নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মী। শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার এবং নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার জন্য কাজ করি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে কৌতূহলী।

মাঈনউদ্দিন মইনুল

মুখোশই সত্য!

মাঈনউদ্দিন মইনুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

Always বাংলা use করুন: ভাষামিশ্রণ সম্পর্কে সহব্লগারদের সুচিন্তিত মতামত

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৫

আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। বাঙালি জাতিয়তাবাদের শুরু হয়েছিল ভাষাগত বিভেদ থেকেই। বাংলার সাথে বাঙালির যত আবেগ, যত ভালোবাসা, সেটি অন্য কোন ভাষার ক্ষেত্রে তেমনভাবে আছে কিনা জানা নেই। ব্লগে প্রকাশিত একটি লেখায় সহব্লগারদের অংশগ্রহণ আমাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছিল। তিন-চার বছর আগের কথা। অনেকেই সামু’র ব্লগার। তাদের মন্তব্য নিয়ে আজকের মন্তব্য সংকলন। লেখার শিরোনাম ছিলো: বাংলা ভাষায় অন্য ভাষার মিশ্রণ। প্রকাশিত হয়েছিলো শুরুতে প্রথম আলো ব্লগ অবশেষে সামুতে । লেখাটির শেষে আমি আরও কিছু দৃষ্টান্ত/পরামর্শ আহ্বান করেছিলাম, যেন ভাষামিশ্রণের বাস্তবিক কিছু নমুনা সংগ্রহ করা যায়। সহব্লগাররা আমার অনুরোধ রেখেছেন! তাদের মন্তব্যে যেমন পেয়েছি গভীর অন্তর্দৃষ্টি, তেমনই পেয়েছি নিজ ভাষার প্রতি আকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা। এ লেখায় তাদের মতামতগুলো তুলে না ধরলে হয়তো লেখাটি অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। আমার লেখার প্রতি প্রশংসাসূচক মন্তব্য বা বাক্যাংশগুলো সংগত কারণেই বাদ রেখেছি।


১) ফেরদৌসা: এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা কথায় কথায় বলে: কুল, গাই, ওয়াটস আপ। আমি ‘চান্স’পেয়ে বলি: একটু ‘বিজি’আছি, আই এম ব্যাক ইত্যাদি। প্র/আ

২) লুৎফুন নাহার জেসমিন: কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু-বউ আমাদের বাসায় বেড়াতে এলে দেখলাম বাচ্চাকে ইংরেজি শব্দ শেখানোর জন্য কীভাবে কথা বলছে। আমাদের কাছে তার একটি উক্তি খুব জনপ্রিয় হয়েছিলো: ‘বেবি বেবি, ডারটি!’ আমার মেয়েও মাঝে মাঝে বলে আর হাসে। প্র/আ

৩) স্বদেশ হাসনাইন: ভাষা তো বই পড়ে শিখছে না। টিভিতে হিন্দি চলছে চব্বিশ ঘণ্টা, ইংরেজির আগ্রাসন তো গোটা পৃথিবী জুড়েই। প্রযুক্তিতে হাজারো যন্ত্র তাদের মত শব্দ শেখাচ্ছে। কলকাতায় হিন্দি বাংলার যে রকম মিক্স হচ্ছে তাতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। কোড মিক্সিং বলেন আর যাই বলেন, এটা থেকে পরিত্রানের চেয়ে একে গ্রহণযোগ্য একটা জায়গায় রাখা ইম্পোর্টেন্ট। সামু

৪) অনিন্দ্য অন্তর অপু: আমার মনে হয় নিজে সতর্ক হলে আর মাতৃভাষার ওপর মমত্ব থাকলে শুদ্ধ বাংলা চর্চা করা যায়। প্র/আ

৫) ইকথিয়ান্ডর: আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের একটা কথা মনে পড়ছে: “যে বাংলা জানে, সে বাংলায় সম্পূর্ণ বাক্য বলতে পারে, যে ইংরেজি জানে, সে সম্পূর্ণ বাক্যই ইংরেজিতে বলতে পারে। আর যারা কোনটাই জানে না, তাদেরই আশ্রয় নিতে হয় মিশ্রণের।” সামু

৬) গ্রাম্যবালিকা: আমি আমার গ্রামের কথা ১০০% পারি, কোন ইংরেজি বলতে হয় না, কিন্তু শুদ্ধ বাংলা পুরোপুরি পারিনা বলে ইংরেজী শব্দ বলতে হয়। সামু

৭) জনদরদী: আমি নিজেই বাংলার সাথে কিছু ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করি । বিশেষ করে প্রযু্ক্তির সাথে সম্পকিত শব্দগুলো । আমার বেশিরভাগ সময় ইংরেজির সমার্থক বাংলা শব্দ খুঁজে পেতে সমস্যা হয় । চেষ্টায় আছি সংশোধনের। সামু

৮) শহীদুল ইসলাম প্রামাণিক: (যথারীতি ছড়ায়) বাংলা ভাষার আন্দোলনে/ ইংলিশ বলে কত, এমন নেতা বাংলাদেশে/ আছে অনেক শত। তাই তো বলি, “বাংলা ভাষায়/ শুদ্ধ বাংলা চাই, বাংলার সাথে ইংলিশ বলা/ ‘লাইক’করি না তাই”।

