নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কুটিল আমি। তাই জটিলকে সহজ করিয়াই দিবা যাপন করি। ভালো লাগে লিখতে, তাই লিখি।
ছেলেটি অনেক মেধাবী ছাত্র । ভার্সিটির অন্যতম মেধাবী ছাত্র সে । রেজাল্ট বরাবরের মতই ভালো । কিন্তু ছোট্ট একটি দুর্ঘটনা তার জীবন চলার পথকে অমসৃণ করে দিয়েছে ।
ছেলেটির চিন্তার শেষ নেই। রাতে ঘুমাতে পারছেনা । কোত্থেকে মিলবে এতগুলো টাকা ? তার যে ২৫০০০টাকা প্রয়োজন ! সামনে ফল-২০১৫ সেমিষ্টার এর ফাইনাল পরীক্ষা। সেমিষ্টারের পুরো টাকাই যে এখনো বাকী ! তাহলে সেমিষ্টারটি কি এবার ড্রপ যাবে ? এই চিন্তায় ছেলেটির সব কিছুই যেন এলোমেলো হয়ে গেছে ।
বাড়ি গেল টাকা যোগাড় করার জন্য । আত্মীয় স্বজন অনেকের কাছেই টাকা চেয়েছিল কিন্তু কেউই দেয়নি । উল্টো তিরস্কার করল এই বলে যে " গরীব পোলাপাইনের লেখাপড়া কিসের ? তোমার বাবার কি নিজস্ব জমি আছে যে তোমাকে তা বিক্রি করে পড়াবে ! আমরা তোমাকে কোন টাকা দিয়ে সাহায্য করতে পারবোনা আর টাকা দিলে তা তুমি পরিশোধ করবে কোত্থেকে !" এইসব কথা শুনে ছেলেটি শুধু নিরবে চোখের পানি ফেলল আর মনে মনে আল্লাহকে অভিমানী সুরে বলল " হে আল্লাহ তুমি আমাকে গরীবের ঘরে আর ভাল ছাত্র হিসেবে কেন পাঠালে ?"
পরের দিন গরীব বাবা-মায়ের সাথে অনেকটা অভিমান করেই বাড়ি থেকে ভার্সিটিতে চলে আসল ।
অনেক চিন্তা ভাবনা শেষে অবশেষে ছেলেটি সিদ্ধান্ত নিল তার এই দুর্দশার কথা একজনের কাছে শেয়ার করবে ।
আর সেই একজন ব্যক্তিটি ছিল ছেলেটির স্বীয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কো- অর্ডিনেটর জনাব আরিফুজ্জামান স্যার।
পরের দিন ছেলেটি তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরিফ স্যারের কাছে সবকিছু খুলে বলল ।আরিফ স্যার শুধু এই কথাটিই বলল যে " আমি দেখছি কিছু করতে পারি কিনা "
কয়েকদিন পর আরিফ স্যার ছেলেটিকে ভার্সিটির এক বড় ভাইয়ের মোবাইল নাম্বার দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলল । ছেলেটি বড় ভাইয়ের সাথে দেখা করলে তাকে ১০০০০টাকা দেয় কিন্তু তার যে আরো ১৫০০০টাকা প্রয়োজন কেননা সেমিষ্টার ফি বাবদ তার মোট ২৫০০০টাকা প্রয়োজন ছিল ।
আবারো চিন্তায় পড়ে গেল ছেলেটি। বাকী টাকা ????????????????????
ছেলেটির নাম নাছির ।
আরিফ স্যারকে আবার ধর্না দিল নাছির । আরিফ স্যার নিজের পকেট থেকে ১৪০০০টাকা দিয়ে বলল "টাকাটা জমা দিয়ে প্রবেশপত্র নিয়ে বাসাও যাও আর ভালভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও আর পরীক্ষার পরে দেখা কর ".।.।.।।।
এই সেই আরিফ স্যার যার ব্যক্তিত্ব যে কাউকে মোহিত করবে । ধর্মে কর্মে সব কিছুতেই যেন তার সামিয়ানা !পড়নে পায়জামা আর পাঞ্জাবি আর মাথায় একটা টুপি ! এই তার চলন । মুখে মুচকি হাসিটা সবসময় যেন লেগেই থাকে ! ডিপার্টমেন্টের সকল শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সমান ভাবে জনপ্রিয় তিনি । তার কথায় শুধু মায়া থাকে আর মিষ্টি দিয়ে তা পরিপূর্ণ !
