নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I told my love, I told my love

মিলটনরহমান

[email protected] Never seek to tell thy love, Love that never told can be; For the gentle wind does move Silently, invisibly.

মিলটনরহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অলকানন্দার গায়ক মার্কেজ/ মিলটন রহমান

১৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৫

(লেখাটি আমার প্রিয় ঔপন্যাসিক মোহিত কামাল সম্পাদিত ‘শব্দঘর‘ এ ছাপা হয়েছে। তাই সাহিত্যের প্রথম সারির এই পত্রিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এখানে দিলাম পাঠকদের জন্য)



যাদুবাস্তবতার অর্ফিয়াস গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ২০০০ সালে একবার মৃত্যুবরণ করেছিলেন! সে খবর পেরুর দৈনিক লা রিপাবলিকাতে ছাপাও হয়েছিলো। খবরটি প্রথমে কারো কাছে অবিশ্বাস্য ছিলো না। কারণ ১৯৯৯ সালে গাবো প্রথম লিম্ফাটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তারপরও সে খবর ছাপিয়ে যাদু বাস্তবতার এই কারিগর অনেকটা তাঁর নির্মিত চরিত্রের মতই বেঁচেছিলেন ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। পেরুর ওই পত্রিকা ভুল সংবাদ ছেপেছিলো। তবে ক্যান্সারাক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তিনি স্মৃতি কাতর হয়ে ওঠেন। ২০০২ থেকে

