![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্ব নিয়ে ১৮ দলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও খেলাফত মজলিশ এবং ১৮ দলীয় জোটের বাইরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর নেতাদের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব। এসব দলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধমূলক তথ্য প্রকাশ করছেন। তবে হেফাজতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত দলগুলো নিজেদের স্বার্থে হেফাজতের ১৩ দফা বাদ দিয়ে, যাতে হেফাজতের বাইরে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। সূত্রমতে, হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কাছে ১৮ দলীয় জোটের বাইরের বিভিন্ন দলের নেতারা ইতোমধ্যে জোটভুক্ত বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ওদিকে টাকা পয়সার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে হেফাজত নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। জামায়াত-বিএনপির কাছ থেকে পাওয়া অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিভিন্ন দলের নেতারা। দলের দু’গ্র“পের দ্বন্দ্বের কারণে আল্লামা শফী নিজেই বিবৃতিতে স্বাক্ষর শুরু করেছেন।
সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের শীর্ষনেতা ও খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, ইসলামী ঐক্যজোটের শীর্ষপর্যায়ের নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মুফতি তৈয়ব, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোটের মনোনয়ন তদবিরের অভিযোগ উঠেছে। গত রমজান মাসে রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে ইসলামী ঐক্যজোট ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেখানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম জিয়াসহ জোট নেতাদের উদ্দেশ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর নেতা মাওলানা মুফতি তৈয়ব বলেছিলেন, ইসলামী ঐক্যজোট মানে হেফাজতে ইসলাম। আল্লামা আহমদ শফীর নির্দেশে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইসলামী ঐক্যজোটের নেতারাই। জানা যায়, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ ১৮ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষনেতারা এখনও হেফাজতের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন। সংগঠনটির আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী, মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ইসলামী ঐক্যজোটের উপদেষ্টা। এছাড়া ১৮ দলীয় জোটের বিভিন্ন শরিক দলের নেতা মুফতি ওয়াক্কাস জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমি জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সভাপতি, মুহিব্বুল্লাহ বাবনুগরী হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা, জুনায়েদ আল হাবিব হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা, মুফতি ফয়জুল্লাহ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব, মুফতি তৈয়ব হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা, মাওলানা আবদুর রব ইউসূফী হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা ও মুফতি ইজহারুল ইসলামসহ অধিকাংশ নেতা হেফাজতের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অর্থ লোপাট, টাকার ভাগাভাগি, আধিপত্য বিস্তার আর ১৮ দলের নির্বাচনের পাঁয়তারা নিয়ে চরম বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্ব। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আর টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে রাজধানীতে হেফাজতের সবচেয়ে বড় আস্তানা হিসেবে পরিচিত লালবাগ মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীরচর ও বারিধারা মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণকারী নেতারা জড়িয়ে পড়েছেন বিরোধে। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে অন্য নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, লালবাগিরা আহমদ শফীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে হেফাজতের সকল কর্মসূচিকে জামায়াত-শিবিরের সহযোগিতায় হিংসাত্মক ও জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে পরিণত করছে। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রামের হেফাজত নেতারাও। এদিকে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী হেফাজতের প্রভাবশালী দুই যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাঈনুদ্দীন রুহীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে নেতাকর্মীরা। দুজনের বিরুদ্ধে ১৮ দলের কাছ থেকে টাকা এনে আত্মসাৎ করা ও নির্বাচন বাণিজ্য করার অভিযোগ এনে আমিরের কাছে বহিষ্কারের পাশাপাশি কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন নেতাকর্মীরা।