নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ৬১ টি, যেকোনো ১ টি প্রমাণিত হলেই ফাঁসি !!!

১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:২৯

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৫ ধরনের ঘটনায় ৬১টি অভিযোগ আমলে নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৫ ধরনের ঘটনায় ৬১টি অভিযোগ আমলে নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।৬১ অভিযোগ তার বিরুদ্ধে, পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা ও তাদের সঙ্গে চক্রান্তের দায়ে ৬টি, পরিকল্পনার দায়ে ৩টি, উস্কানির দায়ে ২৮টি, সম্পৃক্ততার দায়ে ২৪টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা ও নির্যাতনের দায়ে ১টিসহ মোট ৬২টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে একটি অভিযোগ বাদ দেন ট্রাইব্যুনাল। একাত্তরের ২১ নভেম্বর গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারের ৩৮ জনকে শহরের পৈরতলা রেলব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি সেনারা। এই গণহত্যা হয়েছে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের নির্দেশে। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর বাঙালি হত্যার মূল হোতা ছিলেন তিনি।

এক নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল গোলাম আযম, নুরুল আমীন, মৌলভী ফরিদ আহমেদ, খাজা খয়েরউদ্দিন, এ কে এম শফিকুল ইসলাম, মাওলানা নুরুজ্জামান, হামিদুল হক চৌধুরী, মোহসিনউদ্দিন আহমেদ, এটি সাদীসহ ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের 'খ' অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে শান্তি কমিটি গঠনের ষড়যন্ত্র করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সব মানবতাবিরোধী অপরাধ ও নির্যাতনের যৌথ এবং একক কর্মকাণ্ডের দায়ভার গোলাম আযমের। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগী বাহিনীর মাধ্যমে যা কিছু পরিচালিত হয়েছে, তার সব হয়েছে গোলাম আযমের মূল নেতৃত্বে। সব ঘটনার জন্য মূলত তিনিই দায়ী। তিনিই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী। একাত্তরের ৬ এপ্রিল গোলাম আযম আবারও টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করেন এবং বাঙালি হত্যার ষড়যন্ত্রে অংশ নেন। এ ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ১৯ জুন রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক করেন গোলাম আযম। ১ ডিসেম্বর সেখানে আবারও ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষকে দমনের জন্য রাজাকার বাহিনীর শক্তি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।



দুই নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ৪ এপ্রিল টিক্কা খানের সঙ্গে বৈঠকে সারাদেশে শান্তি কমিটি গঠনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৯ এপ্রিল গোলাম আযম ও অন্যরা ঢাকায় ১৪০ সদস্যের নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করেন। এরপর ৪ মে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একিউএম শফিকুল ইসলামের বাসভবনে গোলাম আযমের উপস্থিতিতে শান্তি কমিটির সভা হয়। খাজা খয়েরউদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই সভায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ইউনিয়নে শান্তি কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করা হয়।



তিন নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ৭ এপ্রিল গোলাম আযম এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে 'ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী' আখ্যায়িত করে তাদের ধ্বংস করার আহ্বান জানান। ২২ এপ্রিল শান্তি কমিটির সভা শেষে এক বিবৃতিতে গোলাম আযমের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংগঠনগুলোর সদস্যদের 'দেশপ্রেমিক নাগরিক' উল্লেখ করে দেশের নাগরিকদের ধ্বংস করার আহ্বান জানানো হয়। ১৭ মে গোলাম আযম ঢাকায় এক সভায় স্বাধীনতা আন্দোলনকে 'রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ' এবং মুক্তিযোদ্ধাদের 'বিশ্বাসঘাতক' আখ্যায়িত করেন। সেই সঙ্গে ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের মানুষের স্বাধীনতার স্পৃহা স্তব্ধ করে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে যে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালায় তারও প্রশংসা করেন জামায়াতের তখনকার আমির।



এরপর ১৬ জুলাই রাজশাহী, ১৮ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৪ আগস্ট খুলনা, ৭ আগস্ট কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও উত্তেজনাকর বক্তব্য দেন গোলাম আযম। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের ২৫তম আজাদি দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে, ১৭ ও ২৩ আগস্ট দলীয় সভায় এবং ২৬ আগস্ট পেশোয়ারে জামায়াতে ইসলামীর অনুষ্ঠানেও তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। ১৭ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুরের শরীরচর্চা কেন্দ্রে রাজাকারদের প্রশিক্ষণ শিবির পরিদর্শন করে তাদের সশস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানান গোলাম আযম। ৩ অক্টোবর ঢাকায় জামায়াতের মজলিসে শূরার সভায় একই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন তিনি।



চতুর্থ অভিযোগে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতা বা সম্পৃক্ততার ২৩টি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গোলাম আযমসহ অন্যরা একাত্তরের ৪ ও ৬ এপ্রিল টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। গোলাম আযমের সহযোগিতায় ৯ এপ্রিল নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল এর নাম বদলে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি করা হয়। শান্তি কমিটির ২১ সদস্যের কার্যকরী কমিটিরও সদস্য ছিলেন তিনি।



১৮ জুন পাকিস্তানের লাহোর বিমানবন্দরে গোলাম আযম বলেন, জনগণ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে চায়। ১৯ জুন রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে তিনি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মোকাবেলার জন্য রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান জানান। পরদিন লাহোরে জামায়াতের পশ্চিম পাকিস্তান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গোলাম আযম বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে 'দুষ্কৃতকারী'রা সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের প্রতিরোধে ও শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র হওয়া উচিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.