২০০৪ সালের মধ্যে তিনি রচনা করেন আত্মজীবনী প্রথম খন্ড ' Living to tell the tale’(‘ভিভির পারা কোন্ত্রালো‘) এবং উপন্যাস 'Memories of my melancholy whores’। আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘ভিভির পারা কোন্ত্রালো‘ প্রথম স্পেনিস ভাষায় প্রকাশিত হয় ২০০২ সালে। জীবনী গ্রন্থটি প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে তাঁর স্পেনিস পাঠকদের মাঝে তা ব্যপক সাড়া ফেলে। পরের বছর ২০০৩ সালে ইংরেজিতে ‘ Living to tell the tale’ অনুদিত হয়ে প্রকাশিত হয়। অনুবাদক এডিথ গ্রসম্যান। এতে মার্কেজ ১৯২৭ সাল থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। মার্কেজের আত্মজীবনী সম্পর্কে আর কোন গ্রন্থ পাওয়ার সম্ভাবনা আপাতত দেখছি না। তিনি এর পরে দ্বিতীয় খন্ড রচনা করেছেন কিনা সে সম্পর্কে তাঁর পরিবার কিংবা প্রকাশক কেউই কিছু জানায় নি। ‘‘Memories of my melancholy whores’ গাবো‘র লেখা শেষ উপন্যাস। স্পেনিস ভাষায় ‘মেমোইরা দি মিস পুতাস ত্রিসতেস‘ প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। এডিথ গ্রসম্যানের ইংরেজি অনুবাদে ‘Memories of my melancholy whores’ প্রকাশিত হয় ২০০৫ সালের অক্টোবরে। উপন্যাসটি প্রথম স্পেনিস ভাষায় প্রকাশের পর প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি বিক্রি হয়ে যায় নিমিশে। ইংরেজি অনুবাদে প্রকাশের পর এর বিক্রির কথা আর উল্লেখ না করলেও চলে। শুধু এই দুই ভাষায় নয় পর্তূগিজ, পোলিশ, রাশিয়ান, জার্মান, ব্রাজিলিয়ান এবং এরাবিক ভাষায় এ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাস সাড়া জাগিয়েছিলো ইরানেও। ২০০৭ সালে উপন্যাসটি সে দেশে প্রকাশিত হয় ‘Memories of My Melancholy Sweethearts’ নামে। প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যেই ইরানে উপন্যাসটি বিক্রি হয় পাঁচ হাজারের মত। নড়ে ওঠে ইরান রাষ্ট্রযন্ত্রের ভীত। অভিযোগ তোলা হলো উপন্যাসটি পতিতাবৃত্তিকে উস্কে দিচ্ছে। কারণ উপন্যাসটি মূল চরিত্র একজন নাম অপ্রকাশিত বয়স্ক সাংবাদিক। তিনি নিজের ৯০ তম জন্মদিন পালনের সময় একজন তরুনীর সাথে যৌন সঙ্গম করার উচ্ছে প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী বেশ্যালয়ের দালাল রোসা তার জন্য নিয়ে আসে চৌদ্দ বছরের একটি কিশোরীকে। ওই বৃদ্ধ সাংবাদিক কিশোরীর ঘরে প্রবেশ করেই দেখে সম্পূর্ণ উলঙ্গ একটি কিশোরী নিরুপায় শুয়ে আছে বিছানায়। তখন সাংবাদিকটি জন্মের সময় একটি শিশু যেভাবে কান্না করে উলঙ্গ, তার সাথে ১৪ বছরের কিশোরীর কোন তফাত খুঁজে পান না। তিনি মেয়েটির প্রতি অন্য কোন আচরনের কথা ভুলে যান। মেয়েটির নাম দেন ডেলজান্দিনা। এটি মধ্যযুগীয় গাঁথার একটি চরিত্র। যাকে তার রাজা পিতা যেভাবে ¯েœহ করতো মেয়েটিকেও সেভাবে ¯েœহের দৃষ্টিতে মায়া করতে থাকলেন বৃদ্ধ সাংবাদিক। কিন্তু পতিতাবৃত্তির প্রচারণা বলে অবিহিত করে ইরান সরকার নিষিদ্ধ করে মার্কেজের সর্বশেষ উপন্যাস। গেব্রিয়ের গার্সিয়া মার্কেজের সারা জীবনের কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা স্বল্প পরিসরে সম্ভব নয়। তাই তাঁর শেষ দিকের কাজ নিয়ে আলোচনায় ব্রত হলাম এই জন্যে যে, শেষ সময়ে এসেও কিভাবে যাদুবাস্তবতার বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছিলেন তার খোল-নলচে খুলে দেখবো বলে। যেভাবে অন্য কেউ পারেনি। তাঁর শেষ উপন্যাসের কিশোরী চরিত্রের মাঝে সেই গুণের উপস্থিতি প্রবল। প্রসঙ্গক্রমে প্রবেশ করতে পারি তাঁর সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘One Hundred Years of Solitude’ এর ভেতর। কি ছিলো এই উপন্যাসে? যার জন্য পুরো বিশ্বকে মার্কেজ এই উপন্যাসের দিকে আলো ফেলতে বাধ্য করেছিলেন। এই উপন্যাসটি ‘শত বছরের নির্জনতা‘ শিরোনামে বাংলায় প্রকাশিত হওয়ার পর বাঙালী পাঠকদের মাঝে যে সাড়া জেগেছিলো তাও অভ’তপূর্ব। বাংলা ভাষাভাষী পাঠক কিংবা লেখকরা সম্ভবত সেই প্রথম আবিস্কার করলেন, ম্যাজিক্যাল রিয়্যালিজম বা ম্যাজিক রিয়্যালিজমের সফল প্রয়োগ। এর পর বিশ্বসাহিত্যে তার প্রয়োগ বিভিন্নভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। কিন্তু গেব্রিয়ের গার্সিয়া মার্কেজই যাদুবাস্তবতার জনক হয়ে থাকলেন। এবার একটু পাঁজর খোলা যাক ‘শত বছরের নির্জনতা‘র। উপন্যাসটি বিস্তৃতি লাভ করেছে ‘মাকোন্দো‘ নামের একটি কাল্পনিক শহরের ‘বোয়েন্দিয়া‘ পরিবাবারের সাত প্রজন্মকে ঘিরে। যে গ্রামে প্রায়ই দেখা হয়ে যায় মৃত মানুষদের সাথে। আকাশে দেখা যায় হাতি উড়তে। এসব ঘটনা কাল্পনিক মনে হলেও শত বছরের নির্জনতা পাঠের সময় এসব ঘটনাকে বাস্তব ছাড়া অন্য কিছুই মনে হয় না। এই উপন্যাস এবং এতে বর্ণিত কাহিনীর বাস্তবতা নিয়ে ১৯৮৮ সালে এক স্বাক্ষাতকারে গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ বলেছিলেন,উপন্যাসের বাস্তবতা এবং বাস্তব জীবনের বাস্তবতায় কিছুটা ভিন্নতা তাকলেও, মূলত বাস্তবতাই নিহিত রয়েছে গল্পের পরতে পরতে। তা অনেকটাই স্বপ্নের মত। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘There’s not a single line in my novels which is not based on reality.’১৯৬৭ সালে উপন্যাসটি প্রকাশের পর ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্যে নুতন অধ্যায়ের সূচনা হয়। যা বিশ্বসাহিত্যেকে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করে। আঙ্গিকগত দিক থেকে এতে ইউরোপীয়ান, নর্থ আমেরিকান এবং কিউবান আধুনিকতার প্রভাবও পরিলক্ষিত। এছাড়া উপন্যাসটি প্রকশিত হওয়ার পর ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্য নিজের ঐতিহ্য এবং নিজেকে বুঝতে পারে বলেও মন্তব্য সাহিত্য বোদ্ধাদের। গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের মৃত্যুর পর তাঁর সমুদয় লেখা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ‘শত বছরের নির্জনতা‘। তাঁর মৃত্যুর পর হাইতি বংশোদ্ভোত কানাডিয়ান লেখক ডেনি লেফাররিয়র উপন্যসিটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘শত বছরের নির্জনতা‘য় মার্কেজ নিজ পরিবারের ইতিহাস বর্ণণা করতে গিয়ে জীবনের প্রতিটি পাতা স্পর্শ করেছেন। পাঠকের কাছে অনেক সময় এই উপন্যাসের কিছু কিছু বিষয় ভৌতিক মনে হলেও পরক্ষণে তার বাস্তবতা মেনে নিতে দেরি হয় না। একই সাথে মানুষের মনোদৈহিক চেতনার বিকাশও দেখা যায় কোথাও কোথাও। যেমন এক জায়গায় দেখা যায় মার্কেজ বলছেন,Ô Sex is the consolation you have when you can't have love." এইখানে মার্কেজ প্রেম এবং দৈহিক চাহিদাকে একেবারে আলাদা করে ফেলেছেন। দেখা যায় মনোবিকলনের চেয়ে প্রেমই তার কাছে প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। এভাবে জীবনকে অনুবিক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পর্যবেক্ষণ করার শক্তি অর্জন সম্ভবত মার্কেজ নিজে সাংবাদিক ছিলেন বলেই সম্ভব হয়েছিলো। ‘শত বছরের নির্জনতা‘ বিশ্বসাহিত্যের মানচিত্র যেভাবে পাল্টে দিয়েছিলো সেভাবে তাঁর জীবনের বাঁকও পরিবর্তন করে দিয়েছিলো। এই উপন্যাস রচিত হওয়ার সময় মার্কেজ তেমন পরিচিত ছিলেন না। কোন প্রকাশক বইটি ছাপতেই রাজি ছিলেন না। কিন্তু বুয়েনোস আয়ারস যখন বইটি ছাপার জন্য গাবোকে ছিটি লিখে জানালেন তখন পান্ডুলিপিটি পাঠানোর মত আর্থিক সামর্থও তাঁর ছিলো না। ১৯৬৭ সালে বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর পর প্রায় ৩৭ টি ভাষায় উপণ্যাসটি অনুদিত হয় এবং প্রায় ত্রিশ মিলিয়ন বই বিক্রি হয়। এটা বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা। তারপর ১৯৮২ সাল, গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজকে এই উপন্যাস এনে দেয় জগদ্বিখ্যাত খ্যাতি। আর্জন করেন বিশ্বসাহিত্যের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘নোবেল প্রাইজ‘(এখন নোবেল প্রাইজ সে রকম আবেদন তৈরী করে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে মার্কেজের সময়ে এর মানদন্ড নিয়ে ধারণা ছিলো আকাশচুম্বি)। আর নোবেল প্রাইজ গ্রহণের সময় মার্কেজ বলে ওঠেন "We, the inventors of tales, who will believe anything, feel entitled to believe that it is not yet too late to engage in the creation of ... a new and sweeping utopia of life, where no one will be able to decide for others how they die, where love will prove true and happiness be possible, and where the races condemned to one hundred years of solitude will have, at last and forever, a second opportunity on earth."



