নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কুড়িল ফ্লাইওভার নতুন সংযোজন

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:০৩

গত ৯ আগস্ট পবিত্র ঈদুল ফিতরের মাত্র ৫ দিন আগে চালু হওয়া কুড়িল ফ্লাইওভার রাজধানীবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আলোচনায় স্থান পেয়েছে। ঈদ উৎসবের সময় তো বটেই স্বাভাবিক সময়েও এয়ারপোর্ট রোডের কাওলা থেকে খিলক্ষেত, বিশ্বরোড, কুড়িল, কাজীবাড়ী হয়ে বসুন্ধরা গেট পর্যন্ত এক অসহনীয় যানজট ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। এখানকার বিশ্বরোড রেলক্রসিংটি পার হতে কমপক্ষে ২০ মিনিট, কোনো কোনো সময় ঘণ্টাখানেকও লেগে যেত। ঈদের সপ্তাহ খানেক আগেও খিলক্ষেত থেকে বিশ্বরোড, এরপর রেলক্রসিং পার হয়ে বসুন্ধরা পর্যন্ত যেতে গড়ে ঘণ্টাখানেক সময় লেগেছে। ৪ আগস্ট সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িল ফ্লাইওভারটি উদ্বোধনের পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে ওই দিনের অফিস ফেরত যাত্রীরা রীতিমতো অবাকই হয়েছিলেন। ৪ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে যানজট সেই যে নিষ্ক্রান্ত হয়, তা বিদ্যমান থাকে ১৮ আগস্টেও। সড়ক ব্যবস্থাপনাতে কোনো গলদ দেখা না দিলে এই এলাকা থেকে যে যানজট বিদায় নিয়েছে তা অর্ধ মাসের অভিজ্ঞতায় বেশ আস্থার সঙ্গেই বলে দেওয়া যায়। পাবলিক বাসে চড়ে কিম্বা পাজেরোতে চড়ে সাই-সাই করে এ এলাকা পাড়ি দেওয়ার সময় নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষ এবং কাজের তাগিদে শহরমুখো মানুষের অনেককেই মন্তব্য করতে শোনা যায়, ‘ঈদ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে এর চেয়ে ভালো উপহার আর হয় না।’

রাজধানীতে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ফ্লাইওভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর থেকেই মানুষ এ ধরনের মন্তব্য করছে। গত ৪ আগস্ট রোববার ৩ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই ফ্লাইওভারটি উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আগামী সাধারণ নির্বাচনে সতর্কতার সঙ্গে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, উন্নয়ন কাজ সম্পূর্ণ করা ও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা দরকার। প্রধানমন্ত্রী আগামী সংসদ নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দেবে, তাকেই মেনে নেবেন উল্লেখ করে বলেন, তবে ভোট একটি পবিত্র আমানত। এটি যেন অপাঙতেয়, দুর্নীতিবাজ ও অসৎ ব্যক্তিদের না দেওয়া হয়। তাহলে ভোটের খেয়ানত করা হবে।

কুড়িল ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িতদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একাজে দুর্নীতি থাকলে মাত্র ৩৮ মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ হতো না। এতো দ্রুত কাজ শেষ হওয়ার কারণ এখানে দুর্নীতি ছিল না, দেশপ্রেম ছিল, ছিল দায়িত্ববোধ।

ফ্লাইওভার উদ্বোধনকালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দুর্নীতির কারণেই দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম থমকে গিয়েছিল, দেশ পিছিয়ে গিয়েছিল। দেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়।

জানা যায়, রাজধানীর বড় একটি অংশ, কুড়িল লেবেল ক্রসিং ও আশেপাশের এলাকার যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে এই ফ্লাইওভার। এটি ব্যবহার করে উত্তরা ও বনানী থেকে সহজেই পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্প ও প্রগতি সরণি হয়ে রামপুরা হয়ে মালিবাগের দিকে যাওয়া যাবে। এসব এলাকা থেকে বিমানবন্দর, বনানী ও মিরপুরেও সহজে যাতায়াত করা যাবে। বিমানবন্দর সড়ক ঘেষে ফ্লাইওভারটি তৈরি হওয়ায় সন্নিহিত এলাকার সৌন্দর্যও অনেকাংশে বেড়েছে বলে মানুষের অভিমত। তবে ফ্লাইওভারকে ঘিরে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা, লেক ও সবুজায়ন প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এ এলাকাটি হাতিরঝিল প্রকল্পের মতো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠবে বলে অনেকের মন্তব্য।

কুড়িল ফ্লাইওভার জোয়ার সাহারা মৌজার কুড়িল ইন্টার সেকশন থেকে শুরু হয়ে পূর্বাচল সড়কে গিয়ে শেষ হয়েছে। ৩ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই ফ্লাইওভারে লুপ আছে ৪টি, পাইল ২৯৪টি, পিয়ার ৬৯টি, পিসি গার্ডার ১০১টি, র‌্যাম্প ১০টি, ফুটওভার ব্রিজ ২টি, অভ্যন্তরীণ রাস্তা আছে ১ দশমিক ৯৩ কিলোমিটার। ফ্লাইওভারটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে। এটির উচ্চতা ৪৭ দশমিক ৫৭ ফুট, প্রস্থ ৩০ দশমিক ১৮ ফুট। ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেড। প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪৭ কোটি টাকায় রেল ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ফ্লাইওভারের ৪টি লুপ দিয়ে বনানী, কুড়িল, খিলক্ষেত ও পূর্বাচল প্রান্ত দিয়ে ওঠানামা করা যাবে। এটি সম্পূর্ণ টোল ফ্রি। ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তিন প্রান্তে তিনটি সংযোগ সড়ক। ফ্লাইওভারের পূর্ব দিকে ২০ হাজার ৮০০ বর্গমিটার আয়তনের একটি লেক তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩০৬ কোটি টাকা। রাজউকের নিজস্ব অর্থায়নে ফ্লাইওভার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা রাজউককে এ ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজে সহযোগিতা করেছেন। ২০১০ সালের ২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন আর এটির নির্মাণ কাজ শেষে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১৩

