![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য, সুন্দর, অনন্ত, অসমাপ্ত ভবিষ্যতের পানে আমার ছুটে চলা।
চতুর্থ বর্ষ থেকেই শুনতাম ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করলেই চাকরি হাতের মুঠোয়। এই বাক্যটা শুনতে অনেক ভাল লাগতো আর নিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে আগাচ্ছি বলে মনে হত। অনেকটা all is well টাইপের হলেও বাক্যটা যে কিঞ্চিত সত্য তার প্রমাণ পাচ্ছিলাম পাশ করার আগে থেকে। পাশ করার আগেই আমার কিছু বন্ধুর চাকরি হয়ে যাওয়াতে মনে আরও সাহস চলে আসল। সার্টিফিকেট পাওয়ার পরদিন থেকে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে আবেদন করা শুরু করে দিলাম। কিন্তু দেশের অচলাবস্থার কারণে একমাসেও ভাইভার কোন খবর না পেয়ে হতাশা পেয়ে বসল। কিসে কি হচ্ছে চিন্তায় আমার ঘুম হারাম। অবশেষে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাইভার একটা কল পেলাম। অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভাইভা দিতে গিয়ে অবাক হলাম যখন ভিসি আমাকে কোন প্রশ্ন না করে বললঃ “তুমি ত সদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছ মাস্টার্সটা করে ফেল অনেক ভাল পজিশনে যাবে, ধন্যবাদ”। আমি ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহবল হয়ে ভাইভাতে আসা-যাওয়ার খরচের সাথে উপদেশ প্রতি দাম হিসাব করতে লাগলাম। পরে নিরুপায় হয়ে বললাম স্যার এটা আমার প্রথম চাকরির ভাইভা তাই অভিজ্ঞতার জন্য আসলাম। ভিসি অনেক উৎসাহিত হয়ে বললেনঃ তাহলে তো তোমাকে একটা প্রশ্ন করা উচিৎ। আমিও সানন্দে রাজি হয়ে বললামঃ সিউর স্যার। প্রশ্ন শুনে আমি অবাকের চুড়ান্ত সীমানায় গিয়ে নির্বাক হয়ে গেলাম। আমাকে প্রশ্ন করা হল, গনজাগরণ মঞ্চ এবং এর বিরোধী পক্ষের কারণে দেশে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে তা থেকে উত্তরণের উপায় কি?? উনাদেরকে খুশি করার মত বুদ্ধিজীবী টাইপের একটা জবাব দিয়ে দিলাম আর চিন্তা করতে লাগলাম দেশের সব মাথারা এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করে ঘুম হারাম করে ফেলছে আর ভাইভাতে আমাকে এই প্রশ্ন করা হল!! এই ঘটনার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুত মাথা থেকে নামল।
ওই ভাইভাতেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাইয়ের সাথে পরিচিত হলাম উনি বললেনঃ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগও সব লবিং। পাবলিকে লবিং, প্রাইভেটে লবিং যাব কই? এক ভাইভাতেই এত হতাশ হলাম যে আর কোন ভাইভা দিতে আসতে ইচ্ছা করছিল না। যা হোক অনেক সাহস নিয়ে পরে দু-তিন জায়গায় ভাইভা দিলাম। আল্লাহর রহমতে পরের সব জায়গায় সফল হলাম। অনেকে হয়ত বিরক্ত হয়ে বলতে পারেন এত লম্বা কিচ্ছা-কাহিনী লেখার কি দরকার ছিল? এই কিচ্ছা-কাহিনী দিয়ে আসলে আমি আমার হতাশার পর্যায়টা বুঝাতে চেয়েছি। আর এই কিচ্ছা-কাহিনীর ফলাফলটা নবীণ এবং হতাশদের জন্যই, প্রথমত (সবার জন্য) - লবিং ছাড়াও চাকরি হয়। দ্বিতীয়ত (ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য) - ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর আসলেই চাকরি হাতের মুঠোয় শুধু একটু সাহস আর ধৈর্য লাগে।
©somewhere in net ltd.