নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওরা আদিবাসী নয়, অভিবাসী

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৫৬

বক্ষ্যমাণ নিবন্ধের শিরোনামে 'আদিবাসী' পদ (Term)-এর আগে 'তথাকথিত' শব্দটি দ্বারা সুস্পষ্টরূপে নির্দেশ করা যাচ্ছে যে বাংলাদেশের ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত নিখাদ (তাদের একটি ক্ষুদ্রাংশ বাদে) নাগরিকদের রক্তধারা-উপধারাগত সামাজিক-সাংস্কৃতিক গোত্রীয় পরিচয় এবং এই ভূখণ্ডে বসবাসের অতীত সময়কালকে অযৌক্তিকভাবে একীভূত করে সম্প্রতি যত্রতত্র ব্যবহৃত 'আদিবাসী' পদটি সত্য নয় এবং কোনো দৃষ্টিকোণ থেকেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে এর অর্থ এই নয় যে বাংলাদেশে এসব জনমানুষের নৃগোষ্ঠীগত নিজস্ব পরিচয় বিশাল বাঙালি নৃগোষ্ঠীভুক্ত নাগরিকদের চেয়ে এতটুকুও তুচ্ছ এবং তাদের যাবতীয় নাগরিক অধিকার-দায়িত্ব-কর্তব্য একবিন্দু কম। সবাই বাংলাদেশের সম্মানীয় নাগরিক। এখানে একটি অসত্য পারিভাষিক শব্দের (Terminological inexactitude) চিন্তাশূন্য প্রয়োগ ও ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে মাত্র। ১৯৪০-৪৭ সালের শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও গণমাধ্যমসহ রাজনীতিকদের একাংশের 'দ্বি-জাতি' পদ ব্যবহারের ভুলের খেসারত এখনো এই বাংলাদেশেরই অর্ধশতাধিক ক্যাম্পে ধুঁকে ধুঁকে দিচ্ছে লাখ লাখ অবাঙালি অভিবাসনকারী। এ প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত সামনে রেখে নির্দেশ করা অত্যাবশ্যক যে তথাকথিত আদিবাসী প্রচারণা দেশের ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত নাগরিকদের কল্যাণঘাতী, বাঙালি নৃগোষ্ঠীর সব রাজনৈতিক সংগ্রাম ও স্বপ্নঘাতী এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থঘাতী।

বাংলাদেশের বিদাহী রাজনীতির পরিমণ্ডলে নাভিশ্বাস ওঠা প্রাত্যহিক জনজীবনে এটি আরেকটি অশুভ সংযোজন, যার প্রবল ধাক্কা অতি নিকট ভবিষ্যতে এ দেশের জনগণকেই সামলাতে হবে। এই অশনিসংকেতের মুখোমুখি ব্যথিত প্রশ্ন, অথবা দাহিত হতাশা, আর কত?

১. বাংলাদেশে আদিবাসী-ভুল প্রচারণার চারিত্র্য

বাংলাদেশে 'আদিবাসী' পদটি একাধারে একটি সাম্প্রতিক আরোপণ, একটি ভুল পারিভাষিক পদ প্রচারণা, একটি ক্রমশ বিস্তৃত বিভ্রান্তি, একটি খাপছাড়া ভাবাবেগ, পূর্বাপর সংগতিবিহীন 'উদারতাবাদী' অভিধা লাভের অভিলাষ এবং দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে নানা মারাত্মক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

রাজনীতির সূক্ষ্ম-জটিল, কখনো ক্রুর-কঠিন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অমনস্ক যেকোনো আবেগপ্রবণতার চড়া মূল্য অবধারিত। বাংলাদেশে 'আদিবাসী ভুল প্রচারণায় যাঁরা নির্বিকার অংশগ্রহণ করছেন তাঁরা হয়তো বা তাঁদের অজান্তেই জাতীয় স্বার্থবিরুদ্ধ অবস্থানে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।'

আদিবাসী প্রচারণা আরেকটি মারাত্মক ইতিহাস বিকৃতি। বাংলাদেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির কবলে নিপতিত। শুদ্ধ বুদ্ধিজীবীরা আজ বহুদিন 'চিৎকার' করছেন, কিন্তু জনজীবন উৎসজাত 'প্রকৃত' রাজনীতিকদের দুর্বলতা বা অদূরদর্শিতা অথবা ব্যর্থতা-অপারগতায় আজও তাদের প্রতিহত করা যায়নি। অবাধে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ বিচরণ করছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধীরা। নানা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে, আগুনে, মৃত্যুতে, নির্যাতনে পতিত এখন জনজীবন।

২. 'আদিবাসী বললে কী হয়?

