![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের রাজনীতিকদের পদাচারণায় সরগরম সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল। বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিরা এ বিখ্যাত হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকেন। সম্প্রতি সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী এবং জাসদ সভাপতি আসম আবদুর রব।
আগে থেকে এইচএম এরশাদ ও রওশন এরশাদ সিঙ্গাপুরে অবস্থান করলেও বেগম খালেদা জিয়া ও মোসাদ্দেক আলী ফালু কয়েকদিন পর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যোগ দেন, এরই ফাঁকে সেখানে হাজির হন আসম আবদুর রব। সিঙ্গাপুরের মতো একটি ছোট দেশে তাদের এই একসঙ্গে উপস্থিতি দেশে অনেক রাজনৈতিক প্রশ্নের উদ্রেক করে। ফলে সিঙ্গাপুরে আসলে কী হয়েছে বা হচ্ছে তা নিয়ে মানুষ উৎসুক হয়ে আছেন। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনায় উত্তপ্ত জোট-মহাজোটের রাজনীতি।
অনেক উৎসুকতা তৈরি করে নয় দিনের সফর শেষে সিঙ্গাপুর থেকে অবশ্য দেশে ফিরেছেন এরশাদ ও রওশন এরশাদ। ১৮ জুন রাত পৌনে ১১টায় তারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে জাপা নেতাকে স্বাগত জানান জাতীয় পার্টির নেতারা। এইচএম এরশাদ রাত পৌনে ১১টায় বিমান থেকে অবতরণ করে বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই বাসার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। যা এর আগে আর কখনো ঘটেনি।
এরশাদ ও রওশন এরশাদ দেশে ফিরে এলেও বেশ কয়েক দিন একই দেশে অবস্থান ও একই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুবাধে খালেদা জিয়ার সঙ্গে এরশাদের দেখা হয়েছিল কিনা বা দেখা হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো কথা হয়েছিল কিনা সে বিষয়টি রহস্যাবৃতই থেকে গেছে। তবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রওশন এরশাদ দেখা করেছেন এ বিষয়টি অনেকগুলো সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এরশাদের একান্ত সচিব মেজর খালেদ আকতার (অব.) এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে খালেদা-এরশাদ বৈঠক এটি স্রেফ গুজব, এর কোনো ভিত্তি নেই, এরকম কোনো সম্ভাবনাও ছিল না।’ এরশাদের সচিব আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া হায়াত হোটেলে আর এরশাদ প্যান প্যাসিফিক হোটেলে উঠেছেন। তাই তাদের মধ্যে বৈঠকের বিষয়টি স্রেফ গুজব ছাড়া আর কিছু নয়।’
অবশ্য এরশাদের একান্ত সচিব মেজর খালেদ আকতার (অব.) খালেদা জিয়ার সঙ্গে রওশন এরশাদের বৈঠক বা দেখা হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তাছাড়া দুই নেতা দুই হোটেলে অবস্থান করলেই তাদের মধ্যে বৈঠক হতে পারে না এ বিষয়টিরও কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি এরশাদের একান্ত সচিব।
খালেদা জিয়া ১৬ জুন রাতে সিঙ্গাপুর পৌঁছান। এইচএম এরশাদের দেশে ফেরার কথা ছিল ১৬ জুন। কিন্তু সেদিন তিনি দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হননি। এরশাদ সিঙ্গাপুর ছাড়েন ১৮ জুন। বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ১৬ থেকে ১৮ জুন এরশাদ সিঙ্গাপুরে কি করেছেন। ১৬ জুন এরশাদ দেশে ফিরবেন এ বিষয়টি অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত থাকলেও কেন সিঙ্গাপুর সফর ২ দিন বাড়ানো হলো তার কোনো ব্যাখ্যা জাতীয় পার্টি থেকে দেওয়া যায়নি। অবশ্য চিরায়ত নিয়ম অনুযায়ী বলা হয়েছে, চিকিৎসকের পরামর্শেই এরশাদের সিঙ্গাপুর সফরের সময়সূচি দুই দিন বাড়ানো হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী সিঙ্গাপুর যান ১৫ জুন। খালেদা জিয়ার এক দিন আগে। জানা গেছে তিনি কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ বিষয়ে এরশাদের একান্ত সচিব জানান, ‘বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলীও মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তিনি শুনেছেন; তবে তার সঙ্গেও এরশাদের দেখা বা কথা হয়নি।’
একই সঙ্গে জাসদ সভাপতি আসম আবদুর রব সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অবস্থান করলেও তার সঙ্গে খালেদা জিয়া কিংবা এইচএম এরশাদের কোন বৈঠক হয়েছে কিনা সে বিষয়টিও নিশ্চিত নয়। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন আসম আবদুর রবের সঙ্গে এইচএম এরশাদের ভালো সম্পর্ক ১৯৮৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই আছে। সে হিসেবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসম রবের বৈঠক বিষয়টি এতোটা নিশ্চিত না হলেও ভোটের রাজনীতি নিয়ে এরশাদ-রব যে বৈঠক হয়েছে সে বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত।
৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ, ওই দিনের সৃষ্ট বিভিন্ন ঘটনা এবং প্রথম থেকেই গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে এরশাদ তথা জাতীয় পার্টির অবস্থানসহ অনেকগুলো বিষয়ে রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের চেষ্টা চলছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। হেফাজত বিএনপি ও জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে নতুন যে ধারার সৃষ্টি করতে যাচ্ছে তার অংশ হিসেবেই বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ ব্যক্তিরা সিঙ্গাপুরে এক হয়েছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রবলভাবে মনে করছেন। তারা এও মনে করছেন হেফাজতে ইসলামকে কাছে টানার জন্য এরশাদ শেষ মুহুর্তে মহাজোট ত্যাগ করে বিএনপির সঙ্গে জোট গড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে এরশাদ বিএনপির কাছ থেকে কী সুবিধা পাবে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে সিঙ্গাপুরে।
এ কথা সবাই জানেন, খালেদা জিয়া সাধারণত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ সারেন সৌদি আরবে। এরশাদ লন্ডনে এবং আসম আবদুর রব ভারতে। কিন্তু সবাই তার নিজ নিজ পছন্দের হাসপাতাল ত্যাগ করে সিঙ্গাপুরে জড়ো হওয়ায় এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে সিঙ্গাপুরেই বাংলাদেশের রাজনীতির নতুন মেরুকরণ মঞ্চস্থ হয়েছে এবং এই মঞ্চের নায়ক এরশাদ-ই। গত ২১ জুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিঙ্গাপুর ষড়যন্ত্র থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। আবার বিরোধী দল সংবাদ সম্মেলন করে এটিকে অপপ্রচার ও মিথ্যা খবর বলে দাবি করে।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও এরশাদ ৪ দলীয় জোটে যোগ দেবে না মহাজোটে যোগ দেবে তা নিয়ে অনেক নাটক হয়েছে। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও এরশাদ সে ধরনের নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করছে। গত সাড়ে ৪ বছর ধরে এরশাদ বলে আসছে, মহাজোট তাকে মূল্যায়ন করেনি। এজন্য তিনি একবার বলছেন এককভাবে নির্বাচন করবেন, আরেকবার বলছেন মহাজোট ত্যাগ করবেন। আসলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে তিনি যে নিজের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন ‘সিঙ্গাপুর ষড়যন্ত্রের’ মাধ্যমে এটা সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
সিঙ্গাপুর ষড়যন্ত্রকে উপলক্ষ্য করে এখন সরকারি দল আওয়ামী লীগের নতুন হিসাব নিকাশের সময় এসেছে। মহাজোট যতই মনে করুক এশাদ তাদের সঙ্গে আছে আসলে তিনি যে কার সঙ্গে আছেন তার হিসাব-নিকাশে সামান্য হেরফের হলে এরশাদ এমন কিছু করে বসতে পারে যাতে আওয়ামী লীগের ক্ষতি হবে ব্যাপক।
২| ২৬ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:২৯
নিজাম বলেছেন: এদেশে যারা রাজনীতি করেন তারা কেও জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করেন না, নিজের স্বার্থে রাজনীতি করেন। ফলে কোন কিছুই এদেশে অসম্ভব নয়।
৩| ২৬ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯
ভিটামিন সি বলেছেন: বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গিয়াছে খালেদা জিয়া উক্ত দুই দিন এই মন্তব্যকারীর সাথে ঘুরে বেরিছে সেন্তুষাতে। সেখানে বিভিন্ন রাইডে চড়ে তিনি ভীষণ আনন্দ পান। তারপর এই মন্তব্যকারীকে বলেন, এবারে ক্ষমতায় গেলে সেন্ত-মার্টিণকে সেন্তুষার আদলে গড়ে তোলা হবে। তাই এ নিয়ে কারও মাথা ব্যাথার কোন কারণ নেই। আর এরশাদ অতিরিক্ত দুই দিন সিঙ্গাপুর টেকনোলজিস এন্ড ওয়ার্কস লিমিটেডে একটি স্টেইনলেস স্টিলের লাঙ্গল বানাইতে দিছে। সেটার কাজ তদারকি করতে বাড়তি দুই দিন থাকেন। যদিও আমার সাথে উনার দেখা হয় নাই। আজ বিকালে আসম রবের সাথে দেখা করতে এই মন্তব্যকারী হাসপাতালে যাচ্ছে। কিন্তু ডোভার স্টেশনে ট্রেন বিকল হওয়ায় এই মুহুর্তে যাওয়া যাচ্ছে না।
ভাই চিন্তা করার কোন কারন নাই। মাউন্ট এলিজাবেথে যারাই এসছে তারাই পরপারের টিকিট নিয়া গেছে। যেমন: মান্নান ভুইয়া, আব্দুল জলিল, জিল্লুর রহমান, আখতারুজ্জামান। উনারা বুঝতে পারতেছেন উনাদের সময় প্রায় শেষ। তাই লাষ্ট ট্রেনের টিকিটটা দামী হাসপাতাল থেকে নিয়ে নিলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
মদন বলেছেন: এরশাদ হইলো স্বৈরাচার। এরশাদ গনতন্ত্র হত্যাকারী। তাকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক? বিএনপি যেমন জামায়াত নিয়া রাজনীতি করতেছে, আওয়ামীলিগের মতো একমাত্র দেশপ্রেমী দলের এমন আচরন কি গ্রহনযোগ্য?