নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মধ্যরাতের আগন্তুক

তুমি, আমি এবং আমাদের ছোট্ট ছোট্ট খুনসুটি নিয়েই কেটে যাচ্ছে বেশ।

মধ্যরাতের আগন্তুক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ হারানো গল্পের ফিরে পাওয়া ছন্দ

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৫৬

- " আচ্ছা আসিফ ভাই, আমি যদি হারিয়ে যাই আপনার কি মন খারাপ হবে? "

মিলির কথা শুনে একটা মুচকি হাসি দিলাম।
মেয়েটা প্রায়ই এই কথাটা বলে ভয় দেখায়, ভাবে ওর কথায় আমি ভয় পেয়ে বাংলা সিনেমার নায়কদের মত একটা লম্বা প্রেমের সস্তা ডায়ালগ দিবো।

-" আমার মন খারাপ হবে নাকি সেটা এখনই বলতে পারছিনা তবে ওইযে কৃষ্ণচূড়া গাছ টা দেখছো, ওর কিন্তু বড্ড মন খারাপ হবে।প্রতিদিন বিকেল বেলায় তুমি যে গাছটার নিচে গিয়ে বসে থাকো সেটা কিন্তু গাছ টা খুব পছন্দ করে। অথবা এইযে ছাদে এসে তুমি সকাল বিকেল সন্ধ্যা বেলায় ঘুরঘুর করো ছাদের প্রতিটা ইট তোমার স্পর্শ অনুভব করবে।"

মেয়েটা বেশ অবাক চোখে আমার দিকে তাকালো। হঠাৎ বললো - "আর আপনি আমাকে মিস করবেন না আসিফ ভাই?। "

আমি জানি ঠিক কোন উত্তরটা দিলে মেয়েটা প্রচন্ড খুশি হবে কিন্তু আমি কিছু বললাম না। বা বলার প্রয়োজনবোধ করলাম না। প্রিয় মানুষ গুলোর কাছ থেকে কিছু ব্যাপার আড়াল করে রাখাই ভালো। মিলি আমাকে প্রবোধ দিলো উত্তর দেয়ার জন্য। মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম -"মেয়ে সন্ধ্যা হয় গিয়েছে প্রায়। বাসায় চলে যাও নাহলে ভূত এসে কামড়ে দেবে।" অট্ট হাসি দিয়ে ছাদ থেকে নেমে গেলাম।

ঠিক একমাস পর সত্যি সত্যি মেয়েটা হারিয়ে গেল। পুরোদস্তুর আমার জীবন থেকেই হারিয়ে গেল। মিলির বাবা সরকারী চাকরী করতো, উনার পোস্টিং অন্য জায়গায় হয়েছে তাই তারা চলে গেছে। কলেজ থেকে বাসায় এসে এই কথা জানতে পেরে মন টা অসম্ভব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হচ্ছিল ব্যাপার টা আগের মতই মজা করছে কেউ আমার সাথে। আগে মিলি হুট করে আমার কানের কাছে চিৎকার দিয়ে বলতো - " আসিফ ভাই" কানে হাত দিয়ে চুলকাতে চুলকাতে মিলির দিকে তাকালেই মিষ্টি হেসে বলতো - " কি কেমন চমকে দিলাম দেখলেন?" খিল খিল করে হেসে উঠতো।
মেয়েটাকে নিয়ে তেমন কিছু বলতে পারতাম না। কিসের একটা মায়ায় পড়ে গিয়েছিলাম জানিনা।

তবে কথায় আছে, মানুষ সময়ের তালে তালে সব কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। কৃষ্ণচূড়া গাছটা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে তার জায়গায়, গ্রীষ্মের উষ্ণ আবহাওয়ায় থোকায় থোকায় ফুলগুলো ফুটে। প্রায় প্রতিদিন গাছটার নিচে যেয়ে বসে থাকি। মিলি প্রতিদিন গাছটার নিচে এসে ফুল ছিড়তো আর বলতো
-" এই গাছ, আজকে আরোও একটা নিলাম। রাগ করবেনা কিন্তু। "
.
আচ্ছা মিলি এখন যেখানে আছে ওখানে কি এমন কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। এখনো কি মনে আছে এখানকার কথা নাকি সব ভুলে গেছে। কি জানি! মানব মন বড় বিচিত্র ক্ষনিকের ব্যবধানেই সব ভুলে যেতে পারে।

