নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেউ আমার ধর্মে নয়, আমার কর্মে যদি আমাকে ভালবাসে তবে আমি তাকেই ভালবাসা বলব। আর কারোর বাহবা, হাততালি, প্রশংসা বা মনোরঞ্জনের জন্য আমি আমারস্বকিয়তা বিলিন করতে পারিনা, পারব ও না।
১. মদনগঞ্জের আবুল মিঞা সন্ধ্যায় খেত থেকে ক্লান্ত শরীর নিয়ে সবে মাত্র বাড়ি ফিরেছে। মনটা তেমন ভাল না, দেশের রাজনৈতিক দাঙ্গার আগুন শহর পুড়িয়ে তাদের সবুজ বুনার মাঠেও এসে পৌঁছে গেছে। এইতো দুপুরেও কালুকে পুলিশ মেরে ফেলছে। কাজিপাড়ার, রায় বাড়ির আরো কিছু ছেলেও মারা গেছে কিছু আবার খুব মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। বাকি দেশের খবর জানতে টিভি ছাড়তেই কিছু পিচ্চি পোলাপাইনের দেশের পরিস্তিতি নিয়া কথা বলার দৃশ্য দেখা গেলো, তাদের পর পর এক কৃষক মত বেডা চিল্লাই উঠলো, কি পাইছেন ? এটা কি ছেলে-খেলা ? আমরা এইসবের ভিতরে নাই, আমরা যদি ---- করি তাইলে দেশের কি হইবো ?
শেষে খুব দৃঢ়তার সাথে গর্জে উঠে বল্লঃ আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ !
আবুল মিঞার মনে সাহসের সঞ্চার হলো, তারাই যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় তাহলে তো তারা দেশের জন্য কিছু করতে পারবে !
২. সখিনা বিবি জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে তার গার্মেন্টস থেকে রাজধানীর প্রসীদ্ধ কোন বস্তিতে তার জীর্ণ শীর্ণ কুঁড়ে ঘরে কোনরকমে পৌঁছলো। রান্নার কাজ সেরে খেতে বসলো আর দেশের পরিস্থিতি জানার জন্য ঘরের কোণের ১৪" সাদাকালো টিভি ছেড়ে দিলো। একপর্যায়ে সেও আবুল মিঞার মতো একটা বিজ্ঞাপন দেখে জানতে পারলো তারা গার্মেন্টসকর্মীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ !
আর সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তার্ও এই দেশের জন্য কিছু একটা করার খায়েশ জাগলো !
৩. ইমরান রাজধানীর সুনামধন্য কোন এক কলেজের ছাত্র, গত কয়েকদিন হলো প্রায়ই ক্লাশ করতে পারে না। কারনটা এখন সবার জানা; দেশের রাজনৈতিক দাঙ্গা-জঙ্গিবাদের ফলে পুরো সপ্তাহে শুধুমাত্র শুক্রবার ছুটিরদিন ক্লাশ করতে হয়। আজও সবে মাত্র ক্লাশ করে ঘরে ফিরলো। খাওয়া-দাওয়া সেরে একটু বিনোদন লাভের আশায় টিভি ছেড়ে আয়েশ করে বসলো। প্রতিদিনের মতই মুখে বিরক্তির ছাপ লেগে আছে, আর খিস্তি দিয়ে একটা গালি পাড়তে থাকে "শালার বজ্জাতেরা কি বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্যই টিভি চ্যানেল খুলে বসছে" !
এই করতে করতে চ্যানেল ঘুরানো একটু থামালো। আর তখনও কোন একটা চ্যানেলে বিজ্ঞাপন চলছে, সে দেখলো একটা চলন্ত বাসে কিছু পিচ্চি পিচ্চি পোলাপাইন বসে বসে তাস খেলছে আর প্রতিকী যুবক সেজে কিছু ব্যাঙ্গাত্মক শব্দ বলে যাচ্ছে। অবশেষে একটা সত্যিকারের যুবক পোলা পিচ্চিদের কথায় চুপ থাকতে না পেরে চিল্লাই উঠলোঃ কী পাইছেন ? এটা বাচ্চাদের খেলা ? আমরা যদি চুপ করে থাকি তাইলে দেশের কি হইবো ???
ভুইল্লা যাইয়েন না, আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ !!!
এহেন দৃশ্য দেখিয়া সারা সপ্তাহ ঘরে বসে বসে বোর হয়ে যাওয়া ইমরান এই জ্ঞান লভিলো যে তারা যুবকরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ! এই রক্ত গরমের বয়সে যেন এই খবর আগুন ধরিয়ে দিলো ! সে এখন প্রস্তুত দেশের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য !!!
৪. আবুল, সখিনা এবং ইমরান প্রত্যেকে তার তার জায়গা থেকে সমস্ত প্রস্তুতি নিল দেশের আমূল পরিবর্তন আনতে। তারা তাদের স্ব স্ব গোত্রের (!) লোকদের উৎসাহ দিতে লাগলো যে, মিঞারা তোমরা কী জানো আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ? আর তাই দেশের এই নোংরা পরিস্থিতিতে যাদের কথা বলার কথা তারা যখন মুখে কুলুপ এঁটে, মাজায় বিছা বেঁধে, হাতে চুড়ি পরে বসে আছে তখন আমাদেরই মাঠে নামতে হবে ! সবাই সমস্বরে চিল্লাই উঠলো, হ, আমরা যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ তখন আমগো কথায়ই সব হইব !
