নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিডিহাসনাত

আমি একজন নিয়মিত ব্লগার

ব্যারিষ্টার হাসনাত তালুকদার

ব্যারিষ্টার হাসনাত তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাল বিড়াল রাজ্যে আমরা ইদুর জনগণ

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬



“হাসনাত”



ভাটির দেশে এক হুলো বিড়াল ছিল । বিড়াল প্রজাতির খুব প্রিয় বিষয় ইদুর,দুধ,মাছ আর মাছের কাটা । কিন্তু ঐ হুলো বিড়ালটার প্রিয় বিষয় ছিল সংসদ,সংবিধান আর সরকার । নীতি, আদর্শ, আদব এসব কিছুই না থাকলেও সে ছিল অত্যন্ত চতুর । তার চাতুর্যের কাছে পরাভূত হয়ে ভাটির মানুষ তাকেই বার বার সংসদে পাঠিয়েছে । সংসদের বিভিন্ন অধিবেশনে সে খুবই প্রনবন্ত ছিল । তার ভেংচিকাটা অবয়বের সাথে দেশবাসী খুবই পরিচিত । সংসদে ডিবেট-টিবেট যাই করত কিন্তু তার মন কখনও ভাল থাকতনা । তার মন পরে থাকত উজিরে আজমে ডাকের অপেক্ষায় । যদি একবার ঐ মধুর ডাকটা তার কানে আসত, তবে জীবন ধন্য হত । নরকের অগ্নিকুন্ডে পুরেও মনে হত বসন্তের ফুল বাগানেই আছি । কিন্তু ঐ ডাক আসেনা । বিএনপিকে দিয়ে একবার চেষ্টা করা হয়েছে । কিন্তু ওরা আধা উজিরের বেশী দিতে রাজী হয়নাই বলে আলোচনাও আগায়নি । এক পর্যায়ে হুলো বিড়াল বাম ধারার রাজনীতির পাঠ চুকিয়ে আয়ামীলীগে বিলীন হয় । আয়ামীলীগেও এক যুগের অধিক অপেক্ষার পর সেই মহেন্দ্র ক্ষনটি আসে ।



হুলো বিড়াল রেলমন্ত্রনালয় পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে খুবই উৎসাহ বোধ করল । সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সে উৎসাহের কারনও প্রকাশ করল । সে পরিসংখ্যান ঘেটে বলল দুনিয়ার সব দেশেই রেল বিভাগ লাভের মুখ দেখে শুধু বাংলাদেশ ছাড়া । তার দেওয়া তথ্যমতে বাংলাদেশের রেল বিভাগেরও বিশাল আয় হয় । কিন্তু ঐ আয়কে হিসাবের মারপ্যাচে আত্মসাত করে কি এক প্রজাতির বিড়াল । বিড়াল ক্যাটিগরির বিষয়ে বিষদ জ্ঞান সম্পন্ন হুলো বিড়াল বলল, যারা রেলের টাকা লুপাট করছে ওদের রং কাল । হুলো, মানে হুলো উজির অত্যন্ত উৎসাহের সাথে উপস্থিত সবাইকে জানাল, ঐ কাল বিড়ালটাকে সে পাকরাও করবেই করবে ।



মাত্র অল্প কয়দিন রেল বিভাগের উজির ছিল হুলো বিড়াল । এর মধ্যেই ঘটল এক বিরাট ঘটনা । হুলোর ব্যাক্তিগত সচিব বস্তা ভরা টাকা সহ বিজিবি গেইটে ধরা খেল । ড্রাইভার আজম জানাল,এটা রেলের টাকা । বস্তা ভরা টাকার গন্তব্য ছিল জিকাতলা,যেখানে হুলো উজিরের বসবাস । সে আরও জানাল,এমন কাল টাকা সে বহুবার ঐ বাসায় নিয়ে গেছে । কিন্তু পাপের ভারে নুব্জ আজম বিরক্ত হয়ে বিবেকের তারনায় আজ এই টাকা ধরিয়ে দিয়েছে । উদ্দেশ্য একটাই, যাতে দেশবাসি রেলের কাল বিড়ালটাকে চিনতে পারে । সেই ঘটনার পর হুলোর নাম এক রাতে পরিবর্তন হল । সেই থেকে হুলোর নাম এখন কাল বিড়াল ।

পৃথিবীর যে কোন দেশে এমন ঘটনা ঘটলে উজির চাকরী হারাত, রাজনীতিক দল থেকে বহিস্কার হয়ে তদন্ত এবং বিচার সাপেক্ষে লাল দালানে থাকত । এমনকি ঐ কেলেংকারীর দায়ে উজিরে হাকিমের মসনদটাই ভেঙ্গে পরত । কিন্তু কাল বড়ালের কিছুই হয়নি । প্রথমে চাকরী হারাবার ভয়ে পদত্যাগ করলেও অদৃশ্য হাতের ইশারায় তার পদত্যাগ গৃহীত হয়নি । তবে এখন সে উজিরে খামুখা,তার কোন রাষ্ট্রীয় কাজ নেই । কিন্তু সে এখনও গাড়ী,বাড়ি সহ সমুদয় রাষ্ট্রী সুযোগ নিয়ে জনগণের টেক্সের টাকার অপচয় ঘটিয়ে চলছে । আর সুযোগ পেলেই নিরীহ,শান্ত,নিপিড়িত,মজলুম ও দিশেহারা ইদুর দৃশ দেশবাসিকে ভেংচি কাটা মুখে গনতন্ত্র, সংবিধান ও সাংবিধানিক রাজনীতির পাঠ দিচ্ছে । ক্ষমতার মসনদ পুক্ত করতে কাটাছিড়া করা সংবিধানের অধিনে বিরুধী দল নির্বাচনে না এলে গনতন্ত্রের কতটা বইয়ে যাবে সেই পাঠ দিচ্ছে । ইচ্ছায় হউক বা না হউক আমরা ইদুররা সেই বয়ান শুনছি, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করে

বলছিনা তুই নীতিহীন,প্রতারক, রাষ্ট্রীয় সম্পদ তসরুপকারী,তুই চোর,তুই নিজেই একটা কাল বিড়াল । তুই চুপ থাক,তোর কাছে আমরা গনতন্ত্রের পাঠ নেবনা । কাল বিড়াল শাসিত বিড়াল রাজ্যে আমরা জনগণ যেন নিরীহ ইদুর,অন্যায়ের প্রতিবাদ দূরে থাক এখনও প্রাণটা কেড়ে নেয়নি সেই কৃতজ্ঞতায় বিভোর । আমরা কি কখনোই ইদুর মানবের খুলস ছেড়ে প্রকৃত মানুষ হবনা? প্রতিবাদী হব না?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.