নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক পথহারা পথিক

মহানন্দ মোহন

মহানন্দ মোহন

আমি একা শুধু একা আমার আপন কেউ নাই...

মহানন্দ মোহন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চোখের রোগ এবং তার প্রতিকার সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা

০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২





চোখ আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল অঙ্গ। চোখ দিয়ে আমরা এই সুন্দর পৃথিবীকে দেখি। সামান্য অবহেলা, অসাবধানতা, অজ্ঞতা ও সুচিকিৎসার অভাবে আমরা এই অমূল্য সম্পদ হারাতে পারি।

তাই চোখের অসুখ বিসুখ ও তার প্রতিকার সম্বন্ধে কিছু প্রাথমিক ধারণা আমাদের সবারই থাকা দরকার।



ছানি পড়া ( Cataract) ::





সাধারণতঃ বার্ধক্যজনিত কারনে মানুষের চোখের লেন্স স্বচ্ছতা হারিয়ে ফেলে, এই অবস্থাকে ছানি পড়া বলে। বার্ধক্য ছাড়াও আঘাত, প্রদাহ, ডায়াবেটিস অথবা জন্মগত কারনে অল্প বয়সে ও ছানি পড়তে পারে।



প্রতিকার ( Treatment) ::

অপারেশন'ই ছানির একমাত্র চিকিৎসা ঔষধ বা অন্য কিছুর দ্বারা ছানি প্রতিরোধ বা প্রতিকার সম্ভব নয়। অপারেশনের মাধ্যমে নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক লেন্স সরিয়ে ফেলে সেখানে একটি কৃত্রিম লেন্স সংযোজন করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।





ফ্যাকো সার্জারি (Phaco surgery) ::

ছানি অপারেশনের সর্বাধুনিক এই পদ্ধতিতে আলট্রাসাউন্ড ওয়েভের মাধ্যমে প্রাকৃতিক লেন্সকে গলিয়ে (Emulsification) বের করে আনা হয় এবং ভাঁজ করা সম্ভব (Foldable) এমন কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করা হয়।



*এই অপারেশন সেলাই বিহীন সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত ও নিরাপদ।

*অপারেশনের সময় রোগী সঙ্গান থাকেন এবং অপারেশনের পর দীর্ঘসময় হাসপাতালে অবস্থানের প্রয়োজন হয়না।

*ফ্যাকো সার্জারি করতে চাইলে ছানি পাকা (mature) হওয়ার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই বরং ছানি বেশী পাকার আগেই অপারেশন করা ভালো।



ছানির সুচিকিৎসা না হলে অতিরিক্ত পাকা ছানি (Hypermature cataract) পরবর্তীতে গ্লুকোমা রোগের জন্ম দিতে পারে। গ্লুকোমা হলে দৃষ্টি শক্তির স্থায়ী ক্ষতি হয়। তখন অপারেশন করলে আশানুরূপ ফল নাও পাওয়া যেতে পারে।





গ্লুকোমা (Glaucoma) ::





গ্লুকোমা রোগ চোখের এক নীরব ঘাতক। এই রোগে সাধারণত চোখের প্রেশার বৃদ্ধি পায় ফলে চোখের স্নায়ু /নার্ভ শুকিয়ে যায়। প্রেশার বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়াও গ্লুকোমা হতে পারে। গ্লুকোমা রোগে চোখের দৃষ্টি শক্তির স্থায়ী ক্ষতি হয় যা কোন ভাবেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। সাধারণত শতকরা 50 ভাগ দৃষ্টিশক্তি কমার আগে রোগী বুঝতে পারেনা। তাই নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করানো দরকার। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ অব্যাহত রাখলে অনিবার্য অন্ধত্বের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। মনে রাখতে হবে গ্লুকোমা রোগ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রোগের মতই অনিরাময়যোগ্য কিন্তু নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ।



প্রতিকার ( treatment) ::