গ্রামের আবুল মিঞার দলবল বল্ল, আমরা তো গ্রামে থাইকা কিছুই করতে পারুম না ! চলেন আমরা সবাই মিল্লা ডাহার শহর চইল্লা যাই ! যেই কথা সেই কাজ, আবুল মিঞার দল এখন ঢাকার পথে।
* দৃশ্যপটঃ স্বাধিনতার ৪১ বছর পর যখন বাঙ্গালির মনের দাবি জানানোর জন্য একটা স্থান হয়েছে ! তখন আবুল, সখিনা ও ইমরানরা ভিন্ন ভিন্নভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে তারা শাহাবাগের ঐতিহাসিক গনজাগরণ মঞ্চ থেকেই তাদের কারযক্রম চালিয়ে যাবে। অবশেষে হলোও তাই ! ভিন্ন ভিন্নভাবে সবাই রওয়ানা হলো, উদ্দেশ্য গনজাগরণ মঞ্চ ! আরেকটা কথা, এরা যে তিন দল দেশের আমূল পরিবর্তন করতে আসছে তা তাদের দিন দলেরই ধারনার বাইরে। যার যার দলের খবরই শুধু জানে।
অতঃপর এক এক করে তিন দলই এসে হাজির গনজাগরণ মঞ্চে। কিন্তু প্রত্যেকেই অবাক ! এত্তোগুলা মানুষ আসলো কোত্থেকে ? মনের মধ্যে একটা খুঁত খুঁতে ভাব নিয়েই আবুল মিঞা, সখিনা ও ইমরান মঞ্চের মূল অংশে আরহন করলেন, উদ্দেশ্য তাদের দলকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়া। কিন্তু মঞ্চে উঠেই তারা একে অপরকে ঠেলা শুরু করলো ! এই ঠেলাঠেলির ফাঁকে প্রেত্যেকে জেনে নিলো তাদের উদ্দেশ্য এক; দেশের পরিবর্তন আনা ! কিন্তু আবুল চিল্লাই উঠলো ওই তোরা কইত্তে আইছস, আমরা কৃষকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই আমরাই দেশের পরিবর্তন করুম ! তোরা ভাগ ! এই কথা শুইন্না সখিনা কইলো অই বুইড়া কি কইলি ? সংখ্যাগরিষ্ঠ হইছি আমরা গার্মেন্টস কর্মীরা ! তোর চোখের পাওয়ার গেছেগা তাই ভুল দেখছস !
এইবার শীক্ষিত ইমরান আর চুপ থাকতে পারলো না, সে বলে উঠলো ফাইজলামির একটা সীমা আছে ! তোমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার বুঝ কি ? সংখ্যাগরিষ্ঠ হইছি আমরা যুব সমাজ !
অবস্থার মোড় পাল্টে গেলো ! যারা দেশের মোড় পাল্টে দিবে বলে এই মঞ্চে এসেছে তারা এখন যার যার সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমান দিতে উত্তেজিত হয়ে একে অপরকে হামলায় মসগুল হয়ে গেলো ! লেগে গেলো হাঙ্গামা ! আর সবাই উচ্চস্বরে চিৎকার করতে লাগলোঃ "আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ! আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ !! আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ !!!"
বিঃ দ্রঃ উক্ত লেখার সমস্ত চরিত্র ও গঠনা প্রবাহ কাল্পনিক যদি কোন জীবিত, মৃত, গলিত, অর্ধগলিত, সম্মানিত, অপমানিত, মহিমান্বিত, পরিচিত, অপরিচিত, চলিত, মথিত, আশ্চর্যান্বিত, গর্বীত, ভীত, আনন্দিত, রাগান্বিত, লজ্জিত বা কদার্জিত কোন ব্যাক্তি, সমাজ, গোষ্টি, ধর্ম, বর্ণ, দল মত নির্বিশেষের সাথে কোন ধরনের মিল পাওয়া যায় তবে তাহাতে লেখকের হাত, পা, নাক, মুখ, চোখ, মস্তিষ্ক, হৃৎপিন্ড, ফুঁসফুঁস, বা ষষ্ট ইন্দ্রিয় এমন কি তিনি স্বয়ং দায়ী থাকিবে না !
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫
মুহামমদ মিনহাজ বলেছেন: হা হা হা
তমি ভাই জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ পথ ফিরে পাক
২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৭
রাজীব বলেছেন: Click This Link
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৬
মুহামমদ মিনহাজ বলেছেন:
৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৯
মহিদুল বেস্ট বলেছেন: বিঃ দ্রঃ উক্ত লেখার সমস্ত চরিত্র ও গঠনা প্রবাহ কাল্পনিক যদি কোন জীবিত, মৃত, গলিত, অর্ধগলিত, সম্মানিত, অপমানিত, মহিমান্বিত, পরিচিত, অপরিচিত, চলিত, মথিত, আশ্চর্যান্বিত, গর্বীত, ভীত, আনন্দিত, রাগান্বিত, লজ্জিত বা কদার্জিত কোন ব্যাক্তি, সমাজ, গোষ্টি, ধর্ম, বর্ণ, দল মত নির্বিশেষের সাথে কোন ধরনের মিল পাওয়া যায় তবে তাহাতে লেখকের হাত, পা, নাক, মুখ, চোখ, মস্তিষ্ক, হৃৎপিন্ড, ফুঁসফুঁস, বা ষষ্ট ইন্দ্রিয় এমন কি তিনি স্বয়ং দায়ী থাকিবে না !
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৮
মুহামমদ মিনহাজ বলেছেন: ......................!!!
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০
উড়োজাহাজ বলেছেন: পথ হারাবে না বাংলাদেশ! এই কথাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ পথ হারাইয়াছে মতি ভাই!!