নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাত তৎপর, মরিয়া হয়ে উঠছে...

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:১৭

প্রবল আন্দোলনের মুখে আপাত বেকায়দায় পড়া স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াত কৌশল পাল্টেছে। তাদের 'গোপন শক্তি' বলে পরিচিত পেশাজীবীরা এবার মাঠে নেমেছেন গোপনে। দলের মূল নেতারা আটক আর মাঠের নেতারা আত্মগোপনে থাকায় সম্ভাব্য বিপর্যয় ঠেকাতে এখন সক্রিয় হয়েছেন জামায়াতপন্থী পেশাজীবীরা। এ মুহূর্তের করণীয় নিয়ে বিভিন্ন সুবিধাজনক স্থানে তাঁরা গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে শলা-পরামর্শ করছেন। সেখানে ক্ষেত্রবিশেষে সাংগঠনিক নেতারাও উপস্থিত থাকছেন। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে এ রকম বেশ কিছু বৈঠকের কথা জানা গেছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার রাতেও এ ধরনের বড় একটি বৈঠক হয়েছে রাজশাহী শহরের রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এ ছাড়া রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকা থেকে গতকাল বিকেলে রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির আতাউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তিনিও পেশায় একজন শিক্ষক। রাজশাহী শহরের লোকনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতা করেন। র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আতাউর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ২০টি বোমা ও ১২টি জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে। বইগুলো জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন নেতার লেখা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর ইস্কাটনে আল-বারাকা কিডনি হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন জামায়াতপন্থী কয়েকজন চিকিৎসক নেতা, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, একাধিক আইনজীবী, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক, একজন সাংবাদিক নেতাসহ ১৮-২০ জনের একটি গ্রুপ। অধ্যাপক ডা. ফকরুল ইসলাম নামের একজন ইউরোলজিস্ট এ বৈঠকের সমন্বয় করেন বলে আল-বারাকা হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এর পরদিন ল্যাব এইড হাসপাতালের জামায়াতে ইসলামীর সতীর্থ একজন চিকিৎসকের কক্ষে রাতে আরেক দফা বৈঠক হয়। এখানে ছিলেন জামায়াতপন্থী পাঁচ-ছয়জন চিকিৎসক ও শিক্ষক।

এর দুই দিন আগে পল্টন এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের চেম্বারেও এক দফা বৈঠক হয় জামায়াতপন্থী বিভিন্ন পেশার ১৪-১৫ জনের উপস্থিতিতে।

জানা গেছে, গোপন বৈঠককারী এসব পেশাজীবীর মধ্যে রয়েছেন জামায়াতপন্থী চিকিৎসক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যাংকার, সাংবাদিকসহ নানা পেশার লোক।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছি। কাউকে কাউকে আটকও করেছি। এ ব্যাপারে আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।'

সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ২৯ জুন বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি জামায়াতপন্থী ডাক্তারদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর এনডিএফের আর তেমন কোনো সক্রিয় কার্যক্রম ছিল না। এমনকি গত ডিসেম্বরে বিএমএর নির্বাচনেও তারা আলাদা কোনো প্যানেলে অংশ নেয়নি। তবে দেশে এখন সর্বাত্মক জামায়াত-শিবিরবিরোধী আন্দোলন ও দাবি জোরালো হওয়ার পর তারা কিছুটা গোপনে হলেও তৎপর হয়ে উঠেছে।

জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন এনডিএফের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে গতকাল সন্ধ্যায় রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে তাঁর চেম্বারে বৈঠকের বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, এটা ছিল ডাক্তারদের বিভিন্ন সমস্যাবিষয়ক একটি বৈঠক। কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়।