কৈশোরে পাঠ করেছিলাম গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ‘No One Writes to the Colonel’। অবশ্য এর মূল নয় পাঠ করেছিলাম বাংলা অনুবাদ ‘কর্ণেলকে কেউ চিঠি লিখেনি‘। এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল। যিনি অসুস্থ স্ত্রীর সাথে বসবাস করেন। শুধু তাই নয় এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা তাদের একমাত্র ছেলেকে হারিয়েও নি:সঙ্গ। সব হারিয়ে একমাত্র অবলম্বন তার পালক মোরগকে তৈরী করতে থাকে লড়াইয়ের জন্য। এই গল্পের মধ্যে কাজ করেছে ক্রোধ এবং একই সাথে অসহায়ত্ব। এই উপন্যাস রচনার সময় গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের সময়ও ছিলো প্রতিক’ল। তিনি যে পত্রিকায় চাকুরী করতেন তাও যায় বন্ধ হয়ে। আর কর্ণেল হিসেবে যে চরিত্র নির্মাণ করেছেন, তা তাঁর নিজের দাদার অবিকল উপস্থাপন। যিনি এক সময় কর্ণেল ছিলেন। প্রতিশ্রুতি মত পাননি পেনশন। মার্কেজ তাঁর স্মৃতিগ্রন্থ ‘Living to tell the tale’