.
সময় বয়ে চলে আপন মনে। জীবন ও থেমে থাকেনা। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব পার হয়ে এখন কর্পোরেট জীবন সেও প্রায় ৩ বছর হয়ে গেছে। মিলি চলে যাবার পর নিজেকে অন্য ভাবে আবিষ্কার করেছিলাম। প্রতিনিয়ত মিলির শুন্যতা প্রচন্ড পরিমানে অনুভব করেছি। এক জন্মদিনে মিলি আমাকে একটা বই উপহার দিয়েছিলো। টেবিলে রাখার পর আর খুজে পাইনি তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন একদিন সন্ধ্যায় একটা কাগজ খুজতে যেয়ে খাটের নিচ থেকে বের হয়েছিলো। সুন্দর মলাটে বাধাই করা আর উপরে লেখা - প্রিয় আসিফ ভাই আপনার জন্য ছোট উপহার। মলাট টা গভীর যত্নে খুলে দেখেছিলাম হুমায়ুন আহমেদ এর একটা বই ' হিমুর হাতে কয়েকটি নীল পদ্ম'। তার কিছুদিন পর বইটা পড়তে যেয়ে একটা চিঠি পাই ভিতর থেকে। গোটা গোটা অক্ষরের হাতের লেখা দেখে চিনতে ভুল হলো না যে এটা মিলির লেখা।
" প্রিয় আসিফ ভাই,
বুঝতে পারছিনা চিঠিটা লেখা উচিত হচ্ছে, নাকি হচ্ছে না। তবে অত বেশি মাথা ঘামাচ্ছিনা সেটা নিয়ে। চিঠি লিখছি কারন আপনার সামনে গেলেই আমার ভীষন লজ্জা লাগে। আচ্ছা আপনি এত গম্ভীর হয়ে থাকেন কেন সব সময়? নাকি আমার সামনেই আএত গম্ভীর হবার ভাব ধরেন? সেদিন আপনার জন্য আমি কতগুলো কৃষ্ণচূড়া ফুল এনেছিলাম আপনি সেগুলো আমার হাত থেকে নিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছিলেন। কত কেদেছিলাম আমি সেটা কি আপনি জানেন হা? সব সময় কি এত ভাবেন? শুনেন আমি সব কিছু স্পষ্ট করে বলি। আমি আপনাকে চাই। এবার থেকে আপনার ভাবনা জুড়ে আমাকে রাখবেন কেমন।

ইতি ,
আপনার অনিন্দিতা।


[পুনশ্চ: এই নামটা আমি রেখেছি। ভেবে রেখেছি আমি যখন কাউকে ভালোবাসবো তাকে এই নামে ডাকতে বলবো। ]
.

সেদিনের পর থেকে চিঠিটা মানিব্যাগে সযত্নে রাখি সব সময়। মাঝে মাঝে বের করে পড়ি। মাঝে মাঝেই চিন্তা করি কখনো কি মিলির সাথে আমার দেখা হবে? যেদিন দেখা হবে সেদিন আমরা একসাথে এই শহরটা ঘুরে বেড়াবো। একদম স্ট্রেটকাট বলে দেব আমি এখনো তোমার জন্য পাহার সমান ভালোবাসা নিয়ে তোমার অপেক্ষায় আছি।
আকাশ একটাই কিন্তু মানুষ দুটো কত দূরে। মিলি কি মনে রেখেছে আমায়? নাকি ভুলে গেছে। ভুলে গেলে ক্ষতি কি, আমি নাহয় মনে রাখব। একপক্ষ হয়েই বরং ভালোবাসবো।

.

হেমন্ত শেষ হয়ে এলো প্রায়। বৃষ্টি হচ্ছে আজকাল খুব। বৃষ্টির কোন বালাই নেই, যখন খুশি তখন এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায়। মা আজকাল খুব জ্বালাতন করছে। অফিসে আসার সময় মা বলে - বাবা, চাকরি বাকরি তো করতেছিস বহু দিন হলো। বিয়ে শাদী করা লাগবে তো নাকি। আমরা তোর জন্য মেয়ে দেখতেসি কিন্তু তুই কোন মেয়ের ব্যাপারেই কিছু বলিস না কেন? তোর বাবা তো বলেই দিসে এবার যাকে দেখবে তারেই তোর বউ করে নিয়ে আসবে। মায়ের কথায় কোন ভ্রুক্ষেপ করি নি। প্রায়ই এসব বলে। গা সয়ে গেছে এখন। অফিস থেকে আজকাল দেরী করেই বের হই। আসাদ ভাই তো সেদিন বলেই বসলো -" কি মিয়া, এত দেরী কইরা বাসায় যাও কেন? আমরা না হয় সংসারী মানুষ ওভারটাইম করি। তোমার তো অত পিছুটান নাই। "
তাদের কে কিভাবে বুঝাই বাসায় গেলেই বিয়ে নিয়ে ঘ্যানঘ্যান শুরু হয়।

