নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

তালেবান রাষ্ট্র বানানোর মিশনে হেফাজতে ইসলাম!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯

বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় হেফাজতে ইসলাম নামে অখ্যাত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন দেশে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ করলো গত ৬ এপ্রিল। মতিঝিল শাপলা চত্বরের ওই সমাবেশ থেকে সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কুরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা, ব্যক্তি ও বাক স্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যাভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ এবং মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতি বন্ধ করা, নারীনীতি ও শিক্ষানীতি বাতিল, ঢাকাসহ দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্র্য স্থাপন বন্ধ করা, ব্লগারদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসিসহ ১৩ দফা দাবি পেশ করে সরকারের কাছে। এসব দাবি

বাস্তবায়নে একমাসের সময়সীমা বেধে আলটিমেটামও দেয় তারা। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি দেশের সংবিধান পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এসব দাবি সরকার মেনে নিলে বাংলাদেশ পরিণত হবে তালেবান রাষ্ট্রে। পাকিস্তান, আফগানিস্তানের চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে জাতি। এমন আশঙ্কা করছেন দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ছাত্র-শিক্ষক, নারীনেত্রী, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা হেফাজতের এসব দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলছেন, এদের দাবি শুধু হাজার বছরের সংস্কৃতির ওপরই আঘাত নয়, দেশের অর্থনীতির ওপরও সুপরিকল্পিত আঘাতের নীলনকশা। এদের দাবি মানা হলে থমকে যাবে উন্নয়নের চাকা। অচল হয়ে পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। বিঘিœত হবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা। হেফাজতের ১৩ দফার বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় এই আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। তাদের দাবি, জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত না হলে ভেঙে পড়বে জাতির মেরুদ-। আর নারীদের ঘরে বন্দী রাখার পুরোনো কৌশল দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে মধ্যযুগের অন্ধকারে। সরকারের উচিত হবে দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের কল্যাণে এসব দাবি উপেক্ষা করা। হেফাজতে ইসলাম নিজেদের অরাজনৈতিক দাবি করলেও আসলে তারা অরাজনৈতিক দল নয়। হেফাজতের সামনের সারি থেকে পিছনের সারির বেশিরভাগ নেতাই কোনো না কোনো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সদস্য। এমনকি হেফাজতের প্রধান আল্লামা শফীর আশেপাশের অনেকে সাবেক জামায়াত-শিবিরের নেতা ছিলেন। ফলে তারা নিজেদের যতোই অরাজনৈতিক দাবি করুক না কেন আসলে তারা শতভাগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে পরিকল্পিত উপায়ে মাঠে নেমেছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য শতবছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করা। বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর মিশনে নেমেছে হেফাজতে ইসলামÑএমনই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্টজনরা। আর হেফাজতে ইসলামের পিছনে রয়েছে এক ধরনের ধর্মাশ্রয়ী সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দল। হেফাজতকে নেপথ্য পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে ধর্মাশ্রয়ী সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি ১৮ দলীয় জোটের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এবং ক্ষমতাসীন মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টিও হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ সফল করার ক্ষেত্রে নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।



কী আছে ১৩ দফায়

দেশব্যাপী নানা জল্পনা-কল্পনা এবং অস্থিরতা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর আতংকের মধ্য দিয়ে গত ৬ এপ্রিল রাজধানীতে কয়েক লাখ মুসল্লির মহাসমাবেশে ১৩ দফা ঘোষণা করে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীসহ অন্য নেতারা। আগামী এক মাসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের হুমকি দেন তারা। বিএনপির চেয়ারপার্সনের হয়ে সংহতি জানাতে আসা বিএনপি নেতাদের পাশে রেখে হেফাজত নেতারা হুমকি দেন, ক্ষমতায় থাকতে হলে বা আসতে হলে ১৩ দফা মানতে হবে। অন্যথায় অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি। হেফাজতের দাবির মধ্যে আছে আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস। আছে ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যাভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা। সরকারিভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা, মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘেœ নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা, রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত এনজিও এবং খ্রীস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা। দাবির তালিকায় আছে- রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা। দাবি তোলা হয়েছে, অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। অর্থাৎ হেফাজতের সব দাবি মানতে হলে ভেঙে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক অপরাজেয় বাংলাসহ সব ভাস্কর্য, বন্ধ করে দিতে হবে নারী-পুরুষের সহশিক্ষা বা মেলামেশাও। পাশাপাশি দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো যাবে না।



দেশ কি তালেবানী রাষ্ট্রের দিকে!