৯) মনিরুল ইসলাম (মনির): এটা এখন সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে, যা থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব। যেখানে বাংলিশ বলাটাকে আধুনিক-মনা বুঝানো হয়, সেখানে কি করার আছে? এ থেকে উত্তরণের কোনো উপায় মনে হয় নেই। তবে সবাই যদি যার যার অবস্থান থেকে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করে, তাহলে হয়ত হলেও হতে পারে।

১০) মোহাম্মদ জমির হায়দার বাবলা: আরও কিছু উদাহরণ দিচ্ছি। জাস্টিফাই, সবচেয়ে বেটার, প্লাস এর সাথে যোগ করা যায়, আসল ফ্যাক্ট, স্বাভাবিকলি, মন্ত্রী-মিনিস্টার, আপনি তো দারুণ এক পাবলিক! ফাস্টে আমি বলি... ইত্যাদি। যিনি ভালো বাংলা বলতে পারবেন, তিনি অন্য ভাষা সহজেই রপ্ত করতে পারবেন। প্রফেসর সিরাজুল ইসলামকে বাংলার সাথে ইংরেজি বলতে শুনি নি। অথচ তিনি সারাজীবন পড়ালেন ইংরেজি! অবাক লাগে। জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে ভালো করে নিজের ভাষার উপর দখল চাই। চাই বাংলা সংস্কৃতির প্রতি মমতা। নিজের ভাষাকে এড়িয়ে কোন জাতি উন্নতি করেছে কিনা আমার জানা নেই।

১১) মাটির ময়না: ডুড! জোস লিখেছেন। হায় বাঙালি!

১২) মুক্তমন৭৫: থ্যাংকস ব্রাদার। ইউ আর রিয়েলি জিনিয়াস। মাইরি কইলাম আপনে একটা চিজ! উই আর লুকিং ফর দ্য শত্রুজ।

১৩) ঘাস ফুল: আপনার লেখাটি পড়ে জীবনের লাইফটাকে বৃথা মনে হলো! প্রতিনিয়ত আমরা নিজের অজান্তেই কতো ইংরেজি হিন্দি শব্দ বাংলা ঢুকিয়ে দিয়ে অনর্গল নির্লজ্জের মতো কথা বলে যাচ্ছি। মাঝে মাঝে আবার গর্ববোধও করি, যা কি না বেশরমের চূড়ান্ত। এর জন্য শুধু সাধারণ মানুষকে দায়ি করলে ব্যাপারটি আমার কাছে একতরফা মনে হয়। এর জন্য দায়ি অনেকেই। আমাদের গণমাধ্যম, আমাদের সরকার, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা - কেউ তার দায় এড়াতে পারেন না। অন্যতম উদাহরণ হলো, আমাদের বিচার ব্যবস্থা। গণমাধ্যম বাংলা ভাষার প্রয়োগের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে কোন বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে নি। আরও অনেক কারণ আছে। মন্তব্যের ঘরে সব বলা সম্ভব নয়। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে টুকটাক হিন্দি বা ইংরেজি বললেও নিজের ভাষার প্রতি সম্মান আর শ্রদ্ধা আজন্ম ভালোবাসার মতো অটুট থাকবে। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’শুনার সাথে সাথেই এখনও মনের অজান্তে অশ্রু ঝরে।

১৪) নাজমুল হুদা: গত শতাব্দীর ষাটের দশকে ঢাকা কলেজে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে-নামতে পেন্সিল-দিয়ে-লেখা দেয়ালের এই কথাগুলো নিয়ে আমরা খুব মজা করতাম, "Always বাংলা use করুন"।

১৫) মুরুব্বী: আজকের এই অবস্থা বা ভাষার প্রেক্ষাপট অথবা প্রচলিত প্রক্ষেপণ একদিনে তৈরী হয় নি। যা আপনি পোস্টে আলোচনা করেছেন। বাইরের কথা বলবো না, চুপিচুপি বাংলিশ উচ্চারণ আমার ঘরেও বসত নিয়েছে। আজ শুদ্ধ উচ্চারণ যেন বিলাসিতা। পরিচ্ছন্ন বাংলা আজও অনেকের দুর্ভেদ্য। জানি না কবে প্রমিত ভাষা ফিরে আসবে আমাদের জনজীবনে। তবু আশায় বুক বেঁধে রই। কিছুক্ষণ আগে শহীদ বেদী থেকে আমার সন্তানদের নিয়ে রিকশায় ফিরতে গল্পচ্ছলে যখন ‘একুশ’মানে বোঝাচ্ছিলাম, আমাদের বোঝা টেনে-নিয়ে-চলা-রিকশাচালক অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিলেন: এ আমি কী বলি! বাড়ির গেটে নেমে অমিমাংসিত ভাড়া এক কথায় মেটাতে ভদ্রলোক মুগ্ধ চোখে তাকালেন। বললেন, ‘আমি পারি না আমার সন্তানদের এভাবে বোঝাতে।’ (শব্দনীড় ব্লগ)