নিবন্ধের এই উপশিরোনামটি লেখিকার কাছে উত্থাপিত অনেকের সরল প্রশ্ন এবং মৌখিক ভাষার এই সংক্রমণ থেকে তিনি নিজেও রেহাই পাননি। অল্প সময়ে এই সংক্রমণ কাটিয়ে ওঠা গেছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান শাস্ত্রের পারিভাষিক শব্দ বিশ্লেষণের আবশ্যকতায়। নিজ অভিজ্ঞতা সূত্রে দুটি বিষয় স্পষ্ট যে প্রথমত, দেশে শব্দটি প্রচলিত হচ্ছে; দ্বিতীয়ত, এর পেছনের উদ্দেশ্য ছোট-বড় নৃগোষ্ঠীভুক্ত সাধারণ জনগণের কাছে অজানা। এর প্রচলন এমন সরল আদলে ঘটছে, যেন বাঙালি ছাড়া অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর, প্রধানত মঙ্গোলীয় আদলের চেহারার জনগণের জন্য ঢালাওভাবে 'আদিবাসী' শব্দটিই প্রযোজ্য এবং তা বাংলা ভাষার একটি আধুনিক রূপ! সেই সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে 'অনগ্রসর' শব্দটি; যদিও বাংলাদেশের কয়েক লাখ গরিব-দুঃখী ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত জনগণের বৃহদাংশ শুধু নয়, বিশাল বাঙালি নৃগোষ্ঠীর কয়েক কোটি গরিব-দুঃখী জনগণও একই ধরনের অনগ্রসর। খাদ্য-পুষ্টি-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসা এবং শোষণ, অপশাসন ইত্যাদি বিচারে কার চেয়ে কে অনগ্রসর, কে 'বেশি' দুঃখী, কে 'বেশি' নিপীড়িত-নিষ্পেষিত বলা কঠিন বৈ নয়।

নৃগোষ্ঠীগত বিভাজন পারস্পরিক দূরত্ব, সন্দেহ, অবিশ্বাস ও প্রীতিহীনতার জন্ম দেয়। রাষ্ট্রের অর্থ-সম্পদ-সুবিধাদির বরাদ্দ নৃগোষ্ঠী বিভাজনপূর্বক নয়, মানুষের প্রয়োজন ও এলাকাভিত্তিক বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতে অকুণ্ঠ হওয়া আবশ্যক। ছোট ও বড় নৃগোষ্ঠীর যে একটি ক্ষুদ্র অংশ 'আঙুল ফুলে কলাগাছ' হয়ে যাচ্ছে অথবা হয়ে আছে, ভূমি, সম্পদ ও সুবিধা বণ্টনের বিচারিক দৃষ্টিভঙ্গি সেদিকে নিবদ্ধ করে কিছু করা গেলে সব নৃগোষ্ঠীর দুঃখী মানুষদের অগ্রসর জীবন নিশ্চিত করা অনেক সহজ হতো। সেটাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি।

বর্তমান নিবন্ধে তথাকথিত আদিবাসী প্রচারণা বিষয়ে জনগণের হাতে কয়েকটি রাষ্ট্রীয় স্বার্থগত সংগত প্রশ্ন তুলে দেওয়া হলো।

এক. ছোট নৃগোষ্ঠীগুলোর জন্য 'আদিবাসী' পদটি কি বাংলাদেশের ইতিহাস সমর্থিত?

দুই. এই 'পদ'টির প্রতি, অতিসম্প্রতি ছোট নৃগোষ্ঠীগুলোর (প্রধানত: পার্বত্য চট্টগ্রামের) নেতৃত্বের এত আগ্রহ সৃষ্টি হলো কেন?

তিন. 'আদিবাসী' পদ ও জাতিসংঘের ঘোষণা কি বাংলাদেশের জন্য আদৌ প্রযোজ্য?

