নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমডিজি অর্জনের পথে বাংলাদেশ

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৬

জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনের পথে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যগুলো অর্জনের ডেডলাইন বা সময়সীমা হচ্ছে ২০১৫ সাল। কিন্তু তার আগেই অনেক লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাংলাদেশ জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের প্রথম লক্ষ্য দারিদ্র্য কমানোর পথে রয়েছে। চলতি ২০১৩ সালেই এ লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের এ স্বল্পোন্নত দেশটি।

এমডিজির আটটি মূল লক্ষ্যের অধীনে ২১টি লক্ষ্যামাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রাগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে মোট ৬০টি সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি সূচকে পরিমাণগত লক্ষ্য আছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) সূচী অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে এমডিজি বাস্তবায়নের সময়সীমা শেষ হতে যাচ্ছে। এর আগে নয়টি সূচকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ১০টি সূচকে অর্জন লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি। তবে বাকি ১৫টি সূচকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও কাজ করতে হবে বাংলাদেশকে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ২০০০ সাল থেকেই বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশ এমডিজি অর্জনে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন শুরু করে। এমডিজি অর্জনকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা ঢেলে সাজায়। বাংলাদেশ শুরুর কয়েকটি বছর এমডিজি অর্জনে একটু ঢিমেতালে এগোলেও বিগত চার-পাঁচ বছরে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এগিয়েছে।

সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ প্রণীত এমডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০১২ থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এগুলো হলো: দারিদ্র্যের ব্যবধান কমিয়ে আনা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা আনয়ন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মুত্যৃহার কমানো, এইচআইভি সংক্রমণ রোধ, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কীটনাশকের হাত থেকে রক্ষায় মশারির নিচে ঘুমানো, যক্ষ্মা রোধ চিহ্নিতকরণ ও নিরাময় ইত্যাদি।

অপরদিকে দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিশুদের অপর্যাপ্ত ওজনের প্রকোপ, প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার, মাতৃমৃত্যুর হার, শিশুদের টিকা প্রদানের আওতা বৃদ্ধি এবং সংক্রমক রোগের বিস্তার কমিয়ে আনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে।

তবে যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অধিক মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন সেগুলো হলো- ক্ষুধাজনিত দারিদ্র্য কমানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার ও বয়স্ক শিক্ষা হার বৃদ্ধি, মহিলাদের জন্য আরও অধিক পরিমাণে মানসম্মত কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রসূতিকালীন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি বৃদ্ধি, এইচআইভি বা এইডস-সংক্রান্ত সঠিক ও অধিক তথ্য জানানো, বনাঞ্চল বৃদ্ধি এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের সম্প্রসারণ।

লক্ষ্যগুলোর পুরোপুরি বাস্তবায়ন ও পিছিয়ে থাকা অগ্রগতির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমস্যাকে প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে কাক্সিক্ষত হারে অর্থ বিনিয়োগ করতে পারছে না সরকার। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহও ব্যবসার বাইরে এসে সামাজিক উন্নয়নে অর্থ বিনিয়োগ করতে চায় না। বিভিন্ন দাতা দেশ এবং উন্নয়ন সংস্থাও বাংলাদেশের এমডিজি অর্জনে প্রতিশ্রুত হারে আর্থিক সহায়তা দেয়নি। এর ফলে পূর্বনির্ধারিত ২০১৫ সালের মধ্যে বেশকিছু সূচকে এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনিশ্চিত।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো এ লক্ষ্য অর্জনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে তাদের জাতীয় আয়ের দশমিক সাত শতাংশ হারে উন্নয়ন সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করেনি। ফলে বাংলাদেশ এমডিজি অর্জনে যে সাফল্য অর্জন করেছে তা নিজস্ব সম্পদ ও অর্থেই করেছে।’

তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ সহায়তা দিলে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সকল সূচকে এমডিজি অর্জনে সফল হতাম।’

যুদ্ধের অভিশাপ থেকে পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ষাট বছর আগে জন্ম হয়েছিল জাতিসংঘের। বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এসে জাতিসংঘের স্থপতিরা বিশ্বের মানচিত্র থেকে দারিদ্র্য ও বঞ্চনাকে দূর করার এক নয়া অঙ্গীকার করেন। সেই অঙ্গীকারের নামই মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) বা সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ। ২০০০ সালে সেই মিলেনিয়াম ডিক্লারেশনে বিশ্বের ১৮৯টি দেশ স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ এর একটি স্বাক্ষরকারী দেশ। সেই অঙ্গীকার থেকেই বাংলাদেশ এমডিজির লক্ষ্যসমূহ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, জাতিসংঘের সহস্রাব্দ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে। সেই সম্মেলনেই সদস্য দেশগুলোর সম্মতিতে আটটি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য গৃহীত হয়। স্বল্পোন্নত (এলডিসি) ও কম উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন প্রধান টার্গেট হলেও কর্মপরিকল্পনায় উন্নত-অনুন্নত-শিল্পোন্নত সব দেশেরই করণীয় নির্ধারণ করা হয়। সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। যদিও আফ্রিকার ৩৪টি, এশিয়ার বাংলাদেশসহ ১৪টি, লাতিন আমেরিকার হাইতিসহ মোট ৪৯টি এলডিসির ৮৮ কোটি মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করাই এমডিজি নির্ধারণের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য, যাতে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মর্যাদা, স্বাধীনতা ও সমঅধিকার নিশ্চিত হয়। প্রতিটি মানুষ একটা ন্যূনতম জীবনমান বজায় রাখতে পারে, যাতে মানুষ ক্ষুধা ও নির্যাতনের শিকার না হয়। বিশ্বব্যাপী সহনশীলতা ও পারস্পরিক সহানুভূতি বৃদ্ধি পায়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ই এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ লক্ষ্য পূরণে কার কি দায়িত্ব তাও এ সম্মেলনে নির্ধারণ করা হয়।