৩০ লাখ শহীদ আর আড়াই লাখ মা-বোনের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনের ৪২ বছর পরে এসে প্রিয় মাতৃভূমি কি তালেবানী রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে? অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে কি উগ্রবাদীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে? রুদ্ধ হয়ে যাবে কি নারীর পথচলা? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে জেগে ওঠা গণজাগরণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা আর তা বাস্তবায়নে প্রকাশ্য হুমকির পর এমন আতঙ্কজনক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। উগ্রবাদীদের সঙ্গে বিএনপি নেত্রীসহ তাঁর জোটের প্রকাশ্য সম্পর্ক ও ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির হেফাজত সম্পৃক্ততা; পাশাপাশি হেফাজতে ইসলাম ও তাদের কর্মকা-কেন্দ্রীক সরকারের নমনীয়তা আতঙ্ককে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। অথচ, দেশের স্বাধীনতা ও সংবিধান, নারী অধিকারবিরোধী এ দাবি মানতে হলে ভেঙে ফেলতে হবে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক অপরাজেয় বাংলাসহ সকল ভাস্কর্য, বন্ধ করে দিতে হবে নারী-পুরুষের সহশিক্ষা ও চলাচল। নেতৃত্ব বাদ দিয়ে বোরখা পরে ঘরের চার দেয়ালে বন্দী থাকতে হবে প্রধানমন্ত্রীসহ সকল নেত্রী এমনকি তাদের সমর্থক বিএনপি চেয়ারপার্সনকেও। এতোদিন জনরোষ এড়াতে হেফাজত নেতারা প্রচার চালিয়েছিল তাদের আন্দোলনে অন্য কোনো দাবি নেই। দাবি কেবল মহানবীর বিরুদ্ধে কটূক্তিকারী ব্লগারদের শাস্তি। তবে শুরু থেকে সরকারের নমনীয় অবস্থানের সুযোগ এবং সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থনের কারণে ক্রমেই বাড়তে থাকে জামায়াত সংশ্লিষ্ট এ সংগঠনের দাবির সংখ্যা। হেফাজতের চতুর্থ দাবি মানতে হলে ছেলে ও মেয়েদের একসঙ্গে শিক্ষা বন্ধ করতে হবে। একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলে ও মেয়ে পড়তে পারবে না। বন্ধ করে দিতে হবে একই সঙ্গে চাকরি। ছেলে আর মেয়েদের মেলামেশাও বন্ধ করতে হবে। নারীদের পর্দা ছাড়া পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না বলেও জানান হেফাজত ও ১৮ দলীয় জোট নেতা নেজামী। হেফাজত নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, ইসলাম নারীদের বলেছে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে। এখানেই শেষ নয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক-সিনেমায় স্বাধীনতাবিরোধীদের দেখানো যাবে না বলে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আবদার তাদের। হেফাজত দাবি করছে, গণমাধ্যমে ধর্মীয় লেবাসধারী লোকদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়। এতে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব জন্মেÑ এটা বন্ধ করতে হবে। সংগঠনের ১৩ দফা দাবির মধ্যে নবম দাবি এটি। এই দাবির আড়ালে হেফাজত মূলত মুক্তিযুদ্ধের নাটক-সিনেমার কথাই বুঝিয়েছে। সে সময়কার মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামীর স্বাধীনতাবিরোধীদের পোশাকের প্রতি ইঙ্গিত করেই এই দাবি তোলা হয়েছে। তাহলে কি ’৭১ নিয়ে নাটক-সিনেমা বানানো যাবে না? জানতে চাইলে হেফাজত ও ১৮ দলীয় জোট নেতা আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, কেবল ’৭১-এর নাটক সিনেমাতেই নয়, অন্যগুলোতেও ইসলামী লেবাসধারীদের খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরা হয়।’ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার-আলবদররা যে পোশাকে ছিলেন তা কেন তুলে ধরা যাবে না, জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। কৌশলে জামায়াত-শিবিরের নেতাদের মুুক্তি দাবি করে হেফাজত দাবি করা শুরু করেছে, দেশে আলেম ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও গণহত্যা চলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। আর গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি চেয়েছে তারা। শাহবাগে গণজাগরণ শুরুর পর চুপ থাকলেও কদিন পরই এর সঙ্গে জড়িতদের ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামে হেফাজতে ইসলাম। একই দাবি জানায় জামায়াতে ইসলামীও। অবশ্য হেফাজতের কৌশলী দাবি, তাদের দাবির সঙ্গে জামায়াতের দাবির কোনো সম্পর্ক নেই। নিজেদের জামায়াত সম্পৃক্ততাও অস্বীকার করছেন হেফাজত নেতারা। যদিও হেফাজতের প্রায় সব নেতাই একযুগ ধরে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ রাজনীতি করছে। হেফাজতের এসব দাবি মানতে হলে পুরো পাল্টে দিতে হবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা, শিক্ষা পদ্ধতি। বন্ধ করে দিতে হবে রাষ্ট্রীয় বহু আচার; মুক্তিযুদ্ধের নাটক-সিনেমা নির্মাণ করা যাবে না, নারী-পুরুষের একত্রে চলাফেরা, চাকরি, পড়ালেখাও করা যাবে না।