১৬) নাজমুন নাহার: ভাষামিশ্রণের দৃষ্টান্তগুলো আসলেই মজার। কিন্তু সমস্যা হলো ভাষার এই যে মিশ্রণ - এটা হবে এবং হতে থাকবে। কতজন সতর্ক হতে পারে ভাষার এই ব্যবহারে? যেমন অফিস-আদালতে বাংলা বা ইংরেজি দু’টোই চলে। ইংরেজির ব্যবহার আভিজাত্যের প্রতীক বলে মনে করা হয় অফিসগুলোতে। তাই ইংরেজির ব্যবহার করতেই হবে, এরকম একটা অলিখিত ব্যাপার থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্র লেনদেনে বাংলা ব্যবহার করা যায়। করা হচ্ছে না! তবু ভাষায় পরিবর্তন হবেই। ১৮০০ সালের বাংলা অথবা ১৫০০ সালের দিকে বাংলা ভাষার যে অবস্থা ছিল, সে অবস্থা তো নেই এখন আর। এটা হয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির সাথে আমাদের মিথষ্ক্রিয়তার ফলে। যেমন ‘টেবিল’এর শুদ্ধ বাংলা হলো ‘মেঝ’, চেয়ার হলো ‘কেদারা’।

এরকম আরও হাজার শব্দ বাংলা ভাষায় আছে, যেগুলো প্রকৃতপক্ষে বাংলা ভাষার শব্দ নয়। কিন্তু আমরা বাংলা ভাষায় ব্যবহার করছি অবলীলায়। তবে ভাষার এই যে মিশ্রণ, এটা সমাজের কিছু মানুষের - সকল মানুষের নয়। যেমন গ্রামবাংলার কোটি কোটি মানুষ এখনও ভাষার এই মেশামেশি বুঝে না বলে আমার ধারণা। কিন্তু ওখানে ভাষা পরিশুদ্ধ নয়। এক্ষেত্রে আশার কথা হলো: বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হচ্ছে, এক্ষেত্রে ব্লগগুলোও ভূমিকা রাখছে। শব্দনীড়

১৭) সাঈদ মোহাম্মদ ভাই: লেখাটি ডেফিনিটলি চমৎকার। তবে আমড়া এখন র’এর ওপর ব্রেক মেরে কথা বলি: র হয়ে গেছে ড়। যারা বাংলিশ ভাষাকে একসেপ্ট কড়ছেন না তাড়া ভীষণ অন্যায় কড়ছেন। সবাই ড়াবিশ।

১৮) জুলিয়ান সিদ্দিকী: আমরা দিনরাত নানা সংস্কৃতির চিপাগলি দিয়ে অতিক্রম করি, আমাদের প্রতিটি দিন। এক্ষেত্রে খুব সচেতন না থাকলে মিশ্রণ থেকে বাঁচার উপায় নেই। কিন্তু কথা হলো: আমরা কতক্ষণ সচেতন থাকবো বা আশপাশের লোকজনকে কতটুকু সচেতন রাখতে চেষ্টা করবো।

১৯) ফরিদুল আলম সুমন: আমি বিবর্তনে বিশ্বাসী। বিবর্তনের মধ্যেই পৃথিবী টিকে আছে। আমাদের সংস্কৃতি, পোশাক, ভাষা, কৃষ্টিতে মৌলিকত্ব থাকা উচিত। তবে মৌলিকত্ব সবসময় ‘অতীব জরুরি’নয়। যে ভাষায় যত বেশি বিদেশী প্রচলিত শব্দকে ধারণ বা গ্রহণ করা হয়েছে, সে ভাষা তত বেশি সমৃদ্ধ ও বিশ্বব্যাপী গ্রহণীয় হয়েছে। অতিমাত্রায় মৌলিকত্ব ধারণ করতে গিয়ে চাইনিজ ভাষা পৃথিবীবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতার বিচারে মার খাচ্ছে। এতো মৌলিকত্বে বিশ্বাসী চাইনিজরাও এখন ‘সিমপ্লিফাইড চাইনিজ’নামে আধুনিক, সংক্ষিপ্ত ও সহজ চাইনিজ ভাষার প্রবর্তন করেছে। আমরা বিশুদ্ধ বাংলার চর্চা করবো ঠিকই, তবে সেই সাথে যুগের চাহিদা অনুযায়ী বিদেশী শব্দকেও ঠাঁই করে দিতে হবে। আমরা ‘কেদারায়’বসতে পারিনি বেশিদিন, ‘চেয়ারে’বসতে হচ্ছে। ‘সন্দেশ’পড়তে পড়তে আমরা কীভাবে যেন ‘পত্রিকা’বা ‘সংবাদপত্র’পড়তে শুরু করেছি বুঝতেই পারিনি। ‘পেয়ালায়’চা খেতে খেতে নিজের অজান্তেই এখন ‘কাপে’চা খাচ্ছি। ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে আমরা যে ‘আভিজাত্য’বোধ করি, সেটা খুব সহজে যাবেনা। তাই কোডমিক্সিং দূর করতে হলে এ ব্যাপারে ব্যাপক গণসচেতনতা দরকার। কোডসুইচিং খুব একটা মন্দ নয়। নিজের ভাষা ছাড়াও অন্য যে কোনো ভাষায় শুদ্ধভাবে কথা বলতে পারাটা আমার কাছে স্মার্টনেস-ই মনে হয়। তবে স্থান-কাল-পাত্র তো অবশ্যই বিবেচ্য। বাংলা-হিন্দী-ইংরেজি মিশিয়ে যারা কথা বলেন, তাদের কাছে প্রশ্ন রাখা যেতে পারে: ‘আপনি কি উল্লিখিত যে কোনো একটি ভাষায় শুদ্ধভাবে কথা বলতে পারেন? যদি না পারেন, তাহলে তো আপনার একূল ওকূল দু’কুলই গেলো।



