![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ২৫ অক্টোবর থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে যে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা তাতে সহিংসতার আশঙ্কা করছে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্যা গার্ডিয়ান’। ‘ভায়োলেন্স অ্যান্ড প্রোটেস্টস কুড ডিরেইল বাংলাদেশ ইলেকশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, যদিও সরকারের কর্মকর্তারা নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে অবিচল রয়েছেন, তারপরও আন্দোলন ও সহিংসতা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ান প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশ করে যখন বর্তমান সরকারের মেয়াদ আর মাত্র ৬ মাসের মতো আছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ৪ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ও তার ফলাফল প্রকাশ এবং ৪ সিটিতেই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট প্রার্থীদের জয়লাভ ইস্যুগুলো গার্ডিয়ানের এই প্রতিবেদনটি প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
প্রতিবেদনটির মূল বক্তব্য ছিল আগামী নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে যাতে অনুষ্ঠিত না হতে পারে সে জন্য বিরোধী দল এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে যাতে দেশটি নির্বাচনের আগে গভীর বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। গভীর বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরির জন্য দ্যা গার্ডিয়ান বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোকে ৩টি বিষয় বাৎলে দেয়। তাদের মতে, ‘এখানে ৩টি বিষয় এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হলÑ ইসলামপন্থী দলগুলোর ভূমিকা, চলমান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের বিভক্ত রাজনীতির কারণে আস্থা হারানো তরুণ ভোটারদের সাম্প্রতিক আন্দোলন।’
দ্যা গার্ডিয়ান প্রতিবেদনটিতে অনেকটা পথ প্রদর্শকের মতো দেখানোর চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো এই ৩টি বিষয় (সংক্ষেপে হেফাজত, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও শাহবাগ আন্দোলনকারী ব্লগার)-কে যত বেশি উসকে দিতে পারবে নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি ততই উত্তপ্ত হবে। দ্যা গার্ডিয়ান বিএনপি-জামায়াত জোটকে প্রেরণা বা অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য প্রতিবেদনে এও বলে দেওয়া হয়েছে ‘আগামী শরৎ মৌসুমে শুরু হবে আসল যুদ্ধ’।
দ্যা গার্ডিয়ান তার প্রতিবেদনে দিক নির্দেশকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছে হেফাজতে ইসলামকে দিয়ে ব্লগারদের আন্দোলন যত তাড়াতাড়ি নির্মূল করা যাবে দেশে গভীর বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতি তত তাড়াতাড়ি সৃষ্টি হবে এবং সরকার অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হবে।
দ্যা গার্ডিয়ান তার প্রতিবেদনে যতটা না আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তার চেয়ে বেশি তুলেছে চলমান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে নিয়ে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালকে ‘বিতর্কিত ট্রাইব্যুনাল’ নামে আখ্যায়িত করেছে। অত্যন্ত হলুদ সাংবাদিকতার পরিচয় দিয়ে প্রতিবেদনটির প্রতিবেদক জেসন বার্ক ট্রাইব্যুনালকে ‘তথাকথিত ট্রাইব্যুনাল’ বলারও দুঃসাহস দেখিয়েছেন। এর পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার।’
দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকার এই প্রতিবেদনের প্রতিটি লাইনে লাইনে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর আকুতি ফুটে উঠেছে। খুব ইনিয়ে বিনিয়ে বলার চেষ্টা করা হয়েছে ‘ট্রাইব্যুনালের বিবাদীদের বেশির ভাগই জামায়াতের নেতা। তাই অভিযোগ রয়েছে এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার।’
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশে ও বিদেশে যেসব লবিইস্ট নিয়োগ করেছে, তাদের মধ্যে ‘দ্যা গার্ডিয়ান’ অন্যতম বলে এখন অনেকে মন্তব্য করছেন। অনেকে মনে করছেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য পত্রিকাটি যে বিপুল অংকের ফি নিয়েছে ইতিমধ্যে তারা তার প্রতিদান দিতে শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে পত্রিকাটি ১৮ জুন মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ভায়োলেন্স বা সহিংসতা শব্দটিকে ব্যবহার করেছে। সহিংসতার সঙ্গে আগামী নির্বাচনকে মিলিয়ে দিয়েছে এবং পরোক্ষভাবে বলে দিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে রাজপথে। সরকার ও জামায়াতের জয়-পরাজয়ের মাধ্যমে।
প্রতিবেদনে পরোক্ষভাবে বলে দেওয়া হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় জামায়াত রাজপথে সহিংসতার পথ অবলম্বন করবে। সহিংসতাকে তারা টেনে নিয়ে যাবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত। সহিংসতার মাত্রা এত বেশি হবে যে, যা বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে পর্যন্ত ব্যাহত করে দেবে।
দ্যা গার্ডিয়ান এমন সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে যে সময় বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই দিন অনুষ্ঠিত ৪ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা হয়নি। সরকার দলীয় ৪ জন মেয়র প্রার্থী পরাজিত হলেও তাদের সমর্থনকারীরা নির্বাচনের আগে ও পরে কোনো সহিংসতার আশ্রয় নেয়নি। তারা ফলাফল মেনে নিয়েছে এবং দেশীয় ও
আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়েছে যে, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
অথচ দ্যা গার্ডিয়ান এসবের কোনো আলোকপাত না করে সরাসরি আশংকা প্রকাশ করেছে আগামী নির্বাচন ব্যাহত হবে সহিংসতার কারণে। এই আশংকা প্রকাশ করে তারা বিএনপি ও জামায়াতকে বলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে আগামী নির্বাচন হলে নির্বাচনে সহিংসতা অনিবার্য। ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ না করলে আগামী নির্বাচনে সহিংসতা হবে, সরকার ব্লগারদের কার্যক্রম বন্ধ না করলে এবং তথাকথিত নাস্তিকদের বিচার না করলে সংঘাত বা সহিংসতা অনিবার্য হয়ে উঠবে।
এখন দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, একটি পত্রিকা একটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার জন্য এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারবে কি না? দ্যা গার্ডিয়ান একটা জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করার জন্য যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এর বিরুদ্ধে সরকার এখন পর্যন্ত কোনো ভূমিকা গ্রহণ করেনি এবং যারা দ্যা গার্ডিয়ানকে লবিইস্ট নিয়োগ করে এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করে প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও সরকার এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে সরকারের ভূমিকার ওপরই নির্ভর করছে এ ধরনের প্রতিবেদন আরো প্রকাশিত হবে কি না। সরকার যদি এখনই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আগামীতে সহিংসতা আরো বৃদ্ধি পাবে যা মোটের ওপর শক্তিশালী করবে বিএনপি-জামায়াত জোটকেই।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩২
আতা2010 বলেছেন: মেয়েরা নিজেরা টাইট ফিটিং বোরকা পড়লেও সে চায় না তার স্বামী দাড়ি , টুপী ওয়ালা হুজুর হোক।
Click This Link