এ লিখেছেন, ‘আমি কর্নেলকে কেউ চিঠি লিখেনি রচনা করেছি আমার দাদার অনুপ্রেরণায়। কারণ আমার দাদাও ছিলেন একজন সুবিধা বঞ্চিত কর্ণেল‘। দেখা যাচ্ছে গল্পের অবকাঠামো নির্মাণে তিনি বরাবরের মতই নিজের পূর্ব পুরুষকে উপস্থাপন করেছেন। স্বভাবজাত ভাবে তাঁর উপন্যাসের গল্পে ‘কাল্পনিক‘ এবং ‘বাস্তব‘ এই দুইয়ের মিশেল পাওয়া যায়। এই উপন্যাসের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ম্যাজিক রিয়েলিজম। এটাই সর্বজন বিধিত। স্পেনিস ভাষাভাষীদের খুব কমই আছেন যারা তাঁর এই কর্মটি সম্পর্কে ধারনা রাখেন না। ১৭ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরে আমার এক স্পেনিস বন্ধুকে জিজ্ঞেস করতেই বললো, ‘ও গাবো‘র কথা বলছো? ওঁর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। গাবোই আমাকে এবং আমার মত অনেককেই পাঠে উদ্ধোদ্ধ করেছিলো। বিশেষ করে তাঁর ম্যাজিক রিয়েলিজম পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধের মত টানে।‘ সাহিত্যের এই থিউরি মার্কেজ নিজের মত প্রায় সব উপন্যাস-গল্পে প্রয়োগ করেছেন। এর প্রায়োগিক কৌশলের কারণে কাল্পনিক চরিত্রগুলোও অতিবাস্তবতায় স্থাপিত হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে ১৯৫৫ সালে রচিত ছোটগল্প ‘Very Old Man with Enormous Wings’



এর কলকব্জা নেড়ে দেখা যেতে পারে। গল্পটির দু‘টো চরিত্র ডানাঅলা বৃদ্ধ আর ভেড়া আকৃতির তরুণী কে নিয়ে তৈরী হয় আলো-আঁধারীর রহস্য। তিন দিনের ঝড়ে অজানা স্থান থেকে বিশালাকৃতির পাখা নিয়ে উড়ে আসা এক বৃদ্ধ মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে পিলাইয়ো ও এলিসেন্দা দম্পতির উঠোনে। তারা রহস্য মানবটির সাথে কথা বলার চেষ্টা করে, কিন্তু তার ভাষা কিছুই বুঝতে পারে না। পিলাইয়ো যুগল মনে করে ডানাঅলা বৃদ্ধ পাপী এবং সমাজচ্যুত। তবে প্রতিবেশি এক মহিলা যিনি জন্ম-মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেন, বললেন আগন্তুক বৃদ্ধ একজন দেবতা। এলিসেন্দা বৃদ্ধকে সারারাত আটকে রাখে একটি মুরগির খোপে। পরের দিন সকালে ফাদার গনজেগা বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভীড়লাগা মানুষের উদ্দেশ্যে বললেন ‘বৃদ্ধ একজন দেবতা‘। যদিও পরে ফাদার গনজেলা বুঝতে পারেন বৃদ্ধ মূলত দেবতা নন, তিনি লেটিন ভাষা বুঝেন না। তার মধ্যে উপস্থিত মানবিক চরিত্র। এদিকে বৃদ্ধকে দেখার জন্য মানুষের ভীড়ে অতিষ্ঠ এলিসেন্দা দম্পতি। তারা ঠিক করে দর্শণার্থীদের কাজ থেকে ৫ সেন্ট করে নেয়া হবে, এবং তাই হলো। এক সময় দেখা গেলো তাদের আয় যা হয়েছে তা দিয়ে স্বপ্নের একটি বাড়ি তৈরী করা সম্ভব। তবে এক সময় ভীড় জমানো মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধর দিক থেকে কমে স্থাপিত হয় আগন্তুক কিম্ভুত কিমাকার মাকড়শা আকৃতির একটি মেয়ের ওপর। মেয়েটি একের পর এক গল্প বলে আর তা সবাই বুঝতে পারে, তাই সকলের দৃষ্টি তার দিকে। এর মধ্যে দেখা যায় বৃদ্ধের পাখায় পঁচন ধরেছে, ঝরে গেছে একে এক সব পালক। তবে বসন্ত এলে বৃদ্ধের দেখা যায় নতুন পালক। একদিন লোকটি পাখা নেড়ে উড়ে চলে যায় এলিসেন্দা দম্পতির বাড়ি থেকে। গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের এই অসাধারণ সৃষ্টি পাঠ করতে করতে বাঙালী পাঠকের মনে হবে এক সময় দাদা-দাদীর কাছে শুনা কোন রূপকথা পাঠ করছে। মার্কেজের মুন্সিয়ানা এখানেই যে তিনি একটি গল্পকে রূপ কথার মত করে বলতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত তাকে বাস্তবতায় উপস্থাপন করেছেন। এই গল্পটি তাঁর প্রকৃষ্ট উদাহরন। বলা যায় তাঁর যে যাদু বাস্তবতার উপস্থাপন তার সফল পওয়োগ হয়েছে এই গল্পে।

