নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হরতাল কোন গণতান্ত্রিক পন্থা নয়...

১২ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:০৭

হরতাল পালনের নামে বিরোধী দল দেশব্যাপী চালায় ভাঙচুর আর জ্বালাও-পোড়াও’র রাজনীতি। দু’দশক ধরে সব হরতালই হয় শক্তি প্রদর্শনের মহড়া হিসাবে। আমাদের দেশে হরতাল কালচার আমদানি করেছিলেন জননেতা মওলানা ভাসানী। তখন স্বতঃস্ফূর্ত এবং জনমুখী ছিল হরতাল। তখনকার হরতাল ছিল পাক শাসকদের (শোষক) মোকাবিলার লক্ষ্যে। তখন আমজনতা নিজেরাই হরতাল পালন করত, হরতাল পালনের জন্য কাউকে বাধ্য করা হতো না। সে হিসাবেই, হরতালকে বলা হয় গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু হরতালের নামে এখন চলছে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর আর লুটতরাজ এটাও কি গণতান্ত্রিক অধিকার? যারা যখন সরকারে থাকেন তখন হরতালের বিরুদ্ধে থাকেন। তখন তারা বুঝতে পারেন, হরতালে দেশের ক্ষতি হয়, প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। বিরোধীদলকে এসব বিষয়ে জ্ঞান দান করতে থাকেন। প্রকৃত অর্থে হরতালের ফলে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়ে থাকে। হরতালে দেশের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির একটা হিসাব পাওয়া যায় ইউএনডিপির স্থানীয় গবেষণা থেকে। ২০০৫ সালে প্রকাশিত ইউএনডিপির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৯০-১৯৯১ অর্থবছর থেকে ১৯৯৯-২০০৭ অর্থবছর পর্যন্ত সময়কালে বাস্তবায়িত হরতালের কারণে প্রতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গড়ে ক্ষতি হয়েছে ৮৪ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা! কেন হরতাল সফল হয়, কীভাবে হয় তা আর সাধারণ মানুষের জানতে বাকি নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষ যেটা জানে না তা হলো, কর্মনাশা হরতাল আদৌ কি তাদের কোনো স্বার্থ রক্ষা করতে পারে? সমস্যা সমস্যার জায়গাতেই থাকে। বরং হরতাল সমস্যাটাকে আরও ঘণীভূত করে; আরও প্রকট করে। নিছক ক্ষমতার লড়াইয়ের অংশ হিসেবে, এক দলকে হটিয়ে আরেক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী হরতাল ডেকে জনগণকে তাদের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা সংবিধানে প্রদত্ত ‘গণতান্ত্রিক অধিকার’-এর পর্যায়ে পড়ে না। এতে হরতাল আহ্বানকারীদের কথিত ‘গণতান্ত্রিক অধিকার’-এর নামে বাদবাকি জনগণের ‘গণতান্ত্রিক ও নাগরিক অধিকার’ হরণ করা হয়। বস্তুত আমাদের দেশে এখন যে ধরনের হরতাল হয় তা রাজনৈতিক সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছুই নয়। হরতাল সাংবিধানিক অধিকার নয়, এমনকি ‘গণতান্ত্রিক’ বা ‘নাগরিক’ অধিকারও নয়। হরতাল হচ্ছে প্রকৃত অর্থে ‘আইন অমান্য করার আন্দোলন’। সংবিধান কোনো নেতা-নেত্রী বা কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীকে এভাবে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপর্যস্ত করার, কিংবা রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন করার অধিকার কখনই দেয়নি। সংবিধানের ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার কোথাও হরতালকে ‘সাংবিধানিক অধিকার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়নি। সাংবিধানিক অধিকার, নাগরিক অধিকার যে কোনো অর্থে হরতাল নামের এ ভয়াল আতঙ্ক কোনো অধিকারের মধ্যেই পড়ে না। এমতাবস্থায় হরতাল নামক তথাকথিত গণতান্ত্রিক অধিকারের সংস্কার-আধুনিকায়ন করে বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে। এতে জনভোগান্তি দূর হবে, কল্যাণ-স্বস্তি ফিরে আসবে জনগণের মাঝে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.