নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নতুন ধারায় নতুন হাওয়া ভবন: ফিরে দেখা পুরোনো কাহিনী

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৬



বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সময় নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিতর্কের জন্ম দেন তারেক রহমান। তখন তিনি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের পদে থাকলেও পারিবারিক রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে পুরো সরকারই নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ ওঠে। দলের ভেতরে এ নিয়ে যেমন ক্ষোভ ছিল, তেমনি হতাশা ছিল প্রশাসনে। কিন্তু কেউই প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না। কারণ প্রতিবাদ করলে শাস্তির খড়গ নেমে আসত। বিভিন্ন দুর্নীতি, তদবির-লবিংয়ে হাওয়া ভবন ঘিরে গড়ে ওঠে একটি শক্তিশালী চক্র। ওই চক্রের তরুণ সদস্যরা বিএনপির অনেকে প্রবীণ নেতাকেও পাত্তা দিতেন না। অনেকে মন্ত্রীদের দিকে আঙুল তুলে কথা বলতেন। এমনকি তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর সেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিকল্পনার ‘মূল’ হিসেবেও হাওয়া ভবনকে সন্দেহ করা হয়। বিদ্যুতের খাম্বা স্থাপনের হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির কেন্দ্র হাওয়া ভবন, এমন কথা ছিল মানুষের মুখে মুখে। অর্থ লোপাট করতে সেসময় অসংখ্য খাম্বা স্থাপন করা হলেও বিদ্যুৎ পাননি সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল বিদ্যুৎ প্রত্যাশীদের মধ্যে। অভিযোগ ছিল, হাওয়া ভবন থেকেই মন্ত্রী-এমপিদের যাবতীয় নির্দেশ দেওয়া হতো। সরকার পরিচালিত হতো হাওয়া ভবন থেকে। যদিও তখন বলা হচ্ছিল, হাওয়া ভবন মূলত রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

হাওয়া ভবন এতটাই বিতর্কিত হয়ে পড়েছিল যে, এর মালিক আশেক আহমেদ সেটিকে ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করেছেন। তার স্ত্রী হাওয়ারুননেসার নামে ভবনটি করা হলেও বদলে ফেলা হয়েছে সে নাম। রাজধানীর বনানীতে এক সময়ের অপ্রতিরোধ্য প্রভাবশালী হাওয়া ভবন আর নেই। দুইতলা বিশিষ্ট ভবনটি ভেঙে নয়তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। হাওয়া ভবন নয়, এবার নাম দেওয়া হয়েছে ইংরেজিতে ‘অ্যাজার’। আভিধানিক অর্থ মেঘমুক্ত নীলাকাশ। ভবনটি নির্মাণ শেষ। তবে এবার কোনো অফিস নয়, আবাসিক হিসেবে ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া হবে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী আশেক আহমেদ ও তার স্ত্রী হুয়ারুন আহমেদ ওরফে হাওয়ারুননেসা ভবনটির মালিক। আশুক মিয়ার গ্রামের বাড়ি সিলেটের জগন্নাথপুরে, দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে লন্ডনে থাকেন। কিছুদিন আগে ঘুরে দেখে গেলেও দেশে থাকা তার এক ভাই ভবনটি দেখভাল করেন।