একইভাবে আমরা বলতে পারি গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের আরেক অনবদ্য সৃষ্টি ‘সরলা এরিন্দেরা‘র কথা। এই গল্পটি বিস্তৃত হয়েছে এক হৃদয়হীন দাদী ও চৌদ্দ বছরের তরুণী নাতনী এরিন্দেরাকে ঘিরে। একদিন দূর্ঘটনাবসত এরিন্দেরা ঘরে আগুন লাগিয়ে দিলে, দাদী তাকে বাড়ির ক্ষতিপুরনের অর্থ ফেরত দিতে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। সেখানে এরিন্দেরার সাথে পরিচয় হয় ইউলিসিস এর। ইউলিসিস প্রেমে পড়ে যায় এরিন্দেরার। এই গল্পটি পাঠের সময়ও বাঙালী পাঠকের কাছে অনেক কিছুই নিজের নানান সংস্কারের সাথে মিলে যেতে দেখবেন। যেমন গল্পের একেবারের শুরুর দিকেই দেখা যায় দাদি-নাতনীর স্বপ্ন নিয়ে কথোপকোথন-

‘গতরাতে স্বপ্নে দেখলাম আমি একটি চিঠির জন্য অপেক্ষা করছি‘ দাদী বললো

এরিন্দেরা পারতে দাদির কোন কথার প্রতি উত্তর করে না, যদি তা একেবারে সহ্যের বাইরে না হয়। এরিন্দেরা বললো-

‘কি বারে তুমি এই স্বপ্ন দেখেছো?‘

‘বৃহস্পতিবার‘

এরিন্দেরা বললো-‘তাহলে ওই চিঠিতে ভালো কোন সংবাদ নেই, এবং চিঠিটি কখনো তোমার কাছে আসবে না।

স্বপ্ন নিয়ে আমাদের সমাজেও নানান রূপকথা বা পাঁচালির প্রচলন রয়েছে তাকেও গল্পে আমদানী করতে দেখা যায় মার্কেজকে। এই বিষয়টি কাকতালীয় হলেও বাংলা ভাষাভাষী পাঠকের কাছে বেশ পরিচিত বলেই মনে হবে। গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের কয়েকটি চরিত্র আছে যাদেরকে বারবার উপস্থাপন করেছেন বিভিন্ন গল্পে। সরলা এরিন্দেরা এবং তার বৃদ্ধ দাদীকে আমরা দেখতে পাই ‘ওয়ান হানড্রেড ইয়ার্স অব সলিটিউড‘ এবং ‘এ ভেরি ওল্ডম্যান উইথ এনরমাস উইংস‘ এ।

গেব্রিযেল গার্সিয়া মার্কেজের গল্প-উপন্যাসগুলো নানান রহস্যময়তার ভেতর দিয়ে কিভাবে বাস্তবতায় উত্তীর্ণ হয়েছে সেটাও ভাববার বিষয়। এর মূলে তাঁর পর্যবেক্ষণ এবং তার প্রতিফলনের আঙ্গিক এবং বিষয়গুলো কি ছিলো? যেমন তাঁর উপন্যাস ‘Love in the Time of Cholera’.



