নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুদ্ধাপরাধীদের সিরিজ রায় এবার...

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৫২

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অক্টোবর মাসজুড়ে সিরিজ রায় ঘোষণা শুরু হতে পারে। তিনটি মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে রায় হতে পারে এ মাসেই। এরই মধ্যে বিএনপির দুই নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আব্দুল আলীমের মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে। এছাড়া চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের মামলারও রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে। এবার আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রাষ্ট্রপক্ষের পাল্টা যুক্তি শেষ হলেই মামলাটি রায়ের জন্য প্রস্তুত হবে। আর তা এ সপ্তাহেই পাল্টা যুক্তি শেষ হতে পারে এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।



ইতিমধ্যে দু’টি ট্রাইব্যুনালে ছয়টি মামলার রায় হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তি করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। বর্তমানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার আপিল শুনানি চলছে। বাকি তিনটি: কামারুজ্জামান, গোলাম আযম ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের আপিলেরও শুনানি হবে। আর আবুল কালাম আজাদ পলাতক থাকায় তার পক্ষ থেকে কোনো আপিল দায়ের করা হয়নি।



অক্টোবরে তিনটি মামলার রায় হলে একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে মোট নয়টি মামলার রায় হবে। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত বাংলামেইলকে বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলা অনেক আগে থেকেই রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে। আব্দুল আলীমের মামলাও রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। অক্টোবর মাসের ১০ তারিখের পর থেকে আদালত বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আশা করছি, এর আগেই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলীমের মামলার রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।’



এছাড়া চৌধুরী মুঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তি শেষে এ সপ্তাহেই মামলাটি রায়ের জন্য প্রস্তুত হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘বিচার শেষ হওয়া এসব মামলার রায় অক্টোবরে হবে। ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রসিকিউটর ও তদন্ত কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, এসব রায়ের জন্য দেশবাসী আশায় আছে। তাই রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ মামলাগুলোর রায় তাড়াতাড়ি হওয়া উচিৎ।’



ট্রাইব্যুনাল-১ এ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধুরীর মামলায় উভয়পক্ষের শুনানি ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৪ আগস্ট থেকে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। আর আব্দুল আলীমের মামলার বিচার শেষে গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল-২। এছাড়া বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে চৌধুরী মুঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের মামলার বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এ চলছে।



সাকা চৌধুরীর মামলাটির শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করা হয়েছে। গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুট, দেশান্তরে বাধ্য করাসহ ২৩টি অপরাধের মধ্য ১৭টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাক্ষ্য ও যুক্তি উপস্থাপন করেছেন প্রসিকিউশন। এ মামলায় ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। একই বছরের ১৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৩টি অভিযোগে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।



২০১২ সালের ১৪ মে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে গত ২৮ জুলাই শেষ হয়। প্রসিকিউশনের ৪১ জন এবং আসামিপক্ষে চার জনের জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়।



২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর সাকা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক দেখানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে।



মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত বছরের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের নিজ বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩১ মার্চ তাকে এক লাখ টাকায় মুচলেকা এবং ছেলে ফয়সাল আলীম ও আইনজীবী তাজুল ইসলামের জিম্মায় জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর থেকে তিনি জামিনেই ছিলেন। কিন্তু গত ২২ সেপ্টেম্বর মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ায় জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।



২০১২ সালের ১১ জুন আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। আলীমের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগের মধ্যে ১৫টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করার দাবি করেছে প্রসিকিউশন। তাকে সর্ব্বোচ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডাদেশের দাবি করা হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে। অবশ্য আসামিপক্ষের দাবি, ‘আলীম নির্দোষ। প্রসিকিউশন একটি অভিযোগও সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। তাই তিনি মুক্তি পাবেন।’



আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউশনের ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া দুই জনের জবানবন্দীকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এদিকে আলীমের পক্ষে ৩ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। এর আগে গত ৪ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার কার্যদিবসে প্রসিকিউশন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে।



এদিকে বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে গত ২৪ জুন চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর আগে গত ২ মে দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। দেশে না পাওয়ায় তাদের হাজির হতে দু’টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও হাজির না হওয়ায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এরই মধ্যে মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থান শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলেই মামলাটি রায়ের জন্য প্রস্তুত হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.