বিএনপি নেতা আলী আসগর লবী ১৯৯৯ সালের শেষ দিকে প্রথমে হাওয়া ভবন ভাড়া নেন। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় করা উদ্দেশ্য থাকলেও সেখানে বসা শুরু করেন তারেক, মামুনসহ তরুণ নেতারা। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসে। তারপর তারেক রহমান হাওয়া ভবন থেকে সবকিছুর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন। ২০০১ সালের ওই নির্বাচনের পর বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব দুই তলাবিশিষ্ট হাওয়া ভবনে নিয়মিত বসতেন। দ্বিতীয় তলায় তিনি এবং নিচ তলায় বসতেন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দ্বিতীয় তলায় একটি ওয়েটিং ও একটি কনফারেন্স রুমও ছিল। বেশ কয়েকজন যোগ্য নেতাকে ডিঙিয়ে তারেক রহমানকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব করা হলে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাছাড়া দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি কিংবা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিকে পাশ কাটিয়ে প্রায় সব সিদ্ধান্ত আসত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের হাওয়া ভবন থেকে। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয় বরং এ ভবন থেকে সারা দেশে দল নিয়ন্ত্রণ করা হতো। তৃণমূল প্রতিনিধি সভা চলাকালে সরগরম ছিল হাওয়া ভবন। কর্মসূচি গ্রহণ, মনিটরিং এমনকি ২০০৬ সালের নির্বাচনি পরিকল্পনার সব প্রস্তুতির কেন্দ্র ছিল হাওয়া ভবন। মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণও ছিল হাওয়া ভবনের কব্জায়। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, থানা, পৌরসভা, উপজেলা-জেলা ও বিভাগীয় নেতাদের তালিকা সংরক্ষিত ছিল সেখানে। তৃণমূল নেতাদের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংরক্ষিত রাখা হতো বিশেষ সেলে। ত্যাগী পরীক্ষিত কোনো নেতা নয়, তারেক রহমানের সঙ্গে হাওয়া ভবনে বসতেন অনভিজ্ঞ ও সুযোগসন্ধানীরা। নিয়মিত আসতেন রকিবুল ইসলাম বকুল, সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর ছেলে জয়, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সিলভার সেলিম, আলী আসগর লবী, হারিছ চৌধুরী, আশিক ইসলাম, মিয়া নুরুদ্দিন অপু প্রমুখ। এদের প্রায় সবাই বিদেশে পালিয়ে আছেন।



ফের আলোচনায়

তারেক রহমান ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিদেশে গিয়েছিলেন এই ওয়াদা করে যে, তিনি আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। দিব্যি দিয়েছিলেন, ভুলেও আর এ পথ মাড়াবেন না। অনেকের মুখে তখন শোনা গিয়েছিল, তার কোমড় ভেঙে গেছে। তিনি আর সোজা হয়ে দাঁড়াতেই পারবেন না। কিন্তু এখন ফের আলোচনায় তারেক রহমান। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরছেন। কোমড় সোজা করে দাঁড়াতেও পারছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারেক দেশে ফিরলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। দেশে ফিরিয়ে এনে তাকে বিচারের মুখোমুখি করবে সরকার। সে লক্ষ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে সরকার ও প্রশাসন। তারেক ইস্যুতে উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির মাঠ। বিএনপিও পাল্টা ব্যবস্থার চেষ্টা করছে। তারেক যাতে নির্বিঘেœ আসতে পারেন, সেজন্য আন্তর্জাতিক মহলে চলছে জোর লবিং। একটি সূত্রের দাবি, শতাধিক কোটি টাকার বাজেট নিয়ে নেমেছে বিরোধী দল। তারেক রহমান নিজেও দেশে ফিরতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সব ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। সরকারকে চাপ দিতে বিদেশি লবিস্টরা কাজ করছেন। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। সম্প্রতি সেখানে বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফের বিতর্কের জন্ম দেন। ২০ মে পূর্ব লন্ডনের ওই অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের ওপর চাপ দিতে তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। তার এ তৎপরতার সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। তারেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন তারা। বিএনপির কয়েকজন নেতাও তারেকের পক্ষে পাল্টা বক্তব্য দিচ্ছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সমালোচনা করে তারা মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি রাজপথ পর্যন্ত গড়িয়েছে। পালিত হয়েছে হরতাল পর্যন্ত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

বিদ্রোহীসৌরভ বলেছেন: ভাঙ্গা ক্যাসেট বাজানো বন্ধ করেন । শেয়ার বাজার, হলমার্ক, ডেসটিনি, পদ্মা সেতু, সোনালী ব্যাংক, ভিওআইপি, কুইক রেন্টাল দুর্নীতি যে ভবন থেকে নিয়ন্ত্রিত -এখন তার বিচারের অপেক্ষায় আছে জনগণ ।

২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৬

ছাসা ডোনার বলেছেন: খালেদার দুই গুনধর পুত্ররাই বিএনপি র সম্পদ। দেখতে হবে না কার ছেলে? অশিিক্ষত এই বুড়ী আমাদের দেশের মানুষদের বুড়া আন্গুল দেখিয়ে যেভাবে ঘুরাচ্ছে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। তাই সাবধান দেশবাসী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.