রোগের অবস্থা (status) অনুযায়ী ঔষধ প্রয়োগ অথবা গ্লুকোমা অপারেশন (Trabeculectomy) করতে হয়। প্রয়োজনে অপারেশন ও ঔষধ দুটোই চলতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে LASER এর দ্বারা চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে ।





চোখের প্রদাহ (Conjunctivitis, Uveitis ,Scleritis ইত্যাদি) ::



Conjunctivitis



Uveitis



Scleritis



বিভিন্ন কারনে হঠাৎ করে চোখ লাল হওয়া, চোখ বা চোখের পাতা ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া, খচ্ খচ্ করা, পানি পড়া প্রভৃতি হতে পারে। এসব ব্যাপার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। চুন বা কোন কেমিক্যাল চোখে পড়লে প্রচুর পানি বা নরমাল-স্যালাইন দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং দ্রুত চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে হবে।





ট্যারা চোখ ( Squint /Strabismus):







বিভিন্ন কারণে চোখ ট্যাংরাজাতীয় হতে পারে। যে কোন বয়সেই হোক ট্যারা বুঝতে পারার সাথে সাথেই চিকিৎসা গ্রহন করা উচিত। শিশুদের চোখ ট্যারা অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকলে ট্যারা চোখের দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে কমে যায়। চশমা ব্যবহার করে অথবা প্রয়োজনে অপারেশন করে ট্যারা (squint)ঠিক করা যায়। এবং দৃষ্টিশক্তির ও উন্নতি করা সম্ভব, তবে তা করতে হবে শিশু বয়সেই। বেশী বয়স পর্যন্ত দেরী করলে চিকিৎসা করার পরও ভালো ফল পাওয়া কঠিন।





মাংস বৃদ্ধি (Pterygium) ::







এই রোগে চোখের উপর একটি পর্দা তৈরী হয়। সাধারণত চোখ লাল দেখায়। এই পর্দা চোখের সাদা অংশের উপর দিয়ে বাড়তে বাড়তে এক সময় কর্নিয়ার (চোখের কালো মনি) উপর চলে আসে এবং কর্নিয়ার স্বচ্ছতা নষ্ট করে দেয়। একেই টেরিজিয়াম বলে। টেরিজিয়াম ক্রমবর্ধনশীল হলে তা অপারেশন করে ফেলা উচিত।





ডায়াবেটিস ও ব্লাডপ্রেসার রোগীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা :



ডায়াবেটিস ও ব্লাডপ্রেসার রোগীদের চোখের ভিতরে যে কোন সময় রক্তক্ষরণ অথবা রক্তনালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফলে রোগীরা অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এইজন্য নিয়মিত ডায়াবেটিস ও ব্লাডপ্রেসার পরীক্ষা করে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেমন জরুরি তেমনি এসব রোগীদের অন্তত ৬ মাস অন্তর চোখের পরীক্ষা করানো উচিত। রোগের উপসর্গ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখা সম্ভব।





মনে রাখবেন ::



দৃষ্টিহীন মানুষ জীবিত থেকেও মৃত। চোখের অনেক রোগ বেড়ে ওঠে আমাদের অলক্ষ্যে। তাই কোন রোগ থাকুক বা না থাকুক শিশুদের স্কুলে যাওয়ার বয়স থেকে শুরু করে এবং ৰড়দের চল্লিশের পা দেওয়ার পর থেকে বছরে অন্তত একবার পরীক্ষা করানো উচিত।



উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি আমাদের দেশেও চোখের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রকৃত উন্নতি হয়েছে। এই সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের আরও গনসচেতনতা বাড়াতে হবে। তাহলেই শুধু সার্থক হবে আমাদের সকল শ্রম ও প্রচেষ্টা।







......................

মহানন্দ মোহন

অপ্টোমেট্রিস্ট

ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট এ্যান্ড হসপিটাল

ফার্মগেট ,ঢাকা-1215



মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৪৭

জাফরুল মবীন বলেছেন: চোখের রোগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট +++

২০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩৩

মহানন্দ মোহন বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
জাফরুল ভাইয়া। মনে আশার
সঞ্চালন ঘটিলো.....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.