এবার একটু অন্য কথায় আসি। সামহোয়্যারইন ব্লগের জনপ্রিয় গল্পকার এবং রম্যলেখক আবুহেনা মো: আশরাফুল ইসলাম ফেইসবুক মারফত আমাকে পরামর্শ দিলেন, যেন ভাষার মিশ্রণ নিয়ে এবার কিছু একটা লেখি। এবার দেখুন তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে তিনি কী লিখলেন এবং সামু'র ব্লগাররা তাতে কী উত্তর দিলেন:

আবুহেনা মো: আশরাফুল ইসলামের ফেইসবুক স্ট্যাটাস/ ৪ ফেব্রুয়ারি:
একজনকে দেখলাম ফেসবুকের বাংলা করেছে 'মুখবই'। কবি নির্মলেন্দু গুন মোবাইল ফোনের বাংলা করেছিলেন 'মুঠোফোন'। আক্ষরিক অনুবাদ না হলেও এটা ঠিকই আছে। শুনতেও শ্রুতিমধুর। কিন্তু মুখবই শব্দটি আমার কাছে ভালো লাগছে না। তারচেয়ে বরং ফেসবুকের বাংলা ফেসবুক-ই থাক। যেমন কম্পিউটারের বাংলা কম্পিউটার, ওয়েবসাইটের বাংলা ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইতিমধ্যেই বাংলায় বহুল প্রচলিত হয়ে গেছে। এগুলোর বাংলা করতে গেলে না বুঝবে বাঙালি, না বুঝবে অবাঙালি। উচ্চারণ করতে গেলে দুর্বল দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। এরকম কত ইংরেজি শব্দই তো বাংলা ভাষায় আত্মিকৃত হয়ে গেছে। তাতে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ছাড়া কোন ক্ষতি তো হয়নি। ভাষা আন্দোলনের মাস বলে সব কিছুর নামই বাংলায় রাখতে হবে, এমন দিব্যি কে দিয়েছে? আপনারা কী বলেন?

স্ট্যাটাসে বন্ধুদের/ব্লগারদের উত্তর:

শাহ আজিজ: এরকম করতে করতে operation searchlight এর কি করুন অনুবাদ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রার্থী। কিছু শব্দকে বাংলায় আত্তীকরণ অতিআবশ্যিক কারন এর বিকল্প নেই।

মেজদা (কোহিনূর): সত্যি কথা ৷ যেমন হরলিক্সের কোন বাংলা প্রতিশব্দ নাই ৷
-শাহআজিজ: লাক্স এর নাই , ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির নাই
-গোলাম মোস্তফা: এখানে হরলিক্স কেমনে আইলো?
-শাহআজিজ: বাজার থেকে এসেছে। (এরপর অনেকের বাক্য বিনিময়...)

মোহাম্মদ জমির হায়দার বাবলা: দারুণ আলোচনা। পড়ে আসবো। মইনুল ভাই কী বলেন দেখি।
-মাঈনউদ্দিন মইনুল: কোন কথা হবে না। আবুহেনা ভাইয়ের পক্ষে ভোট চেয়ে এবার আমরা মাঠে নামতে পারি, বাবলা ভাই।

আহমেদ রব্বানী: বাংলাভাষায় অনেক বিদেশি শব্দ এসে স্বকীয় স্থান লাভ করেছে। এতে তো কোনো সমস্যা নেই। ফেসবুক, ডিজিটাল, মোবাইলসহ সময়ের প্রয়োজনে আরো শব্দ বরং বাংলাভাষার শ্রীবৃদ্ধিই করবে। চমৎকার একটি বিষয়কে সামনে আনবার জন্যে ধন্যবাদ প্রিয় হেনা ভাইকে।

মাঈনউদ্দিন মইনুল: কথায় যুক্তি আছে... আবুহেনা ভাই!!! খুব সতর্কভাবে দেখলাম কেউ বিরোধিতা করেন কিনা... করলে ভাষার মাসে আবার আরেকটা বায়ান্নো ঘটিয়ে দিতাম!




আমি একাধিক জায়গায় লেখেছি যে, ভাষা বহমান নদীর মতো। এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন অনিবার্য। এর কোনকিছুই চূড়ান্ত নয়। ব্যকরণ, অভিধান সবকিছুই পরিবর্তনশীল। ভাষার ব্যবহাকারীরাই নির্ধারণ করবে এর গতিপথ। ভাষাবিদেরা কেবলই এসব ঘটনাকে বিধিবদ্ধ করবেন।

কিন্তু আশংকা হলো সেই ভাষাভাষীদেরকে নিয়ে, যারা প্রযুক্তির প্রভাবে ভাষার যথেচ্ছাচার করছেন। সেটি হয়তো বাংলা ভাষার স্বাভাবিক অগ্রগতি বা গতিপথকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে। যেসব ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন, সেসবের অনুগামী হতে পারে।

