নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মমার

আসুন আমরা আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুেলর েদখােনা রাস তায় চলী।

মমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাপের তালুক নষ্ট করার অধিকার

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫

মাকসুদুল আলম, টোকিও থেকে: বেশ কিছুদিন ব্যস্ত থাকায় সবগুলো খবর ঠিকমতো পড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। কিছুদিন আগে ময়মনসিংহের যুবরাজকে (স্থানীয় সংসদ সদস্যের বড় ছেলে) নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করায় দৈনিক মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক, প্রকাশক ও স্থানীয় স্টাফ রিপোর্টারের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে মামলা দেয়া হয়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় সংসদ সদস্যের ছোট ছেলের মৃত্যুর পর স্থানীয় জনগণের ধারণা ছিল ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসবে। পরিবর্তন তাদের এসেছে, তবে তা ভিন্ন পথে। ময়মনসিংহের একজন নাগরিক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে বিব্রত বোধ করছি। মিথ্যা মামলার নিন্দা জানাচ্ছি। আজকের লেখাটি একটু পুরনো প্রসঙ্গ থেকে শুরু করতে যাচ্ছি। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে যে কেউ চিরাচরিত হরতালের বিরোধিতা করতে পারেন। হরতালে অন্যের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। যারা আন্দোলনের নামে হরতাল আহ্বান করে, তাদের কঠোর সমালোচনাও করা যেতে পারে। তবে বিনা বিচারে হরতাল আহ্বানকারীদের বাড়িতে গিয়ে হত্যা করার অধিকার পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর নেই। কোন সভ্য দেশে ক্ষমতাসীন দলের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর এমন হিংস্র মন্তব্যের নজির আছে বলে জানা নেই। পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর খায়েশ কাঁঠালের আমসত্বের মতো। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে কারাগারে পাঠাতে চেয়েছেন। বিগত পৌনে ৫ বছরে রাষ্ট্রীয় অর্থসম্পদ লুটপাটের কারণে উল্টোটি হলেও হতে পারে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ কোন সরকার ক্ষমতায় এলে শেষ বয়সে তাকে লাল দালানের ভাত খেতেও হতে পারে। মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচি সংক্রান্ত প্রতিবেদন নিয়ে শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সমালোচনা করার অধিকার রয়েছে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের। তবে গণমাধ্যমে ‘মিথ্যা বলার অধিকার’ শিরোনামে প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করার অধিকার নিশ্চয় তার নেই। নিবন্ধটিতে তিনি কি কি বিষয়ে মিথ্যাচার করেছেন, তা নিয়ে বেশ কয়েকজন লেখক ইতিমধ্যে লেখালেখি করেছেন। আমি আর সেদিকে যাচ্ছি না। ধীরে ধীরে পাঠক সমাজে ময়মনসিংহের এই অধ্যাপক লেখকের গ্রহণযোগ্যতা তার অগ্রজপ্রতিম লন্ডন প্রবাসী বয়োবৃদ্ধ কলাম লেখকের মতোই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। লন্ডনে বসবাস করা প্রসঙ্গে নিজের লেখায় দীর্ঘদিন প্রয়াত স্ত্রীর চিকিৎসার অজুহাত দেখিয়েছেন। প্রবাসে বসে মনগড়া ও বাস্তবতাবিবর্জিত কলাম লিখে সরকারের দালালি করেছেন, এখনও করছেন। তা না করলে হালুয়া-রুটির ভাগ পাওয়া যাবে না। শুধু মহার্ঘ ভাতায় লন্ডনে সংসার চলবে না। প্রয়োজন বাড়তি কিছু কমিশনের। আগামী নির্বাচনে ঢাকায় গণেশ উল্টে গেলে, মহার্ঘ ভাতাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবাসী এই লেখককে নিয়ে কানাঘুষা রয়েছে। সত্য-মিথ্যা জানি না। যাচাই করার প্রয়োজনও অনুভব করিনি। ভিআইপি না হয়েও লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে সমপ্রতি এই লেখক নগদ কমিশন নিয়ে ঢাকা থেকে লন্ডন ফেরার পথে, বিমানবন্দরে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে গিয়ে উপস্থিত হন। নিরাপত্তা কর্মীরা প্রবেশপথে তাকে বাধা দিলে, অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়। পরে একই দিনে কাছাকাছি সময়ে ভিন্ন ফ্লাইটে নয়া দিল্লি যাত্রাকারী পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর সহায়তায় কোনমতে মানসম্মানে লাউঞ্জের ভেতরে ঢোকার অনুমতি পান তিনি। তাই লন্ডনে ফিরে গিয়ে এখন তিনি কৃতজ্ঞতা স্বীকারে নেমেছেন। নাম কা ওয়াস্তে অনলাইন পত্রিকায় আবোল তাবোল লিখে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর দালালি করছেন।