সরকারকে আগেই সতর্ক করেছিল পুলিশ

হেফাজতে ইসলাম-এর প্রধান শাহ আহমদ শফির ব্যাপারে আগে থেকেই সরকারকে সতর্ক করেছিল পুলিশ। ২০১২ সালের ১১ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো এক প্রতিবেদনে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়। স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে পাঠানো সে প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছিল পুলিশ সদর দপ্তর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দলটি জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ঐক্যজোটের মতো সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে যুক্ত। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হেফাজতের প্রধান আহমদ শফি বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোটের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যোগাযোগ রাখছেন। অদূর ভবিষ্যতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে হেফাজত সমর্থন যোগাতে পারে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শাহ আহমদ শফি সরকারের বিভিন্ন

সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের উস্কে দিচ্ছেন। হাটহাজারী এলাকার মাদ্রাসাগুলো নিয়ে তৈরি ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফি এবং তার ছাত্র-শিক্ষকদের কর্মকা-ের কারণে চাপের মুখে রয়েছে হাটহাজারী পুলিশ। এছাড়া হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফির নেতৃত্বেই দেশের সব কওমি মাদ্রাসা চলে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। এতে বলা হয়, সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে একটি বিশেষ মতাদর্শকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে আসছে। যদিও জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তারা দাবি করছে। সংগঠনটির সম্পর্কে রিপোর্টে আরও বলা হয়, ২০০৮ সালের ১১ এপ্রিল পুলিশ ইসলামী ঐক্যজোটের একটি মিছিলে বাধা দেয়, যার প্রতিবাদে হাটহাজারী দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা মাঠে নেমে আসে। তারা সেদিন সন্ধ্যায়ই হাটহাজারী মডেল পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায়। প্রতিবেদন মতে, এই হামলা নিয়ে হাটহাজারী পুলিশ মামলার প্রস্তুতি নিলেও মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের চাপের মুখে হামলাকারীদের কথা উল্লেখ না করেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়েছিল। এছাড়া ২০১০ সালের ২৫ ফেব্র“য়ারি পুলিশ চট্টগ্রামে হেফাজতকে মিছিল করতে দেয়নি। এরপর ওই মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পুলিশের ওপর হামলা চালায়, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে, এমনকি পুলিশের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেয়। ২০১২ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি সেসব ছাত্র-শিক্ষকরাই লোকনাথ ব্রহ্মচারী মন্দিরে এবং এর পরদিন হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এ ঘটনায় ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সদর দপ্তরের এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০১২ সালের আগস্ট মাসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর থেকে সরকার আর বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। রহস্যজনক কারণে এ বিষয়টি হিমাগারে চলে যায়।



বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বুদ্ধিজীবীরা যা বললেন

হেফাজতের ১৩ দফার দাবিকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আখ্যায়িত করে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নতুবা কঠিন সংকটে পড়বে দেশ। এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী দাবি কেউ আশা করে না। এসব দাবি কেউ মানবে না। আমরা আশা করছি, সবার আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর একটা সমাধান আসবে। বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, হেফাজতে ইসলামের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদসহ তাদের অধিকাংশ দাবি সংবিধানপরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী। কোনোভাবেই এসব দাবি বাস্তবায়ন করা যাবে না। শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তোলা প্রশ্ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আলেম-ওলামা, শিক্ষাবিদ, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছে। সুতরাং এই শিক্ষানীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৩ দফা দাবি ২০১৩ সালের রাজনীতির বাস্তবতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে। এটি দেশকে পেছনে ঠেলে দেয়ার চিন্তা। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে এ ধরনের দাবি উত্থাপনেরই সুযোগ নেই, মেনে নেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে এ দাবি অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত ছিল, হেফাজতের সমাবেশের ধিক্কার জানানো। কিন্তু এর পরিবর্তে তিনি হেফাজতে ইসলামকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নারী সাংবাদিকদের ওপর হেফাজতের হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করে মাহফুজা খানম বলেন, অন্যথায় নারী সমাজ লাখ লাখ নারীকে এক করে সমাবেশ করবে। হেফাজতের দাবি সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থী মন্তব্য করে সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এদের দাবি মানলে আমরা মধ্যযুগে ফিরে যাবো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা মূল্যবোধ আর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে দেশ পরিণত হবে তালেবান রাষ্ট্রে। হেফাজতের দাবিগুলো অযৌক্তিক উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও জানিপপ (জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, এরা যদি এ দেশে একবার সুযোগ পেয়ে যায়, তাহলে

আন্তর্জাতিক বাহিনী এসে হানা দেবে। এটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক চক্রান্ত মন্তব্য করে প্রফেসর কলিমউল্লাহ বলেন, বিষয়টি হাল্কাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এদের দাবি মানা হলে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমে আসবে। এদের দাবি মেনে নেয়ার অর্থ হচ্ছে পাকিস্তানের নীতি গ্রহণ করা উল্লেখ করে গণঐক্যের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দেশকে তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য একটা গোষ্ঠী উঠে পড়ে লেগেছে। সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, হেফাজতের সমাবেশে নারী সাংবাদিকদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে; তাতে মনে হচ্ছে, আফগানিস্তানে তালেবান নারীদের যেমন পশ্চাৎপদ করে ফেলেছিল, বাংলাদেশেও তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, তাদের কথায় শিক্ষানীতি, নারীনীতির বাস্তবায়ন বন্ধ করা যাবে না। তাদের কথায় নারীরা ঘরে ফিরবে না দাবি করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন বাংলার নারী পোশাককর্মীরা। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের ৯০ শতাংশ শ্রমিক নারী। এসব নারী যদি কাজ বন্ধ করে ঘরে চলে যান, দেশের অর্থনীতির কি হবেÑ এই প্রশ্ন রাখেন নাসিমুন আরা হক। হেফাজতে ইসলামকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের সমালোচনা করে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য হাজেরা সুলতানা বলেন, এদের সঙ্গে কোনো আপোস করার সুযোগ নেই। এদের প্রতিহত করতে হবে। অনতিবিলম্বে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বাতিলের দাবি জানিয়ে জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কর্মজীবী নারীর সভাপতি শিরিন আখতার বলেন, এসব দাবি অবৈধ। কারণ, এ সকল দাবি স্বাধীনতা, সংবিধান ও নারী অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব মানলে দেশ মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে। অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, ১৩ দফা যদি মানতে হয়, তবে সেনাবাহিনীতে যে নারী সদস্যরা রয়েছেন, তাদেরও বোরকা পরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীকে রাজনীতি ছেড়ে বোরকা পরে ঘরে ফিরে যেতে হবে।



তালেবান রাষ্ট্র বানানোর মিশনে হেফাজতে ইসলাম!