মাতৃভাষার জন্য সংগ্রাম করা এবং জীবন দিয়ে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায় করা - এটি একান্তই বাঙালির গৌরব। বায়ান্নো আমাদের, একুশ আমাদের। পৃথিবী থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি ব্যবহৃত ভাষাগুলো ইংরেজি, ফরাসী, চিনা, জার্মানি ইত্যাদি প্রভাবশালী ভাষার দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে ভাষাবিদেরা করছেন হাহাকার। তারা দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন বাঙালির, বাংলাদেশের; কারণ ভাষার জন্য নিজের প্রাণ দেবার দৃষ্টান্ত আমাদেরই। সেই আমরা যদি নিজ ভাষা ছেড়ে অন্য ভাষার প্রতি আসক্তি হই, নিজের ভাষায় অযাচিতভাবে বিদেশি ভাষার মিশ্রণ দেই, তবে আমরাই আমাদের গৌরবকে কলঙ্কিত করি।

ভাষা আন্দোলনে অর্জিত মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পৃথিবীর মানুষের কাছে একটি বিশেষ স্থান লাভ করে আছে। সেই বাংলা ভাষার নিজস্ব কোন স্বকীয়তা অবশিষ্ট থাকবে কিনা, এখন সেটি ভাবনার বিষয়।

মহান একুশ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সকল ভাষা শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।




-------------
যে লেখাটি নিয়ে উপরোক্ত মন্তব্য/প্রতিমন্তব্য: বাংলা ভাষায় অন্য ভাষার মিশ্রণ

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সকল মন্তব্যই সুচিন্তিত।
তবে আজ হামা ভাইয়ের স্ট্যাটাসটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে আমার।
তার মতে, "বাঙালির আজ বড় বিপদের দিন। প্রতিটা শব্দ লিখতে গিয়ে ডিকশনারি দেখতে হচ্ছে।"
দুর্ভাগ্য হলো এটাই যে, প্রতিবছর ভাষা নিয়ে আলোচনা করি আমার শুধু এমাসেই।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ।

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২২

জেন রসি বলেছেন: আমি নিজেও এ কাজটা করি। এবং করার সময় একটা ব্যাপার খুব স্পষ্ট ভাবে বুঝি। সেটা হচ্ছে, “যে বাংলা জানে, সে বাংলায় সম্পূর্ণ বাক্য বলতে পারে, যে ইংরেজি জানে, সে সম্পূর্ণ বাক্যই ইংরেজিতে বলতে পারে। আর যারা কোনটাই জানে না, তাদেরই আশ্রয় নিতে হয় মিশ্রণের।”

যেহেতু এ বদঅভ্যাস আমারও আছে তাই আর তেমন কিছু বলার নেই। তবে আমি চেষ্টা করব। এটাই বলতে পারি। :)


২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আমিও একই তালিকাভুক্ত ;)
হাতেগোনা দু’একজন ছাড়া প্রায় সবারই একই অবস্থা।
বিষয়টিতে সচেতনতা জরুরি।

৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪

পুলহ বলেছেন: জেন রসির বক্তব্যটা আমার নিজেরও বক্তব্য।
মন্তব্যে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা এসেছে, এটা নিশ্চিতভাবেই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
১৯ নং মন্তব্য (ফরিদুল আলম সুমন) এবং আবুহেনা ভাইয়ের স্ট্যাটাস (এর গ্রহণযোগ্য বাংলা এখনো কোথাও দেখি নি!) এর বক্তব্য বুঝি প্রায় কাছাকাছি...
ভালো আছেন আশা রাখি মইনুল ভাই। শুভকামনা জানবেন !

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আমারও একই বক্তব্য :)

পুলহ, আমি ভালো আছি, ভাই। আপনার জন্যও অনেক শুভকামনা :)

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২০

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: ভাষার মিশ্রণ আমারও হয়! তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলা-ইংরেজির সংমিশ্রণ করি না কখনোই।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ। প্রবাসী পাঠক কি কখনও দেশে আসবেন না? :)

৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

সুমন কর বলেছেন: ভিন্ন রকম পোস্ট। প্রতিটি মন্তব্যই সুন্দর কিছু কথা বলেছে। তবে ৫) ইকথিয়ান্ডর'টাই সত্য।
আমি মিশ্রণ করি না। বাংলাটাই পারি, আর ওটা কম.....! ;)

মহান একুশ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা !:#P

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ।

যেটা ‘কম’ সেটাই মিশ্রণের অন্তর্ভুক্ত হবার আশংকা বেশি :)

৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: যেমন হরলিক্সের কোন বাংলা প্রতিশব্দ নাই ৷.......এটুকু পড়েই আমি হাসতে হাসতে শেষ।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

হাহাহা.... মেজদা তো এরকমই একজন :)

৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন:
ভাল লাগল আপনার এই বিষয় নিয়ে লেখাটি।
এখন লেখাপড়ায় ইংরেজি মিডিয়াম, ইংরেজি ভার্সন না হলে মান ইজ্জত সব চুলোয় যায়।

আমি মিডিয়ামের জায়গায় মাধ্যম লিখলাম না, ভার্সনের কোন বাংলা অর্থ বা প্রতিশব্দ আমি জানিই না।
তরুণ সমাজের মত স্টাইল করে ইংরেজি না বললেও, মিশ্রণে যাচ্ছিই।

প্রতিদিন প্রতিক্ষণ আমাদের মিশ্রণ করতেই হচ্ছে।
ডাক্তারে ফী/ভিজিট কত, এই যে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, এই কথাগুলো আমার শ্বাশুড়িকেও বলতে হয়।

তাই যতই আলোচনা সমালোচনা হোকনা কেন, মিশ্রণ পরিহার করাটা সহজ নয়।
তবে চেষ্টা করাটা সবারই উচিৎ।