আকাশ ডাকছে, বৃষ্টি আসবে বলে মনে হচ্ছে। ফাহাদ ভাই উনার গাড়িতে উঠতে বলেছিল। মানা করাটা ভুল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এখন। মানুষের ভিরে বাসে উঠেও শান্তি নেই।
-"আসিফ ভাই" কানের কাছে কে যেন ডেকে উঠলো। বিভ্রম। মিলি চলে যাবার পর প্রায়ই কানের কাছে কে যেন চিৎকার করে উঠতো পাশে তাকিয়ে মিলিকে না দেখে মন টা প্রচন্ড খারাপ হতো।
আবার কানের কাছে চিৎকার করে উঠলো - " কি ব্যাপার আসিফ ভাই, শুনেন না নাকি। " পাশে তাকিয়ে হুট করে মনে হলো স্বপ্ন দেখছি হয়তোবা। সেই চোখ, সেই হাসি। শুধু মাত্র লম্বা হয়েছে মেয়েটা। বিশ্বাস হচ্ছেনা মিলি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
-" কেমন আছো মিলি? অনেক বড় হয়ে গেছো দেখছি আর আগের থেকেও অনেক সুন্দরী হয়ে গেছো।" নিজেকে সামলে নিয়ে বলতেই হলো। আমার কথা শুনে মিলি যেন মজা পেল - " আফিস ভাই, আপনি আর চেঞ্জ হলেন না। ভাবলাম একটু অবাক হবেন তা না আগের মতই গম্ভীর। আপনি কেমন আছেন? "
- "এইতো বেশ আছি। দিনগুলো চলে যাচ্ছে বেশ। তুমি কেমন আছো? "
- " দেখছেন না, আমি খুব ভালো আছি বুঝলেন। " স্ফীত হেসে বললো।

মেয়েটা আগের মতই ছটফট করে সেই ছোট বেলার মতই এক বিন্দু পরিমান পরিবর্তন হয়নি মেয়েটার মাঝে। বাসস্ট্যান্ড এর পাশে একটা ছোট রেস্তোরাতে বসে বেশ অনেক গল্প করলাম। স্মৃতি রোমন্থন করলাম দুজনে মিলে তবে চিঠির ব্যাপার টা বেমালুম চেপে গেলাম।

চলে যাবার সময় মিলির নাম্বার টা নিয়ে রাখলাম, হয়তোবা মনে হচ্ছে অনেক দিনের পুরোনো একটা গল্প এবার সমাপ্তি পাবে।

