুলো করে।
আসলে এই যে মুভিতে হ্যাকারদের সামনে অনেকগুলো মনিটর, তাদের আবার খুউব জটিল ইন্টারফেস। দেখে মনে হবে কি না কি হয়ে যাচ্ছে সেখানে। এগুলো আসলে সব পুরোপুরি ফেইক, অর্থহীন ব্যাপারস্যাপার।
হলিউড অনেক টাকা ব্যয় করে এইসমস্ত ফেইক ইন্টারফেস বানানোর জন্য। যেগুলো হয়ত উপর দেখতে খুব আকর্ষণীয় কিন্তু ভিতরে সদরঘাট টাইপ ব্যাপার আরকি।
তোমার অপারেটিং সিস্টেম যদি উবুন্টু(Ubuntu) হয় তাহলে তুমি এইরকম একটা ইন্টারফেস এখনই চেক করে দেখতে পারো। আর অপারেটিং সিস্টেম হয় উইন্ডোজ কিংবা Ubuntu কি, Linux কি এসব নিয়ে কোন ধারনাই না থাকে তাহলে বসে থাকো কিংবা বসে না থেকে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে শিখে নাও।
উবুন্টুতে একটা প্যাকেজ আছে যেটার নাম হল hollywood.
Hollywood : fill your console with Hollywood melodrama technobabble.
তো আমরা এইটা দিয়েই কিছু একটা করব শুধুমাত্র একটু বিনোদনের জন্য। আসলে যা করার ওই করবে। আমরা শুধু ওইটা ইনস্টল করবো আর রান করবো।
তা বাপু একটু কষ্ট করো। হ্যাকার হবা আর একটু কষ্ট করবা না, এইটা কোন কথা হল?
টার্মিনালে(Terminal) যাও এবং টাইপ করো byobu. এন্টার চাপো। কি দেখাচ্ছে?
এরকম কিছু?
The program 'byobu' is currently not installed. You can install it by typing:
sudo apt-get install byobu
তার মানে হল গিয়ে byobu তোমার কম্পিউটারে ইনস্টল করা নাই। কি আর করা? করো ইনস্টল।
লেখো : sudo apt-get install byobu
এন্টার চাপো। পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। দাও পাসওয়ার্ড। তুমি যখনই sudo mood এ কোন কিছু করতে চাইবে উবুন্টু তোমার কাছে পাসওয়ার্ড চাইবে।
সাই সাই করে অনেকগুলো লেখা চলে যাবে। একটা জায়গায় তোমার confirmation এর জন্য অপেক্ষা করবে। আবারও এন্টার চাপো। আবারও সাই সাই করে অনেকগুলো লেখা।
এরপর byobu ইনস্টল কমপ্লিট।
এখন hollywood ইনস্টল করার পালা। নিচের কমান্ডগুলো একে একে কপি করে টার্মিনালে পেস্ট করতে থাকো।
sudo apt-add-repository ppa:hollywood/ppa
sudo apt-get update
sudo apt-get install hollywood
একইভাবে hollywood এবার তোমার কম্পিউটারে ইনস্টল হয়ে যাওয়ার কথা।
এখন টার্মিনালে যাও। hollywood লিখে এন্টার দাও। আর দেখো ম্যাজিক।
তোমার পুরো মনিটর জুড়ে অদ্ভূত সব জিনিসপত্র, সাথে সাসপেনসফুল মিউজিক। ঠিক এই ভিডিওটার মতো কিছু একটা-
তোমার কি এখন নিজেকে একটু হ্যাকার হ্যাকার মনে হচ্ছে? যদিও এই পুরো বিষয়টার সাথে হ্যাকিং এর কোন সম্পর্কই নেই।
তুমি যদি এই পর্যন্ত আসতে পারো এর মানে হল তুমি উবুন্টুতে কোন একটা কিছু ইনস্টল করতে পারো। এর বেশি কিছু না।
লক্ষ কর আমি এখানে বেশ কিছু টার্ম ব্যবহার করেছি। যেমন- Terminal, sudo, byobu। এগুলো কি বলতে গেলে আমার লেখা আরও বড়ই হতে থাকবে।
এগুলোই ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে দিয়ে শিখে নিতে হয়। how to be a hacker in 24 hours, how to be a programmer in 1 week এগুলো সার্চ করার মতো বিষয় না।
আমাদের মনে হয় সবার প্রথমে জানা উচিত কিভাবে ইন্টারনেটে সার্চ করতে হয়, কি সার্চ করতে হয়।
যাই হোক আমার লেখা আপাতত শেষ। আমি এতক্ষন ধরে বকবক করেছি শুধু একটা বিষয় বুঝানোর জন্য যে আমরা শুধু স্বপ্নই দেখে যাই।
সেই স্বপ্নটাকে বাস্তব করার জন্য কি শেখা দরকার সেটা আমরা বুঝি না।
হ্যাকিং, প্রোগ্রামিং কিংবা অন্য যেকোন কিছু নিয়ে তোমার আগ্রহ থাকতেই পারে। কিন্তু সেজন্য কিছু জিনিসতো শিখতেই হবে।
হ্যাকিং বাদ দিলাম প্রোগ্রামিং তো যে কেউ শিখতে পারে। অনেক ভালো ভালো বই আছে প্রোগ্রামিং নিয়ে। ইন্টারনেটে অনেক রিসোর্স আছে।
আমি এতোক্ষন হ্যাকিং হ্যাকিং করলাম কারন সবাই শুধু হ্যাকিং হ্যাকিং করে। এরচেয়ে সবাই যদি একটু প্রোগ্রামিং প্রোগ্রামিং করতো তাহলে ব্যাপারটা আরো অনেক ভালো হত।
শেখার অনেক কিছুই আছে। সেগুলো কিভাবে শিখতে হয় এটা শেখাটাই আসলে সবথেকে কঠিন।
©somewhere in net ltd.