আপনার এই মূল্যবান লেখা পড়তেই, নিজেকে ধন্য মনে হয়!!!
অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ভাল থাকবেন সব সময়।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

‘পড়তেই নিজেকে ধন্য মনে হবার মতো’ লেখা আমি কখনও লেখতে পারবো না... কামরুন নাহার আপা।
প্রশংসার বদান্যতায় আমি কৃতজ্ঞ :)

৮| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: মন্তব্য লিখতে গিয়ে এই মুহূর্তে আমার মাথায় দুইটি শব্দ এলো,
'"ইট ডিপেন্ডস"।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
হাহাহা... যুতসই উত্তর :)

৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১৪

সাহসী সন্তান বলেছেন: একচুয়ালি মঈনুল ভাই, আপনার লেখাটা খুব ফাইন হইছে! আর কিছু কইতাম না..... ;)

পোস্টে ভাল লাগা! শুভ কামনা জানবেন!

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
শুভ কামনা আপনারও জন্যও। আপনি অনেক মজার মানুষ :)

১০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩

দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: Click This Link

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
পরে আসলাম। একটি মাতৃভাষা বা বাংলার উদ্দেশ্য তো ইংরেজি শেখানো নয়। বাংলা হলো বাংলার জন্য, মাতৃভাষার জন্য। নিজের ভাষাকে বিশৃঙ্খল করে দিয়ে বিদেশি ভাষা শেখার অর্থ কী?

১১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

কাছের-মানুষ বলেছেন: পদার্থ বিজ্ঞানে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত ত্বরন , মন্দন , ভর এরকম অনেকগুলো উদ্ভট শব্দ শিখেছিলাম, ইউনিভার্সিটিতে উঠে এই শব্দগুলো আবার ইংরেজিতে নতুন করে শিখতে হইয়েছিল !

ইউনিভার্সিটি এর এক পদার্থ বিজ্ঞানের এক অধ্যাপক আমাদের বলেছিলেন সব কিছুর বাংলা করতে নেই !পদার্থ বিজ্ঞানের এই টার্মগুলো বাংলায় করে বরং ছাত্রছাত্রিদের অনেক ক্ষতি হয়েছে । কারন কয়েক মাস লাগে এই জানাজিনিস গুলো আবার নতুন করে শিখতে । অথচ ক্লাস নাইন থেকেই এই টার্মগুলো ইংরেজিতে শিখলে ছাত্রছাত্রিদের অনেক সুবিধা হত !

যেমন হসপিটাল ইংলিশ শব্দ , আমরা বাংলায় বলি হাসপাতাল ! ভাসা চলমান নদীর মত নতুন নতুন শব্দ ভাষায় যুক্ত হবে , ভাষা সম্মৃদ্ধ হবে , এটাইতো ভাষার সৌন্দর্য ! এতে জাত গেল গেল বলে কান্নাকাটি করার কিছু নেই বলে আমি মনে করি !

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় যুক্ত করার জন্য প্রথমেই ধন্যবাদ। একই সমস্যায় আমিও পড়েছি :)

বিজ্ঞান অথবা বিশেষায়িত জ্ঞানের (পারিভাষিক) শব্দগুলো একই ভাষায় থাকবে, নাকি বাংলায় রূপান্তর করা হবে, এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। আমাদের সীমাবদ্ধতা হলো উচ্চতর পর্যায়ে এর ধারাবাহিকতা নেই। একই বিষয়ের শিক্ষার্থী দেশের বাইরে গিয়ে অধিকতর বিদ্যা অর্জন করতে চাইলে, সঙ্গত কারণেই সমস্যায় পড়তে হবে।

চৌপায়া, মেঝে, ডাকঘর, কামরা ইত্যাদি শব্দ কিন্তু সাহিত্যিক/ভাষাবিদদের প্রচেষ্টায় একসময় পুরোপুরি বাংলায়ই বলা হতো। সেটি অব্যাহত থাকে নি।

জাত যাবার আশংকা থাকবে না, যদি বিদেশি শব্দগুরো স্বাভাবিক নিয়মে (সাহিত্য, সংবাদপত্র, অভিধান, ব্যকরণের মাধ্যমে বিধিবদ্ধকরণ ইত্যাদি) আত্তীকরণ হয়।

ভালো থাকবেন, কাছের-মানুষ :)

১২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২২

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: বাংলা লেখা ও বলার সময় আমাদের চেষ্টা করা উচিত ইংরেজি শব্দের মিশ্রন যাতে না হয় সে চেষ্টা করা।

কিন্তু কিছু কিছু বিদেশি শব্দ এমনভাবে মিশে গেছে যে ইচ্ছে করলেও বাদ দেওয়ার উপায় নাই।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ভান্দবি... কথা সইত্য :)
যথেচ্ছাচার বন্ধ করার জন্য সচেতনতা জরুরি।

১৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: মাঈনউদ্দিন মইনুল ,



যে সমস্ত বিদেশী শব্দ ইতিমধ্যেই বাংলাভাষাতে আত্মীকরণ করা হয়েছে , বাংলাভাষাকে সমৃদ্ধি দান করেছে; সে সব বাদে আনকোরা নতুন শব্দের মিশ্রন অবশ্যই এড়াতে হবে ।
তবে আমার মনে হয়, বাংলাভাষার মধুরতা আর শালীনতা বিকৃত হয় বেশী আমাদের স্বনির্মিত "যুক্তাক্ষর" রচনায় ।
যেমন - মুঞ্চায় ( মন চায় ), গাল্ফাক্করা ( গাল ফাঁক করা ) , সেইরাম ( সেই রকম ) ইত্যাদি ইত্যাদি । এটা সামাজিক সাইটেই বেশি বেশি দেখা যায় । হয়তো মশকরা করেই এটা করা হয় কিন্তু ভয় হয় , এই ধরনটাই না শেষ পর্যন্ত বাংলাভাষাকে একদম আমূল বদলে ফেলে !!!!!!!!!
এটা নিয়েও আপনার লেখা আশা করি ।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//হয়তো মশকরা করেই এটা করা হয় কিন্তু ভয় হয় , এই ধরনটাই না শেষ পর্যন্ত বাংলাভাষাকে একদম আমূল বদলে ফেলে!//

-একই ভয় করছি।
একসময় হাতে ধরে ভুলটি ধরিয়ে দেবার মানুষ থাকবে কিনা আশংকা করছি।

যে লেখাটি নিয়ে এই পোস্ট, সেটিতে আপনার অভিমত আশা করছি, প্রিয় আহমেদ জী এস ভাই :)

১৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:০০

অন্ধবিন্দু বলেছেন:




বিশ্বায়নের সর্বগ্রাসি প্রভাব ও ইন্টারনেট তথ্যবিপ্লবের যুগে, ভাষাভ্যাসে মিশ্রণ অতি স্বাভাবিক একটি ব্যাপার বা প্রবৃত্তি। বিশেষ করে কথ্যরূপে তো বটেই। দেখুন, মনের ভাব বিনিময় মিথস্ক্রিয়া করতে যেয়েই ভাষার ব্যবহার চর্চা অনুশীলন। তাই মনোজগতে ‘প্রভাবসম্পন্ন’ করতে পারা প্রতিটি উপাদানই, ভাষা কাঠামোয় স্থান করে নেয়। ঠিক এ কারণেই, মিশ্রণ নেই এমন কোনো ভাষা বিশ্বে প্রচলিত নেই। কথ্যভাষার বাচনভঙ্গিতে পরিবর্তন আসবে। লেখ্যরূপে শব্দের প্রস্থান, উদ্ভাবন, ধ্বনি-শব্দচারিত্রের সাঙ্গীকরণ আত্তীকরণ ঘটবে, বাক্যের অন্বয়ে বিবর্তন চলবে।

ভাষা মিশ্রণ বলতে আপনি ও যারা মতামত দিলেন তারা হয়তো, আগ্রাসন ও বিকৃত অনুপ্রবেশের কথাই বলতে চাইছিলেন। আপনাদের আশংকা যথার্থই। যদিও আমি অনলাইনে পাঠ/বিচরণ করার অভিজ্ঞতায় দেখছি, আমাদের অধিকাংশেরই বাংলাভাষার ভাষাবিজ্ঞান, ভাষাবোধ খুবই দুর্বল-রুগ্ণ। এ লিখাটিতে এবং আমাদের মন্তব্যেও তার উপস্থিতি রয়েছে। হবেই বা-না কেন! উন্মার্গ সংস্কৃতির যাপনে আমরা সকলেই সহজাত হয়ে উঠেছি যে।

ভাষা বিজ্ঞানে বলা হচ্ছে রীতির পরিবর্তন-সংমিশ্রণ, আমি সহজ করে বলি, খিচুড়ি শব্দ-যোজনা। নোম চম্‌স্কি আরও দুর্দান্ত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু এর অনুবাদ আমাকে বাংলায় করতে সংকোচ হচ্ছে, কারণ আমারা বাংলা ভাষা সত্যই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। অথবা কাটাতে পারি নি এর যবন-দোষ।

আপনার ভাষা সচেতনতা ও আগ্রহের প্রতি অনেক ভাললাগা জানাই।
সকল ভাষা শহীদের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

অনেক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। কোথাও দ্বিমত করার নেই।

আমি একাধিক জায়গায় লেখেছি যে, ভাষা বহমান নদীর মতো। এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন অনিবার্য। এর কোনকিছুই চূড়ান্ত নয়। ব্যকরণ, অভিধান সবকিছুই পরিবর্তনশীল। ভাষার ব্যবহাকারীরাই নির্ধারণ করবে এর গতিপথ। ভাষাবিদেরা কেবলই এসব ঘটনাকে বিধিবদ্ধ করবেন।

কিন্তু আশংকা হলো সেই ভাষাভাষীদেরকে নিয়ে, যারা প্রযুক্তির প্রভাবে ভাষার যথেচ্ছাচার করছেন। সেটি হয়তো বাংলা ভাষার স্বাভাবিক অগ্রগতি বা গতিপথকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে। যেসব ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন, সেসবের অনুগামী হতে পারে।

ভাষা আন্দোলনে অর্জিত মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পৃথিবীর মানুষের কাছে একটি বিশেষ স্থান লাভ করে আছে। সেই বাংলা ভাষার নিজস্ব কোন স্বকীয়তা অবশিষ্ট থাকবে কিনা, এখন সেটি ভাবনার বিষয়।