যুদ্ধাপরাধী ও একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে বেশ কিছুদিন হলো উত্তাল হয়ে উঠেছে সারা দেশ। শাহবাগকেন্দ্রিক এই গণজাগরণের দাবির মুখে জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের উপযুক্ত বিচারের পাশাপাশি সংগঠনও এসেছে বিচারের আওতায়। সেই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জোরালো হয়ে উঠেছে। রাজপথে, সংসদে, সরকারে, রাজনৈতিক-সামাজিক অঙ্গনে, মিডিয়ায় এখন এ দাবিই এখন সবচেয়ে সোচ্চার। এ ছাড়া দাবি উঠেছে জামায়াতের সব প্রতিষ্ঠান বর্জন ও বন্ধের। এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েই মূলত জামায়াতের গোপন সদস্য তথা জামায়াতপন্থী পেশাজীবীরা বড় শক্তি হয়ে উঠেছেন দলের জন্য। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রে কর্মজীবী জামায়াতিরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন এ তৎপরতায়। তাঁদের উপর্যুপরি গোপন বৈঠকের বিষয়টি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতেও রয়েছে বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পেশাজীবী জামায়াতপন্থীদের মধ্যে বরাবরই বেশি তৎপর থাকেন চিকিৎসক ও বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকরা। এর পরই সক্রিয় থাকেন আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের অংশ। পাশাপাশি জামায়াতের শ্রমিক সংগঠনও কখনো কখনো দলের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের গ্রেপ্তারের পর থেকে এসব পেশাজীবী জামায়াতপন্থী অনেকটা চুপচাপ ছিলেন। তাঁদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও এক রকম বন্ধই ছিল। কখনো বা তাঁরা বিএনপির পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে মিলেমিশে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ করে জামায়াতের সহযোগী সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ), ফোরাম অব ইঞ্জিনিয়ার্স, কৃষিবিদ ফোরাম, আদর্শ শিক্ষক পরিষদ, শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন অনেকটা নিষ্ক্রিয় থাকে। এর এক পর্যায়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আদালতের রায় ঘোষণার পর রাজধানীর শাহবাগে ঘটে তারুণ্যের গণজাগরণ। এর পর থেকে জামায়াতের বিরুদ্ধে নতুন করে জেগে ওঠে দেশ। এরপর অনেকটা হঠাৎ করেই গত সপ্তাহ থেকে জামায়াতপন্থী এসব পেশাজীবী তৎপর হয়ে ওঠেন।

জামায়াতে ইসলামীর প্রকৌশলী ফোরামের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা কখনোই নিষ্ক্রিয় ছিলাম না, এখনো নই। বরং কিছুদিন পর পরই বিভিন্ন ব্যানারে আমাদের কোনো না কোনো কার্যক্রম চলে। তবে সমস্যা হচ্ছে, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যখনই জানতে পারে এসব আয়োজন আমাদের উদ্যোগে হয়, তখনই নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।'

সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভূঁঞা নিজের আরদালি দিয়ে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম কর্মী ও ব্লগার নিহত রাজীব সম্পর্কে যে প্রতিবেদন পাঠান সহকর্মীদের কাছে, তা নিয়ে বিচার বিভাগে তোলপাড় পড়ে যায়। গতকাল সারা দেশে বিষয়টি নিয়ে চলে ব্যাপক আলোচনা। আইনজীবী সমিতি গতকালই বৈঠক করে আচরণবিধি ও সংবিধান লঙ্ঘন করায় বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভূঁঞাকে অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সহসভাপতি মুনতাসীর মামুনসহ অন্য নেতারা এক যুক্ত বিবৃতিতে ওই বিচারপতিকে 'জামায়াতপ্রেমী' উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি শহীদুল ইসলাম নামের ইসলামী ব্যাংকের এক ভাইস প্রেসিডেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতার পরিকল্পনায় সন্দেহভাজন হিসেবে শহীদুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে।

শাহরিয়ার কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা বরাবরই বলে আসছি, প্রশাসনসহ পেশাজীবীদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জামায়াত-শিবিরের লোকজন বসে আছে। তারা এত দিন ঘাপটি মেরে থাকলেও এখন বিভিন্নভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে। চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে, নয়তো কেবল জামায়াতের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কোনো ফল হবে না।'

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০৪

সপ্তম ইন্দ্রিয় বলেছেন: ইয়া! এইবার কই যাইবা মামু! B-))

২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০১

কলাবাগান১ বলেছেন: আজ বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন ও শাহবাগ নিয়ে আর্টিকেল লিখেছে

Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.