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: উদ্ভোদনের পর গতকাল মাত্র ফ্লাইওভারটিতে চড়লাম, ভালই লাগল। খুবই দ্রুত এগুলাম,বিশ্বরোডের জ্বেমে পড়লাম না

২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১৫

কলাবাগান১ বলেছেন: মোমেরমানুষের মুখে সরকারের প্রশংসা!!!!

"একাজে দুর্নীতি থাকলে মাত্র ৩৮ মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ হতো না। এতো দ্রুত কাজ শেষ হওয়ার কারণ এখানে দুর্নীতি ছিল না, দেশপ্রেম ছিল, ছিল দায়িত্ববোধ।"

৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩৪

রাহুল বলেছেন: এবার যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার দেখার পালা.।যানজট নিরশনে যুগান্তকারী কাজ এদুটো ফ্লাইওভার আপাতত।

৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: কলাবাগান১@ ভাই মাইন্ড খাইলেন?

৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

নিজাম বলেছেন: সরকারকে ধন্যবাদ। কিন্তু শুধু এটা দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হবে না। ঢাকামুখী জনতা বিভিন্ন জেলা/বিভাগে ফিরিয়ে নিতে হবে। এজন্য অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন প্রতিস্ঠান ঢাকার বাইরে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।

৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

রাঘব বোয়াল বলেছেন: বিশ্বরোডের জ্যাম কমলেও খিলক্ষেত এলাকায় জ্যাম কমেনি।গত কালও এয়ারপোর্ট থেকে খিলক্ষেত এলাকায় যেতে ৪৫ মিনিট লাগছে।

৭| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

জহির উদদীন বলেছেন: নতুন বছরে হাতিরঝিল উপহার...
পবিত্র ঈদুল ফিতরের মাত্র ৫ দিন আগে চালু হওয়া কুড়িল ফ্লাইওভার রাজধানীবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার.....
উপহার...আর উপহার...
তবে এই উপহার গুলো যেন অন্যের বিলবোর্ড দখল করে সারা বাংলাদেশের আবাল জনগনকে জানানো না হয়...
কারণ আকাশে চাঁদ উঠলে এমনই মানুষ দেখবে....

৮| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

তন্ময় চক্রবর্তী বলেছেন: এই রাস্তাটা আমার নিত্যদিনের পথ। যাই হোক, এয়ারপোর্ট থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত যে জ্যাম থাকে সেটা কিছুটা আগের মতনই রয়ে গেছে কারণ এই জ্যামের কারণ যত্রতত্র গাড়ি দাঁড়া করিয়ে যাত্রি ওঠানাম করানো।

বিশ্বরোডের ৩০ মিনিটের জ্যামটা আর নেই, কিন্তু কোন বিরতি ছাড়াই অজস্র গাড়ি এই পথে প্রগতি স্মরণীতে প্রবেশ করায় বসুন্ধরার জ্যাম আরো দীর্ঘতর হয়েছে। এভাবে কল্পনা করুন, একটি অনেক প্রসস্থ রাস্তা ধীরে ধীরে সরু হয়ে এলে কী হবে, প্রসস্থ অংশ থেকে আসা অনেক অনেক গাড়ি সরু অংশে জ্যাম বাঁধাবে। যেহেতু প্রসস্ত অংশে তারা চলমান তাই সরু অংশের জ্যাম বাড়তেই থাকবে।

শাহজাদপুর থেকে মধ্য বাড্ডা পর্যন্ত জ্যাম, প্রগতী স্মরণীর স্লিপিং পয়েন্ট, মানে এখানে আপনি নিশ্চিন্তে ৩০ মিনিট ঘুমিয়ে নিতে পারবেন।

মেরুল বাড্ডা তে হাতিরঝিল থেকে আসা গাড়ি গুলোর ইউ-টার্ন বসানোতেও পিক-আওয়ারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়, উভয় দিকের যানবাহনকে। রামপুরা ব্রীজ থেকে মেরুল আসতে মিনিমাম ২০ মিনিট লাগে।

শেষ কথা, প্রগতী স্মরণীর চলাচল স্বাভাবিক হওয়া এখনো অনেক দূরের বিষয়। তবুও একথা সত্য যে বাড়ি ফেরার পথে কঠিন ধৈর্য্য ধরে বসুন্ধার জ্যাম পার হওয়ার পর বাস যখন ফুরফুর করে কুড়িল-বিশ্বরোড-ফ্লাইওভার এর দিকে ছুটতে থাকে তখন ভীষণ ভালো লাগে, মনে হয়, এইতো আর ৫ মিনিট। থ্যাংকস টু গভর্মেন্ট ফর দ্যাট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.