নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোলামআজম আপডেট...

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩

শাহবাগে জেগে ওঠা গণবিস্ফোরণের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। সে আগুন জ্বলছে বিচারাধীন যুদ্ধাপরাধীদের গ্রামে গ্রামে, স্বজন, বন্ধুদের মধ্যেও। এতে ভীতসন্ত্রস্ত তারা। প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ চিহ্নিত ১০ যুদ্ধাপরাধীর গ্রামের মানুষ। তাদের পক্ষে মাঠে নেই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীও। এমনকি শাহবাগের উত্তাল আন্দোলনের ঢেউ ভীতসন্ত্রস্ত করে রেখেছে শাহবাগ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে বন্দি যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে। শাহবাগের আন্দোলনের খবরে বারবার আঁতকে উঠছেন তিনি।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন ১০ যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে মাত্র দু’জনের বিচারের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পলাতক জামায়াত নেতা আবুল কালাম আযাদের (বাচ্চু রাজাকার) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপর যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছে। কিন্তু কাদের মোল্লার বিরুদ্ধের এ রায় মেনে নিতে পারেনি দেশের মানুষ। রায় ঘোষণার দিন গত ৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ব্লগারদের আহ্বানে পথে নামে মানুষ। কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠে উত্তাল আন্দোলন। সে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সবখানে।

সকালের খবর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আন্দোলনের উত্তাপে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের স্বজন, সমর্থক, দলীয় লোকজন। উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে তাদের গ্রামের বাড়িতেও।

জানা গেছে, শুক্রবারের মহাসমাবেশের লাখো মানুষের স্লোগান কানে যায় শাহবাগ থেকে মাত্র ১০০ গজের মধ্যেই অবস্থিত বিএসএমএমইউ প্রিজন সেলে বন্দি গোলাম আযমের। কিসের আন্দোলন ও কারা করছে-জানতে পেরে ভয়ে শিউরে ওঠেন তিনি। তার তত্ত্বাবধায়ক কয়েক চিকিত্সক ও ওয়ার্ডবয় সকালের খবরকে বলেন, শুক্রবারের পর থেকে গোলাম আযমের রক্তচাপ বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝে ভয়ে আঁতকে উঠছেন। সার্বক্ষণিক দেখভালে অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক এক চিকিত্সক অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, প্রিজন সেলের দরজা জানালা বন্ধ থাকে। শাহবাগের স্লোগানের অস্পষ্ট কিছু আওয়াজ তার কানে এসেছে। তবে এই নিয়ে তার কোনো অনুভূতি বা প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। অবশ্য এটি ঠিক যে, শুক্রবার থেকে তাকে আগের চেয়ে কিছুটা বেশি উদ্বিগ্ন দেখা যাচ্ছে। এক ওয়ার্ডবয় গতকালের বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছেন, গতকালও তার কাছে আন্দোলন কমেছে কি না-জানতে চেয়েছেন গোলাম আযম। ওয়ার্ডবয়ের ‘কমেনি’ উত্তর শুনে চুপচাপ হয়ে যান তিনি।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকারের বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ক্ষারদিয়া গ্রামে। বর্তমানে সেখানে তার নিকটাত্মীয় কেউ নেই। দূর সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনও আর যাচ্ছেন না কেউ। ফাঁকা বাড়ি তালাবদ্ধ পড়ে রয়েছে। ফাঁসির রায় ঘোষণার দিন ফরিদপুরের বিক্ষুব্ধ মানুষ ফাঁকা বাড়ির উঠোনে মিছিল করেছে এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। তবে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ বাচ্চু রাজাকারের এ বাড়িতে এসে ঘৃণা প্রকাশ করছে। একই জেলায় বাড়ি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লার। তার ফাঁসির দাবিতে উত্তাল আন্দোলনের উত্তাপ লেগেছে গ্রামের বাড়ি সদরপুর উপজেলার ভাসানচর গ্রামেও। গা-ঢাকা দিয়েছেন তার দুই ভাই। যেদিন রায় হয়, সেদিন জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা তার বাড়িতে রায় বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তবে গ্রামের সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মুখে চুপসে যায় তারা। শাহবাগের আন্দোলনের পর কাদের মোল্লার বাড়িটি এখন গ্রামের মানুষের ঘৃণার বস্তুতে পরিণত হয়েছে। জেলার অপর যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের গ্রামের বাড়ি সদর থানার পশ্চিম খালাসপুরে। সে বাড়িতে বর্তমানে তার কয়েক ভাই ও আত্মীয়স্বজন রয়েছেন। গত মঙ্গলবার থেকে তাদেরকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। গ্রামের মানুষের তোপের মুখে সর্বশেষ কয়েক দিন আগে জামায়াতের ডাকা একটি সভা ভণ্ডুল হয়ে যায়। সে থেকে জামায়াত নিশ্চুপ। তবে গত চারদিন ধরে ফরিদপুরে কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করছে সাধারণ মানুষ।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বাড়ি পিরোজপুরের জিয়া নগর উপজেলার সাউথখালী গ্রামে। আটকের পর তার মা মারা গেছেন। ঢাকায় আস্তানা গেড়েছেন তার ভাই। স্থানীয় মানুষের প্রতিরোধের মুখে আটকের পর থেকেই আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছে স্থানীয় জামায়াত। মাঝেমধ্যে চোরাগোপ্তা ঝটিকা মিছিল করলেও গত মঙ্গলবারের পর থেকে জামায়াতের কোনো খোঁজ নেই পিরোজপুরে।