এ সম্মেলনের পর ২০১৫ পরবর্তী টার্গেট কি হবে তা নির্ধারণে গত বছরের জুনে ব্রাজিলের রিওডি জেনিরোতে জাতিসংঘ আয়োজিত টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে এমডিজির ওপর ভিত্তি করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (এসডিজি) গ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। এসডিজি গৃহীত হলে ২০১৫ সালের পর থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি) বিশ্বব্যাপী এমডিজি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। আর বাংলাদেশে এ বিষয়টি দেখভাল করছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)।

বাংলাদেশের এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে ইউএনডিপির পর্যবেক্ষণ কি জানতে চাইলে সংস্থাটির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি নেইল ওয়াকার বলেন, ‘বাংলাদেশ এমডিজির অনেক লক্ষ্য অর্জনে সাফল্য দেখিয়েছে। বাকি লক্ষ্যগুলো অর্জনে পুরোমাত্রায় প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বিশেষ করে বনায়ন ও পরিবেশ এবং পুষ্টির নিশ্চয়তার ওপর বিশেষ জোর দিতে হবে।’

তবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচেন এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। ২০১২ সালের খানা জরিপ অনুযায়ী, ১৯৯১-৯২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরে দারিদ্র্য কমেছে দুই দশমিক ৪৭ শতাংশ হারে। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশ ২০১২ সালেই দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২৯ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৩ সালেই তা অর্জন করে ফেলেছে। এ বছরই বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২৬ শতাংশে নেমে আসবে। সেই সঙ্গে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যও কমে এসেছে। এটা বাংলাদেশের একটি বড় সাফল্য। তবে দারিদ্র্যের অনুপাত কমে এলেও এখনও দরিদ্র মানুষের সংখ্যা চার কোটি ৭০ লাখ। তাই দারিদ্র্যের হার কমার আত্মতুষ্টিতে না ভুগে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনার যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ‘এমডিজি অর্জিত হওয়ার কথা ছিল বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতায়, কিন্তু সেটা হয়নি। আমরা পর্যাপ্ত সহায়তা না পেলেও এমডিজি অর্জনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছি। নিজস্ব সম্পদেই এমডিজির প্রধান সূচকগুলোতে বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এটাকে বড় সাফল্য হিসেবে দেখা উচিত।’

তবে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমে এলেও ন্যূনতম খাবার গ্রহণে অক্ষম ব্যক্তি কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেক দূরে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রয়োজনীয় শক্তি অর্জনে প্রতিদিন ন্যূনতম ২১২২ ক্যালরি খাবার প্রয়োজন। ২০১৫ সালের মধ্যে এ পরিমাণ খাবার কিনতে অক্ষম মানুষের সংখ্যা ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এমডিজির ভিত্তি বছরে এর মাত্রা ছিল ৪৮ শতাংশ। গত কয়েক বছরে তা ৪০ শতাংশে নেমেছে।

এমডিজি বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমডিজির ৮টির মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও পরিবেশের বিষয়টি বাংলাদেশের হাতে নেই। তাছাড়া অন্য ৫টিতে বাংলাদেশের ভাল অগ্রগতি হয়েছে। তুলনামূলক দুর্বলতা রয়েছে, মাতৃমৃত্যুর হারে ও কর্মসংস্থানের জায়গায়। তবে সর্বোপরি আফ্রিকার যে কোন দেশের তুলনায় ভাল অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রাথমিক শিক্ষায় অনেক উন্নতি করলেও সেটা সংখ্যার দিক থেকে হয়েছে। গুণগত মানের দিক থেকে হয়নি। এছাড়া, অর্থনীতির মূল ধারাতে যারা নেই তাদের কিভাবে মূল ধারায় আনা যায় তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আমরা চাহিদার পুরোপুরি খাদ্য উৎপাদন করতে পারি না। আমাদের জাতীয় সঞ্চয়ের হারও কম। বাণিজ্যের হার কম। জ্বালানি সঙ্কট তো রয়েছেই। এছাড়া উন্নয়ন কর্মকা-ের অনেক অংশ এখনও উন্নয়ন সহযোগীদের ওপর নির্ভরশীল। তারপরও আমাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এমডিজির অনেক লক্ষ্যমাত্রা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ক্রমবর্ধমান হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি আমাদের অন্যতম সমস্যা। তার চাইতেও বড় সমস্যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি। স্বাস্থ্য খাতে আপাতত বড় কোন সমস্যা না থাকলেও কিছুদিনের মধ্যেই এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে। তথ্যপ্রযুক্তির অনেক অগ্রগতি হলেও প্রযুক্তির ব্যবহার খুব বেশি বাড়েনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময় হতে পারে ২০৩০ সাল। ওই সময় আমরা কোথায় ও কিভাবে যাব তার কৌশল সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থনীতি, বাজার, পরিবেশের বিবেচনায় ভঙ্গুর দেশসমূহের বিষয়ে সামষ্টিক পদক্ষেপ নিতে হবে।’

(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.