![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া এবং নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মুখোমুখী অবস্থানে রয়েছে। এ সুযোগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা ইতোমধ্যেই বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের সবটুকু গণমাধ্যমে না এলেও বিএনপির শীর্ষ নেতারা এর মাঝে শুভ ইঙ্গিত দেখছেন। বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির পক্ষে চলমান রাজনৈতিক সংকট কাটাতে দু’নেত্রীর মধ্যে সংলাপ চান বলে জানিয়েছেন।
সংঘাত নয় শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান চায় জাতিসংঘ। এজন্য নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে আলোচনায় বসার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সংস্থাটি। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে এ অভিপ্রায় জানান জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে দুই নেত্রীকে সংলাপের অনুরোধ জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের টেলিফোনের সপ্তাহ দুয়েক পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিঠি পাঠান। চিঠিতে দ্রুত ইতিবাচক সংলাপে বসার অনুরোধ জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সব দলের অংশগ্রহণে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হলে বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির চিঠি পাঠানোর পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রতিনিধি দল সফর করে বাংলাদেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাইকমিশনার উইলিয়াম হানার নেতৃত্বে সফরকারী প্রতিনিধি দলটি আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করে। একই সঙ্গে তারা দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট কাটাতে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসার অনুরোধ জানায় আওয়ামী লীগের কাছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার তৎপরতা, দুই নেত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের টেলিফোন সংলাপ, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির দুই নেত্রীর কাছে চিঠি প্রেরণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি বিএনপি তার অনুকূলে যাচ্ছে বলে মনে করছে। বিদেশিদের এ ধরনের তৎপরতা এবং কিছুকাল আগে অনুষ্ঠিত পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়লাভ বিএনপিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়ে প্রবলভাবে আশাবাদী করে তুলেছে। এ ধরণের তৎপরতা ও ফলাফলে এককথায় বলা চলে, ক্ষমতার স্বপ্নে এখন বিভোর হয়ে আছে বিএনপি। দলটি আশা করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনতা বাদ দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হোক, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে বা অন্য যেকোনো পন্থায় নির্বাচন হলে তারা জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারবে। কিন্তু বাস্তবতা আসলে কি, তা ভেবে দেখার সময় পাচ্ছে না বিএনপি। দলটি এককথায় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। বাস্তবতা হলো অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দল, সংঘাত-সংঘর্ষ, জামায়াত ইস্যু ও তারেক সংকটে বিব্রত খালেদা জিয়া। আর এসব কারণে বিগত সাড়ে চার বছরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দল সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সফলতার মুখ দেখেনি। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দল সফলতা পাবে কিনা তা নিয়ে খোদ দলের অভ্যন্তরেই মতপার্থক্য রয়েছে।
©somewhere in net ltd.