শেরপুরের যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের বাড়ি সদর উপজেলার বাজিতখিলা গ্রামে। আটকের আগে তার বাড়িতে ভাই ও শ্যালক ছিল। এখন তারাও উধাও। নিশ্চুপ স্থানীয় জামায়াতও। বাড়ির আশপাশে কোনো লোকজনকে দেখা যায় না।

পাবনার ধোপদহ ইউনিয়নের মনমথপুর গ্রামে বাড়ি আটক অপর যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর। শাহবাগের আন্দোলনের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত সেখানে জামায়াতকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। কোনো সভা বা মিছিলও করেনি। এমনকি জামায়াতের সাধারণ কর্মীরাও গা-ঢাকা দিয়েছেন।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চট্টগ্রাম শহরের ‘গুডস হিল’ ও রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামের বাড়িতে কেয়ারটেকার ছাড়া কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। শাহবাগ আন্দোলনের রেশ ধরে মঙ্গলবার থেকে চট্টগ্রামেও শুরু হওয়া আন্দোলনের কারণে দুই বাড়ির আশপাশে ভিড়ছেন না কেউ। তার ব্যাপারে তার দল বিএনপি জেলা শাখা নিশ্চুপ।

যুদ্ধাপরাধী আবদুল আলীমের জয়পুরহাটের বাড়িটি তালাবদ্ধ। জামিন নিয়ে তিনি বর্তমানে রাজধানীর গুলশানে তার ছেলের বাসায় রয়েছেন। কাদের মোল্লার রায়ের পর সেখানে স্থানীয় বিএনপি উল্লাস করলেও শাহবাগের আন্দোলনের পর আবারও চুপসে গেছে। তার মুক্তির দাবিতে কোনো কর্মসূচিও নেই। তবে জামায়াত সেখানে মাঝেমধ্যে চোরাগোপ্তা হামলা ও ঝটিকা মিছিল করছে।

অপর যুদ্ধাপরাধী মীর কাশিম আলীর বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ভুলশুরা গ্রামে। নদীতে বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার পর শিবালয় উপজেলার চালা গ্রামে কিছু জায়গা কিনেছেন। সেখানে নিকট আত্মীয়স্বজন কেউ নেই তার। তাই তার ব্যাপারে স্থানীয় মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। তবে শাহবাগের ঘটনার পর মানিকগঞ্জে তার বিরুদ্ধে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় মানুষ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭

ডাব্বা বলেছেন: পালাবে কোথায়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.