নিজের পরিবারের (বাবা-মা) সদস্যদের অভাবনীয় প্রেমের কাহিনী বর্ণণা করা হয়েছে এই উপন্যাসে। ইউনিভার্সিটি অব কলরেডোর অধ্যাপক রেমন্ড লেসলি উইলয়ামসরে নেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে মার্কেজ বলেছিলেন, ‘ এ উপন্যাস রচনায় আমাকে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে পোট্রেট, ফটো, পারিবারিক অ্যালবাম, এসব অনেক জিনিস।‘ এতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে স্থায়ী এবং সত্য প্রেমের শক্তি। উপন্যাসটি পাঠে আমরা দেখি ‘ফ্লুরেন্টিনা আরিজা এবং ফার্মিনা ডাজা কৈশোরে একে অপরের প্রেমে পড়ে। কিন্তু বিষয়টি ফার্মিনার বাবা লেরেঞ্জু ডাজার চোখে পড়ার পর বাঁধ সাধেন তিনি। ভুলে যেতে বলেন ফ্লুরেন্টিনাকে। মেয়ে তাতে অস্মিকার করলে লরেঞ্জু মেয়েকে নিয়ে অন্য শহরে চলে যায়। তারপরও ফ্লুরেন্টিনা এবং ফার্মিনার মধ্যে টেলিগ্রাফে যোগাযোগ অব্যহত থাকে। কিন্তু কাহিনী মোড় নেয় যখন ফার্মিনা ডাক্তার জুবেনাল আর্বিনোর প্রেমে পড়ে, ভুলে যায় ফ্লুরেন্টিনাকে। একসয় ডাক্তারকে বিয়েও করে ফার্মিনা। তারপরও আমরা দেখি ফ্লুরেন্টিনা পুরনো বিশ্বাস নিয়ে অপেক্ষায় থাকে ফার্মিনার জন্য, যদি ফিরে আসে। এই উপন্যাস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ নিজেই মন্তব্য করেছিলেন, ‘তুমি যাতে আমার ফাঁদে না পড়ো সে বিষয়ে তোমাকে সতর্ক থাকতে হবে।‘ গল্পের মূল বিষয় উত্থাপন করলাম এই জন্য যে, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের ঘটনার সাথে এর শতভাগ মিল খুঁজে পাই। কোথায় ল্যাটিন আমেরিকার একজন সাহিত্যিকের লেখা উপন্যাস আমাদের জীবনের সাথেও অবলিলায় মিলে যায়, যা বাংলা পাঠককেও অনুরনিত করে। এটাই একজন ঔপন্যাসিকের জীবনকে দেখার শক্তি উপস্থাপন করে। বলে দেয় একজন ঔপন্যাসিক নির্দিষ্ট কোন ভ’খন্ডের নয়, পুরো বিশ্বের। গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ হচ্ছে সেই ঔপন্যাসিক।