চার. 'আদিবাসী' পদ প্রতিষ্ঠা দ্বারা বাংলাদেশের ভূমির অখণ্ডতার (Territorial integrity) ওপর কি কোনো আঘাত আসতে পারে? দেশের প্রতি ইঞ্চির ভূমির ওপর রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের স্বরূপ কী হবে?

পাঁচ. 'আদিবাসী' পদকেন্দ্রিক নৃগোষ্ঠীগত রাজনীতি কি বাংলার জনজীবনের শান্তি বিঘি্নত করতে পারে?

ছয়. ইতিহাস অসমর্থিত 'আদিবাসী' শব্দের পক্ষে পুস্তক-পুস্তিকা, মুদ্রণ মাধ্যম, 'ইলেকট্রনিক' মাধ্যম ইত্যাদিতে এখন যাঁরা ভাবাবেগে অংশ নিচ্ছেন, সারা দেশে যদি এই কৃত্রিমতার প্রায়োগিক বাস্তবতায় নৃগোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব-সংঘাত, রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা সৃষ্টি হয়, তাঁরা তখন কিভাবে সামাল দেবেন? পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সমস্যাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের দৃষ্টান্ত সামনেই আছে।

সাত. এই নৃগোষ্ঠীগত রাজনীতি (Ethnic-politics) কি জাতীয় সংহতি (National integration) অর্জন সাপেক্ষে জাতীয় শক্তি (National power) বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে?

আট. এই পদ বাংলাদেশে কি নিরাপত্তার কোনো হুমকি সৃষ্টি করতে পারে?

৩. জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র ও বাংলাদেশে 'আদিবাসিত্বের' কৃত্রিম পুঁজি

ওপরে উত্থাপিত প্রশ্নগুলো সূত্রে এ মর্মে কৌতূহল স্বাভাবিক যে এই একটিমাত্র ছোট শব্দ এত বহুমাত্রিক সমস্যার সম্ভাব্য উৎস কেন ও কিভাবে হয়?

সংক্ষিপ্ত উত্তর, ২০০৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬১তম অধিবেশনের United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples, বাংলায় যা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকারবিষয়ক ঘোষণাপত্র, যা বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। শাস্ত্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও বর্তমান বিশ্বের রাষ্ট্র ব্যবস্থার বাস্তবতায় ঘোষণাপত্রটি পাঠপূর্বক প্রতীয়মান হয় যে এর উদ্দেশ্য মহৎ হলেও এটি অনেক ক্ষেত্রে সংগতিপূর্ণ নয় এবং রাষ্ট্রের চরম ক্ষমতা বা সার্বভৌমত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে এর গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নসাপেক্ষ। সর্বোপরি এই ঘোষণাপত্রটি একপেশে বক্তব্যে আকীর্ণ এবং নির্বিঘ্ন শান্তির সংকেত দেয় না।

ইতিহাসের বাস্তবতায় বাংলাদেশের জন্য অপ্রযোজ্য এই ঘোষণাপত্রটি পার্বত্য ছোট নৃগোষ্ঠীগুলোর ক্ষুদ্র একটি অংশের আদিবাসী পদের প্রতি আকর্ষণের মূল কারণ। এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য বাংলাদেশের কোনো কোনো ভূখণ্ড, অরণ্য, নদী, প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর ছোট গোত্রজ নৃগোষ্ঠীর মালিকানা প্রতিষ্ঠা। ভূমি প্রসঙ্গে জাতিসংঘের ঘোষণার অনুচ্ছেদ ২৭-এর নির্দেশনা দৃষ্টিগ্রাহ্য- 'আদিবাসীদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা এর অন্যথায় ভোগ দখলে থাকা বা ব্যবহার্য ভূমি, ভূখণ্ড ও সম্পদসহ তাদের ভূমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের ওপর তাদের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া বা বৈধতা দানের লক্ষ্যে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এর আইন, ঐতিহ্য, প্রথা ও ভূমিস্বত্ব ব্যবহারের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদানপূর্বক রাষ্ট্র আদিবাসীদের সঙ্গে যৌথভাবে একটি অবাধ, স্বাধীন, নিরপেক্ষ, উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া প্রবর্তন ও বাস্তবায়ন করবে।'

মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোট নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রধানত চাকমাদের একটি ক্ষুদ্র স্বার্থগোষ্ঠীর (সব চাকমা নয়) দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি, ভূখণ্ড, অরণ্য, নদী, পাহাড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, প্রশাসন ইত্যাদিও তাদের হাতে থাকতে হবে। অন্য কথায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম তাদের ও বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের নাগরিক বাঙালিরা সেখানে তাদের অনুমোদন ছাড়া জমি ক্রয় বা বসবাস করতে পারবে না। বিগত তিন-চার দশকে যেসব বাঙালি, প্রধানত গরিব-দুঃখী-ভূমিহীন বসতি স্থাপন করেছে, কিংবা বাংলাদেশ সরকার বসতি স্থাপনের সুযোগ দিয়েছে, সেসব বাঙালিকে ওই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে হবে। প্রশ্ন, যে গরিব বাঙালি ৩০-৪০ বছর আগে ৩০ বছর বয়সে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করেছে, আজ তার বয়স ৬০ বা ৭০ বছর। বাংলাদেশের নাগরিকদের বাংলাদেশেরই একটি ভূ-অঞ্চল থেকে উচ্ছেদ করার সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অমানবিক দাবিকে জোরদার করতে জাতিসংঘের ঘোষণায় আশ্রয় খুঁজছে এই ক্ষুদ্র স্বার্থগোষ্ঠীটি। এ দাবি একজন নাগরিকের চরম মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত।

পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে, ইতিমধ্যেই দু-একজন করে বাঙালি প্রশ্ন করতে শুরু করেছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোট নৃগোষ্ঠীদের জমি ক্রয়-বিক্রয় ও বাসা-ফ্ল্যাটে বসতি, রাষ্ট্রের প্রশাসনে চাকরি ইত্যাদির আগ্রহ ও অধিকার নিয়ে। বাঙালির এই উষ্মার দু-একটি ফুলকি ভবিষ্যতে যদি দাবানলের মতো কোটি কোটিতে ছড়ায় তার দাহ কি ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত নাগরিকরা সহ্য করতে পারবে? তখন কি জাতিসংঘ থেকে 'শান্তি মিশন' পাঠানো হবে? দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাইরের স্বার্থবাদীদের সে ধরনের কথাবার্তাও নজরে এসেছে। স্মরণে রাখা প্রয়োজন, শান্তি মিশন ও সার্বভৌমত্ব যেহেতু দ্বান্দ্বিক যখন, তখন এর প্রস্তাব উত্থাপন প্রশ্নাতীত হতে পারে না। পার্বত্যের দাবিদাওয়া তাই প্রশ্নসাপেক্ষ।

জানা যায়, ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য দরদি বহির্বিশ্বের সাহায্য-সহযোগিতার ৯৮ শতাংশ ব্যয় হয় ছোট নৃগোষ্ঠীদের জন্য এবং ২ শতাংশ বড় নৃগোষ্ঠীভুক্ত বাঙালিদের জন্য। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে ছোট ছোট নৃগোষ্ঠী ও বাঙালি নৃগোষ্ঠীর জনসংখ্যা প্রায় সমান-সমান। সুতরাং প্রথম প্রশ্ন, নৃগোষ্ঠী বিভাজন করে এভাবে 'দুঃখী' খুঁজে বের করার রহস্য কী? দ্বিতীয় প্রশ্ন, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে গারো, কোচ, সাঁওতাল, মণিপুরি, হাজং ইত্যাদি আরো যে ৩৫-৪০টি ছোট নৃগোষ্ঠী রয়েছে, বহির্বিশ্বের দুঃখমোচন তৎপরতা কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামে কেন? তাহলে ছোট নৃগোষ্ঠী নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূখণ্ডটিই কি মূল উদ্দেশ্য? এ ছাড়া দেখা যাচ্ছে, বর্হিবিশ্ব ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধার সিংহভাগ যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে এবং প্রধানত চাকমা সুবিধাভোগীদের (সাধারণ গরিব-দুঃখী চাকমা নয়) ভাগে। এমনকি পার্বত্যের তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মারমা ও অন্যরা এত সুযোগ পাচ্ছে না। এ ধরনের সুবিধাভোগিতা বিষয়ে ভবিষ্যতে অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া এই রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নতুন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবে কি? অতি বিস্ময়কর ও সন্দেহ উদ্রেককর তথ্য এই যে পার্বত্য চট্টগ্রামে ছোট নৃগোষ্ঠীর নেতৃত্বের সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের আলোচনার মধ্যে বিদেশিরা বাঙালি সরকারি অফিসারকে থাকতে দেয় না। বাংলাদেশ সরকার এই ঔদ্ধত্যের কোনো জবাব চেয়েছিল কি? প্রশ্ন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বহির্বিশ্বের কাদের দৃষ্টি ও স্বার্থ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে এবং কেন? বাংলাদেশের এই ভূখণ্ডটি বহির্বিশ্বের কাদের সামরিক পরিকল্পনার জন্য উপযোগী? আরো প্রশ্ন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত সাধারণ সরল, বাংলাদেশের নাগরিকরা আন্তর্জাতিক কূটিল রাজনীতির ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে না তো? ড. খুরশীদা বেগম অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাংলাদেশে 'আদিবাসী ভুল প্রচারণায় যাঁরা নির্বিকার অংশগ্রহণ করছেন তাঁরা হয়তো বা তাঁদের অজান্তেই জাতীয় স্বার্থবিরুদ্ধ অবস্থানে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।'