তিনি যে মহানুভব ব্যক্তিত্বসম্পন্নের মানুষ তা নাছিরের ঘটনা থেকেই জানা যায় ।
নাছির আরিফ স্যারের দেয়া টাকাটা এখনো শোধ করতে পারেনি কারণ তার কাছে কোন টাকা নেই । কিন্তু নাছির একটা বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছে যে হয়তোবা কোন এক সময় আরিফ স্যারের দেয়া অংকের ১৪০০০ টাকা শোধ করে দিবে কিন্তু আরিফ স্যারের মহানুভবতার ১৪০০০টাকার ঋণ কিভাবে শোধ করবে সে ???????????????
আরিফ স্যার যদি ঠিক সময়ে নাছিরকে সাহায্য না করত তাহলে তার সেমিষ্টারটিই ড্রপ পড়ে যেত। এটা তার সেই অমূল্য সাহায্য যা মহানুভবতাকেও হার মানিয়েছে ।
সদা হাস্যোজ্জ্বল এই আরিফ স্যার নাছিরের সব কিছুতেই স্থান করে নিয়েছে । তার সবকিছুই যেন আরিফ স্যারের দেয়া আশির্বাদ নামক ফল ।
নাছির ফল-২০১৫ সেমিষ্টারে সিজিপিএ-৪ পেয়েছে । নাছির বিশ্বাস করে যে তার এই রেজাল্টের সম্পুর্ণ কৃতিত্ব শুধুমাত্র আরিফ স্যার এবং ভার্সিটির ঐ বড় ভাইয়ের পাওনা ।
ভার্সিটি লাইফের শুরু থেকেই আরিফ স্যারের সাথে নাছিরের সম্পর্ক ভালো । নাছির তার সকল সমস্যা আরিফ স্যারকে শেয়ার করে । আর নাছির আরিফ স্যারের প্রিয় ছাত্র কিনা জানিনা তবে নাছিরের সকল সমস্যা সমাধানে সাহায্যের হাতটা সামনে বাড়িয়ে দেন ।
এই হচ্ছে কোন এক ভার্সিটি শিক্ষকের মহানুভবতার গল্প যা বাস্তবকে হার মানায় । এহেন শিক্ষক বর্তমানে খুবই দুর্লভ কিন্তু আরিফ স্যার এই দুর্লভ ব্যক্তিদের মাঝে ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন এবং নাছিরদের মাঝে স্বমহিমায় তারকা হিসেবে জ্বলজ্বল করছেন ।
২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৫
নকীব কম্পিউটার বলেছেন: ভাল মানুষকে মানুষ চিরকাল শ্রদ্ধার সাথেই স্মরণ রাখে।
৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১১
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: সেটা হলে অনেক ভালো হত কিন্তু মনে হয়না আমাদের দেশে তা সম্ভব @ উদাসী স্বপ্ন
৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১৩
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: বাচনটা হাচাই @ নকীব
৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৯
বিজন রয় বলেছেন: ধন্যবাদ সেই স্যারকে।
০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: স্যারের জন্য প্রার্থণা করবেন @ বিজন দা
৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০০
আসল পাগল বলেছেন: আপনার পোস্টটি পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অনিরুদ্ধ কাহালী স্যারের কথা মনে পরে গেল যাকে প্রচণ্ড ভয় পেতাম, যে ভয় ছিল শ্রদ্ধা মিশ্রিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ সাঙ্গ হওয়ার পূর্বে তাঁর নিকট হতে যে আন্তরিকতা আর শাসন মিশ্রিত ভালোবাসা পেয়েছি তা সারাজীবন স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবে।
০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: ওনাদের মত ব্যক্তিদের কাছ থেকেই মূলত আমরা শিখি , তাই নয় কি ভাই @ আসল পাগল
৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৪
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আরিফ স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
এমন কিছু ভালো মানুষ এখনো আছে বলেই দুনিয়া টিকে আছে।
০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৯
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: স্যারের জন্য দোয়া করবেন @ রুহী
৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৮
সাঈদ মোহাম্মদ ফাহিম আবরার বলেছেন: আপনার ভার্সিটি কি খাগানে?
৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৯
প্রামানিক বলেছেন: এমন স্যারের জন্য ধন্যবাদ
০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: অবশ্যই আমাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে স্যারকে ধন্যবাদ জানাই @ প্রামাণিক
১০| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪২
অদৃশ্য প্রতিভা বলেছেন: @ফাহিম ভাই, খাগানেই।
আপনি চিনেন?
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৪
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: কিন্তু এরকম করে কতজনকে টাকা দেবেন উনি?
সবচেয়ে ভালো হয় ব্যাংকগুলোর উচিত টোটাল টিউশন ফি বাবদ একটা ছাত্র ঋনের ব্যাবস্থা করা যেটা পাশ করবার পর চাকুরী পেয়ে পরিশোধ করতে পারে।