একজন সাংবাদিক যদি ঔপন্যাসিক হয় তাহলে অনেক সুবিধা আছে। তার দেখার দৃষ্টি এবং বিচরনের ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়। প্রতিটি বিষয়ে খোল-নলছে উন্মুক্ত করে দেখার ক্ষমতা রাখে। যার ফলে একজন সাংবাদিক দেখার বিষয়গুলো লেখার পর অন্যদের কাছে নতুন এবং অভাবনীয় মনে হয়। গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ সেই গভীর বিষয় চিত্রায়ায়নের কারিগর। সম্ভব তিনি সাংবাদিক ছিলেন বলেই গল্প-উপন্যাসের বর্ণনায় কোথাও ঘাটতি খুঁজে পাওয়া যায়না। একজন নিপূণ কারিগরের মত তিনি যা নির্মাণ করেছেন তার প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অত্যন্ত সচেতনতার সাথে নির্মাণ করেছেন। প্রসঙ্গক্রমে বলতে চাই তাঁর অনুসন্ধিতসুমূলক রচনা ‘রিলেতো দে উন নিউফ্রেগো‘ যা ইংরেজিতে অনুদিত হয়েছিলো ‘দ্য স্টোরি অফ এ শীপরেকড সেইলর‘ শিরোনামে। এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশের আগে ১৯৫৫ সালে তিনি ধারাবাহিক চৌদ্দ পর্বে লিখেছিলেন এল এস্পেক্তাদোর পত্রিকায়। এই রচনার পুনোটাই মার্কজের অভিজ্ঞতা প্রসূত। এতে বর্ণিত হয়েছে কলম্বিয়ান নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ডুবে জাওয়ার ঘটনা। অতিরিক্ত চোরাচালানীর পন্য বোঝাই করার কারণেই জাহাজটি ডুবে যায়। তাঁর এই লেখা প্রকাশের সাথে সাথেই শুরু হয় গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের মাটি ছেড়ে যাওয়ার পর্ব। কারণ কলম্বিয়ান সরকার তাঁর লেখায় বর্ণিত কাহিনীর সাথে একমত ছিলোনা। সরকারের মতে ঝড়ের কবলে পড়েই জাহাজটি ডুবে যায়। ফলে সরকারের রোষানলে পড়ে তিনি দেশ ছাড়েন। তাঁর এই লেখা ১৯৭০ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হলে পাঠকরা একে উপন্যাস হিসেবেই মেনে নেয়। আমি মনে করি গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ সেই সাংবাদিক যিনি প্রতিবেদনের ভাষাকে সুলিখিত গদ্যে উপনীতি করতে পেরেছিলেন বলেই এই লেখাটি একটি উপন্যাসের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হলো।

গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজকে নিয়ে আলোচনা স্বপ্ল পরিসরে সম্ভব নয়। তাঁর কাজের ক্যানভাস বিশাল। তাতে চোখ বুলানো এবং আলোচনায় উপনীত হতে হলে সময়ের প্রয়োজন। এই পর্যন্ত তাঁর যে ক‘টা গ্রন্থ নিয়ে কথা বলেছি তাঁর বাইরে কিচু বইয়ের নাম উল্লেখ করতে চাই। যেমন-উপন্যাস-ইন এভিল আওয়ার(১৯৬২), দি আটোমেন অফ দ্য পাট্রিয়া(১৯৭৫), দি জেনারেল ইন হিস লেবাইরিথ(১৯৮৯), অফ লাভ এন্ড আদার ডেমোস(১৯৯৪)। বড়গল্প গ্রন্থ-লিফ স্টর্ম(১৯৫৫), চরনিক্যাল অফ এ ডেথ ফরটোল্ড(১৯৮১)। ছোটগল্প গ্রন্থ-আইস অফ এ ব্লু ডগ(১৯৪৭), বিগ মামা‘স ফিউনারেল(১৯৬২), কালেক্টেড স্টোরিস(১৮৮৪) এবং স্ট্রেঞ্জ পিলগ্রিম(১৯৯৩)। নন-ফিকশন-দ্য সলিটিউড অব ল্যাটিন আমেরিকা(১৯৮২), দি প্রেগরেন্স অব গোয়েবা(১৯৮২), নিউজ অব এ কিডন্যাপিং(১৯৯৬), এ কান্ট্রি অব চিলড্রেন(১৯৯৮)।



আমরা যারা সমালোচনা করি তারা বলে থাকি গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ হচ্ছেন ম্যাজিক রিয়েলিজমের প্রবর্তক। এটা মানতে রাজি কিন্তু তার আগে বিশ্বসাহিত্যের দিকে আলো ফেলতে চাই। এমন নয় যে মার্কেজের আগে কারো লেখায় যাদু বাস্তবতা টার্মটি ব্যবহৃত হয়নি। এর উপস্থাপন ফ্রাঞ্জ কাফকা, দস্তয়েভস্কি, মোঁপাসা, চার্লস ডিকেন্স এবং বালজাকসহ আরো অনেকের লেখায় দেখা যায়। তাহলে মার্কেজ এর জন্য আলাদাভাবে আলোচিত কেনো? ম্যািজক্যাল রিয়েলিজম ব্যবহারে তিনি অন্যদের থেকে আলাদা ছিলেন। তিনি যাদুকে রহস্যের ফোঁকরে না ফেলে বাস্তবতায় উত্তীর্ণ করেছেন। অন্যরা যে একই কাজ করেন নি তা নয়, তবে মার্কেজের কাজ অন্যদের থেকে তাকে চিহ্নত করেছে আলাদাভাবে। গাবো তাঁর লেখক হয়ে ওঠার পেছনে কয়েকজন লেখকের নাম সব সময় স্মরণ করতেন, তাদের মধ্যে একজন নর্থ আমেরিকান ঔপন্যাসিক উইলিয়াম ফকনার এবং অন্যজন আর্নেস্ট হেমিংওয়ে। ১৯৮১ সালে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে ‘Gabriel Garcia Marquez Meets Ernest Hemingway’শিরোনামে রেনডফ হগানের অনুবাদে মার্কেজের একটা গদ্য ছাপা হয়েছিলো। তাতে বিদৃত হয়েছিলো ১৯৫৭ সালে আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ের সাথে প্যারিসে তাঁর প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতি এবং প্রাসঙ্গিকভাবে এসেছে ফকনারের কথা। ‘My great masters were the two North American novelists who seemed to have the least in common. I had read everything they had published until then, but not as complementary reading - rather, just the opposite, as two distinct and almost mutually exclusive forms of conceiving of literature. One of them was William Faulkner, whom I had never laid eyes on and whom I could only imagine as the farmer in shirtsleeves scratching his arm beside two little white dogs in the celebrated portrait of him taken by Cartier-Bresson. The other was the ephemeral man who had just said goodbye to me from across the street, leaving me with the impression that something had happened in my life, and had happened for all time’.



