![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালো নাম মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী।কল্পবিজ্ঞান, সাইকোলজিক্যাল গল্প এবং ফ্যান্টাসি নিয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। এসব নিয়েই লিখছি অল্পবিস্তর।
নিজের মাথার ভেতর মগজ খুঁজে পাচ্ছে না সে। অস্থির হয়ে বিদিশার মতো হাতড়ে বেড়াচ্ছে সারা রাস্তা। একবার এদিকে, একবার সেদিকে ছুটছে। মাটিতে উবু হয়ে শুয়ে পড়ে শুকে দেখছে। তারপর দু’হাতে চেপে ধরছে মাথা।
এক আগন্তুক এলো তখন। সারা গায়ে একটা মাত্র শতচ্ছিন্ন লুঙ্গী তার। আগন্তুক এসেই লোকটার পেটে লাথি মারল জোড়ে। লাথি খেয়ে সে কুঁকড়ে ছোট হয়ে গেল। কাঁদতে লাগল হাউমাউ করে। আগন্তুক জিজ্ঞেস করল-“কি খুঁজতাছিস হারামজাদা?”
লোকটার চোখে পানি চলে এলো। ফিনকি দিয়ে তা পড়তে লাগল রাস্তায়। খসখসে গলায় সে বলল-
“আমার মাথায় মগজ নেই ভাই। মগজ খুঁজে পাচ্ছি না। খুপরির ভেতরটা বড্ড ফাঁকা লাগছে। কোথায় পড়ে গেল খুঁজে পাচ্ছি না।”
আগন্তুক হেঁ হেঁ করে হাসতে লাগল। হাসতে হাসতে লুঙ্গী কাছা মেরে নাচতে লাগল পাগলের মতো। সুর করে পড়তে লাগল-
“মগজ মগজ ডাক পারি,
মগজ গেল কার বাড়ি।
আমার মগজ কোথায় যায়?
কুকুর নাকি শেয়াল খায়!”
মগজবিহীন লোকটা আগন্তুকের দিকে তাকাল বিস্মিত হয়ে; জন্তু যেমন জন্তুকে দেখে, সেই দৃষ্টিতে। আগন্তুক চার হাত পায়ে ভর দিয়ে উবু হয়ে বসে লোকটার দিকে তাকাল। তারপর ফিসফিস করে বলল-
“কি হইল? মগজ পইড়া গেলে গেছে গা। এত খুঁজস ক্যান? মগজ ছাড়াই তো বাঁইচ্যা আছস।”
“খুলিটা যে খুব যে ফাঁকা ফাঁকা ফাঁকা লাগে ভাই।”
“হুম, মগজ কাউরে ধার দিছিলি?”
“না ভাই, কাউকে ধার দিইনি।”
“মগজ খুইলা রাইখা কোথাও গেছিলি?”
“না তো!”
“তাইলে গরম পানিতে ফুটাইয়া সেদ্ধ কইরা নিজের মগজ নিজে খাইয়া ফালাস নাই তো? হেঁ হেঁ হেঁ!”
আগন্তুক ঘোড়ার মতো লাফাতে লাগল চার হাত পা দিয়ে। হাসির দমকে তার সারা শরীর কেঁপে উঠল। পশুর দৃষ্টিতে তাকে দেখতে লাগল মগজবিহীন লোকটা।
একটু শান্ত হয়ে সে জিজ্ঞেস করল-“মগজ দিয়া কি করতি তুই?”
“চিন্তা করতাম ভাই।”
“কিসের চিন্তা?”
“কত চিন্তা! দুনিয়াদারিতে কত কিছু আছে। সব নিয়ে চিন্তা করতাম?”
“চিন্তা করতে গিয়া মাথা গরম হইত?”
“হতো ভাই।”
“কেন হইতো বলতো?”