মিলিকে ফোন দিলাম ঠিক তিন দিন পর।
ভয়, লজ্জা অথবা কোন একটা অজানা কারনে ফোন দিতে পারিনি এই কয়েকটা দিন।রিং হচ্ছে আর সেই সাথে বুক ধুকধুক করছে।
দুই বার নাকি তিন বার রিং হলো তার সাথে সাথেই ফোন টা রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে বললো -
- " আসিফ ভাই, আপনার কাছ থেকে এত তাড়াতাড়ি ফোন পাবো সেটা কিন্তু আশা করিনি, আপনি যেরকম মানুষ আমি তো আরো ভাবলাম ১ মাস লাগবে ফোন দিতে। "
চুপ করে থাকলাম। কিছু কিছু কথার কোন প্রতিভাষ থাকেনা। মেয়েটার কন্ঠটা ঠিক আগের মত মিষ্টিই রয়ে গেছে একটুও বদলায়নি।
-" আচ্ছা আসিফ ভাই, আমি যে চলে এসেছিলাম আপনি কি আমাকে মিস করেছিলেন? কৃষ্ণচূড়া গাছটা কি এখনো আছে ওখানে?
জানেন আসিফ ভাই, আপনাদের বাড়ি থেকে যেদিন চলে এসেছিলাম প্রচন্ড কান্না করেছিলাম সারাটা রাস্তা। মা আমাকে বলেছিলো পরের মাসে নাকি আপনাদের বাসায় বেড়াতে নিয়ে আসবে। আর আমিও কি পাগল! সেই কথাটা সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম। খুব মনে পড়তো আপনার কথা, বিশেষ করে আপনি যখন ছাদে দাঁড়িয়ে থাকতেন আমি যে আপনাকে ভীষন রকমের বিরক্ত করতাম তখন আপনি ঘুতোম পেচার মত মুখ করে রাখতেন। আপনার ওই মুখটা খুব মিস করতাম। মাঝ রাতে হুট করে ঘুম ভেঙে গেলে ওই কৃষ্ণচূড়া গাছটার কথা খুব
মনে পড়তো। বুকের ভেতর থেকে একটা কান্নার দমকা হাওয়া আমার ভেতরে এসে ভর করতো। সেদিন সন্ধ্যা বেলায় বাসস্ট্যান্ড এ আপনাকে দেখে মনে হয়েছিল আমার সাদাকালো শহরের রংগুলো যেন আবার ফিরে এসেছে। নীল আকাশটা আবার সাদা মেঘ এ ছেয়ে গেছে। আচ্ছা আসিফ ভাই আপনি কি বিয়ে করেছেন?। "
একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস গোপন করলাম।
-" আচ্ছা মিলি তোমার কি মনে আছে একদিন বিকেল বেলায় খুব সুন্দর করে সেজেগুজে আমার সামনে এসে দাড়িয়েছিলে তুমি। জিজ্ঞেস করেছিলে কেমন লাগছে তোমাকে। আমি তখন গম্ভীর গলায় বলেছিলাম পেত্নীর মত লাগছে। তুমি কেদে কেটে আমার সামনে থেকে চলে গিয়েছিলে। আচ্ছা তুমি কি আবার ওভাবে সেজে গুজে আমার সামনে আসবে?
আমি অপেক্ষা করবো সেখানেই যেখানে বহুদিন পর দেখা হয়েছে। "
- " জানিনা আসবো নাকি আসিফ ভাই, তবে একটা কথা মনে রাখবেন আশায় বাচে মানুষ, আশায় বাচে ভালোবাসা। ভালো থাকবেন।" মিলি ফোন টা রেখে দিল কিন্তু আমি আরো কিছুক্ষন কানের সাথে ধরে রাখলাম ফোনটা।
.

এই শহরের মেঘ বৃষ্টিতে
ভিজতে থাকে প্রকৃতি।
পরের দেখায় তোমার সাথে
প্রকৃতি হবো আমি।

.
পড়ন্ত বিকেল বেলায় কর্মব্যস্ত মানুষের বাড়ি ফেরার জন্য দৌড়াদৌড়ি দেখতে ভীষন ভালো লাগে। দূর থেকে মিলিকে দেখতে পাচ্ছি। কলাপাতা রঙের একটা শাড়ি পড়েছে মেয়েটা, অদ্ভুত সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। টুপ করে প্রেমে পরে যেতে ইচ্ছে করছে ভীষন হাসি পেল নিজের ভেতর প্রেমে তো সেই কবেই পড়ে গেছি। কাছে এসে একগাল হেসে অপরাধী ভঙ্গিতে বললো- " দেরী করে ফেললাম আসিফ ভাই। রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিলো।চলেন আজকে আমরা হাটি বসতে ইচ্ছা করছেনা কেন জানি।"
সম্মতি জানালাম।
- " তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। টিপ টা বাকা হয়েছে যদিও। "
লজ্জা পেল শুনে।
- "আসলে তাড়াহুড়ো করে লাগিয়েছি তাই বাকা হয়েছে।"
মুচকি হাসলাম, মেয়েটা এখনো সোজা করে টিপ পড়তে পারেনা।
-" আসিফ ভাই, আপনাকে একটা চিঠি দিয়েছিলাম। চিঠিটা কি আপনি পেয়েছিলেন বা পড়েছিলেন। বলতে পারেন প্রেম পত্র দিয়েছিলাম আপনাকে, যার উত্তর টা এখনো পাইনি। " মিলির মুখে কথাটা শুনে চমকে উঠলাম। ভুলে যায়নি, মনে রেখেছে মেয়েটা।
-" আজকের আকাশ টা দেখেছো মিলি , সুন্দর লাগছে বেশ। সূর্যাস্তের আগে আকাশটা লালচে আভায় ভরে যায়। এই সময়টা আমার খুব ভালো লাগে। ছাদে উঠে তুমি যখন আমার পাশে বকবক করতে সেই মুহূর্ত গুলো আমি প্রচন্ড মিস করি।"
পাশে তাকিয়ে দেখলাম মিলির চোখে জল টলমল করছে, চোখগুলোতে প্রচন্ড মায়া ভর করেছে। ইচ্ছে করছে টুপ করে ঝাপ দিয়ে ওই মায়ায় হারিয়ে যাই।
-" আসিফ ভাই, দেরী হয়ে যাচ্ছে। আমি বরং আজকে যাই।" মিলি আর উত্তরের অপেক্ষা করলো না। হেটে চলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। অনেক দিন আগে একটা সাদা মেঘ আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছিলো আপন মনে কিন্তু পথ হারিয়ে কালো মেঘের আড়ালে হারিয়ে গিয়েছিলো সময়ের পরিক্রমায় পথ খুজে পেয়েছে সেই মেঘটা, এবার আর হারাতে দেয়া যাবেনা।