নির্বাচনকালীন সংসদ ও মন্ত্রিসভা বহাল রেখে দলীয় সরকারের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ঘোষণা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সমঝোতার পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। নতুন করে দেশকে সংঘাতের পথে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সমগ্র জাতিকে দুই মতে বিভক্ত করে, রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখোমুখি করানো হয়েছে। প্রধান বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের মতে, রাষ্ট্র এখন বাপের তালুকে পরিণত হয়েছে। তার ভাষায়, বর্তমান সরকার মনে করে যে বাংলাদেশ তাদের বাপের তালুকদারি। কে কি মনে করে, তা বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে, এই রাষ্ট্রকে নষ্ট করার অধিকার আমার আপনার কারও নেই। ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে এমনিতেই হালুয়া-রুটির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক খুনোখুনি। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার নামে পড়ন্ত বেলায় লুটপাট অব্যাহত রাখতে শুরু হয়েছে নতুন নতুন প্রকল্পের অনুমোদন। শত কোটি টাকা খরচ করে কেনা হচ্ছে নতুন সমরাস্ত্র। আমাদের দেশের রাজনীতিকরা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকায় ন্যায়নীতির কথা তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছায় না। গঠনমূলক লেখালেখিও উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মতো হয়ে দাঁড়ায়। দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, দেশকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাইছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে কথায় কথায় ছড়া কাটছেন। বিএনপির তিন গুণ- দুর্নীতি, সন্ত্রাস আর মানুষ খুন। ন্যায়নীতির তোয়াক্কা না করে, সরকারি খরচে দলীয় প্রচারণাকে কিছুই মনে করছেন না। ন্যায়নীতির প্রসঙ্গে ছোট্ট ও সহজ একটি উদাহরণ টানছি। আমাদের দেশে জীবন বীমার প্রচলন থাকলেও, বাসাবাড়ির বীমার ক্ষেত্রে তেমন কোন প্রচলন নেই। তাই পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে উন্নত কোন দেশের কথা টানছি। ধরুন, আপনি উন্নত কোন দেশে বসবাস করছেন। আপনার বাড়িটি কোন বীমা প্রতিষ্ঠানের অগ্নিবীমায় তালিকাভুক্ত। বীমার চুক্তিপত্র অনুযায়ী, কোন কারণে আপনার বাড়িটি আগুনে পুড়ে গেলে, আপনার বাসাবাড়িতে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেলে, বীমা প্রতিষ্ঠানটি বড় অংকের টাকা আপনাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। এখন আপনি সাত-পাঁচ হিসাব করে মনস্থির করলেন। নিজেই গোপনে মূল্যবান জিনিসপত্র আগেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে আপনার নিজের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলেন। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম আপনার ভাগ্য ভাল। আপনি অগ্নিবীমার যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষণ নিরীক্ষণে সন্দেহের তালিকা থেকেও রেহাই পেয়ে গেলেন। বীমার চুক্তিপত্র অনুযায়ী বড় অংকের টাকা ক্ষতিপূরণও দেয়া হলো আপনাকে। কিন্তু পুরো বিষয়টি সঠিক কোন কাজ হলো কিনা? ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি না হয় এখানে বাদই দিলাম। আপনার কোন নৈতিকতা রইলো কিনা? আপনার বিবেকের কাছে আপনি জবাবদিহি করতে পারবেন কিনা? পুরো জাতি হিসেবে এখন আসলে আমাদের নৈতিকতার চরম অবক্ষয় ঘটেছে। তা রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী থেকে শুরু করে অফিস-আদালতের সামান্য পিয়ন বা গ্রামগঞ্জের চৌকিদার পর্যন্ত। রাষ্ট্রীয় খরচে ও রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্রে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রচারণা চালালেও নির্বাচন কমিশন হয়তো কখনওই কিছু বলবে না। তারা হয়তো প্রচলিত আইনের সীমাবদ্ধতার অজুহাতে তফসিল ঘোষণার আগে তাদের কিছু করার নেই বলে গণমাধ্যমের সমালোচনা থেকে রেহাই পেতে চাইবেন। প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে তাদেরকে কেন দুধকলা খাওয়াতে হবে? জনগণের আয়কর থেকে তাদের গাড়ির ড্রাইভার ও চাকর-বাকর পর্যন্ত কেন বেতন দিতে হবে? শুধু তফসিল ঘোষণার পরই যদি তাদের কাজের পরিধি হয়, তাহলে বেতন-ভাতাদিও সেরকম হতে পারে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরই তাদেরকে বেতন দেয়া যেতে পারে। নিশ্চয় অবাস্তব কোন দাবি নয়। সরকারি খরচে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জাতির কাছে তার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তবে শুধু ভোট চেয়েছেন তিনি। পাগলেও নিজের ভালমন্দ বোঝে। জাতির কাছে সোনাদানা, গয়না, ধন- দৌলত কিছুই চাননি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। চেয়েছেন আরেকবার ক্ষমতায় আসার সুযোগ। সে তো আর মামাবাড়ির আবদার নয়, হাতের মোয়াও নয় যে, চাইলেই পাওয়া যাবে।

লেখক: জাপান প্রবাসী কলাম লেখক

৭ই সেপ্টেম্বর ২০১৩, টোকি

Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.