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকজন হেফাজত নেতা ও তাদের নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা সূত্রে বিরোধের এই চিত্রই পাওয়া গেছে। তবে এসব নিয়ে আমির আহমদ শফী প্রকাশ্যে এখনও কিছু না বললেও সম্প্রতি তিনি দুুটি সভায় দলের মধ্যে বিরোধের বিষয়ে বলেছেন, হেফাজতের ক্ষমতা টের পেয়ে দেশি-বিদেশি নাস্তিক্যবাদীরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। এ অবস্থায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য তিনি আহ্বানও জানিয়েছেন। জানা গেছে, রাজধানীতে হেফাজতের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে মূলত লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও বারিধারা মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতারা। তবে লালবাগ মাদ্রাসার নেতাদের আবার প্রত্যেকেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দল। যার প্রত্যেকটি ১৮ দলের অন্তর্ভুক্ত। তাই ১৮ দলের সুবিধা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অভিযোগ এখানকার নেতাদের বিরুদ্ধে ছিল সব সময়েই। তবে সেই বিরোধ এবার চরম আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি সামাল দিতে হেফাজতের আমির সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন। যদিও এসব ঘটনা লালবাগ নেতাদের কেউ স্বীকার করছে না। তবে ক্ষোভের কথা বলছেন, অন্য মাদ্রাসার নেতারা। অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে গেছে, আগে লালবাগ থেকে হেফাজতের ব্যানারে ঢাকার নেতারা আমিরের বক্তব্যসহ সকল কর্মসূচি প্রচার করলেও এখন চট্টগ্রামের নেতারা তা মানছেন না। একাধিক ব্যক্তি নিজেদের প্রচার সম্পাদক পরিচয় দিয়ে হেফাজতের বিবৃতি দিচ্ছেন। একই বিষয়ে দেয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতি। বিষয়টি জানতে পেরে আমির আহমদ শফী চট্টগ্রাম থেকে নিজেই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা শুরু করেছেন। বলা হয়েছে, তার স্বাক্ষর ছাড়া বিবৃতি দেয়া যাবে না। আবার ঢাকার নেতারা বিভিন্নভাবে বলে বেড়াচ্ছেন, তাদের বাদ দিয়ে কিছু করতে গেলে তারা মানবেন না। ঢাকায় সংগঠন করতে দেবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন ঢাকার অনেক নেতা। চট্টগ্রামের কয়েক নেতা আমিরের কাছে দাবি তুলেছেন, হেফাজতের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ঢাকার নেতারাই দায়ী। তাদের মতে, ঢাকার নেতাদের অতি উৎসাহ আর স্বার্থের কারণেই হেফাজতের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। যুগ্ম মহাসচিব পদের এক নেতা বলেন, আমরা আমির সাহেবকে বলেছি সঙ্কটের জন্য যারাই দায়ী তাদের তদন্ত করে চিহ্নিত করতে হবে। সকল কর্মসূচিতে ঢাকার নেতাদের মধ্যে যাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে তাদের রাখা যাবে না। ওই নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকার কিছু নেতারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই সেদিন অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে নিরীহ হেফাজত কর্মীদের ওপর হামলার সুযোগ পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী যৌথ বাহিনী। আর রাতে সাধারণ কর্মীদের রেখে নেতারা সেখান থেকে সরে পড়েছিলেন। অবরোধে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার কথা উল্লেখ করে আগেই কর্মসূচি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল চট্টগ্রামের ছয়টি বড় মাদ্রাসা। এর একটির অধ্যক্ষ সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন বৈঠক করতে। তার অভিযোগ, কিছু নেতার ‘মঞ্চ কাঁপানো-অযৌক্তিক’ বক্তব্যের জন্যই হেফাজতের আজকে এ দশা হয়েছে। হেফাজত আজ বিতর্কের মুখে পড়েছে।
এদিকে হেফাজতের বিরোধের কারণে একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চলেছেন। তাদের অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসছে নানা গোপন তথ্য। হেফাজতে ইমানের বাংলাদেশের ব্যানারে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, ঢাকার দুটি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের ৫ মের অবরোধের পিছনে জামায়াতের গোপন পরিকল্পনা অনুযায়ী শাপলা চত্বরে অবস্থান করে পরদিন ৬ মে ভোরে ব্যাংক লুট করাসহ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ছিল। অবস্থান সফল না হওয়ায় এখন এ জন্য প্রাপ্ত বিপুল অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে ঢাকা মহানগর হেফাজত এবং কেন্দ্রীয় হেফাজতের মধ্যে জামায়াত ঘেঁষা নেতাদের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব। অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা সঠিক না হওয়া, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও বারিধারা মাদ্রাসার নেতারা পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করাসহ বিবৃতি দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গেল রমজান