মার্কেজের এ সরলোক্তির পর এটাকে কোন কোন সমালোচক অনুকরণ বা অনুসরণ বলতে পারেন সরাসির। কিন্তু আমি বলবো এর কোনটিই নয়। লেখক মাত্রই পরিবেশ-প্রতিবেশে কি ঘটছে তার উপস্থাপন করে থাকেন। পাঠ করেন পূর্বসূরীরা কি লিখেছেন, কি পাঠ করেছেন। মার্কেজও তাই করেছেন। তাঁর দেখার এবং গ্রহণ করার যে চোখ ছিলো তা অন্যদের চেয়ে আলাদা। তাই তিনি সঞ্চিত অভিজ্ঞতাকে প্রয়োগ করেছেন নিজের মত করে, যেখানে অন্য কারো উপস্থিতি আমরা টের পাইনা। তাঁর কোন লেখায় নাম না থাকলেও আমারা বুঝে যাই এটা গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লেখা। এটাই লেখক হিসেবে তাঁর সবচেয়ে বড় স্বার্থকতা। তাই ‘মার্কেজ অমূকের দ্বারা প্রভাবিত‘ এমন মন্তব্য আমি মানতে নারাজ। মার্কেজ, মার্কেজের মতই।

গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ এর পুরো নাম ‘গেব্রিয়েল হোসে দে লা কনকর্ডিয়া গার্সিয়া মার্কেজ‘। জন্ম গ্রহণ করেন ১৯২৭ সালের ৬ মার্চ কলম্বিয়ার আরাকাটাকা অঞ্চলে। তাঁর লেখক জীবনের সূচানপর্ব তেমন সুখকর ছিলো না। সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘শত বছরের নির্জনতা‘ প্রকাশকালে চোখে ফেললে জানা যায় তাঁর উত্থানের প্রতিবন্ধকতাগুলো। স্পেনিস ভাষায় ১৯৬৭ সালে এই উপন্যাসিটি প্রকাশিত হওয়ার পর পুরো বিশ্বে সাড়া পরে যায়। অনুদিত হয় বিভিন্ন ভাষায়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮২ সালে তিনি অর্জন করেন বিশ্বসাহিত্যের সবচেয়ে মর্যদাপূর্ণ সম্মাণনা নোবেল প্রাইজ। নোবেল জয়ের পর তিনি বুঝেছিলেন নিজের বহুরৈখিক জীবন সংস্থিত হলো এক জায়গায় যে তিনি লেখক এবং পুরো বিশ্বের লেখক ছাড়া আর কিছু নন। কারণ তিনিই প্রথম বাস্তবের সংস্পর্শে এনে নতুন এক অজানা বাস্তবকে উপস্থাপন করার স্বতন্ত্র্য কৌশল দেখালেন ‘শত বছরের নির্জনতায়‘। যেটা তাঁকে বিশ্বখ্যাতির চূড়ায় অবতীর্ণ করে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
শব্দঘর দেখলাম।
প্রথম সারির কিনা তা সময় বলবে, মাত্র তো কয়েক সংখ্যা এলো।
আরেকটা 'কালি ওঁ কলম' মনে হলো।

তবে হারিয়ে যেন না যায়, সেটা জরুরী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.