নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাত তাহলে নিষিদ্ধ হচ্ছে?

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামী শিগগিরই নিষিদ্ধ হতে পারে। এই দলটি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতা করেছিল। পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী এসব অপরাধের দায়ে দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে এরই মধ্যে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন দেশের অধিকাংশ মানুষ। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিসহ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের গণজাগরণ মঞ্চে চলছে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ আন্দোলনের ঢেউ। এ পরিস্থিতিতে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে ভেতরে ভেতরে কার্যক্রম শুরু করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, শিগগির জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গতকাল শনিবার জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার নেই।'

কয়েক দিন আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য

ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, 'জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে সংসদে বিল আনা হবে।' আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামও গতকাল বলেছেন, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের ব্যাপার। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আইন মেনেই জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে রাজনৈতিক দলের অধ্যাদেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী আবার পুনরুজ্জীবিত হয়। ভোটের রাজনীতিতে বিভিন্ন কলাকৌশলে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নিষিদ্ধের হাত থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে দলটি। এবার দলটির শেষরক্ষা হবে বলে মনে হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার সারাদেশের আপামর জনগণের সমর্থনে দলটিকে নিষিদ্ধ পথে এগোচ্ছে। যদিও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী এজেন্ডায় যুদ্ধাপরাধের বিচার করার প্রতিশ্রুতি ছিল। বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগসহ সারাদেশে গণজাগরণে জামায়াতকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সূত্র জানায়, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সারাদেশের মানুষের অভূতপূর্ব সমর্থনের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সরকারের নীতিনির্ধারক মহল কয়েক দফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নতুন প্রজন্মের সমর্থন কাজে লাগানোর ব্যাপারে একমত পোষণ করেন তারা। নীতিনির্ধারকদের মতে, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে একদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন বাড়াবে, অন্যদিকে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিও কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়বে।

বৃহস্পতিবার ১৪ দলের বৈঠকেও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নেতারা দাবি তোলেন। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, 'জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে ১৪ দল পদক্ষেপ নেবে।' গতকাল ১৪ দলের গণপদযাত্রা কর্মসূচি থেকেও একই দাবি জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বলেছেন, জামায়াত কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়। স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি করার অধিকার নেই। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এ সন্ত্রাসীদের দমনে যা করার দরকার, আমরা তা-ই করব। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ ঘটানো তরুণ প্রজন্মের পাশে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শাহবাগের এই তরুণ প্রজন্ম নবজাগরণের উন্মেষ ঘটিয়েছে। গতকাল শাহবাগের গণজাগরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নিহত ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে তার পল্লবীর বাসায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকারও এ দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়েছে। তাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের ব্যাপার। সরকার এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে গত রোববার শাহবাগে আন্দোলনের পক্ষ থেকে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এই স্মারকলিপি সম্পর্কে ওই দিন সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং তিনি বলেন, এই দাবির সবই যৌক্তিক। এসব শপথ বাস্তবায়নে যা যা করা দরকার, তিনি সবকিছুই করবেন।

মহাজোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও ওই দিন আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী কোনো রাজনৈতিক দল স্বাধীন দেশে রাজনীতি করতে পারে না।

মহাজোটের আরেক শরিক জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল বলেন, বিশ্বে জামায়াতে ইসলামী একমাত্র রাজনৈতিক দল, যে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। সময় এসেছে বিষধর এই কালসাপকে যথাযথ স্থানে ফেরত পাঠাতে হবে। আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান বলেন, জামায়াত নিষিদ্ধের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু একই ধরনের দাবি জানান।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বলেন, আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন মেনেই জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। সরকারের পক্ষে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হলে কমিশন সহজেই দলটির নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।

জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী দল হিসেবে উচ্চ আদালত অবহিত করায় এর নিবন্ধন বাতিল করা যায় কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, উচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে যদি এমন কোনো দিকনির্দেশনা দেন, তবে কমিশন অবশ্যই তা পালন করবে। এর বাইরে সরকার যদি আইন করে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে, তবে কমিশনও নিবন্ধন বাতিল করবে।

১৯৪০ সালের ৭ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় জামায়াতে ইসলামী। অবশ্য প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন কারণে তিন দফা নিষিদ্ধ হয়েছিল দলটি। আইনের নানা ফাঁকফোকর ও ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদ নিয়ে দলটি আবার কার্যক্রম চালু করে। স্বাধীনতার পর জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান শাসনামলে রাজনৈতিক দলের অধ্যাদেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী আবার পুনর্জীবিত হয়। লোটন একরাম/মসিউর রহমান খান, সমকাল

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০০

টয়ন বলেছেন: হওয়া উচিত. যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই নাই, তাদের রাজনীতি তো দুরে থাক ভোটার করাও ঠিক না..........

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০০

টয়ন বলেছেন: হওয়া উচিত. যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই নাই, তাদের রাজনীতি তো দুরে থাক ভোটার করাও ঠিক না..........

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০০

আহলান বলেছেন: নিবন্ধন বাতিল করা হলে জামাতের সমর্থকরা আবারো ভিন্ণ নামে, ব্যানারে সংগঠিত হবে। তখন?

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯

িবদ্রহী বলেছেন: নিবন্ধন বাতিল করা হলে জামাতের সমর্থকরা pure জংগী হইয়া যাইবো। আর সব বিমপিতে জয়েন করবে। তখন আওয়ামিলিগতো দুরের কথা জিন্দেগিতে অন্য কোনো দল আসতে পারবে কিনা সন্দেহ। যা করার ভেবে চিন্তে করতে হবে

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯

মুণণা বলেছেন: একটা ভালো খবর এটা. একটা প্রশ্নও ছিলো অন্য দল গুলো কেন নিষিদ্ধ হবে না? সব দল খুন করেসে এবং সব দল এ ই রাজাকার ও আসে. কারো কাছে আমার প্রশ্নের উত্তর টা আসে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.