![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুজাহিদের মামলার বিচারিকপ্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে আজ। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের আসামি ও জামায়াতের বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের পক্ষে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন গতকাল শেষ হয়েছে। তাদের বক্তব্যের জবাবে গতকাল সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনও শুরু করেছে প্রসিকিউশন। আজ বুধবার এক ঘণ্টার মধ্যে প্রসিকিউশনকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং ২ সদস্য বিচারপতি মুজিবর রহমান মিয়া ও বিচারক শাহিনুর ইসলাম সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল এ আদেশ দেয়।
এর মধ্য দিয়ে আসামি মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ হতে যাচ্ছে। প্রসিকিউশনের সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ বুধবার আইন অনুসারে মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করবে অথবা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখবে ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, এরইমাঝে ২ ট্রাইব্যুনালে মোট ৪টি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। এর সবকটি মামলাই বিচারিকপ্রক্রিয়া শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিল। তাছাড়া ট্রাইব্যুনাল-১ এ বর্তমানে আসামি গোলাম আযমের মামলাটিও বিচারিকপ্রক্রিয়া শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ আছে।
গতকাল মঙ্গলবার ৬ষ্ঠ ও শেষ দিনের মতো আইনি অবস্থানে (ল পয়েন্টে) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামি মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ও অন্য আইনজীবী এমরান সিদ্দিকী। এরপর আসামিপক্ষের বক্তব্যের জবাবে সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। আজ বুধবার এক ঘণ্টার মধ্যে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করতে প্রসিকিউশনকে আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। শেষ দিনের যুক্তিতর্কের প্রথম অর্ধ্বে আইনজীবী এমরান সিদ্দিকী আসামি মুজাহিদের বিরুদ্ধে ৫ নম্বর অভিযোগ এবং দ্বিতীয় অর্ধ্বে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ৬ ও ৭ নম্বর অভিযোগের আইনি অবস্থানে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। সবশেষে আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন, ‘মুজাহিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের বিষয়ে কোনো সাক্ষীকেই হাজির করতে পারেননি প্রসিকিউশন। বাকি ৬টি অভিযোগও প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। মুজাহিদ একজন সৎ লোক এবং পাবলিক ফিগার। তার বিরুদ্ধে মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামির কাঠগড়ায় থাকা মুজাহিদও কিছু বলতে চান। এ সময় ট্রাইব্যুনাল তাকে কিছু বলার থাকলে আইনজীবীর মাধ্যমে বলতে বলেন। এরপর আব্দুর রাজ্জাক মুজাহিদের কাছে গিয়ে তার বক্তব্য শুনে এসে ট্রাইব্যুনালে উত্থাপন করেন।
মুজাহিদের উদ্ধৃতি দিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘তিনি একজন অসহায় মানুষ। প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে অনেক কিছু লিখেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা হয়েছে। তাকে মিডিয়ার দ্বারা অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জš§সূত্রেই বাংলাদেশের নাগরিক এবং তার বয়স ৬৬ বছর। কিন্তু তার মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে মুজাহিদ আশা প্রকাশ করেন, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
এরপর সমাপনী যুক্তিতর্ক শুরু করেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। তিনি আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের জবাবে বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী হত্যাও গণহত্যার শামিল। ১৯৪৮ সালের আন্তর্জাতিক জেনোসাইড কনভেনশনে ৪টি শ্রেণীকে হত্যা গণহত্যার শামিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছেÑ জাতি, নৃ-গোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণ। বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন বাঙালি জাতীয়তার ধ্বজাধারী। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিশেষ করে শেষ পর্যায়ে জাতিকে মেধাশূন্য করতে তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সুতরাং, এটিও গণহত্যা।’
এর আগে গত ২২ মে থেকে শুরু করে আরও ৪ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আব্দুর রাজ্জাক ও মিজানুর রহমান। আর গত ৬ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ৪ কার্যদিবস রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ২ প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও মোখলেসুর রহমান।
গত ৫ মে মুজাহিদের পক্ষে একমাত্র সাক্ষী হিসেবে সাফাই সাক্ষ্য দেন তার ছোট ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর। অবশ্য ট্রাইব্যুনাল সাফাই সাক্ষীর সংখ্যা ৩ জন নির্ধারণ করে দিলেও আর কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি আসামিপক্ষ। অন্যদিকে মুজাহিদের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।
গত বছরের ২১ জুন মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৭টি ঘটনাসহ ৩৪টি অভিযোগে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-২। ১৯ জুলাই মুজাহিদের বিরুদ্ধে ২৯ পৃষ্ঠার ওপেনিং স্টেটমেন্ট (সূচনা বক্তব্য) উত্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু এবং ২ প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান ও মীর ইকবাল হোসেন।
অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে শহীদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, সাধারণ মানুষ হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও দেশত্যাগে বাধ্য করা ইত্যাদি। মুজাহিদ একক ও দলবদ্ধভাবে সরাসরি জড়িত থেকে ও নেতৃত্ব দিয়ে কিংবা সহযোগিতা ও নির্দেশ দানের মাধ্যমে এসব ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত বছরের ১৬ জানুয়ারি মুজাহিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল-১ এ ১০৯ পৃষ্ঠার ৩৪টি বিভিন্ন ঘটনাসহ মোট ৬ হাজার ৬৮০ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুর ও ঢাকাসহ সারা দেশে সাধারণ মানুষকে হত্যা, গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় মুজাহিদের বিরুদ্ধে। ২৬ জানুয়ারি এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদলের) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল-১ মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করে।
২| ০৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৫৪
চলতি নিয়ম বলেছেন: অপেক্ষায় আছি, ফাঁসি শুনার জন্য
৩| ০৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৫৬
দায়িত্ববান নাগরিক বলেছেন: গো আজমের রায় কবে ?
৪| ০৫ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
জহির উদদীন বলেছেন: মুজাহিতের নয় মুজাহিদের......
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:১০
যোগী বলেছেন:
অপেক্ষায় আছি, ফাঁসি শুনার জন্য