![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখাটি ভজন সরকারের, নতুন দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত।
শাহবাগ চত্বরের প্রজন্মের আন্দোলন নিয়ে জামাত-বিএনপির প্রপাগান্ডার বাঁক বদল হচ্ছে। কোন অপপ্রচারই হালে পানি পাচ্ছে না। অপপ্রচারের ধারাবাহিক পর্ব শুরু হয়েছিল এভাবে; আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক, নাস্তিকদের আন্দোলন, ধর্মবিরোধী আন্দোলন, ইসলামবিরোধী আন্দোলন, ভারত-আশ্রয়ী আন্দোলন এবং সবশেষ পর্বে চলছে মধ্যযুগীয় বর্বরতার অপকৌশল; সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর পায়তারা। সুক্ষ্ণ ও সুচতুরভাবে বিএনপি-জামাত এ জঘন্য অপপ্রচারগুলো করছে। কিন্তু প্রায় সবগুলোই বুমেরাং হয়ে ফিরে যাচ্ছে তরুন প্রজন্মের বাঁধভাংগা উত্তাল জোয়ারের তোড়ে।কিন্তু ইদানিং প্রগতিশীল মানুষের কিছু কিছু অংশের মনে ধর্ম ও ভারতের বুদ্ধিজীবিদের একাত্মতা প্রকাশ নিয়ে সাময়িক কিছু বিভ্রান্তি দানা বাঁধতে দেখা যাচ্ছে। সে নিয়েই আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ।
শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে ধর্মীয় অপপ্রচারঃ
যে কোন প্রগতিশীল আন্দোলনকে ব্যর্থ করার প্রথম প্রয়াশই সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর ভাবাবেগকে বিরুদ্ধ স্রোতে ঠেলে দেয়া। বাংলাদেশের মতো দেশে এ ভাবাবেগ হলো ধর্ম। তাই ধর্মীয় অনুভূতিকেই মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে জামাত-বিএনপি এবং তাদের প্রচার উইং, যাদের নেতৃত্বে আছেন অত্যন্ত ধূর্ত,ভয়ঙ্কর প্রতিক্রিয়াশীল মাহমুদুর রহমান। একথা আচার আচরণে প্রমানিত যে, মাহমুদুর রহমানের পেছনে অবস্থান নিয়েছেন ফরহাদ মজহার, পিয়াস করিমের মত একশ্রেনীর নিরপেক্ষতার ভেঁকধারী বুদ্ধিজীবি।
এটা পর্যবেক্ষনের বিষয় যে, ধর্মবিরোধী অপপ্রচারকে আরো বেগবান করার জন্যই ব্লগার রাজীব হত্যা, হত্যা পর্বের ছবি এবং মৃত রাজীবের নামে ধর্মবিরোধী লেখালেখি দ্রুতবেগে প্রকাশ এবং প্রচার করা হয়েছে দেশেবিদেশে। এসবের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল দু’টো। প্রথমত, দেশের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠিকে শাহবাগের আন্দোলনের বিপক্ষে ঠেলে দেয়া এবং দ্বিতীয়ত, আন্দোলনকারীদের মধ্যেও অংশগ্রহনে নিরুতসাহিত ও দ্বিধান্বিত করা। দু’টো ক্ষেত্রেই জামাত-বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে। প্রথমটি ব্যর্থ হয়েছে একারণে যে, বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তরিকভাবেই চায়। তাই তারা কেউ মনে করেন না যে, এটা কোন ধর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আর দ্বিতীয়টির পালে বাতাস লাগেনি একারণে যে, শাহবাগের আন্দোলনকারীরা প্রকাশ্যে বলেছেন, তারা কেউ নাস্তিক না কিংবা তাদের আন্দোলন কোন ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। প্রজন্ম চত্বরের এ যুক্তিটিকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে পর্যালোচনা করা যাবে, এর দার্শনিক ও তাত্ত্বিক পর্যালোচনায় অনেক তাত্ত্বিক ত্রুটি-বিচ্যুতি বের করা যাবে; এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য যে দেশের সংখ্যাগুরু মানুষের ধর্মীয়ভাবাবেগকে নিয়ে যে কোন অপপ্রচারের কৌশলকে অত্যন্ত কুশলতার সাথেই মোকাবিলা করতে হয় এবং শাহবাগের তরুনেরা সেটা সফলভাবেই করেছে। এ ক্ষেত্রে তার অকাট্য প্রমাণ ঘন ঘন অপপ্রচার পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে জামাত-বিএনপি চক্র।
একটু নির্মোহভাবে দেখলে এটা স্বীকার করতে কোন অসুবিধে নেই যে, শাহবাগ চত্বরের আন্দোলন সবার।এখানে নেই ব্যবধান কোন ধর্মীয় বিশ্বাসের,নেই ব্যবধান কোন বর্ণ-গোত্র শ্রেনীর। কারণ, এ আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের চেতনার আন্দোলন। ধর্মবিশ্বাসে্র ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটি কী? ধর্ম যার যার, দেশ সবার। ব্যক্তিগত বিশ্বাসে আমরা কেউ হিন্দু-মুসলমান-বোদ্ধ-খ্রিষ্টান, কেউ ধর্মবিশ্বাসী কিংবা অবিশ্বাসী হতে পারি, যা আমার একান্ত;কিন্তু চেতনায় আমি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের পক্ষে। এ সহজ কথাটিই শাহবাগ চেতনার মূলমন্ত্র। আর এ চেতনার পরিপন্থী তখনকার জামাত এবং এখনকার জামাত-বিএনপি। কিন্তু এ সহজ কথাটিতেই আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশের মানুষ ৭১-এ। মানুষ এ সহজ কথাটিতেই আস্থা রেখেছে এবং রাখছে আজকে ২০১৩-এ শাহবাগ চত্বরেও। ৭১-এ ধর্ম নিয়ে পানি ঘোলা করার যে অপচেষ্টা হয়েছিল তা তখন যেমন সফল হয়নি, এখনও হবে না।
কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের একাত্মতাঃ
অনেকেই প্রশ্ন করছেন, কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের একাত্মতা কি শাহবাগের আন্দোলনের ভারত-আশ্রয়ী অপপ্রচারকে উস্কে দিচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া যায় এভাবে যে,শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন যখন মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রত্যয়ী আন্দোলন, তখন বিশ্বের সমস্ত মানবতার পক্ষের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা জানাতেই পারেন। ৭১-এ শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীর মানুষ একাত্মতা জানিয়েছিলেন। আমরা একাত্মতা জানিয়েছিলাম ভিয়েতনামের মুক্তিপাগল মানুষের সাথে। আমরা একাত্মতা জানিয়েছি এবং এখনো জানাই প্যালেস্তাইনের মানুষের সাথে। আমরা একাত্মতা জানিয়েছিলাম বসনিয়া-হার্জেগোবেনিয়ার গণহত্যার বিরুদ্ধেও। এসবে কোন অন্যায় না হলে কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের একাত্মতায় দোষ কোথায়? আমরা যেমন সচেতন, কলকাতার বুদ্ধিজীবীরাও তেমনি সচেতন যার যার সার্বভৌম স্বকীয়তায়।
প্রতিবেশী হিসেবে ৭১-এ ভারত আমাদের পাশে ছিল। ভারতীয় সরকারের অনেক আগেই কিন্তু ভারতের মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন হাজার চেষ্টা করেও জামাতিরা একথা প্রতিষ্টিত করতে পারেনি যে, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ পূর্ব-পাকিস্তানকে ভারতের অংগ-রাজ্য বানানোর যুদ্ধ। মানুষ জামাতিদের এ অপপ্রচারে তখন আস্থা রাখিনি; এখনও রাখবে না। ভারতের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছেন তাঁদের নিজস্ব বিবেকের তাড়নায়। শুধু ভারত নয় বিশ্বের অনেক দেশের সরকার ও মানুষই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাথে একাত্মতা জানিয়েছেন। বিএনপির নেত্রী চিঠি লিখে আমেরিকাকে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ বা অন্যকথায় বাংলাদেশ দখল করতে আহবান জানালে কোন দোষ হয় না? দোষ হয় যখন বিশ্বের বিবেকবান মানুষ মানবতার পক্ষে কথা বলেন তখন?
একথা সবাইকে মনে রাখতে হবে, জামাত-বিএনপির রাজনীতির মূলমন্ত্রই ধর্ম নিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। সে ক্ষেত্রে ভারতবিদ্বেষ তাদের দাবাড় শেষ ঘুটি। বাংলাদেশের মানুষ যত তাড়াতাড়ি জামাত-বিএনপির এ ঘৃন্য রাজনীতি সম্বন্ধে সচেতন হবে ততই মংগল। মোদ্দা কথা এটাই যে, শাহবাগ চত্বরের প্রজন্মের আন্দোলন সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির কফিনে এবার শেষ পেরেকটা পুঁতে দেবেই। জয় বাংলা।
মার্চ ১, ২০১৩
(লেখকের ফেসবুক নোট থেকে)
২| ১০ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:২৭
গান পাগলা বলেছেন: যত কিছু কন বাই, ১০-১২ জনের বেশী ত পাইনা,হাছা কইরা কনতো আপনে কদিন আছিলেন,ট্যাকা আহন বন্ধ ওইলো ভাইরা সব ভাগলো।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:১৬
সিনানথ্রোপাস বলেছেন: পনি অনেক কিছু বলে-গেয়ে-শুনিয়ে কিছুতেই আপনার বক্তব্য জাস্টিফাই করতে পারেন নি, এটা আমার কাছে মনে হয়েছে আপনার নিজস্ব প্রবোধ ।
আপনাকে প্রথম এটা স্বীকার করে এগোতে হবে যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামিলিগ, বি এন পি এবং ইসলামী দলগুলো- এই তিন প্রজাতিকে বাদ দিয়ে চিন্তা করাটাই ভুল ।
এদের উপস্থিতি ও প্রতিক্রিয়াকে আমলে নিয়েই রাজনীতি।
আপনি খুবই একপেশে আলোচনা করেছেন। বি এন পির রাজনীতির শেষ গুটি কখনই ভারত বিরোধিতা নয় যতটা না আওয়ামীলীগ ভারত তোষণে রাজনীতি করে ।
বঙ্গবন্ধুর চরম জাতীয়তাবাদ মূলত জিয়ার হাত ধরেই পূর্ণতা পেয়েছে, টাই আমি বলব সম্পূর্ণই নিরেপেক্ষ ভঙ্গিতে বিচার করুন নতুবা সরা সরি পক্ষ নিন ।