![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ। বাঙালী। মহাভারত উপমহাদেশীয়। নদী, সাগর,পাহাড় সবই প্রিয়।
এবার গল্প বলাতেই চলে যাই। অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করলাম-পুষ্পাবলী বাই-এর গল্প বলব। পুষ্পাবলী বাই। এখন আর বেচে নেই। সবার আগে দুহাত কপালে ঠেকিয়ে তাকে জানাই নমস্কার;সালাম;আদাব। তার জীবনের গল্প দ্রৌপদীর সেই অনিশেষ শাড়ির মত। যতই আমি বলব-তার শেষ আমি করতে পারব না। এমন একজন মহত্তম মানুষের জীবনকথা তুলে ধরার জন্য আদৌ আমি যোগ্য কিনা, সে নিয়ে আমার গভীরভাবে সংশয় আছে। সেজন্যে সবার কাছে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে আমার জন্য সুবিধের হল এই মহতীর কোন উত্তরসূরী নেই। তার কেউ নেই। আমি যাই লিখি না কেন-তিনি বা তার হয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। আরেকটা সুবিধার হল মানুষটা যখন জীবীত ছিলেন-বেচে ছিলেন-এই সমাজ,এই সংসার এই রাষ্ট্র, এই সব সরকার-নেতানেত্রীবৃন্দ তাকে বিশেষ কোন সম্মান করেন নি। কেউ তাকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয় নি। তাই রাষ্ট্র-সমাজ বা সরকার কোনরকম আপত্তি করবে না-যদি আমি তাকে নিয়ে কোনরকম তথ্য বিকৃতি ঘটাই।মানবসাগর তীরে আমার দেখাশোনা অভিজ্ঞতা অনেকটা পিপিলিকার মত-যে পিপিলিকাটি একটি কলসীর পেটের ওপর বসে ভাবছে এটিই বুঝি মহাবিশ্ব। সেই স্বল্প চিনপরিচয়ে যে দুয়েকটি মহৎ মানুষের সান্নিধ্যে আমি এসেছি-তাদের মধ্যে পুষ্পাবলী বাইকে রাখতে হবে সবার ওপরে।
পুষ্পাবলী বাইজি ছিলেন। ছিলেন নত্তক। ছিলেন ছিনেল-নাচনেওয়ালী। তার সঙ্গে যখন আমার পরিচয় তখন তিনি অস্তাচলে সিজদা দিচ্ছিলেন। নব্বইর দশকে তখন আমি ঢাকার দৈনিক কাগজে সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করি। এতই অল্প বেতন তা দিয়ে মেস-ঘরের ভাড়াও শোধ হয় না। দশ-বিশটা বাড়তি টাকার জন্য খুব হাপিত্যেস করি। সাপ্তাহিক কাগজগুলোতে ঘুরে চটি খুইয়ে ফেলছি। যদি একটি বাড়তি কাজ পাওয়া যায়। যদি একটু বাড়তি আয়। শুনতে খারাপ শোনাবে কিনা জানি না- আমি সেই অক্ষম স্বামী- যে আজও তার বউকে নিজের আয়ে একটি গয়না গড়িয়ে দিতে পারি নি। এই অক্ষমতা ঢাকতে সারাক্ষণ বউয়ের তোয়াজবাজি করি-গয়না ছাড়াই তুমি অকৃত্রিম সুন্দর। গয়নায় মেয়েদের বড় ন্যাকা লাগে। আমার পরম ভাগ্য- আমার এই তেল তোয়াজে আজও বউয়ের উদার মন চিড়ের মত আর্দ্র হয়ে আছে।
পুষ্পাবলী বাই এর গল্প বলব আমি। তীব্র ভয়ংকর অদম্য আকর্ষণময় তার জীবনের গল্প। এই গল্পর পাশপাশি আমি আমার বর্নহীন-নিরস-দরিদ্র জীবনের গল্পও বলব। পুষ্পাবলীর গল্প শুনতে হলে এক ভিখারী-বৃত্তিকামী অসফল মানুষের গল্পও যে শুনতে হবে আপনাদের।
হ্যা, আমার জীবনের সেই রঙহীন সময়ে পুষ্পাবলীর সঙ্গে আমার পরিচয়।
অঅমি তার কাছে গিয়েছিলাম পত্রিকায়ওই ওই অনালোকিত অনালোচিত মানুষটিকে নিয়ে একটি লেখা লিখে দু পয়সা মুফতে আয় করব বলে।
©somewhere in net ltd.