নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় ওয়েব ডেভেলপার - ফুল টাইম। এখনো একাডেমিক পড়া-শোনা কোন রকমে চালু আছে, সেই হিসাবে ইস্টুডেন্ট। পছন্দ করি ঘুরতে, পড়তে, শিখতে ও শিখাতে।

ডেস্পারেট ওয়ারিয়র

ওয়েব ডেভেলপার

ডেস্পারেট ওয়ারিয়র › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরবানী ঈদের আগের রাত

২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৭:২৫

কুরবানী ঈদের আগের দিনগত রাত। রাত তখন দুইটা বাজে। মধ্য রাত। সবাই ঘুমে অচেতন। পুরা গ্রামে শুনশান নিরবতা। এমন সময় চাচার মোবাইলে কল বেজে উঠলো- চাচা, আপনার কুরবানীর গরু তো দড়ি ছিড়ে পালাইছে।

- বলিস কি, কোনদিকে পালাইছে?
- গ্রামের উত্তর দিকে।
- কতক্ষণ আগে?
- এই তো একটু আগে।

চাচা দৌড়ে গিয়ে তার ছেলের রুম থেকে ছেলেকে ডেকে তুললো। উঠ বাচা, জলদি উঠে পড়। লাইট, দড়ি আর লাঠি নিয়ে বের হ। গরু দড়ি ছিড়ে পালাইছে গ্রামের উত্তর দিকে।

বাপ-বেটা লাইট, দড়ি আর লাঠি নিয়ে গ্রামের উত্তর দিকে দৌড়াতে শুরু করল। সবে মাত্র কাচা ঘুম থেকে উঠে আসার দরুন অল্প কিছু দৌড়াতেই বাপ-বেটার জান বের হয়ে যাবার জোগাড়। এদিকে আগামীকাল কুরবানী। কিন্ত তাদের দৌড়াতে প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।

মসজিদে আজান দেয়া কোন কষ্টের কাজ না। আমি ক্লাস নাইনে পড়ার সময় ইমামের সাথে মসজিদে থাকতাম। প্রায় ফজরের সময় মুয়াজ্জিন আসত না। ইমাম সাহেব আমাকে আজান দিতে পাঠিয়ে দিত। আমি ঘুম থেকে উঠে আসতাম আজান দেয়ার জন্য। প্রথম দুই-চারটা শব্দ বলার পর শব্দ আর গলা থেকের বের হতে চাইত না, আটকিয়ে যেত। মনে হত এখনি পানি খাওয়া লাগবে। আজান লম্বা করে দিতে পারতাম না, শর্ট করে অল্প সময়ে সেরে ফেলতে হত দম যাতে কম লাগে এজন্য। কিন্ত অন্য ওয়াক্তে যখন আজান দিতাম জোহর বা আসরে, তখন এরকম হত না। লম্বা করে আজান দিতে পারতাম, গলাও শুকাত না।

আবার আমি আর আমার বন্ধু প্রায় ফজরের পর হালকা দৌড়াতে বের হই। ফজরের পর হাফ মাইল দৌড়ে যেতে যে পরিমাণ কষ্ট হয়, বিকালে ৩ মাইল দৌড়ালেও সেরকম কষ্ট হয়না। মানে ঘুম থেকে উঠে স্বাভাবিক হতে আপনার ঘন্টা খানেক লাগবেই। তার আগে ভারী কোন কাজ করলে আপনি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যাবেন।

যাহোক, বাপ-বেটা ছুটছে তো ছুটছেই। গ্রামের বাশ-বাগান, রাস্তা-ঘাট, নদীর ধার কোন জাগায়ই দেখতে বাদ রাখল না। এদিকে সময় অনেক গড়িয়ে গেছে। যখন তারা ঘর থেকে বের হয়েছিল তখন চাঁদ তাদের মাথার বরাবর ছিল। আর এখন পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে। একটু পরেই আজান দিবে, কিন্ত বাপ-বেটা তখনো গরু খুজে পেলনা। তারা একে-অন্যকে দোষারোপ করতে লাগল যে গরু কেন ভাল ভাবে বাধা হয়নি। কেন গরু দড়ি ছিড়ে পালাতে পার। নতুন কেনা গরু যদি দড়ি ছিড়ে পালায় তাহলে সে গরু তার পুরাতন মালিকের বাড়ী যায়। তারা যেহেতু গরুর হাট থেকে ব্যাপারীর কাছ থেকে গরু কিনেছে তাই জানেনা গরুর পুরাতন মালিক কে।

এদিকে ঈদের দিন তাই গ্রামের লোক-জন একটু আগে-ভাগেই উঠে মসজিদে ফজরের নামাজের জন্য গেল। একটু পরেই গ্রামের মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। সবাই জানবে অমুকের গরু দড়ি ছিড়ে রাতে পালিয়েছে। যারা সমালোচক- তারা হয়তো বলবে বেটা কুরবানী দেয়ার ভয়ে রাতের বেলা গরু বিক্রি করে দিয়ে নতুন গল্প ফাদছে।

অবশেষে বাপ-বেটায় হতাশ হয়ে বাড়ী ফিরে এসে দেখে গরু গোয়ালে যেখানে বাধা ছিল, সেখানেই আছে। তাইলে মোবাইলে কল দিয়েছিল কে??? ঈদের আগের রাতে আপনিও কিন্ত এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন, অচেনা নম্বর থেকে কল দিয়ে আপনাকে নাকানি-চুবানি খাওয়ায়ে পারে। গরু চুরি হতে পারে। আবেগে অতিরিক্ত খাওয়ালে গরু মারাও যেতে পারে। তাই সাবধান। গরু গোয়ালে আছে দেখে বাপ-বেটার মুখে চরম আনন্দের হাসি ফুটে উঠলো। বেহুদা তারা অর্ধেক রাত পর্যন্ত কষ্ট করলো।

ঈদ মোবারক। :

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:০০

অধৃষ্য বলেছেন: আপনার চাচা আর চাচাতো ভাইয়ের জন্য দুঃখ হলেও হাসি পেয়ে গেলো।

ভোরবেলায় যেকোনো কাজ করার আগে হালকা ব্যায়াম শরীর গরম করে নেয়া উচিত। দৌড়াদৌড়ির মতো পরিশ্রমের হলে তো এটা অবশ্য কর্তব্য। না হলে পেশির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, সাথে হার্টফেলের ঝুঁকি। পেটভরে খাবার পরে সাথে সাথে দৌড়াদৌড়ি করলে হার্টফেল করে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। খাবার পরে সাথে সাথে হাঁটাও উচিত নয়। সেজন্য যথাসম্ভব পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত, প্রয়োজনে দিনে ৬ বার খান, কিন্তু অল্প করে। কুরবানির সময় সবাই বেশি খেতে ভালোবাসে এবং বলে দুএক দিনই তো। আপনাকে অসুস্থ করার জন্য এটুকুই যথেষ্ট।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

হংস বলাকা বলেছেন: So Amazing.

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট।
ধন্যবাদ।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হ হা।
চিলে কান নিয়েছে, দৌড়াও চিলের পিছে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.