মাসে হোটেল পূর্বাণীতে ইসলামী ঐক্যজোট (একাংশ) আয়োজিত মুফতি আমিনী স্মরণে আলোচনা ও ইফতার পার্টিতে বারিধারাকেন্দ্রিক নেতাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি। এর পর থেকে বিবৃতিও দেয়া হচ্ছে পৃথক পৃথকভাবে। হেফাজতে ইমান বাংলাদেশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলের বার্তা প্রেরক আব্দুল মোস্তফা একই সঙ্গে বলেছেন, লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বাদ দিয়ে একাধিক বৈঠকও হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। গত ২ সেপ্টেম্বর কিল্লার মোড়ে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ওরফে আনোয়ার রাজাকার কর্তৃক জামায়াত থেকে প্রাপ্ত অর্থে কামরাঙ্গীরচর মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত ইসলামী দলসমূহের বৈঠকের আড়ালে হেফাজত নেতারা বৈঠকে লালবাগ মাদ্রাসার নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে অন্য নেতারা অভিযোগ করেছেন, তারা আহমদ শফীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ অরাজনৈতিক কর্মসূচিকে জামায়াত-শিবিরের সহযোগিতায় হিংসাত্মক ও জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে পরিণত করেছিল। তারা সরকারের পতন ঘটিয়ে ৬ মে দেশের শাসনভার তাদের হাতে নিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছিল। আর এ জন্য ৫ মে দিবাগত রাতে বিএনপির অফিসে মন্ত্রীসভা গঠনের লক্ষ্যে রাতভর খাওয়া দাওয়ার ধুম ছিল বলেও জানিয়েছে হেফাজতে ইমান বাংলাদেশ। লালবাগ মাদ্রাসাকে ষড়যন্ত্রের আখড়া হিসেবে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে এই মাদ্রাসায় রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বিশিষ্ট আলেম ও নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ইসলামী ঐক্য মঞ্চ।’ সংগঠনের নেতারা বলেছেন, এখানে হেফাজতসহ কারও রাজনৈতিক অফিস থাকতে পারবে না। এই মাদ্রাসা থেকেই গত ৫ মে সরকার উৎখাতের চক্রান্ত হয়েছিল। ইসলামী শিক্ষাদানের নামে এই মাদ্রাসায় চলে রাজনৈতিক কার্যকলাপ। চলে পবিত্র ইসলামকে অপবিত্র করার ষড়যন্ত্র। ইসলামী ঐক্যমঞ্চের সভাপতি মাওলানা মাসউদুর রহমান বিক্রমপুরী বলেছেন, লালবাগ থেকে বার বার ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এতে দেশের সব আলেম সমাজ লালবাগ ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন। সর্বশেষ আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজতের আন্দোলনকেও নিজেদের মতো করে ব্যবহার করা হয়েছে এই লালবাগ থেকেই। হাফেজ্জি হুজুর যে ইসলামী গণজাগরণ গড়ে তুলেছিলেন, তা লালবাগ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিল। ইসলামী ঐক্যেজোটের কবরও রচিত হয়েছিল লালবাগের কারণে। তিনি লালবাগের জন্মদাতা মওদুদী জামায়াত-শিবির চক্রের ষড়যন্ত্র থেকে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। জামায়াত-শিবিরকে ইহুদির ‘দালাল’ উল্লেখ করে মাসউদ আরও বলেন, জামায়াত-শিবির চক্র ও এর দোসরদের আলেম সমাজকে চিনে রাখতে হবে। ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী মওদুদী জামায়াত প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এদেশের হকপন্থী আলেমগণের বিরোধিতা করে আসছে। তারা এখনও বিরোধিতা করছে, এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
এদিকে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী হেফাজতের প্রভাবশালী দুই যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাঈনুদ্দীন রুহীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভে ফুঁসছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা। দুজনের বিরুদ্ধে ১৮ দলের কাছ থেকে টাকা এনে আত্মসাত করা ও নির্বাচন বাণিজ্য করার অভিযোগ এনে আমিরের কাছে বহিষ্কারের পাশাপাশি কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন নেতাকর্মীরা। অনেকে একে হেফাজতের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতা ও সাধারণ কওমি মাদ্রাসার সাধারণ ধর্মীয় নেতাদের বিরোধ বলে অভিহিত করেছেন। আধিপত্য বিস্তার, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব আর সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে ১৮ দলের কাছে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করার অভিযোগ এ দুই নেতার বিরুদ্ধে। দুজনই খেলাফতে ইসলামী ও ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে মুফতি ফয়জুল্লাহ খেলাফতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব এবং মাওলানা রুহী খেলাফতে ইসলামীর যুগ্ম মহসচিব, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ও ইসলামী ঐক্যজোটের সহকারি মহাসচিব। সাংবাদিকদের কাছেও ফোন করে নেতাকর্মীরা ফয়জুল্লাহ ও রুহীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরছেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও চট্টগ্রাম মহানগরের একাধিক নেতাও এই দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তবে ঐক্যের কথা বিবেচনায় এনে তারা নিজেদের নাম প্রকাশ করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে চাচ্ছেন না। তাদের মতে, ৫ মে হেফাজতের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির পরে শাপলা চত্বরে রাতে অবস্থানের বিষয়ে সংগঠনের আমির শফীকে ভুল বুঝিয়েছেন ফয়জুল্লাহ ও রুহী। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা আমিরকে না জানিয়ে বিএনপির কাছ থেকে ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে রাতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত আদায় করে নেন তারা। অথচ এ সিদ্ধান্তে সংগঠনের বেশিরভাগ নেতারই মত ছিল না। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সংগঠনের প্রায় সব নেতাই সন্ধ্যার মধ্যে সমাবেশ শেষ করে দেয়ার মতামত জানিয়েছিলেন। তার পরও সবার মতামতকে উপেক্ষা করে আমিরকে ভুল বুঝিয়ে রাতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত আদায় করে নেন এ দুজনই। এমনকি এ সময় আমিরের কাছে নিজেদের আশির্বাদপুষ্ট লালবাগকেন্দ্রিক এক-দুজন নেতা ছাড়া অন্য কাউকে এ দুনেতা ঘেঁষতে দেননি বলেও অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রামের নেতারা। তারা অভিযোগ করেছেন, ওই দুই নেতা টাকা লোপাট ছাড়াও ১৮ দলের শরিক দলে থাকায় তারা হেফাজতের নামে ফায়দা হাসিল করতে যাচ্ছেন। আমিরের কাছ থেকে নিজেদের মতো করে সব ধরনের সিদ্ধান্ত আদায়েও তারা দুজনই তৎপর। দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রায় সব নেতাই। এ বিষয়ে হেফাজতের নায়েবে আমির মুফতি ওয়াক্কাস সাংবাদিকদের বলেছেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত ছিল ৫ মে শাপলা চত্বরে অবস্থান না করার পক্ষে। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই সমাবেশ শেষ করে দেয়ার মত আমি দিয়েছিলাম। সন্ধ্যার একটু আগে আমিও সমাবেশ থেকে চলে গেছি। সেদিন অবস্থান না করলে হেফাজতের পরিস্থিতি এমন হতো না। তিনি আরও বলেন, এখানে অনেক ঘটনা আছে। বহু লোক নিয়ে কাজ করতে গেলে অনেক সমস্যা হয়। তবে সেদিন কারা মোনাফেকের ভূমিকা পালন করেছে, সেটা উন্মোচিত হয়ে যাবে। হেফাজতের এ নায়েবে আমির প্রকাশ্যে ফয়জুল্লাহ ও রুহীর বিরুদ্ধে কিছু না বললেও তার একাধিক অনুসারী প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলেন, ফয়জুল্লাহ ও রুহী এখন নমিনেশন বাণিজ্য শুরু করেছেন। হেফাজতের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নিজের আসন পোক্ত করার স্বপ্নে বুঁদ হয়ে আছেন। ঢাকা মহানগর হেফাজতকেও এই দুজন নিজেদের আয়ত্তে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্যই ঢাকা মহানগর হেফাজতের বেশিরভাগ সভা নিজেদের মতো করে লালবাগেই আয়োজন করেন। ঢাকা মহানগর হেফাজতের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী এ বিষয়ে বলেন, মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাওলানা রুহীর বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এসব নিয়ে অচিরেই বৈঠকে বসা হচ্ছে। মুফতি ফয়জুল্লাহ’র রাষ্ট্র গঠন নিয়ে কয়েকটি বক্তব্য আছে। এগুলো সাংগঠনিক বক্তব্য না, সাংগঠনিক বিরোধী। তবে অভিযুক্তদের একজন মুফতি ফয়জুল্লাহ এক কথায় বলছেন, ‘এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’
২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২
রাজীব দে সরকার বলেছেন: বোমা ফাটালেন তো !!
এখন ব্লগের হেফাজতীগুলার কি হবে?!
৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯
মদন বলেছেন: সেইরাম খবর।
খবরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এক কাজ করা যেতে পারে। ঢাকায় সিটি নির্বাচন দেয়া হোক। যেহেতু হেফাজত ফিনিশ, কাজেই আওয়ামীলীগের জয়লাভে আর সমস্যা নাই, নির্বাচন দিতেও সমস্যা নাই।
৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮
রাজীব দে সরকার বলেছেন: আরে এইটাও তো সেইরাম খবর!
এবার যে হেফাজতী রা পার্টি অফিস খুলে ইলেকশন করবে তাই তো জানতাম না!!
৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭
সাদা পাখি বলেছেন: হেফাজতীদের শতভাগ ক্ষমতা তো নয়ই, টাকা পয়সার মুখ দেখে বড় হয়নি। টাকা নিয়ে কামড়া কামড়ি তারা করবে না তো করবে কে ?
৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৯
নষ্ট ছেলে বলেছেন: তাইলে তো আওয়ামী লীগের নির্বাচন নিয়া কোন চিন্তা নাই। তত্ত্বাবধায়কের আন্ডারে নির্বাচনটা দিলেই পারে। পাশ তো আওয়ামী লীগই করবে!!!
৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭
মাইন রানা বলেছেন: জব্বর রিপোর্ট হইছে!!!! এক রিপোর্টে হেফাজত শেষ!!!!
সরকার অপনাকে পুরষ্কার দিতে পারে কারণ তারা আর নির্বাচনে হেফাজতের কারণে হারবেনা।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কি সরকার দিবে???
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৫
বটের ফল বলেছেন: ভালো তো, ভালো না!!!!!!!