![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘মুখোমুখি বসি বন্ধু ও আমি
সুখ দুঃখ নারী ও যৌনতা প্রেম
ঘোর জীবন আর পলিটিক্স
এলোমেলো স্ফুরণ-বিচ্ছুরণ আর কথাদের আমোদ
রাগ অভিমানে একই বন্ধন- আয় মাখামাখি হই...’
.
বন্ধু ও ভালবাসা আমার কাছে একটি অসংজ্ঞায়িত শব্দ। কখনো এই শব্দ দুটোকে সংজ্ঞায়িত করতে পারি না। ছোটবেলা থেকেই আমি বন্ধুদের প্রতি ভিষণভাবে দুর্বল। আমি যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম, তখন ক্লাসের ক্যাপটেন ছিলাম। রুলস ও আদর্শের কাছে ছিলাম তখন থেকেই কঠোর। মুরাদ ছিল আমার ক্লাসের বন্ধু। স্কুলের শৃঙ্খলায়, ক্লাসের শৃঙ্খলায় ওর কিছু বিশৃঙ্খলা আমাকে ক্ষেপিয়েছিল। কিছু মন খারাপের পর্ব জন্মেছিল সে সময়ে। দীর্ঘ আট বছর চলেছে সেই রাগ আর অভিমানের পর্ব। ভাবতেই কেমন লাগে- একটু শৃঙ্খলাবদ্ধতার আর্শিক দ্বন্দে বন্ধুত্বের মাঝে এমন দূরত্ব জন্মাতে পারে! মুরাদের কথা মনে পড়লে আমার লিমন-জাহাঙ্গীরের কথা মনে পড়ে। ওদের রাগ-অভিমানের পর্বটাও দীর্ঘ দূরত্বের। লিমনের সঙ্গে আমার মাঝে মাঝে অভিমান হয়। কেটেও যায় এমনি এমনি। কিন্তু জাহাঙ্গীর? আমার আর ওর মধ্যকার আদর্শের যে দ্বন্দ, অহমিকার যে চাতুরতা তা ভালবাসাটুকুকে জাগিয়ে রেখেও দূরত্ব তৈরি করে প্রতিনিয়ত। ভিষণভাবে ওকে মেনে নিতে না পেলেও, ওকে ইগনোর করতেও পারিনা কখনো। যদিও বারবার ভুলে গ্যাছে- ও বন্ধুত্ব ও মানববাদই মানুষের মিলনকেন্দ্র।
আজকাল ভিষণভাবে অভিমান হয় কৌশিকের উপর। উচ্চ মানসিক বয়সের এই আমরা দুজন মানুষ আদর্শের জায়গাটুকুতে বেশ সবল। আমাদের সকাল কিংবা সন্ধ্যা, সন্ধ্যা গরিয়ে রাত- স্মৃতির টিউবলাইট- এখন জোনাকির ক্ষিণ আলো। হয়তো দূরত্ব বেড়ে গ্যাছে হয়তো যায়নি। হয়তো ও ভুলে গ্যাছে অন্যদের ভিড়ে। আমাদের অভিমান আজ নিশ্চই বেওয়ারিশ। বেওয়ারিশ হয়ে থাকে কিছু স্মৃতি। নেয়ামুলের কথা বলি। ভিষণ নাড়া দিত ও। হৃদযের ভিতর এখনো চাগড়ে ওঠে- তুই আমার ভাই? অসংজ্ঞায়িত থেকে যায় সব কিছু। চিত্রপট পাল্টে যায়। নতুন চিত্রকল্প সৃষ্টি হয়। হয়তে ও-ও ভুলে গ্যাছে । এখন ভোলা মানুষের সংখ্যায় দিন বাড়ে। এটাই কিশ শাশ্বত নিয়ম? নতুনকে স্থান করে দিতে গেলে মুছে দিতে হয় অতীত স্মৃতি! তাই হবে হয়তো। এই ভেবে মেনে নেই না মানা সম্পর্কের দূরত্ব। ব্যক্তিভাবনায় বৃথা সুখ খুঁজি। ভুলে থাকার অবাঞ্চিত অভিনয় নিয়ে মেতে থাকি রাতভোর। ইয়াসির বা নেয়ামুলই কি- যারা ভুলতে জানে তারাই সুখি! শুধু শুধু হাহাকার করে ওঠে রিষিণ পরিমলের কবিতা-
.
‘ভাঙন ভাঙন ভাঙনের চণ্ডধ্বনি
প্রাণের প্রাণিত বোধের পর
ক্রুশ বিদ্ধ করে আহা! অন্ধ অহঙ্কারে।’
.
একা হাটি, একা চলি। সরোজ দেবের মতো ভাবি- আমিও আজ নিঃসঙ্গ কেবিনের শবযাত্রি। তবুও ভিতরটা চিৎকার করে- ওরা বন্ধু কিংবা ভাই, ফেলে দিতে পাবি? পারি না। একে একে ভাসে মুখ- মুরাদ, নেয়ামুল, কৌশিক, জাহিদ, অভ্র, মিসির, লিমন, জাহাঙ্গীর, মোশাররফ, ইয়াসির! স্মৃতি জমাট বাঁধে। বাস্তবতা নিয়ে সময় চলে। ঘড়ির কাটা বলে ওঠে- তুহিন ও লিয়ন : মামাদের কোনো গল্প নেই! সায়ানোড বাতির আলোয় অ্যাম্বুলেন্স সিগন্যাল ভাসে, ছায় মাখে ছবি- কৌশিক, নেয়ামুল, তুহিন। দূরে দাঁড়িয়ে থাকে সৈকত, খোরশেদ, নাজমুল বা আরো অন্য কেউ। আমি শুনি- কেনো বাড়লে বয়স ছোট্ট বেলার বন্ধুরা সব হারিয়ে যায়... উত্তরহীন পড়ে যাই-
.
‘ক্রমশ কমছে প্রান্তরে প্রাণের ঢেউ
ভাঙাচাকে একা আমি নিঃস্ব মধুমাছি...’
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৪
বিজন রয় বলেছেন: লেখাটি খুব ভাল হয়েছে।
বন্ধু ও ভালবাসা আমার কাছে একটি অসংজ্ঞায়িত শব্দ।........... ঠিক কথা।
‘মুখোমুখি বসি বন্ধু ও আমি
সুখ দুঃখ নারী ও যৌনতা প্রেম
ঘোর জীবন আর পলিটিক্স
এলোমেলো স্ফুরণ-বিচ্ছুরণ আর কথাদের আমোদ
রাগ অভিমানে একই বন্ধন- আয় মাখামাখি হই...’
............... সুন্দর।