১৫| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্যাটায়ারিকাল শিরোনামে একটা চমৎকার আলোচনা। লেখক এবং মন্তব্যকারী পাঠকগণকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
আহমেদ জী এস ভাই একটা আপাতঃ সূক্ষ্ম অসঙ্গতির প্রতি আলোকপাত করেছেন ১৩ নং মন্তব্যে। মশকরা করে এমনটা লেখা হলেও, আমি মনে করি এসব পরিহারের সময় এসে গেছে। নইলে এসব আগাছা শেকড় গেড়ে বসতে পারে।
চমৎকার একটি সুলিখিত মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য অন্ধবিন্দুকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
‘বেবি বেবি, ডারটি!’ -- এরকম আরো অনেক "ডায়ালগ" আমার জানা আছে!!! :)

০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৩৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে, প্রধানত মন্তব্যকারীদের জন্যই আমার পোস্টগুলো :)
চিন্তাগুলোকে চটকিয়ে দেখতে ভালো লাগে। ফলে কোন মৌলিকত্ব থাকলে সুভাসে বুঝা যাবে...

আপনার মন্তব্যে বরাবরই ঋদ্ধ হয়েছি, জনাব। কৃতজ্ঞতা কবুল করুন :)

১৬| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২৭

কালীদাস বলেছেন: আমি ব্যাপকভাবে দোষী এই দোষে। আমার কথায় প্রচুর ইংরেজি শব্দ চলে আসে প্রায় সবসময়। নিঃসংকোচে দোষ স্বীকার গেলাম :(

তবে এখানে একটা কথা আছে। কয়দিন আগে আরেকটা পোস্টে বলেছিলাম, বাংলা ভাষায় নতুন শব্দ যোগ করার প্রোপার অথরিটি আসলে কে? এবং সেটা জনসাধারণ জানবে কেমনে? ব্লগার বিচার মানি তালগাছ আমার আমাকে প্রতিউত্তর দিয়েছিলেন (যেটা আমি নিজেও শতভাগ খেয়াল করে আসছি অনেকদিন ধরে), সুশীল আলো একতরফাভাবে নিজেদের পছন্দের শব্দ যোগ করে ভাষায় এবং এটা পরে সবার উপরে চাপিয়ে দেয়ার নোংরা একটা চেষ্টা চলে ভালভাবেই। মুঠোফোন, কথাবন্ধু, ক্রমিক খুনী, ..... কোথাকার *** ** এই সুশীল আলো এই কাজটা করার?

উপরে ব্লগার কাছের মানুষ উল্লেখ করেছেন পড়াশোনার বিভিন্ন স্টেজে বাংলা থেকে ইংলিশ মিডিয়ামে যাওয়ার সময় বাধ্যতামূলকভাবে অনেক ইংরেজি শব্দ রেগুলার লাইফেও ঢুকে যাচ্ছে। তীব্র সত্যি। কারণটাও অনস্বীকার্য- আমাদের পুরান শিক্ষাগুরুরা বাংলায় টেকনিকাল শব্দগুলোর অনুবাদ করেননি, বা করলেও হাস্যকর কাব্যিক অনুবাদ করেছেন। আমি ২০০৩ সালে যখন স্ট্যাটে অনার্স শুরু করলাম এক গাধার পরামর্শে বাংলা একটা স্ট্যাটের বই কিনেছিলাম বোঝার সুবিধার জন্য। কিছু বুঝিনি। তবে বইটা কাজে লেগেছিল অনেক, মাঝে মাঝে নতুন অদ্ভুত শব্দের বিনোদন দরকার হলে বইটা খুলতাম। মেডিক্যাল/ইন্জিনিয়ারিং এর অবস্হা আরও করুন হওয়ার কথা অনুবাদ পারপাস।

যাউকগা। অনেক বাংলা ইংরেজি মিশায়া কথা কইছি, ক্ষমা কইরা দিয়েন। শান্তি :-0

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:১২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনি অনেকেরই মনের কথা বলেছেন। যথারীতি অনেক চিন্তার খোরাক দিয়েছেন।

ভাষামিশ্রণ (কোড মিক্সিং/ টার্মিনোলজি) বিষয়টি শিক্ষিত এবং শহুরে মানুষদের মধ্যে বেশি। কারণ আছে অনেক: কিছু সঙ্গত এবং অধিকাংশই অসঙ্গত।

গ্রামের মানুষগুলোকে অন্তত ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নম্বর দেওয়া উচিত। তারা যা-ই বলুক না কেন, ভিন ভাষার মিশ্রণ প্রায় শূন্য। ওখানেও কারণ আছে অনেক: অধিকাংশই প্রাকৃতিক। শুধু মিশ্রণটুকু মনুষ্যসৃষ্ট।



বর্তমান পোস্টটি তো পুরোপুরি আমার নয়। আমার লেখাটিতে (পোস্টের নিচে যুক্ত করা আছে) দেখবেন যে, ভাষামিশ্রণে কোন ডগম্যাটিক বা অর্থডক্স অবস্থান আমি নিই নি - নেবার কারণও নেই। ভাষা আমার কথায় চলে না। কোন ভাষাবিদ অথবা অভিধানের কথায়ও চলে না। ভাষা চলে ভাষা ব্যবহারকারীদের ইচ্ছায়। তবে একটি বাক্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা বিশেষ কোন সামাজিক অবস্থান বুঝাবার জন্য ইংরেজি/অ্যারাবিক/বিদেশি শব্দ মেশাবার প্রবণতাটি অগ্রহণযোগ্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.