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সমাজবিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে ইসলামিস্ট নামে তালেবানপন্থীরা, যাদের নেতা জামায়াত এবং সঙ্গে গণতান্ত্রিক দল নামে পরিচিত বিএনপি। অন্যদিকে গণতন্ত্র ও সেক্যুলারিজমে বিশ্বাসী বলে পরিচিত রাজনৈতিক দলগুলো। জনসমর্থনের বিচারে সেক্যুলারিস্টরা হয়তো কিছুটা শক্তিশালী। কিন্তু পেশী শক্তির বিচারে তালেবানপন্থী হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াত-শিবিরের অবস্থা ভালো। সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীও এদের অপকৌশলের সঙ্গে পেরে উঠছে না।

ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের হরতালের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান হরতালের কোনো সম্পর্ক নেই। এই হরতাল জনসমর্থননির্ভর শান্তিপূর্ণ হরতাল নয়। সম্পূর্ণভাবে সন্ত্রাসনির্ভর হরতাল। এই হরতালে হরতালের নিয়মকানুনও মানা হয় না। হরতাল ডাকা হয় যেদিন, তার আগের দিনই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। মনে হয়, হরতালের পক্ষে জনসমর্থন অর্জন এই হরতালের উদ্দেশ্য নয়, জনসাধারণকে ভয় দেখানোই এই হরতালের উদ্দেশ্য। বাংলাদেশে হরতালের নামে এখন যা ঘটানো হচ্ছে, তা মোটেই হরতাল নয়, বরং এটি আফগানিস্তানে তালেবানি সন্ত্রাসের সম্পূর্ণ অনুকরণ। একই ধরনের চোরাগোপ্তা হামলা, বাড়ি-গাড়ি পোড়ানো, নিরীহ মানুষ হত্যা, ধর্মীয় স্লোগানে মানুষকে উত্তেজিত করা ইত্যাদি ধ্বংসাত্মক কর্মকা- আফগানিস্তানে তালেবানরা করে চলেছে। গণতান্ত্রিক সরকার এই রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতা ও সন্ত্রাস রোধে সর্বশক্তি প্রয়োগে সাহসী ও সক্ষম না হলে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়েই এই ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে সক্ষম। যেমন তারা করেছিল ত্রিশের ইউরোপে। তাদের পেছনে জনসমর্থন ছিল না। কিন্তু গুপ্তহত্যা, অগ্নিকা- এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি দ্বারা জনগণকে ভয় পাইয়ে স্পেনে ফ্রাঙ্কো, ইতালিতে মুসোলিনী এবং জার্মানিতে হিটলার ক্ষমতা দখল করেছিল। সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে হরতালের নামে এখন যা ঘটানো হচ্ছে, তা যে আফগানিস্তানের তালেবানি সন্ত্রাসের সম্পূর্ণ অনুকরণ অথবা তাদের কাছেই ট্রেনিংপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীদের কাজ। ফলে বিএনপি-জামায়াত ও সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় হেফাজতে ইসলাম নামক যে উগ্র-মৌলবাদীগোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে তাতে দেশের শান্তিপ্রিয় জনতা উদ্বিগ্ন-শঙ্কিত। হেফাজতে ইসলাম কি বাংলাদেশকে তালেবান রাষ্ট্র বানানোর মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে?

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:১৮

শাহীন উল্লাহ বলেছেন: Ha ha ha ha
Eai chorer orthoniti amra chaina.
j khane orthomontri chor k r o rin dite bole!!!! r a niye jara kotha bole tara naki desher unnoti chay na!!!!

chor hon,desher unnoyene sahajjo korun.

bus,track,footpat,hokar,rickshaw,ghatkothay chada baji nei????

keno eaisob bondho ami chaite parbo na?????

hasi pailo, desh ekon moddho juger theke o kharap obosthay ache.

r boka narira, western er meyera 200 year age o sompottir malik hotet parto na, ja islam dhormo diyeche onek age,

age meye sontan hole janto kobor dito, islam ta theke mukti diyeche,

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪

সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫

শাহীন উল্লাহ বলেছেন: কোনো জবাব নাই

বাংলাদেশের মেয়েরা একমাত্র ভাগ্যবান যে, যে দেশের সরকার দলীয় নেত্রী এবং বিরোধী দলের নেত্রী দুজনই মহিলা (তবু ও আবার ত্রিম বছরের ও বেশী ধরে দলের প্রধান!!!!), পৃথিবীতে আর কোনো দেশে এমন নজির আছে কি না সন্দেহ!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.