![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটবেলা থেকে বই- পুস্তক,পত্রিকায় পড়ে এসেছি পুলিশ জনগণের বন্ধু,ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক নেতারা বলেন পুলিশ আইনের রক্ষক,ক্ষমতার বাইরে থাকা বিরোধীদল বলে পুলিশ পেটোয়া বাহিনী,মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কিছুদিন আগে বললেন,"মাছের রাজা ইলিশ,দেশের রাজা পুলিশ",বাস-ট্রাক ড্রাইভাররা বলেন পুলিশ চাঁদাবাজ,ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন পুলিশ ধান্ধাবাজ।আসলেই পুলিশ কি,জনগণের বন্ধু না শত্রু?পুলিশকে এমনভাবে,এমনরুপে মানুষ দেখে কেন,শ্রদ্ধা দেখায় না কেন,দাম দেয় না কেন?
.
গত কয়েকবছরে পুলিশের বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে পুলিশ জনগণের আস্থার প্রতীক না হয়ে জনগণের ভোগান্তী আর হয়রাণির প্রতীক হয়ে গেছে।সর্বশেষ ,চাঁদা না দেয়ার অপরাদে ঢাকার চা দোকানীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনাটি বেশ নির্লজ্জ এবং বেদনাদায়ক।একটা রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,যারা কিনা সাধারণ জনগণকে পুড়িয়ে মারা থেকে বাঁচাবে,মানুষের নিরাপত্তা বিধান করবে,সেই তারাই রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে,এটা খুবই দুঃখজনক।
.
সব পুলিশ খারাপ না,কিছু মাত্র পুলিশ খারাপ।আমি অনেক পুলিশকে দেখেছি যারা ঘুষের উর্ধ্বে উঠে,জীবন বাজি রেখে মানুষের মঙ্গল করতে,অনেক পুলিশকে দেখেছি নিরপরাধ মানুষকে বাঁচাতে।কোন নতুন জায়গায় গেলে,অথবা কোন পথ না চিনলে আমি প্রথমেই পুলিশকে জিজ্ঞাসা করতাম,এবং সবসময় সঠিক পথটা উনারা বাতলে দিতেন।কিন্তু এখন কেন জানি,পুলিশের উপর থেকে সেই বিশ্বাসটা উঠে যাচ্ছে,উল্টো ভাবি জিজ্ঞেস করতে গেলে যদি ভোগান্তীতে পড়তে হয়!
.
পুলিশের রাস্তাঘাটে ওপেন চাঁদাবাজির অনেক রেকর্ড আছে,আবার অনেক ভালো কাজেরও রেকর্ড আছে।কিন্তু যারা চাঁদাবাজি করছে তারাও পুলিশ,যারা আইন রক্ষার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে দিচ্ছে তারাও পুলিশ!কিন্তু এই পার্থক্যটা হয় কিভাবে,বা বিগত কয়েকবছরে কেনইবা পুলিশ এত বেপরোয়া?
.
এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে,তবে আমার কাছে প্রধান কারণ মনে হয়,পুলিশের অসচ্ছ্ব নিয়োগ এবং রাজনৈতিক কাজে পুলিশকে ব্যবহার।পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন দুর্নীতিতে ভরা,যাকে বলে নিয়োগবাণিজ্য।একটা ছেলেকে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দিতে হলে তাকে মিনিমাম তিন চার লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ঢুকতে হয়,ঘুষ চাড়া পুলিশের চাকরি এখন নেই।আবার শুধু ঘুষেই হয় না,থাকতে হবে রাজনৈতিক পরিচয়।ফলে যারা নিয়োগ পাচ্ছে তারা বেশীরভাগই দলীয় ক্যাডার,এবং মোটামুটি কমবেশী সবাই অসদুপায়ে নিয়োগ পাচ্ছে,বাদ যাচ্ছে প্রকৃত মেধাবী এবং যোগ্যরা।এর ফলে এরা যখন চাকুরী শুরু করে,তাদের মাথায় তখন চিন্তা থাকে যে টাকাটা ভর্তির সময় ঘুষ হিসেবে দিয়েছে সেটা তাড়াতাড়ি তোলার,যার জন্য কাকে পুড়িয়ে মারলো,কোন শিক্ষক অপদস্থ হলো,সেটা তাদের নজরে আসে না।রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়,তাদের গায়ে তখন তকমা লাগে পেটোয়া বাহিনীর।
.
তবে আমি জোরগলায় বলতে পারি,খারাপ পুলিশের সংখ্যা অল্প,ভালোর সংখ্যা বেশী।কিন্তু খারাপদের নোংরা কাজের জন্য,খারাপ কাজগুলো ভেসে উঠছে সবার সামনে,ঢেকে যাচ্ছে বেশীরভাগ পুলিশের নিরলস পরিশ্রম।
.
পুলিশ বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে না সাজালে,রাজনৈতিক কাজে পুলিশের ব্যবহার বন্ধ না করলে,নিয়োগবাণিজ্য বন্ধ না করলে,পুলিশের যে ভাবমূর্তি এখনো মানুষের কাছে আছে তা অচিরেই নষ্ট হয়ে যাবে।সেই সাথে নৈতিক শিক্ষার ট্রেনিং দিতে হবে পুলিশকে,আর এই বোধটা জাগ্রত করতে হবে সবার আগে,পুলিশ একজন মানুষ,পুলিশের ড্রেস পরিধান করলেও মানুষ,ড্রেস ছাড়াও পুলিশ একজন মানুষ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৮
মু. সাদ উদ্দিন বলেছেন: একসময় পুলিশকে দেখলে সালাম দিতাম , সম্মান করতাম। আর এখন এদের দেখলে পালাই । না জানি কোন ফান্দে ফেলে ........