বার্নিং ৮ কুশ্চেন? স্বার্থান্ধরা ছাড়া সকলেই একমত।

পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে, ইতিমধ্যেই দু-একজন করে বাঙালি প্রশ্ন করতে শুরু করেছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোট নৃগোষ্ঠীদের জমি ক্রয়-বিক্রয় ও বাসা-ফ্ল্যাটে বসতি, রাষ্ট্রের প্রশাসনে চাকরি ইত্যাদির আগ্রহ ও অধিকার নিয়ে। বাঙালির এই উষ্মার দু-একটি ফুলকি ভবিষ্যতে যদি দাবানলের মতো কোটি কোটিতে ছড়ায় তার দাহ কি ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত নাগরিকরা সহ্য করতে পারবে?

++++++++++++++++

অথচ সবচে কষ্টের হলো, আজকের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার তাদের অন্ধ সমর্থন সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে- যেখানে তাদের ৭১এর ভূমিকা ছিল ন্যাক্কারজনক!
কথিত রাজা ত্রিদিব রায়ের রাজাকারি সহ আরো চাকমা সহ অন্যান্য উপজাতি রাজাকারদের দের পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্যের কথা কি ভুলে গেছে সবাই?

সতর্ক এবং কঠোর হবার সময় নিকটেই।

দেশ এবং সার্বভোমত্বের স্বার্থেই।

২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:২৬

ইমতিয়াজ ইমন বলেছেন: অনেকগুলো ব্যাপার জানতে পারলাম। ধন্যবাদ লেখককে

৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অতি বিস্ময়কর ও সন্দেহ উদ্রেককর তথ্য এই যে পার্বত্য চট্টগ্রামে ছোট নৃগোষ্ঠীর নেতৃত্বের সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের আলোচনার মধ্যে বিদেশিরা বাঙালি সরকারি অফিসারকে থাকতে দেয় না। বাংলাদেশ সরকার এই ঔদ্ধত্যের কোনো জবাব চেয়েছিল কি? প্রশ্ন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বহির্বিশ্বের কাদের দৃষ্টি ও স্বার্থ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে এবং কেন? বাংলাদেশের এই ভূখণ্ডটি বহির্বিশ্বের কাদের সামরিক পরিকল্পনার জন্য উপযোগী? আরো প্রশ্ন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীভুক্ত সাধারণ সরল, বাংলাদেশের নাগরিকরা আন্তর্জাতিক কূটিল রাজনীতির ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে না তো?
>>>>

আমাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কি নিরব? তাদের কাছে কি কোন রিপোর্ট নেই?????

৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২২

তানজিব বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬

ইসলাম রফিকুল বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু, সবকিছুতেই বর্তমান সরকারকে টেনে মিথ্যাচার করেন কেন ? আপনি যদি মুসলমান হন তাহলে মিথ্যাচারের কুফল সম্পর্কে তো আপনার জানার কথা । পার্বত্য চট্টগ্রামের এই সমস্যা তো পাকিস্তান আমল থেকে আর এটা প্রকট আকার ধারণ করে জিয়ার শাসনামলে । আওয়ামী লীগ সরকার ৯৬ -এ ক্ষমতায় এসে বরং পার্বত্য সমস্যার সমাধান অনেকটাই করতে সক্ষম হয়েছে । এই সত্যটা গোপন করা কোন মুসলমানের উচিত নয় । যদি মুসলমান হন তাহলে আল্লাহকে ভয় করুন ---- সত্য কথা বলুন । আল্লাহ্ আপনাকে হেদায়েত করুন--- আমীন...।

৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৭

ইসপাত কঠিন বলেছেন: ইসলাম রফিকুল বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু, সবকিছুতেই বর্তমান সরকারকে টেনে মিথ্যাচার করেন কেন ? আপনি যদি মুসলমান হন তাহলে মিথ্যাচারের কুফল সম্পর্কে তো আপনার জানার কথা । পার্বত্য চট্টগ্রামের এই সমস্যা তো পাকিস্তান আমল থেকে আর এটা প্রকট আকার ধারণ করে জিয়ার শাসনামলে । আওয়ামী লীগ সরকার ৯৬ -এ ক্ষমতায় এসে বরং পার্বত্য সমস্যার সমাধান অনেকটাই করতে সক্ষম হয়েছে । এই সত্যটা গোপন করা কোন মুসলমানের উচিত নয় । যদি মুসলমান হন তাহলে আল্লাহকে ভয় করুন ---- সত্য কথা বলুন । আল্লাহ্ আপনাকে হেদায়েত করুন--- আমীন...

পার্বত্য চট্টগ্রামের এই সমস্যা আরো আগে থেকে। এমন কি বৃটিশ আমলের আগের থেকে।

৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

শ্রমন বলেছেন: দালালদের আর স্বার্থেনেস্বীদের আমাদের রুখতেই হবে! দয়া করে পড়ুনঃ
http://www.nagorikblog.com/node/9300

৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

শ্রমন বলেছেন: দালালদের আর স্বার্থেনেস্বীদের আমাদের রুখতেই হবে! দয়া করে পড়ুনঃ
http://www.nagorikblog.com/node/9300

৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৭

শ্রমন বলেছেন: দালালদের আর স্বার্থেনেস্বীদের আমাদের রুখতেই হবে! দয়া করে পড়ুনঃ
http://www.nagorikblog.com/node/9300

১০| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @ইসলাম রফিক ও ইসপাত কঠিন....

"সবকিছুতেই বর্তমান সরকারকে টেনে মিথ্যাচার করেন কেন ? আপনি যদি মুসলমান হন তাহলে মিথ্যাচারের কুফল সম্পর্কে তো আপনার জানার কথা । পার্বত্য চট্টগ্রামের এই সমস্যা তো পাকিস্তান আমল থেকে আর এটা প্রকট আকার ধারণ করে জিয়ার শাসনামলে । আওয়ামী লীগ সরকার ৯৬ -এ ক্ষমতায় এসে বরং পার্বত্য সমস্যার সমাধান অনেকটাই করতে সক্ষম হয়েছে :

আপনারা কেন জেনেশুনে সত্য গোপন করেন। এতো মিথ্যার চেয়ে ভয়ানক। মোনাফেকি!
আমি অবশ্যই মিথ্যাচার করিনি।
বিষয়টার আলোচনা স্বাধীনতা এবং পরবর্তী সময়ে পাবর্ত্য সমস্যা নিয়ে।
সেই ক্ষেত্রে আপনাদের ভূলে যাবার কথা নয়- ৭১ এ তারা পাকিদের পক্ষে যাবার পর জাতির পিতাই কিন্তু তাদের ক্ষমা করেন।
এবং তাদের নিয়ে বলা বিক্যাত উক্তি তোরা বাঙালী হয়ে যা!
যা তাদের ক্ষিপ্ত করে।
জিয়ার আমলে প্রকট হবার কোন প্রমাণ তথ্য কি আছে?