“চিন্তা করতে করতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন কমে যেত তাই। অক্সিজেনের অভাবে এমন হতো। গ্লুকোজ খেলে ঠিক হয়ে যেত।”
“সাইন্স কপচাবি না। অন্য কিছু জানলে বল।”
“অন্য কিছু জানি না ভাই।”
“আমি জানি। আসলে তুই যখন চিন্তা করতি, তখন তোর মগজ একটু একটু কইরা গরম হইত, একটু একটু কইরা বাষ্প হইয়া উইড়া যাইত। প্রতিদিন তুই চিন্তা করতি, প্রতিদিন তোর মস্তিষ্ক বাতাস হইয়া কান দিয়া ধোঁয়া হইয়া বাইর হইয়া যাইত। এখন তাই তোর কোন মগজ নাই। সব মগজে বাতাসে উইড়া গেছে গা।”
লোকটা এবার পাগলের হাসি হাসল না, নাচল না, চুপচাপ পশুর মতো তাকিয়ে থাকল মগজবিহীন লোকটার দিকে।
মগজবিহীন লোকটির খুলিতে থাকা মগজের উচ্ছিষ্ট তখন পুড়তে শুরু করল তখন। দেখতে দেখতে আগুন ধরে গেল তার মাথায়। চুলগুলো জ্বলে জ্বলে পুড়তে লাগল ভীষণভাবে। আগন্তুকের কাছা দেয়া লুঙ্গীতেও লেগে গেল আগুন। দেখতে দেখতে দু’জন বাতাসে মিলিয়ে গেল।
২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২৯
একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪০
হাসান মাহবুব বলেছেন: দারুণ নিরীক্ষা।
২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৬
একলা চলো রে বলেছেন: চমৎকার শব্দচয়ন করেছেন।
অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০৪
অগ্নি কল্লোল বলেছেন: চমৎকার!!!
২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২৭
একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আসলে তুই যখন চিন্তা করতি, তখন তোর মগজ একটু একটু কইরা গরম হইত, একটু একটু কইরা বাষ্প হইয়া উইড়া যাইত। প্রতিদিন তুই চিন্তা করতি, প্রতিদিন তোর মস্তিষ্ক বাতাস হইয়া কান দিয়া ধোঁয়া হইয়া বাইর হইয়া যাইত। এখন তাই তোর কোন মগজ নাই। সব মগজে বাতাসে উইড়া গেছে গা
+++
২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩২
একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৬
সুমন কর বলেছেন: বেশ হয়েছে।
২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩৩
একলা চলো রে বলেছেন:
৬| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অসাধারণ !! খুব ভালো লেগেছে । NDE অর্থাৎ নিয়ার ডেথ এক্সপেরিএন্স যাদের আছে তাদের এমনটা হয় । মানুষ যখন ক্লিনিকালি মারা যায় তখনও কিছুটা অক্সিজেন অবশিষ্ট থাকে মানব মগজে সামান্য চিন্তা করার জন্য , কার্বনডাই অক্সাইড ৯০% এরও বেশী জায়গা দখল করে নেয় । আর তখনই মানুষের চিন্তা গুলো অথবা আত্মা বলা যেতে পারে ভেসে বেড়ায় শরীরের আশেপাশে এবং নিজের শরীরকে খুঁজে বেড়ায় । আপনার লেখায় মগজ বিহীন মানুষটারও আমার মনে হয় এরকমটা হয়েছে ।
অথবা আপনি মেটাফরের আড়ালে হয়তোবা অন্য কিছু বলতে চেয়েছেন ।
সে যাই হোক , অনেক ভালো লেগেছে লেখাটা ।
২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
একলা চলো রে বলেছেন: আমি যা বলতে চেয়েছি, তা এতই সুক্ষ্ম ভাবে বলেছি যে কয়েক বছর পর আমি নিজেও এ লেখাটার অর্থ বের করতে পারব না।
যাই হোক, আত্মা হয়ে ভেসে বেড়ায় কি না জানি না। তবে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে জীবনের সামান্য চিহ্ন, কোষের কোয়ান্টাম দশা কিংবা শরীরের ২১ গ্রাম ভর কমে যাওয়া কিছুটা রহস্য তো তৈরি করেই।
পাঠে কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন।
৭| ২২ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১২
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ।
চমৎকার লিখেছেন।
২২ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯
একলা চলো রে বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৩১
প্রামানিক বলেছেন: দারুণ