![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অতিসাধারণ, সাধারণই থাকতে চাই।ঝামেলা অসহ্য লাগে।ঝামেলা জিনিসটা হলো আধোয়া থালা-বাসনের মত বিরক্তিকর।
©বুক রিভিউ©
©নাম;- সাইলাস মারনার
©ধরন;-উপন্যাস
©মূল;-জর্জ এলিয়ট
©অনুবাদ;- তুহিন কুমার মুখোপাধ্যায়
©প্রকাশন:-ফ্রেন্ডস বুক কর্নার
©প্রকাশকাল;- ২০০৫
©পৃষ্ঠা:-৮৮
©মূল্য;-৪০
*****************************************************************************************************
উনবিংশ শতাব্দীতে যে গুটি কয়েক লেখিকা স্বীয় লেখনীর গুণে ইংরেজি সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের মধ্যে জর্জ এলিয়টের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
লেখিকা সম্পর্কে কিছু কথা-
জন্ম: ২২,নভেম্বার ১৮১৯
মৃত্যু : ২২ ডিসেম্বার ১৮৮০
পুরো নাম : : মেরি অ্যান ইভান্স
প্রধান সাহিত্যকর্ম: অ্যাডাম বিড, দা মিল অন দা ফ্লস, রমলা ইত্যাদি
জর্জ এলিয়টের উপন্যাসের পাত্র-পাত্রীদের অধিকাংশই সমাজের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত স্তরের। অভিজাত পরিবারের নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনচিত্রই তিনি সুন্দরভাবে ও বাস্তবসম্মত রূপে অঙ্কন করেছেন।তিনি অনাচারের মুখোশ উন্মোচন করতে দ্বিধা করেননি। কিন্তু দুস্ত চরিত্রের প্রতি সমবেদনায় তাঁর মন ভরে উঠত। এটাই ‘সাইলাস মারনার’ উপন্যাসে লক্ষ্য করা যায়। এখানে তিনি ভাগ্যবিড়ম্বিত সাইলাসের চরিত্রটি মমতার সাথে এঁকেছেন। প্রচণ্ড মানসিক আঘাতে কোনো মানুষ যে মানব সমাজের প্রতি বিশ্বাস হারাতে পারে তাঁতি সাইলাস তাঁরই প্রমাণ।লেখিকা দেখিয়েছেন যে স্নেহ,ভালবাসা,দয়া,ভক্তি ইত্যাদি মানুষের প্রাণকে কোমল করে।
সাইলাস মারনার ল্যান্টার্ন ইয়ার্ড নামের এক ছোট শহরে থাকত। সারা নামের একটি মেয়েকে সে ভালবাসত। প্রিয় বন্ধু উইলিয়াম ষড়যন্ত্র করে ল্যান্টার্ন ইয়ার্ড থেকে সাইলাসকে বিতাড়িত করে।সে জন্মভূমি ছেড়ে দেড়া বাঁধল রাভিলা নামের দূর গাঁয়ে।সে মানুষের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল। স্থানীয় কারো সাথে মিশত না। কাপড় বুনত এবং তা ফেরি করে বেচে তাঁর সময় কাটত। খ্রিস্টান হওয়া সত্ত্বেও সে ভিন্নমতালম্বি গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন। একবার প্রার্থনা করার সময় সে রহস্যময় রোগে আক্রান্ত হয়ে নিশ্চল হয়ে গিয়েছিল।ফলে সে চেতনা ফিরে পাওয়ার পর সবাই ধরে নেয় যে,কোনো ঐশ্বরিক শক্তি তাঁর উপর ভর করেছিল। এই ঘটনাটিকে ‘ম্যাজিক রিয়ালিসম’ বললে ভুল হবে না।‘ম্যাজিক রিয়ালিসম’ উপন্যাসে ব্যবহারের মাধ্যমে লেখিকার গুণ যে অসীম তা কিন্তু সহজেই অনুমানযোগ্য।তাছাড়া লেখিকা উপন্যাসটিতে শিল্প বিপ্লবের প্রতীকী হিসেবে বিভিন্ন স্তরের মানুষের কথা বলেছেন যেমনঃ ব্যবসায়ী, কৃষক ,শিল্পপতি,শ্রমজীবী ইত্যাদি।সাইলাস শ্রমজীবী ছিলেন। তাঁতের কাজ করে স্বর্ণ মুদ্রা জমান।ভূস্বামী মিস্টার কাস গ্রামের প্রতিপত্তিশীল লোক। তাঁর সন্তান গডফ্রে এবং ডানসটান। ডানসটানের টাকার প্রতি লোভ দেখা যায় এবং সে মারনারের স্বর্ণ মদ্রা চুরি করে। অপরদিকে গডফ্রের প্রভাব পুরো উপন্যাসে লক্ষ্য করা গিয়েছে।শোকে-দুঃখে সাইলাস যখন পাগলপ্রায় তখনই ‘ক্লাইম্যাক্স’,অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। এক কচি মেয়েকে সে পেল। মাতৃহীন ও পিতৃহীন পরিত্যক্ত বালিকা এপিকে পরম স্নেহে লালনপালন করায় সাইলাস র্যখভেলো গ্রামের মানুষের কাছে নিজের ভাবমূর্তি পুনরাই ফিরে আনতে সক্ষম হয়। শুধু তাই নয়, অনেক দুঃখের সাগর পাড়ি দেয়ার পর ঈশ্বরের কৃপায় তাঁর জীবনের একটা স্থিতিশীলতা আসে।
সুতরাং এটা সহজে বলা যায় যে, অর্থলোলুপ হৃদয়হীন তাঁতির জীবনেও যে ঈশ্বরের অনুগ্রহ প্রেমের করুনাধারা নামতে পারে,একটি অবাঞ্ছিত শিশুকে কেন্দ্র করে তারই বর্ণনা করেছেন লেখিকা। উপন্যাসের ভাষা খুবই সহজ বোধগম্য।পড়ে ফেলতে পারেন জর্জ এলিয়টের এই অসাধারণ উপন্যাসটি আজই।
©somewhere in net ltd.