জিয়া এবং এরশাদ দেশের এবং মানুষৈর প্রতি সমান ভাবাপন্ন ভাবনায় সেখানে সুষ্ঠু উদ্যোগ গ্রহন করলেও - এই পোষ্টে কথিত ষড়যন্ত্রকারীলা তাতে নাখৌশ হয়- তারা দেশে এক ষ্ষঠাংশ জায়গা মাত্র দশমিক২-৩ % লোকের জন্য আব্দার ধরে বসে আছে!!!!

সন্ত্রাসী সন্তুন উত্থান আর তার দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধঅনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখীয়ে পাবর্ত্য অঞ্চলে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে!!!!

আর ৯৬-এ কি করেছে আওয়ামীলীগ???

এক সন্ত্রাসীর সাথে শান্তির নামে দেশ এবং দেশের ৯৯.৭% ভাগের স্বার্থ বিরোধী অন্যয্য শর্ত মেনে কথিত চুক্তি করেছে!

তাও কি সমাধান হয়েছে?

তারা এখন পুরোটাই চাইছে? তারা কারা? সেই ৭১এ রাজাকারী করা ত্রিদিব রায় এবং তাদের বংশধরগন সহ কথিত আদিবাসী নামের অভিবাসীরা!
পুরা দেশের ৯৯ ভাগ হয়ে যায় ভাসমান, শুধূ তারাই আদিবাসী???? এই রকম বোধকে সমর্থন করে আপনারা সুশীল হতে চাইলে যর্থার্থ বটে!!!!!!

কিন্তু তা জাতি এবং দেশ ও আপামর জনতার বিশ্বাস এবং স্বার্থবিরোধী।

১১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২

ইসপাত কঠিন বলেছেন: বিদ্রোহী ভূখন্ড @ এর মধ্যে আবার আমাকে টানলেন কেন বুঝলাম না। আমি ইসলাম রফিককে বলেছি যে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা বাংলাদেশ পাকিস্তান আমলেরও আগে শুরু। ১৬শ শতাব্দীতে আরাকান রাজা মেং বেং এর সাথে চাকমা রাজার যুদ্ধে চাকমা রাজা পরাজিত হলে চাকমারা পার্বত্য চট্টগ্রামে মাইগ্রেট করে। তারপর থেকে মোগলদের সাথে, পরে বৃটিশদের সাথে, পরে পাকিস্তানীদের সাথে এবং সর্বশেষ (আপাতত) বাংলাদেশীদের সাথে চাকমাদের বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যা হয়।

বস্তুত, পার্বত্য সমস্যা ভালোভাবে বুঝতে হলে ঐ কোলা ব্যাং (মেং বেং) এর আমল থেকে ভালো করে পড়ে চাকমা মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।

১২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৭

শ্রমন বলেছেন: "ওরা আদিবাসী নয়, অভিবাসী", যদিও এই পোস্টিং টির সাথে আমি সম্পুর্ন
একমত, "কিন্তু শ্রমন বলেছেন: দালালদের আর স্বার্থেনেস্বীদের আমাদের রুখতেই হবে! দয়া করে পড়ুনঃ
http://www.nagorikblog.com/node/9300" এই পোস্টিং এর
এই কমেন্ট আমার করা নয়, অথচ এই ব্লগে আমি শ্রমন নামেই লিখতাম, এখনও কালে ভদ্রে লিখি! আরও আশ্চর্য্য যে নাগরিক ব্লগের যে লিংকটার কথা জনৈক "শ্রমন" কমেন্ট করেছেন সেটি আমারই লেখা! ওই লেখাটি আমি এই ব্লগেও পোস্ট করেছিলাম ৯ আগস্ট ২০১২তে, দেখুনঃ Click This Link এখন আমার প্রশ্ন আমার নাম দিয়ে দিব্যি কমেন্ট করে যাচ্ছেন কে ভাই বা বোন আপনি? কি ভাবেই বা আমার পাশ ওয়ার্ড দিয়ে "আমি হয়ে" এই ব্লগে ঢুকছেন? সামুতে এই ভৌতিক উপদ্রব কি ভাবে?

ব্লগ কর্তৃপক্ষের পক্ষের দৃস্টি আকর্ষন করছি!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.