' প্রিয় অনিন্দিতা,

চিঠিটা মানিব্যাগের ছোট্ট পকেটে সযতনে এখনো আছে। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে চিঠির গায়ে লেগে থাকা গন্ধটা আজো অনুভবে মিশে আছে। কৃষ্ণচূড়া গাছটা আজো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে, ফুল ফুটে আবার সেই ফুল ঝরে যায় কিন্তু কেউ একজন বিকেল বেলায় গাছ থেকে ফুল ছিড়ে নেয়না। ছাদের ইটগুলো আজো কোন এক মায়াবতীর জন্য অপেক্ষায় আছে। এই শহরের রাত গুলো খুব সুন্দর, তুমি আর আমি মিলে রাত গুলো রাঙিয়ে দিবো। বৃষ্টি দিনে একগুচ্ছ কদম হাতে তোমার সাথে ভিজব অথবা শীতের সকালের কুয়াশা ভেজা ঘাসে আমরা হেটে বেড়াবো। আর শুনো এরপর থেকে কপালের টিপ না হয় আমিই লাগিয়ে দিবো তাহলে আর বাকা হবে না। "

"আপনি একটা অসম্ভব খারাপ মানুষ।"- চোখ থেকে কফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে। মেয়েরা কাদলে নাকি অসম্ভব সুন্দর লাগে সেটা এতদিন বইয়ে পড়েছি আর এখন নিজ চোখে অবলোকন করছি। কথাটা একবিন্দু মিথ্যা নয়।

আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আকাশ টা নীল হয়ে আছে, সাদা মেঘ নেই, ছুটি নিয়েছে আজ। তারা দেখা যাচ্ছে, জ্বলজ্বল করছে তারাগুলো। একটা তারা দেখলাম খসে পড়েছে। শুনেছি তারা যখন খসে পড়ে তখন নাকি যা চাওয়া হয় তাই পূরন হয়। আমি বরং এই মেয়েটাকেই চাই। ব্যস্ত নগরীর এক বিকেল বেলায় অনেকদিন আগে বন্ধ হওয়া একটি গল্প আবার তার পুরনো ছন্দ খুজে পেল।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৬

নীল আকাশ বলেছেন: অসাধারন প্রেমের গল্প। আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। একটু আগেই উলটা পালটা গল্পের নামে লেখার জন্য এক ব্লগারকে ভাল মতনই বলে এসেছিলাম। এরপরেই আপনার লেখাটা পড়ার পর মন একদম শান্ত হয়ে গেল।

একটা অনুরোধ করলাম, লেখাটা আবার ড্রাফটে নিয়ে লাইন ফরম্যাটগুলি আবার দেখে ঠিক করে দিন। ১ম দিকে বেশ কিছু লাইন কেটে ২ লাইন হয়ে গেছে।
আপনি এই গল্প লিখে আমাকে মুগ্ধ করেছেন। আরও এই রকম সুন্দর সুন্দর লেখা চাই আপনার কাছে।
শুভ রাত্রী, ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১:২৪

মধ্যরাতের আগন্তুক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আসলে আমি নিজের মত লেখি। একেক জনের লেখার ধরন একেক রকম। সবার কাছেই যে সব লেখা ভালো লাগবে তা তো নয়। আমার লেখাটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে এটাই আমার কাছে বেশ বড় প্রাপ্তি। ভালোবাসা নিবেন

ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এবং অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী ।

২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল একটি গল্প।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৩

মধ্যরাতের আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ।ভালোবাসা নিবেন ❤

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:৫৬

মাহের ইসলাম বলেছেন: ভালো লাগলো।

শুভ কামনা রইল।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৫০

মধ্যরাতের আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ।

শুভ কামনা রইল আপনার জন্যও ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.